মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার স্কুলছাত্রী হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। রোববার বিকেলে হত্যাকাণ্ডে জড়িত জুনেল মিয়াকে গ্রেপ্তারের পর তার জবানবন্দীতে বেরিয়ে আসে মূল তথ্য। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে জুনেল জানান, ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে ক্ষোভের মাথায় ওই ছাত্রীকে হত্যা করেন তিনি।

আজ সোমবার দুপুরে জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের কনফারেন্স রিমে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিং এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার এম কে এইচ জাহাঙ্গীর হোসেন। 

পুলিশ জানায়, কুলাউড়া উপজেলার দাউদপুর গ্রামের নিকটবর্তী সিংগুর গ্রামে গত বৃহস্পতিবার সকাল ৭টার দিকে প্রাইভেট পড়তে যায় ওই শিক্ষার্থী। এরপর থেকে সে নিখোঁজ ছিল। গত শনিবার বিকেল ৫টার দিকে তার অর্ধগলিত লাশ গ্রামের একটি ছড়া থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় কুলাউড়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়। ঘটনা তদন্তকালে সন্দেহভাজন হিসেবে নিহতের প্রতিবেশী জুনেলকে আটক করা হয়। রোববার বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে জুনেল জানান, ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে ক্ষোভের মাথায় ওই ছাত্রীকে হত্যা করেন তিনি।

আসামির বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, ১২ জুন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বাড়ি ফেরার পথে ওই ছাত্রীর গতিরোধ করেন জুনেল। এ সময় সে চিৎকার করলে ক্ষিপ্ত জুনেল তার গলা চেপে ধরেন। এক পর্যায়ে শ্বাসরোধে তার মৃত্যু হয়। পরে সেখান থেকে নিয়ে ওই শিক্ষার্থীর লাশ স্থানীয় কিরিম শাহ মাজারের অদূরে জঙ্গলের নিকটবর্তী ছড়ার (খাল) পাড়ে ফেলে আসেন তিনি।

নিহতের লাশ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তর জন্য মৌলভীবাজার হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় নিহতের মায়ের করা পূর্বের অভিযোগটি হত্যা মামলা হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। 

প্রেস ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপারেশন) নোবেল চাকমা, কুলাউড়া থানার ওসি গোলাম আপছার, পরিদর্শক সুদীপ্ত ভট্টাচার্য প্রমুখ।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