‘মধুচন্দ্রিমায় গিয়ে স্বামীকে খুন করতে স্ত্রী নিজেই খুনি ভাড়া করেছিলেন’
Published: 11th, June 2025 GMT
বিয়ের মাত্র কয়েক দিনের মধ্যে মধুচন্দ্রিমায় গিয়ে স্বামী রাজা রঘুবংশীকে খুন করার পরিকল্পনা সোনম নিজেই করেছিলেন বলে জানিয়েছেন মেঘালয় পুলিশের একজন কর্মকর্তা। এ জন্য ভাড়াটে খুনিদের ২০ লাখ রুপি দেওয়ার প্রস্তাবও দেন তিনি।
স্বামীকে খুন করার সময় তাঁর ওয়ালেট থেকেই প্রাথমিকভাবে প্রায় ১৫ হাজার রুপি নিয়ে সোনম খুনিদের দিয়েছিলেন বলেও জানিয়েছেন ওই পুলিশ কর্মকর্তা।
গতকাল মঙ্গলবার উত্তর প্রদেশের গাজীপুর থেকে মেঘালয় পুলিশ সোনম রঘুবংশীকে গ্রেপ্তার করেছে। পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন তিনি।
রাতেই সোনমকে শিলংয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁর কথিত প্রেমিক রাজ কুশওয়াহাকে গ্রেপ্তারের এক দিন পর সোনম আত্মসমর্পণ করেন। রাজ কুশওয়াহা ও সন্দেহভাজন তিন খুনিকে মধ্যপ্রদেশ এবং উত্তর প্রদেশ থেকে রাজা রঘুবংশী খুনের ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এফআইআরে পরিষ্কারভাবে রাজাকে হত্যা ও মূল্যবান সামগ্রী নিয়ে যাওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। সোনমের হত্যাকারীদের টাকা দেওয়া ও পরে বড় অঙ্কের অর্থ দেওয়ার প্রস্তাবের বিষয়টি স্পষ্টভাবে একটি ষড়যন্ত্রের দিকে ইঙ্গিত করছে। আমরা সব প্রমাণ বিশ্লেষণ করছি, যাতে একটি সম্যক তদন্ত নিশ্চিত করা যায়।বিবেক সিয়েম, ইস্ট খাসি হিলস জেলার পুলিশ সুপারইন্দোরের একজন জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা এ খুনের ঘটনা তদন্তে মেঘালয় পুলিশের সঙ্গে কাজ করছেন। তিনি হিন্দুস্তান টাইমসকে বলেছেন, রাজ কুশওয়াহা দাবি করেছেন, তিনি (খুনের পরিকল্পনায়) সোনমকে সমর্থন করতে চাননি এবং শেষ মুহূর্তে মেঘালয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা বাতিল করেন।
রাজ কুশওয়াহা আরও দাবি করেন, তিনি অন্য তিনজনকেও যেতে নিষেধ করেছিলেন, কিন্তু সোনম টিকিট কেটে ফেলায় পরে মেঘালয়ে ঘুরতে যান তাঁরা। এমনকি শেষ মুহূর্তেও ওই তিনজন হত্যাকাণ্ড ঘটাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন। কিন্তু সোনমের পীড়াপীড়িতে তাঁরা রাজি হন। সোনম এ জন্য ১৫ লাখ রুপি দেওয়ার কথা বলেন তাঁদের।
পুলিশ কুশওয়াহার এসব দাবির সত্যতা যাচাই করছে।
মেঘালয় পুলিশের একজন কর্মকর্তা বলেন, গাজীপুর থেকে পাটনা হয়ে বিমানে কলকাতা, গুয়াহাটি হয়ে সোনমকে শিলংয়ে আনা হয়। পুরো যাত্রাপথে সোনম খুব একটা কথা বলেননি, জানান ওই পুলিশ কর্মকর্তা।
রাজা রঘুবংশী ও সোনমের বিয়ে হয় গত ১১ মে। ২১ মে এ দম্পতি মধুচন্দ্রিমায় যান। দুই দিন পর ২৩ মে তাঁদের নিখোঁজ হওয়ার খবর আসে। ইস্ট খাসি হিলস জেলার সোহরা এলাকায় এক জলপ্রপাতের কাছের গিরিখাতে ২ জুন রাজার মরদেহ পাওয়া যায়।রাজা রঘুবংশী ও সোনমের বিয়ে হয় গত ১১ মে। ২১ মে এ দম্পতি মধুচন্দ্রিমায় যান। দুই দিন পর ২৩ মে তাঁদের নিখোঁজ হওয়ার খবর আসে। ইস্ট খাসি হিলস জেলার সোহরা এলাকায় এক জলপ্রপাতের কাছের গিরিখাতে ২ জুন রাজা রঘুবংশীর মরদেহ পাওয়া যায়।
পুলিশের ধারণা, ২৩ মে যেদিন এই দম্পতি নিখোঁজ হয়েছিলেন, সেদিনই রাজাকে হত্যা করা হয়েছে।
