নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলায় নানা বাড়ি বেড়াতে এসে পুকুরের পানিতে ডুবে দুই ভাই-বোনের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার (৯ জুন) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে উপজেলার চরজুবিলী ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর চরমহিউদ্দিন গ্রামের আলাউদ্দিনের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

মারা যাওয়া দুই শিশু হল-একই ইউনিয়নের চরমহিউদ্দিন গ্রামের মো. জিহাদের মেয়ে ফারিয়া আক্তার (৪) ও কুমিল্লার লাকসামের মো.

রকির হোসেনের ছেলে মো. তাহাসিন (৫)। তারা সম্পর্কে খালাতো ভাই-বোন। 

সুবর্ণচর উপজেলার চরজব্বর থানার ওসি মো. শাহীন মিয়া সোমবার রাতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

স্থানীয়রা জানান, ঈদের দ্বিতীয় দিন মায়ের সঙ্গে নানা বাড়িতে বেড়াতে আসে খালাতো ভাই বোন ফারিয়া ও তাহাসিন। শিশু দুটি বিকেলের দিকে বসতঘরের পাশে খেলা করছিল। খেলতে খেলতে মায়ের অগোচরে তারা ঘরের পাশে পুকুরের পানিতে পড়ে যায়। কিছুক্ষণ পর তাদের কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে পরিবারের সদস্যরা খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। এরপর সম্ভাব্য সব জায়গায় তাদের খোঁজাখুঁজি করা হয়। এক পর্যায়ে তাদের বাড়ির পুকুর থেকে উদ্ধার করে স্থানীয় পল্লি চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসক দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন। দুই শিশুর মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।  

চরজব্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীন মিয়া জানান, পানিতে পড়ে ভাই-বোনের মৃত্যুর বিষয়টি শুনেছি। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। তবে এ ঘটনায় কেউ থানায় কোনো অভিযোগ করেনি।

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