তরুণ নেতৃত্বে পরিচালিত সামাজিক সংগঠন লাল সবুজ সোসাইটি। ২০১০ সালে লাল সবুজ মাসিক পত্রিকার মাধ্যমে গঠিত সংগঠনটি দেশের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক পর্যায়েও ইতিবাচক পরিবর্তনের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। তরুণদের ক্ষমতায়ন, নেতৃত্বের বিকাশ এবং সামাজিক দায়িত্ববোধে উদ্বুদ্ধ করাই সংগঠনটির মূল লক্ষ্য। প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেই তারা সমাজের নানা সংকট মোকাবিলা করে শান্তিপূর্ণ ও টেকসই সমাজ বিনির্মাণে কাজ করে যাচ্ছে। এছাড়াও জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়নের ৭টি লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে; যার মধ্যে রয়েছে জলবায়ু পরিবর্তন, লিঙ্গ সমতা, স্বাস্থ্য এবং পরিষ্কার পানি ও স্যানিটেশন ইত্যাদি৷ পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা ও সবুজায়নের লক্ষ্যকে সামনে রেখে লাল সবুজ সোসাইটি বিভিন্ন সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছে। বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি, প্লাস্টিক দূষণবিরোধী ক্যাম্পেইন ও পরিবেশবিষয়ক শিক্ষামূলক আয়োজনের মাধ্যমে সংগঠনটি জনসচেতনতা তৈরি করছে। একইসঙ্গে, মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়েও লাল সবুজ সোসাইটি বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে
কাজ করছে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে বিষণ্নতা, উদ্বেগ, আত্মহত্যা প্রতিরোধ, সহানুভূতিশীল যোগাযোগ ও সহায়তা চাওয়ার বিষয়ে সেশন, ওয়ার্কশপ ও ক্যাম্পেইনের আয়োজন করা হয়। সম্পূর্ণ অলাভজনকভাবে প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রম পরিচালনা করে সংগঠনটি। সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে তরুণদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে লাল সবুজ সোসাইটি ঢাকা, বরিশাল ও রংপুর বিভাগে একাধিক সাংবাদিকতা প্রশিক্ষণ কর্মসূচির আয়োজন করেছে। এই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারীরা বেসিক সাংবাদিকতা, টিভি রিপোর্টিং, মোবাইল জার্নালিজম এবং ফিচার লেখার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ পেয়েছেন। তরুণ সাংবাদিকরা এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে রিপোর্ট, ফিচার, ব্লগ এবং ভিডিও কনটেন্ট তৈরি করে তাদের নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশে সক্ষম হন। সমাজের বাস্তবতা তুলে ধরা এবং ইতিবাচক পরিবর্তনে ভূমিকা রাখাই ছিল এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য। এ পর্যন্ত দেশের ৩২টি জেলায় কাজ করছে লাল সবুজ সোসাইটি। বরিশাল, খুলনা, ভোলা, পটুয়াখালী, গোপালগঞ্জসহ দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল এবং রংপুর, কুড়িগ্রাম, দিনাজপুর, ময়মনসিংহসহ উত্তরাঞ্চল ছাড়াও চট্টগ্রাম, সিলেট, নারায়ণগঞ্জসহ পূর্ব ও পশ্চিমাঞ্চলের অনেক জেলাতেই রয়েছে সক্রিয় কার্যক্রম। প্রায় আড়াই হাজার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটির সঙ্গে যুক্ত এবং রয়েছেন ১৮ জন অফিস স্টাফ।
লাল সবুজ সোসাইটির সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে ইউনিসেফ, ওয়ার্ল্ড ভিশন, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন, আইআইডি, ইউএসএআইডি, সেভ দ্য চিলড্রেন, বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড, একশনএইড এবং মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকসহ আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠান।
