বাউন্ডারি সীমানায় ক্যাচ নেওয়ার সময় কিংবা ছক্কা ঠেকাতে গিয়ে অনেক সময় শরীরের ভারসাম্য থাকে না। ফিল্ডাররা তাই বাধ্য হয়েই একটি কৌশল অবলম্বন করেন।

বলটি ওপরে ছুড়ে দিয়ে সীমানা পেরিয়ে যান। বাউন্ডারি সীমানার বাইরে থাকতেই লাফ দিয়ে বলটি হাতের ধাক্কায় আবারও ওপরে ছুড়ে দিয়ে সীমানার ভেতরে ফেরত পাঠান এবং তারপর ক্যাচটি নেন কিংবা ছক্কা বাঁচান। এই কাজ করতে গিয়ে কেউ কেউ বাউন্ডারি সীমানার বাইরে একাধিকবার শূন্যে লাফিয়েও বল হাত দিয়ে স্পর্শ করেন।

ক্রিকেটের আইনপ্রণেতা সংস্থা মেরিলিবোন ক্রিকেট ক্লাবের (এমসিসি) নতুন নিয়ম অনুযায়ী এভাবে ক্যাচ নেওয়া কিংবা ছক্কা বাঁচানো আর বৈধ থাকছে না।

আরও পড়ুনস্বপ্ন পূরণ হতে ৬৯ রান দরকার, এবার কি পারবে ‘চিরকালের চোকার’ দক্ষিণ আফ্রিকা১০ ঘণ্টা আগে

ইএসপিএনক্রিকইনফো জানিয়েছে, চলতি মাসের শেষ দিকে নতুন এ নিয়ম কার্যকরের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হবে। আইসিসির প্লেয়িং কন্ডিশনে নিয়মটি সংযুক্ত হবে চলতি মাসেই। এরপর এমসিসির বিধিমালায় অন্তর্ভুক্ত হবে আগামী বছরের অক্টোবরে।

নতুন নিয়ম অনুযায়ী, একজন ফিল্ডার বাউন্ডারি সীমানার বাইরে লাফিয়ে শুধু একবারই বল স্পর্শ করতে পারবেন। এরপর সীমানার ভেতরে ঢুকে তাঁকে ক্যাচ নিতে হবে। ২০২৩ সালে বিগ ব্যাশে সিডনি সিক্সার্সের জর্ডান সিল্কের ক্যাচ বাউন্ডারি সীমানার বাইরে (লাফিয়ে) দ্বিতীয়বার স্পর্শ করে সীমানার ভেতরে ফেরত পাঠান ব্রিসবেন হিটের মাইকেল নেসের। শূন্যে লাফিয়ে বলটি দ্বিতীয়বার স্পর্শ করে তিনি সীমানার বাইরেই পা রাখেন এবং দৌড়ে ভেতরে ঢুকে ক্যাচটি নেন। এমসিসির নতুন নিয়ম অনুযায়ী এমন ক্যাচ আর আইনসিদ্ধ হবে না।

নেসের সেই ক্যাচ নেওয়ার পর ম্যাচ শেষে বলেছিলেন, ২০২০ বিগ ব্যাশে ম্যাথু ওয়েডের ক্যাচ অনেকটা এভাবেই নিয়েছিলেন ম্যাট রেনশ—যেখান থেকে তিনি ওভাবে ক্যাচটি নেওয়ার প্রেরণা পান। সে সময় দুটি ক্যাচের বৈধতা নিয়েই বিতর্ক হয়েছিল। তখন অনেকেই বলেছিলেন, বাউন্ডারি সীমানার ক্যাচের নিয়ম পাল্টানো হোক, যেটা সর্বশেষ হালনাগাদ করা হয়েছে ২০১০ সালে।

আরও পড়ুনম্যাক্সওয়েল, ক্লাসেন, পুরান—জাতীয় দল ছাড়তেই ফ্র্যাঞ্চাইজি দলের অধিনায়ক১২ ঘণ্টা আগে

