উড়োজাহাজের সেলফিতে শেষ হাসি: চিকিৎসক দম্পতি ও তাঁদের তিন সন্তানের করুণ বিদায়
Published: 13th, June 2025 GMT
বিধ্বস্ত উড়োজাহাজের ধ্বংসাবশেষের মধ্যে হয়তো কোথাও পড়ে আছে মুঠোফোনটি। হয়তো তা আর কখনো খুঁজে পাওয়া যাবে না। আগুনে পুড়ে গিয়ে থাকতে পারে সেটি। কিন্তু সেই ফোন দিয়ে তোলা একটি সেলফি ভয়াবহ এক ঘটনার নীরব সাক্ষী হয়ে রয়ে যাবে।
মুঠোফোনটি ভারতের রাজস্থানের এক চিকিৎসক দম্পতির। গতকাল বৃহস্পতিবার ভারতের আহমেদাবাদে যে উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হয়েছে, সেটির যাত্রী ছিলেন তাঁরা। দুর্ঘটনায় এ দম্পতি এবং তাঁদের তিন সন্তানের মৃত্যু হয়েছে। উড়োজাহাজে বসে পরিবারটি একটি সেলফি তুলেছিল। সেটিই এখন তাঁদের শেষ স্মৃতি।
চিকিৎসক কোমি বিয়াস উদয়পুরের একটি হাসপাতালে চাকরি করতেন। স্বামী প্রতীক জোশি ছিলেন লন্ডনপ্রবাসী চিকিৎসক। স্বামীর সঙ্গে যুক্তরাজ্যে স্থায়ীভাবে থাকতে কোমি উদয়পুরে হাসপাতালের চাকরি ছেড়েছিলেন। তিন সন্তানকে নিয়ে তাঁরা লন্ডনের উদ্দেশে যাত্রাও শুরু করেন। তাঁদের চোখেমুখে যে আনন্দ ছিল, তা সেলফিতে স্পষ্ট।
সেলফিতে দেখা যায়, চিকিৎসক প্রতীক ও তাঁর স্ত্রী কোমি এক পাশে বসা, দুজনের মুখেই হাসি। আরেক সারিতে বসে তাঁদের আট বছরের মেয়ে মিরায়া ও পাঁচ বছরের যমজ ছেলে—নকুল ও প্রদ্যুত। দুই ছেলেকে দেখে মনে হচ্ছে তারা ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে হাসার চেষ্টা করছে, আর মেয়ে মিরায়া প্রাণ খুলে হাসছে।
উদয়পুরের প্যাসিফিক হাসপাতালের একজন মুখপাত্র বলেন, ‘লন্ডনে স্বামীর সঙ্গে থাকতে যাওয়ার জন্য কোমি সম্প্রতি তাঁর চাকরি ছেড়েছেন।’
সেলফিতে দেখা যায়, চিকিৎসক প্রতীক ও তাঁর স্ত্রী কোমি এক পাশে বসা, দুজনের মুখেই হাসি। আরেক সারিতে বসে তাঁদের আট বছরের মেয়ে মিরায়া ও পাঁচ বছরের যমজ ছেলে—নকুল ও প্রদ্যুত। দুই ছেলেকে দেখে মনে হচ্ছে, তারা ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে হাসার চেষ্টা করছে, আর মেয়ে মিরায়া প্রাণ খুলে হাসছে।প্রতিবেশীদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে, প্রতীকের বাবা শহরের একজন খ্যাতনামা রেডিওলজিস্ট। আর কোমির বাবা পরিকল্পনা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ছিলেন।
নয়ন নামে প্রতীকের এক স্বজন বলেন, ‘লন্ডনের ফ্লাইট ধরতে তারা গতকাল আহমেদাবাদে গিয়েছিল। স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রতীক মাত্র দুই দিন আগে এখানে আসে। দুই পরিবারের সদস্যদের অনেকে এসে তাদের বিদায় জানায়।’
কোমির ভাই প্রবুদ্ধ বলেন, ১০ বছর আগে প্রতীকের সঙ্গে কোমির বিয়ে হয়। প্রতীকের এক বোনও আছেন। তিনি প্রকৌশলী।
আরও পড়ুনউড়োজাহাজ বিধ্বস্তে নিহত হয়েছেন গুজরাটের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপানি৯ ঘণ্টা আগেপ্রতীক-কোমি দম্পতি ও তাঁদের সন্তানেরা যে উড়োজাহাজে ছিলেন, সেটি গতকাল আহমেদাবাদ বিমানবন্দর থেকে ওড়ার পর মাত্র ৩২ সেকেন্ড আকাশে ছিল। এরপর এটি নামতে শুরু করে এবং স্থানীয় সময় বেলা ১টা ৩৮ মিনিটের দিকে তা বিস্ফোরিত হয়।
বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজটিতে মোট ২৪২ আরোহী ছিলেন। এর মধ্যে ২৩০ জন যাত্রী, ১০ জন কেবিন ক্রু ও ২ জন পাইলট।
ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, উড্ডয়নের সময় বিমানটি ঠিকভাবে ওপরে উঠতে পারছিল না।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সম্ভবত ইঞ্জিন যথেষ্ট শক্তি তৈরি করতে পারছিল না।
সৌরভ ভাটনাগার নামের একজন সাবেক পাইলট এনডিটিভিকে বলেন, ‘উড়ালের শুরুটা একদম ঠিকঠাক ছিল। তবে চাকার গিয়ার তুলতে যাওয়ার আগেই উড়োজাহাজটি নিচে নামতে শুরু করে। এমনটা তখনই হয়, যখন ইঞ্জিনের শক্তি কমে যায় বা উড়োজাহাজ ওপরে ওঠার ক্ষমতা হারায়। তবে ঠিক কী কারণে এমনটা হলো, সেটা তদন্তেই জানা যাবে।’
আরও পড়ুনবিধ্বস্ত উড়োজাহাজের এক যাত্রী বেঁচে গেছেন, হাসপাতালে ভর্তি১৬ ঘণ্টা আগেএয়ার ইন্ডিয়ার বিধ্বস্ত উড়োজাহাজটির ধ্বংসাবশেষ.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব ধ বস ত চ ক ৎসক বছর র
এছাড়াও পড়ুন:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ট্রেনে কাটা পড়ে একজনের মৃত্যু
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ট্রেনে কাটা পড়ে এক ব্যক্তি মারা গেছেন। মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) দুপুর আড়াইটার দিকে জেলা শহর রেলগেইট সংলগ্ন এলাকায় দুর্ঘটনার শিকার হন তিনি। তার নাম-পরিচয় জানা যায়নি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী উপ-পরিদর্শক কাউসার আলম জানান, দুপুর ২টার দিকে নাসিরাবাদ এক্সপ্রেস ট্রেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশন ছেড়ে চট্টগ্রামের দিকে রওনা হয়। রেলগেটের কাছাকাছি একজন ব্যক্তি এই ট্রেনে কাটা পড়ে নিহত হন।
তিনি আরো জানান, মারা যাওয়া ব্যক্তির নাম-পরিচয় জানা যায়নি। তার পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে। মরদেহ জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে ময়নাতদন্তের জন্যে পাঠানো হচ্ছে। অপমৃত্যু মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
আরো পড়ুন:
গাজীপুরে ট্রেনের ধাক্কায় অজ্ঞাত নারীর মৃত্যু
ঝিনাইদহে তুচ্ছ কারণে ছুরিকাঘাতে ছোট ভাই নিহত
ঢাকা/মনিরুজ্জামান/মাসুদ