লাল সবুজ সোসাইটির সভাপতি তাহসিন উদ্দিন বলেন, ‘বাংলাদেশের একটি বড় অংশ তরুণ। তাদের সমাজ উন্নয়নে সম্পৃক্ত করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের লক্ষ্য তরুণদের সম্পৃক্ত করে সংগঠনটিকে টেকসইভাবে গড়ে তোলা এবং ২০৩০ সালের মধ্যে এক লাখ ভলান্টিয়ার তৈরি করা। আমাদের কাজ শহর থেকে মফস্বল পর্যন্ত ছড়িয়ে দিতে চাই।’ u
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স গঠনট লক ষ য ক জ কর
এছাড়াও পড়ুন:
ছয় দফা দাবিতে ‘আমরা ভোলাবাসী’র আন্দোলন ‘সরকারি আশ্বাসে’ স্থগিত
ভোলায় গ্যাস ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের দাবিতে চলমান ছয় দফা আন্দোলন স্থগিত করেছে ‘আমরা ভোলাবাসী’। সরকারি আশ্বাসের ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে সংগঠনটি। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ভোলা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন নেতারা।
সংগঠনের পক্ষ থেকে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জেলা বিএনপির সদস্যসচিব ও আমরা ভোলাবাসীর জ্যেষ্ঠ নির্বাহী সদস্য রাইসুল আলম। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. এনামুল হক, বিজেপির সাধারণ সম্পাদক মোতাসিন বিল্লাহ, ভোলা জেলা কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি মোবাশ্বির উল্লাহ চৌধুরী, ভোলা আলিয়া মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ মোবাশ্বিরুল হক নাঈম, ইসলামী আন্দোলনের ভোলা উত্তর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মাওলানা তরিকুল ইসলাম, ভোলা সদর উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির মো. কামাল হোসেন ও আমরা ভোলাবাসীর সদস্যসচিব মীর মোশাররফ হোসেন।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ভোলার গ্যাস স্থানীয়ভাবে ব্যবহারের দাবিসহ ছয় দফা দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন চলছে। সরকারের সঙ্গে একাধিক বৈঠকের মাধ্যমে দাবি আদায়ে অগ্রগতি হয়েছে।
আমরা ভোলাবাসীর দাবির মধ্যে রয়েছে, ভোলায় মেডিকেল কলেজ স্থাপন, বিদ্যমান ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসার সুবিধা নিশ্চিত করা, ভোলা–বরিশাল সেতু নির্মাণ, ঘরে ঘরে গ্যাস সরবরাহ, গ্যাসভিত্তিক শিল্পকারখানা স্থাপন ও নদীভাঙন প্রতিরোধ।
সংগঠনটি জানায়, আন্দোলনের আগে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালটিতে মাত্র আট চিকিৎসক কর্মরত ছিলেন, বর্তমানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৮ জন। আরও চিকিৎসক, নার্স ও যন্ত্রপাতি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সরকার। মেডিকেল কলেজ স্থাপনের বিষয়ে বলা হয়েছে, ভবিষ্যতে নতুন মেডিকেল কলেজ হলে, সেটি ভোলায় হবে। ভোলা–বরিশাল সেতু নির্মাণের ক্ষেত্রেও ফিজিবিলিটি স্টাডি ও নকশা সম্পন্ন হয়েছে এবং ২০২৬ সালের মধ্যে দৃশ্যমান অগ্রগতি হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
সার কারখানা ও ইপিজেড স্থাপনের জন্য জমি নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে বলেও জানিয়েছেন নেতারা। গ্যাস–সংযোগের বিষয়ে জানানো হয়, সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানিকে ডিমান্ড নোট জমা দেওয়া ২ হাজার ১৪৫ গ্রাহককে গ্যাস–সংযোগ দেওয়া হবে এবং ন্যায্যমূল্যে ২০ হাজার সিলিন্ডার বিতরণ করা হবে।
সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আগামী দুই মাসের মধ্যে দৃশ্যমান অগ্রগতি না হলে আবার কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।