চলতি বছরের শুরুতে ক্যাচ নেওয়ার প্রশ্নবিদ্ধ এই নিয়ম পুনরায় যাচাইয়ের জন্য এমসিসি কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেছিল আইসিসির ক্রিকেট কমিটি। এরপর দুই পক্ষই এ নিয়ে একসঙ্গে কাজ করে এবার সেটি হালনাগাদ করল। এ বিষয়ে এমসিসির সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা প্রতিটি সদস্যদেশের বোর্ডের কাছে পাঠিয়েছে আইসিসি। সেখানে বলা হয়েছে, বর্তমান নিয়মের অধীন ‘অসাধারণ’ ফিল্ডিং দেখা গেলেও সেটা ‘অস্বাভাবিক কিছু ক্যাচেরও জন্ম দিয়েছে, যা সিংহভাগ ক্রিকেট-সংশ্লিষ্টদের চোখে অবৈধ’।

নেসেরের ক্যাচের উদাহরণ টেনে এমসিসি বলেছে, ব্রিসবেন হিটের এই ফিল্ডার সীমানার ‘ভেতরে’ ক্যাচটি নেওয়া সম্পন্ন করার আগে ‘বানি হপড’ (ছোট্ট লাফ) করেছেন। ব্যাখ্যায় বলা হয়, ‘এমসিসি নতুন আইন করেছে, যেখানে সীমানার বাইরে “বানি হপড” পুরোপুরি নির্মূল করা হয়েছে। তবে এসব ক্যাচে ফিল্ডার সীমানার ভেতরে থেকে বল শূন্যে ছুড়ে দিয়ে বাইরে পা রাখার পর ক্যাচটি ধরতে ডাইভ দিয়ে ফিরতে পারবেন। আমাদের সমাধান হলো, সীমানার বাইরে চলে যাওয়া ফিল্ডারকে শূন্যে থাকতে একবারই বল স্পর্শ করতে দেওয়ার সীমারেখা বেঁধে দেওয়া এবং তারপর ডেলিভারিটির বাকি সময় সম্পন্ন করতে সীমানার ভেতরে থাকতে হবে।’

রিলে অর্থাৎ একাধিক ফিল্ডার মিলে ক্যাচের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম কার্যকর হবে। বাউন্ডারি সীমানার বাইরে বল স্পর্শ করা ফিল্ডারকে সীমানার ভেতরে ফিরতে হবে তাঁর সতীর্থ ক্যাচ নিলেও।

১৭ জুন শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশের মধ্যকার গল টেস্ট দিয়ে শুরু হবে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের নতুন চক্র। এই ম্যাচের সঙ্গে আইসিসির প্লেয়িং কন্ডিশনও হালনাগাদ করা হবে। নতুন এই নিয়ম কার্যকর হবে আগামী বছরের অক্টোবর থেকে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স ম ন র ভ তর ব উন ড র এমস স আইস স

এছাড়াও পড়ুন:

প্রিলিমিনারি পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য করণীয়

সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) তথ্য অনুসারে, ৪৮তম বিশেষ বিসিএসের মাধ্যমে তিন হাজার চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া হবে। এর মধ্যে সহকারী সার্জন নেওয়া হবে ২ হাজার ৭০০ জন আর সহকারী ডেন্টাল সার্জন নেওয়া হবে ৩০০ জন। দেশে চিকিৎসকের সংকটের কারণে এ বিশেষ বিসিএসকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে দ্রুত নিয়োগ সম্পন্ন করা হবে। তাই সময় নষ্ট না করে এখন থেকেই জোরালো প্রস্তুতি নিতে হবে।

অনেক দিন পর বিশেষ বিসিএস হচ্ছে, তাই প্রতিযোগীর সংখ্যাটা বেশি। গুছিয়ে প্রস্তুতি নিতে হবে। প্রথমে পিএসসির সিলেবাস নম্বর বিন্যাস অনুযায়ী বুঝে নিতে হবে। এরপর নিজের দুর্বলতা ও সবলতার বিষয়গুলো ভাগ করে নিতে হবে। সিলেবাসের দিকে তাকালে দেখা যায়, মোট ২০০ নম্বরের পরীক্ষা হবে। এর মধ্যে ১০০ নম্বর সাধারণ বিষয়াবলি এবং বাকি ১০০ নম্বর চিকিৎসাবিদ্যা বিষয় থেকে। সাধারণ বিষয়াবলির ১০০ নম্বরের মধ্যে বাংলায় ২০, ইংরেজি ২০, বাংলাদেশ বিষয়াবলি ২০, আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি ২০, মানসিক দক্ষতা ১০ ও গাণিতিক যুক্তিতে ১০ নম্বরের প্রশ্ন থাকবে।

