‘আমারে আসামে পাঠান, আমি আসামের মানুষ, আমি আসামে যাইতে চাই। আসামে গিয়ে যদি মইরাও যাই, তাও শান্তি আছে। এহানে (এখানে) আমারে কেউ চাইতো না দেখবেরও আইতো না (দেখতে আসবে না)। আসামে আমার অনেক লোক আছে।’

বৃহস্পতিবার দুপুরে রৌমারী প্রেসক্লাবের সামনে বিলাপ করে এসব কথা বলেন পুশইনের শিকার ভারতীয় নাগরিক ফুলবানু খাতুন। তিনি সাত দিন ধরে কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলায় অবস্থান করছেন। 

ভারতীয় নাগরিক ফুলবানু খাতুন বলেন, ‘আমার মাইয়ারা (মেয়েরা), ছেলেডি (ছেলেটি) পাগল হইয়া যাইবো। আমি যদি এই দেশে (বাংলাদেশে) মরি আমারে দেখতেও পাইবোনা কেউ।’

পুশইনের শিকার ফুলবানু খাতুন (৬৫) মৃত নুর ইসলামের স্ত্রী। তিনি ভারতের আসাম রাজ্যের কামরূপ জেলার যমুনা মোকারো থানার যমুনা মোকারো এলাকার বাসিন্দা বলে দাবি করেছেন। 

ফুলবানু বলেন, ‘সকাল ৮-৯টার দিকে চিকিৎসার জন্য আসামের বেলে কামরুপে গিয়েছিলেন একজন ভালো চিকিৎসকের কাছে। এ সময় আমাকে দু’জন ব্যক্তি এসে বলেন, আমাদের কাছে বড় ডাক্টার (চিকিৎসক) আছে। এ কথা বলে সকাল ১১টার দিকে রাস্তা থেকে আমাকে গাড়িতে করে এনে একটি রুমে আটকে রাখা হয়। পরে ওইদিন রাতে রৌমারী সীমান্তের গেইট খুলে বাংলাদেশে ঠেলে দেয় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। তবে আন্তর্জাতিক সীমানা পিলারের কথা বলতে পারছেন না। 

তিনি আরও জানান, ২২ বছর থেকে ভারতের আসামে চালের গুদামে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। অসুস্থতার কারণে ঠিকমত হাঁটতে পারেন না তিনি। 

বিষয়টি নিয়ে কথা হয় বিজিবির ৩৫ জামালপুর ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক হাসানুর রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘যেহেতু সীমান্ত থেকে ভেতরে চলে আসছে, সেহেতু পুলিশকে খবর দেন। তারা গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাক।’

তবে রৌমারী থানার ওসি লুৎফর রহমান বলেন, ‘সীমান্ত থেকে ৫ কিলোমিটারের মধ্যের বিষয়টি বিজিবি দেখবে। বিজিবি মামলা দিলে আমরা গ্রহণ করব।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প শইন

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