লাল কার্ড দেখাতে গিয়ে কার ছবি দেখালেন রেফারি
Published: 17th, June 2025 GMT
ক্লাব বিশ্বকাপে গতকাল রাতে নাটকীয় এক ম্যাচ উপহার দিয়েছে বেনফিকা ও বোকা জুনিয়র্স। ২–২ গোলে ড্র হওয়া ম্যাচটিতে ২৭ মিনিটে ২ গোলে এগিয়ে যায় আর্জেন্টাইন ক্লাব বোকা জুনিয়র্স। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে আনহেল দি মারিয়া ব্যবধান কমান বেনফিকার হয়ে। আর ৮৪ মিনিটে আরেক আর্জেন্টাইন নিকোলাস ওতামেন্দির গোলে ম্যাচে সমতা ফেরায় বেনফিকা।
তবে সমতায় শেষ হওয়া উত্তেজনাপূর্ণ এই ম্যাচে বেশ ব্যস্ত সময় পার করতে হয়েছে মেক্সিকান রেফারি সিজার রামোসকে। ২১ ফাউলের এ ম্যাচে ৪ বার হলুদ কার্ড ও ৩ বার লাল কার্ড দেখিয়েছেন রামোস। হলুদ কার্ডের মধ্যে ২টি দেখিয়েছেন বেনফিকাকে এবং ২টি বোকাকে। আর লাল কার্ডের ২টি ছিল বোকার বিপক্ষে এবং ১টি দেখিয়েছেন বেনফিকাকে।
এর মধ্যে ৮৮ মিনিটে বেনফিকার মিডফিল্ডার ফ্লোরেন্তিনো লুইসকে মারাত্মকভাবে ফাউল করলে বোকার সেন্টার ব্যাক হোর্হে ফিগালকে লাল কার্ড দেখান রামোস। আর এ কার্ড দেখাতে গিয়েই অদ্ভুত এক দৃশ্যের জন্ম দেন মেক্সিকান রেফারি।
আরও পড়ুনগোল করে দি মারিয়া কি বোকার কাছে ক্ষমা চাইলেন, যে ব্যাখ্যা দিলেন৬ ঘণ্টা আগেদৌড়ে এসে কার্ড দেখানোর সময় তাঁর পকেট থেকে লাল কার্ডের সঙ্গে বেরিয়ে আসে অন্য একটি কার্ডও। সংবাদমাধ্যমের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, সেই কার্ডে ছিল ‘ভার্জিন অব গুয়াডালুপে’ বা গুয়াডালুপের ভার্জিনের ছবি।
ক্যাথলিক ধর্মবিশ্বাস অনুযায়ী, গুয়াদালুপের ভার্জিন হচ্ছেন কুমারী মেরির বিশেষ এক রূপ। মেক্সিকোতে অনেকে বিশ্বাস করেন, ১৫৩১ সালের দিকে দেশটিতে জুয়ান দিয়েগো নামের এক সাধারণ আদিবাসীর সামনে আবির্ভুত হন তিনি। ওই ঘটনার স্মৃতিতে যে গির্জা রয়েছে, তা হচ্ছে মেক্সিকো সিটির গুয়াদালুপে ব্যাসিলিকা
আরও পড়ুনচেলসির ম্যাচে ৫০ হাজার আসন ফাঁকা, কেন এই দুরবস্থা ১০ ঘণ্টা আগেগুয়াদালুপের ভার্জিনকে লাতিন আমেরিকায়ও শ্রদ্ধা করা হয়। বিশ্বাস করা হয় যে তিনি দুর্বল ও নির্যাতনের শিকার মানুষকে আশ্রয় ও সমর্থন দিতে আবির্ভূত হয়েছিলেন।
রামোস অবশ্য দ্রুতই গুয়াদালুপের ভার্জিন ছবিসংবলিত কার্ডটি পকেটে রেখে দেন।
সম্প্রচারের সময় কার্ডটিতে কী আছে, সেটা ভালোভাবে দেখা না গেলেও পরে মার্কাসহ একাধিক সংবাদমাধ্যম জানায়, সেটি ছিল গুয়াদালুপের ভার্জিনের ছবি। রামোসের অনাকাঙ্ক্ষিত এই কার্ড দেখানোর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও বেশ আলোচনার জন্মও দিয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
রাশিয়ার কাছাকাছি দুটি পারমাণবিক সাবমেরিন মোতায়েনের নির্দেশ ট্রাম্পের
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, তিনি রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভের ‘অত্যন্ত উস্কানিমূলক’ মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় দুটি পারমাণবিক সাবমেরিন ‘যথাযথ অঞ্চলে মোতায়েন’ করার নির্দেশ দিয়েছেন।
শুক্রবার (১ আগস্ট) ট্রুথ সোশ্যালে একটি পোস্টে ট্রাম্প লিখেছেন, “ওই মন্তব্য় যদি নেহাতই বোকামি ও উস্কানিমূলক বক্তব্য না হয়ে, তার থেকে বেশি কিছু হয়, তাই আমি দুটি পারমাণবিক সাবমেরিন মোতায়েন করার নির্দেশ দিয়েছি।” খবর বিবিসির।
ট্রাম্প আরো লিখেছেন যে, “শব্দগুলো খুব গুরুত্বপূর্ণ। এর প্রভাবও অপ্রত্যাশিত হতে পারে। তবে আশা করি এই বিবৃতি তেমন কিছু ঘটাবে না।”
আরো পড়ুন:
পুতিনকে এবার ১০ দিনের আল্টিমেটাম দিলেন ট্রাম্প
পুতিনকে এবার ১২ দিনের আল্টিমেটাম দিলেন ট্রাম্প