বাংলা অংশে ব্যাকরণে ১৫, সাহিত্যে ৫ নম্বরসহ মোট ২০ নম্বর। ভাষার প্রয়োগ–অপপ্রয়োগ, বাগ্‌ধারা, শুদ্ধি, সমার্থক-বিপরীতার্থক মোটামুটি সহজ। প্রত্যয় সন্ধিও সমাস কিছুটা কঠিন। তাই প্রস্তুতির সময় সেভাবেই পরিকল্পনা করে নিতে হবে। আবার সাহিত্যের ক্ষেত্রে সব যুগ থেকেই প্রশ্ন আসে, প্রাথমিক আর মধ্যযুগের পরিধি তুলনামূলক কম এবং এখানে সহজেই নম্বর তোলা সম্ভব। আধুনিক যুগের রবীন্দ্রনাথ, কাজী নজরুল, জসীমউদ্‌দীন, ফররুখ আহমদ ও গোলাম মোস্তফা বেশ প্রাসঙ্গিক। ইংরেজিতে ব্যাকরণ থেকে ১৫ এবং সাহিত্যে ৫ নম্বর। সাহিত্য থেকে সিলেবাসের সব বিষয় পড়লে ভালো নম্বর পাওয়া সম্ভব। এ ক্ষেত্রে আগের বছরের প্রশ্নগুলো পড়লে কাজে দেবে।

বাংলাদেশ বিষয়াবলিতে ২০ নম্বর। জাতীয় রাজনৈতিক ইতিহাস থেকে ৪ নম্বরের পুরোটাই ওঠানো সম্ভব, যদি গুছিয়ে ইতিহাসের ঘটনাগুলো গল্পের মতো করে পড়তে পারেন। ইতিহাস মুখস্থ করতে যাবেন না, রাজনৈতিক ঘটনাগুলো গল্পের আদলে রিডিং পড়ে যাবেন। এরপর কৃষিজ সম্পদ, অর্থনীতি, শিল্প-বাণিজ্য—প্রতিটি বিষয় থেকে ২ নম্বর আছে, যা বাংলাদেশ বিষয়াবলির তুলনামূলক কঠিন অংশ। এ ক্ষেত্রে আগের বছরের প্রশ্নগুলোর ওপর জোর দিতে হবে। সংবিধান থেকে ২ নম্বরই ওঠানো সম্ভব, যদি বর্তমান ঘটনাবলির সঙ্গে সমন্বয় করে পড়া যায়। এগুলো ছাড়াও আছে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অবস্থা, সরকারব্যবস্থা, জাতীয় অর্জন, গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান—এগুলোর প্রতিটি থেকে ২ নম্বর আছে। এসব বিষয় কমন পাওয়ার জন্য সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো দৈনিক পত্রিকা পড়ার অভ্যাস। জুলাই অভ্যুত্থানের সবকিছু ভালো করে দেখে নিতে হবে। সংস্কার কমিশনে প্রস্তাবিত সংস্কারগুলোর ব্যাপারে প্রাথমিক ধারণা নিতে হবে।

আন্তর্জাতিক বিষয়াবলিতে ২০ নম্বর আছে। আন্তর্জাতিক সংগঠন, ভূরাজনীতির বর্তমান প্রেক্ষাপট, ভারত–পাকিস্তান সম্পর্ক, ইউক্রেন যুদ্ধের গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক, মধ্যপ্রাচ্যের সাম্প্রতিক ঘটনা, হামাস, গাজা ইত্যাদি চলতি বিষয়গুলো ভালোভাবে আয়ত্তে আনতে হবে। এ জন্য নিয়মিত পত্রিকা পড়ার বিকল্প নেই। আন্তর্জাতিক বিষয়গুলো পড়তে অনেকে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন না, কিন্তু এই বিষয়ে নম্বর ওঠানো তুলনামূলক সহজ। শুধু একটু গুছিয়ে নিয়ে আগের বছরের প্রশ্নের প্যাটার্ন ফলো করতে পারলে বেশ ভালো নম্বর ওঠানো সম্ভব।