রাজা খুনের ঘটনার এফআইআরে তাঁকে দা (চাপাতি) দিয়ে হত্যার পর কাছে থাকা মূল্যবান সামগ্রী নিয়ে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে।
তদন্তকারীদের বিশ্বাস, এ হত্যাকাণ্ড সোনম ও তাঁর কথিত বন্ধু রাজ কুশওয়াহার পূর্বপরিকল্পিত—উভয়ই ইন্দোরের বাসিন্দা।
ইস্ট খাসি হিলসের পুলিশ সুপার বিবেক সিয়েম বলেন, ‘এফআইআরে পরিষ্কারভাবে রাজাকে হত্যা ও মূল্যবান সামগ্রী নিয়ে যাওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। সোনমের হত্যাকারীদের টাকা দেওয়া এবং পরে বড় অঙ্কের অর্থ দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়ায় বিষয়টি স্পষ্টভাবে একটি ষড়যন্ত্রের দিকে ইঙ্গিত করছে। আমরা সব প্রমাণ বিশ্লেষণ করছি, যাতে একটি সম্যক তদন্ত নিশ্চিত করা যায়।’
সন্দেহভাজন খুনিরা খুনের ঘটনার বিস্তারিত তথ্য দিয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
মেঘালয় পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, সন্দেহভাজন খুনিরা দাবি করেছেন, খুনের ঘটনাস্থলের কাছাকাছি পৌঁছানোর আগমুহূর্তে সোনম ক্লান্ত হয়ে পড়ার ভান করেন। সোনম তাঁদের রাজার পেছনে অবস্থান নিতে বলেন এবং একটি নির্জন স্থানে পৌঁছানোর পর খুন করতে বলেন।
ওই পুলিশ কর্মকর্তা আরও বলেন, ঘটনার পূর্ণ বিবরণ ধারণ করতে সোনম ও সন্দেহভাজন তিন খুনিকে ঘটনাস্থলে নিয়ে যেতে চান তাঁরা।
সন্দেহভাজন খুনিরা নিজেদের পর্যটক পরিচয় দিয়ে রাজা-সোনম দম্পতির ঘনিষ্ঠ হয়েছিলেন ও পরিকল্পনা অনুযায়ী খুনের কাজটি সম্পন্ন করেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
রাজ কুশওয়াহা সোনমের সঙ্গে মেঘালয়ে যাননি, তবে তিনি পুরো সময় ফোনে সোনমের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছিলেন। রাজের বক্তব্যের ভিত্তিতে তদন্তকারীরা এ তথ্য দিয়েছেন।
আরও পড়ুনবিয়ের এক মাসের মধ্যেই মধুচন্দ্রিমায় গিয়ে স্বামীকে কি নববধূ খুন করলেন০৯ জুন ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প ল শ কর মকর ত খ ন র ঘটন খ ন কর হত য ক র কল প র পর ক তদন ত
এছাড়াও পড়ুন:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ট্রেনে কাটা পড়ে একজনের মৃত্যু
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ট্রেনে কাটা পড়ে এক ব্যক্তি মারা গেছেন। মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) দুপুর আড়াইটার দিকে জেলা শহর রেলগেইট সংলগ্ন এলাকায় দুর্ঘটনার শিকার হন তিনি। তার নাম-পরিচয় জানা যায়নি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী উপ-পরিদর্শক কাউসার আলম জানান, দুপুর ২টার দিকে নাসিরাবাদ এক্সপ্রেস ট্রেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশন ছেড়ে চট্টগ্রামের দিকে রওনা হয়। রেলগেটের কাছাকাছি একজন ব্যক্তি এই ট্রেনে কাটা পড়ে নিহত হন।
তিনি আরো জানান, মারা যাওয়া ব্যক্তির নাম-পরিচয় জানা যায়নি। তার পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে। মরদেহ জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে ময়নাতদন্তের জন্যে পাঠানো হচ্ছে। অপমৃত্যু মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
আরো পড়ুন:
গাজীপুরে ট্রেনের ধাক্কায় অজ্ঞাত নারীর মৃত্যু
ঝিনাইদহে তুচ্ছ কারণে ছুরিকাঘাতে ছোট ভাই নিহত
ঢাকা/মনিরুজ্জামান/মাসুদ