ঈদের ছুটিতে পর্যটকে মুখরিত কক্সবাজার সৈকত
Published: 11th, June 2025 GMT
পবিত্র ঈদুল আজহার ছুটিকে ঘিরে দেশের সবচেয়ে বড় সমুদ্রসৈকত কক্সবাজারে উপচে পড়েছে পর্যটকদের ঢল। ৫ জুন থেকে ঈদের ছুটি শুরু হলেও মূলত ৮ জুন থেকে পর্যটকদের ভিড় বাড়তে শুরু করে।
গতকাল মঙ্গলবার (১০ জুন) সৈকতের লাবণী, সুগন্ধা, কলাতলী, ইনানী, হিমছড়ি ও মেরিন ড্রাইভজুড়ে ছিল হাজারো মানুষের সরব উপস্থিতি।
পর্যটন সংশ্লিষ্টরা ধারণা করছেন, আগামী শুক্রবার (১৩ জুন) পর্যন্ত এমন জনসমাগম অব্যাহত থাকবে।
ঢাকার মোহাম্মদপুর থেকে আসা পর্যটক মাহবুব হাসান বলেন, ‘‘ছুটির দিনে পরিবার নিয়ে দূরে কোথাও ঘুরতে যাওয়া হয় না। এবার ঈদুল আজহার ছুটিতে এই সুযোগে কক্সবাজার এসেছি। সৈকতের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আর সূর্যাস্ত আমাদের মুগ্ধ করেছে।’’
বনানী থেকে আসা আরেক পর্যটক রুমানা ফেরদৌস বলেন, ‘‘প্রচণ্ড গরমের মধ্যে একটু সাগরের ঠাণ্ডা বাতাস ও ঢেউয়ের শব্দ মনকে শান্ত করে। ভাবিনি এত ভিড় হবে, তবে আনন্দটাও অন্যরকম।’’
মিরপুরের বাসিন্দা চৌহান ইসলাম বলেন, ‘‘এত মানুষ দেখে শুরুতে একটু অস্বস্তি লেগেছিল। তবে সৈকতের সৌন্দর্য, বিচ বাইক, ঘোড়ার সওয়ারি, সব মিলিয়ে অসাধারণ একটা অভিজ্ঞতা হয়েছে।’’
সমুদ্রস্নান, বালিয়াড়িতে ছবি তোলা, বিচ বাইকে ঘোরাফেরা কিংবা রোদেলা বিকেলে সাগরের পাড়ে বসে সূর্যাস্ত উপভোগে মেতে আছেন হাজারো পর্যটক।
কক্সবাজারের তারকা হোটেলগুলোতে ৭০-৮৫ শতাংশ কক্ষ ইতোমধ্যেই বুকড রয়েছে বলে জানিয়েছেন হোটেল কর্তৃপক্ষ। সাধারণ গেস্ট হাউজ, কটেজ ও অ্যাপার্টমেন্টগুলোতেও পর্যটকদের উপস্থিতি বেড়েছে।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার রিজিয়নের সহকারি পুলিশ সুপার (এএসপি) নিত্যানন্দ দাস বলেন, ‘‘অতীতের মতো এবারও পর্যটকদের নিরাপত্তায় নেওয়া হয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা। সৈকতের প্রতিটি পয়েন্টে সার্বক্ষণিক পুলিশ মোতায়েন, ওয়াচ টাওয়ার ও সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে চলছে নজরদারি।’’
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো.
এদিকে, মঙ্গলবার কক্সবাজারের হোটেল-মোটেল জোন ও সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্ট ঘুরে দেখেন বেসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (ভারপ্রাপ্ত সচিবের দায়িত্বপ্রাপ্ত) ফাতেমা রহিম ভীনা।
কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি আবু মোরশেদ চৌধুরী খোকা বলেন, “ঈদের ছুটিকে কেন্দ্র করে প্রায় ৫-৬ লাখ পর্যটকের আগমন হতে পারে, যার ফলে কয়েকশ কোটি টাকার পর্যটন বাণিজ্য হবে বলে আশা করা হচ্ছে।”
ঢাকা/তারেক/এস
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে নিহত ৩ জন পেহেলগামের হামলাকারী: পার্লামেন্টে অমিত শাহ
ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছেন, কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িত তিন বন্দুকধারী ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে নিহত হয়েছেন। গতকাল সোমবার অভিযানটি চালানো হয়।
আজ মঙ্গলবার ভারতের সংসদের নিম্নকক্ষ লোকসভায় দেওয়া বক্তব্যে অমিত শাহ এসব কথা বলেন।
তিন মাসেরও বেশি আগে গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের জনপ্রিয় পর্যটন এলাকা পেহেলগামের বৈসরানে পর্যটকদের ওপর বন্দুকধারীরা হামলা চালান। ওই ঘটনায় ২৬ জন নিহত হন।
অমিত শাহ বলেন, ‘আমি পার্লামেন্টে জানাতে চাই, বৈসরানে যে তিন সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছিলেন, তাঁদের সবাইকে হত্যা করা হয়েছে।’ তাঁর দাবি, নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে দুজন পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তাইয়েবার সদস্য। জাতিসংঘ এটিকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করেছে।
অমিত শাহ আরও বলেন, ‘হামলায় তাঁদের জড়িত থাকার ব্যাপারে আমাদের নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর কাছে বিস্তারিত প্রমাণ আছে।’
ভারতীয় সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়, কাশ্মীরের দাচিগাম এলাকার পাহাড়ে গতকাল ওই অভিযান চালানো হয়েছে। শ্রীনগর থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে দাচিগামের অবস্থান।
এপ্রিলে ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে জঙ্গলের ভেতর লুকিয়ে থাকা বন্দুকধারীরা হঠাৎ বেরিয়ে এসে পর্যটকদের ওপর গুলি চালান। ওই ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের প্রায় সবাই ভারতীয়। একজন নেপালি ছিলেন।
আরও পড়ুনকাশ্মীরে পর্যটকদের গুলি করার আগে কী হয়েছিল, জানালেন প্রত্যক্ষদর্শীরা২৫ এপ্রিল ২০২৫ভারতের অভিযোগ, এ হামলার পেছনে পাকিস্তানের মদদ আছে। তবে ইসলামাবাদ তা অস্বীকার করেছে। পেহেলগামে হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত মে মাসে পারমাণবিক শক্তিধর দুই দেশের মধ্যে চার দিন ধরে পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনা ঘটে। এতে দুই পক্ষে ৭০ জনের বেশি মানুষ নিহত হন।
১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ শাসন থেকে স্বাধীনতা পাওয়ার পর থেকেই মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ কাশ্মীর অঞ্চলটি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বিভক্ত হয়ে আছে। উভয় দেশ পুরো কাশ্মীরকে নিজেদের অংশ বলে দাবি করে থাকে। কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণ নেওয়াকে কেন্দ্র করে তারা দুটি যুদ্ধসহ বেশ কয়েকবার সংঘর্ষে জড়িয়েছে।
আরও পড়ুনপেহেলগামে হামলায় জড়িত সবাইকে এবার পাকিস্তানি নাগরিক বলে দাবি ভারতের২৪ জুন ২০২৫