গাণিতিক যুক্তির ১০ নম্বরের প্রস্তুতির জন্য অষ্টম, নবম ও দশম শ্রেণির বইয়ের সাধারণ গণিতের মৌলিক অংশগুলো দেখতে হবে। গণিতের উত্তর দেওয়ার ক্ষেত্রে বেশি সময় নিয়ে উত্তর বের করতে যাবেন না। একেবারে প্রথম চেষ্টায় যতটুকু পারবেন, সেটাই করবেন। একই পরামর্শ মানসিক যুক্তির ক্ষেত্রেও।

চিকিৎসাবিজ্ঞান থেকে মোট ১০০ নম্বর থাকছে। ৩৯তম বিসিএস ও ৪২তম বিসিএসের প্রিলির প্রশ্নগুলো দেখলে একটা প্রাথমিক ধারণা পাবেন। এরপর সিলেবাস অনুযায়ী সব কটি বিষয়ে মৌলিক ধারণা নিতে হবে। মনে রাখতে হবে, যেকোনো বিষয়ের গভীরে না গিয়ে সব কটি বিষয়ের ব্যাপারে সাধারণ ধারণা থাকলে নম্বর বেশি পাবেন। চিকিৎসাবিজ্ঞানের সিলেবাসে ৫০ নম্বর নন–ক্লিনিক্যাল বিষয়গুলোর জন্য এবং ক্লিনিক্যাল বিষয়গুলোর জন্য ৫০ নম্বর বরাদ্দ। ডেন্টাল অংশের জন্যও মৌলিক ডেন্টাল অ্যানাটমি, ডেন্টিস্ট্রি–সম্পর্কিত ফিজিওলজি, বায়োকেমিস্ট্রি, ডেন্টাল ম্যাটেরিয়াল ও অন্যান্য মিলে ৫০ এবং ডেন্টাল সায়েন্স থেকে ৫০ নম্বর বরাদ্দ।

মেডিকেল অংশের বেসিক অংশ থেকে মূল ফোকাস রাখতে হবে অ্যানাটমি ও ফিজিওলজিতে যেখানে ২০ নম্বর বরাদ্দ। বেসিক অংশের তুলনায় বেশি নম্বর পেতে ক্লিনিক্যাল অংশে বেশি জোর দেওয়াই যুক্তিযুক্ত। ক্লিনিক্যাল বিষয়ে প্রস্তুতির জন্য নজর রাখতে হবে আমাদের দেশের কমন রোগগুলোর উপসর্গ এবং সেগুলোর মৌলিক চিকিৎসাপদ্ধতি সম্পর্কে।

কোনো একটি পরীক্ষায় কারও পক্ষে সব প্রশ্নের উত্তর করা প্রায় অসম্ভব। তাই প্রস্তুতি নেওয়ার সময় এবং পরীক্ষায় উত্তর দেওয়ার সময় মাথায় রাখতে হবে যেটা সবাই পারছে, সেটা আপনাকে পারতে হবে। বাকি আনকমন বা কঠিন বিষয়গুলো পারলে সেটা আপনার নম্বর বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে। তাই প্রস্তুতি নিতে হবে পরিকল্পনা করে। সবার জন্য শুভকামনা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বাঁধন কাঁদলেন, কিন্তু কেন...
  • মামাত বোনকে ধর্ষণ-হত্যা করে নিখোঁজের গল্প সাজায় নয়ন: পুলিশ
  • আমাদের যত ঘুঘু 
  • কমিটি নেই, সবাই নেতা
  • কোরবানির গরু কেনার আড়াই লাখ টাকা ছিনিয়ে নিতে ব্যবসায়ী জাকিরকে হত্যা করা হয়
  • শ্রীলঙ্কা পৌঁছেছেন মিরাজ-শান্তরা
  • পটুয়াখালীতে সৎমা ও দাদিকে গলা কেটে হত্যা
  • মরিচখেতে তাজা গ্রেনেড, নিষ্ক্রিয় করলেন সেনাসদস্যরা
  • প্রিলিমিনারি পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য করণীয়