মার্কিন সামরিক প্রোটোকল মেনে দুটি সাবমেরিন কোথায় মোতায়েন করা হচ্ছে, তা তিনি বলেননি।
একদিন আগেই ইউক্রেনে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হতে মস্কোকে আল্টিমেটাম দিয়েছিলেন ট্রাম্প। এরপরই প্রতিক্রিয়া দেন মেদভেদেভ।
পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় জানিয়ে শুক্রবার ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া পোস্টে ট্রাম্প লিখেছেন, “রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ, যিনি বর্তমানে রাশিয়ান ফেডারেশনের নিরাপত্তা পরিষদের ডেপুটি চেয়ারম্যান, তার অত্যন্ত উস্কানিমূলক বক্তব্যের ভিত্তিতে, আমি দুটি পারমাণবিক সাবমেরিনকে উপযুক্ত অঞ্চলে মোতায়েন করার নির্দেশ দিয়েছি।”
ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া পোস্টে মার্কিন প্রেসিডেন্ট পারমাণবিক চালিত নাকি পারমাণবিক অস্ত্রধারী সাবমেরিনের মোতায়েন করার নির্দেশ দিয়েছেন, তা খোলাসা করেননি।
রাশিয়া এবং আমেরিকার কাছে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি পারমাণবিক অস্ত্র আছে এবং উভয় দেশেরই পারমাণবিক সাবমেরিনের বহর রয়েছে।
শুক্রবার পরবর্তীতে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় ট্রাম্প বলেন, “একটি হুমকি দেওয়া হয়েছিল এবং আমরা এটিকে উপযুক্ত মনে করিনি। তাই আমাকে খুব সতর্ক থাকতে হবে।”
মার্কিন প্রেসিডেন্ট আরো বলেন, “আমি মার্কিন জনগণের নিরাপত্তার ভিত্তিতে এটি করেছি। রাশিয়ার একজন সাবেক প্রেসিডেন্ট হুমকি দিয়েছিলেন। এবং আমরা আমাদের জনগণকে রক্ষা করব।”
ক্রেমলিন এখনও পর্যন্ত এই বিষয়ে কোনো প্রকাশ্য মন্তব্য করেনি, তবে ট্রাম্পের বক্তব্যের পর মস্কোর শেয়ার বাজারে ধস নেমেছে।
সম্প্রতি ট্রাম্প এবং মেদভেদেভ সোশ্যাল মিডিয়ায় একে অপরের বিরুদ্ধে একাধিক ব্যক্তিগত আক্রমণে জড়িয়ে পড়েছেন।
ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ করার জন্য ট্রাম্প রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে দুই দফায় নতুন করে সময় বেধে দিয়েছেন, তবে যুদ্ধ থামানোর কোনো লক্ষণ পুতিন এখনও দেখাননি।
মেদভেদেভ- যিনি ২০০৮ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ছিলেন- এই সপ্তাহের শুরুতে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ‘রাশিয়ার সঙ্গে আল্টিমেটাম খেলা’ খেলার অভিযোগ করেছিলেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্টে মেদভেদেভ বলেছিলেন, “প্রতিটি নতুন আল্টিমেটাম একটি হুমকি এবং যুদ্ধের দিকে একটি পদক্ষেপ।”
এর আগে, তিনি জুলাইয়ের শুরুতে তিনি ট্রাম্পের আল্টিমেটামকে ‘নাটকীয়’ বলে অভিহিত করে বলেছিলেন, “রাশিয়া এসবের পরোয়া করে না।”
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) টেলিগ্রামে একটি পোস্টে মেদভেদেভ ট্রাম্পকে রাশিয়ার ‘ডেড হ্যান্ড’ সম্পর্কে সতর্ক করেন। সামরিক বিশ্লেষকদের মতে, ‘ডেড হ্যান্ড’ হলো রাশিয়ার প্রতিশোধমূলক পারমাণবিক হামলা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার কোডনাম।
এরপরই শুক্রবার ট্রাম্প মেদভেদেভের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় প্রথমবারের মতো প্রতিক্রিয়া জানান। তিনি মেদভেদেভকে ‘রাশিয়ার ব্যর্থ সাবেক প্রেসিডেন্ট, নিজেকে এখনো প্রেসিডেন্ট বলে ভাবেন’ বলে কটাক্ষ করেন।
ট্রাম্প মেদভেদেভকে ‘তার কথার দিকে নজর রাখার’ বিষয়ে সতর্কও করে বলেন, “তিনি খুব বিপজ্জনক অঞ্চলে প্রবেশ করছেন!”
মেদভেদেভ ২০২২ সালে ইউক্রেনে রাশিয়ার পূর্ণাঙ্গ আক্রমণকে সমর্থন করেন এবং পশ্চিমাদের একজন স্পষ্ট সমালোচক।
ঢাকা/ফিরোজ