জাতি হিসেবে আমরা বেহায়া ও নির্লজ্জ, কেন বললেন শবনম ফারিয়া
Published: 19th, June 2025 GMT
বরাবরই তিনি স্পষ্টবাদী। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও প্রায়ই স্পষ্ট ভাষায় নিজের মতামত তুলে ধরেন। জুলাই ছাত্র আন্দোলনের সময়ও তিনি ছাত্রদের পক্ষে নিজের অবস্থান জানান দেন। এতদিন পরে এসে সেই জুলাই আন্দোলন নিয়ে আবারও নিজের মতামত জানালেন অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া। সেইসাথে জানালেন ক্ষোভ কথাও।
১৮ জুন ফারিয়া নিজের ফেসবুক ওয়ালে একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন। সেখানে তিনি লিখেছেন, “একটা গল্প আছে না, শীতের সকালে একজন ইমাম আর একজন চোরের? ইমাম ভাবে, কী ভালো একটা মানুষ, এই ঠান্ডায় ফজরের নামাজ পড়তে এসেছে! চোর ভাবে, কী ভদ্রলোক দেখতে, দাড়ি রেখে আবার চুরি করে! এই গল্প থেকে আমরা কী শিখেছিলাম? শিখেছিলাম, যার চিন্তাধারা যেমন, অন্যদেরও তাদের সেইম মনে হয়! কিন্তু বিশ্বাস করেন, পৃথিবীর সব মানুষ ‘টাকার’ (ডলারও পরতে পারেন) কাছে তাদের ‘এথিক্স’ বিক্রি করে না। দুনিয়ার ‘সব মানুষের’ কাছে টাকাই ‘সব’ না। কিন্তু মানুষ নিজস্বতায় বিশ্বাস করে! স্রোতের বিপরীতেও যায়! রিস্ক নেয়!”
এরপর তিনি লিখেছেন, ‘জুন মাসে যখন আন্দোলন তুঙ্গে, ইন্টারনেট চলে যাওয়ার পরপর যেসব সেলিব্রেটিদের কাছে মেট্রোরেল বা বিটিভিতে আগুন দেওয়ার প্রতিবাদ করার জন্য ভিডিও বানাতে বলা হয়, আমিও তাদের মধ্যে একজন। আমি প্রথমে সময় চাই, বলি ভেবে জানাবো! স্বাভাবিক, সে সময় ডাইরেক্ট না করার মতো সাহস যোগাড় করতে পারিনি! তারাও বলে, সময় নেন। যেহেতু হোয়ায়অ্যাপ বন্ধ, তাও সিয়ামকে ডাইরেক্ট মেসেজ দেই এটা লিখে যে, সে কোনও ফোন পেয়েছে কিনা উক্ত ব্যক্তির কাছ থেকে। ও রিপ্লাই করে, পেয়েছে এবং না করে দিয়েছে। তখন সাহস পাই এবং আমিও তখন না বলি।'
পূর্বের কথা বলে বাহবা নিতে চান না বলেন জানান ফারিয়া। কারণ, রাজনীতির সাথে প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবেই জড়িত নন তিনি। অদূর ভবিষ্যতেও কোন ইচ্ছা কিংবা পরিকল্পনা নেই তার।
দেবিখ্যাত এই অভিনেত্রী লিখেছেন, `এইসব কথা অযথা বলে বেড়ানোর কোন ইচ্ছা আমার ছিল না! সেসময় এইটাই করার কথা, না বলেছি বলে আমি বিশেষ কোন ক্রেডিট নিতে চাইনি। যেহেতু আমি ব্যক্তিগতভাবে রাজনীতির সাথে প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষ, কোনও ভাবেই জড়িত না। অদূর ভবিষ্যতেও কোন ইচ্ছা কিংবা পরিকল্পনা নেই। তাও যখন দেখি কেউ লেখে ‘এরা তো ডলার খাইছে’ মার্কা কল্পনিক গল্প। হাসা ছাড়া কিছু করার থাকে না।’
অভিনেত্রী লিখেছেন, ‘ভাই আমি এমন অনেক মানুষকে চিনি যারা মন থেকে আওয়ামিলীগ ভালোবাসে কিন্তু জুলাইতে লাল ডিপি দিয়েছিলো! হয়তো জুলাইকে আমাদের স্বাধারণ মানুষের কাছে যেভাবে সেসময় পোট্রে করা হইছে এখন বিষয়টা তেমন নাই, কিন্তু সেসময় আপনি যদি মানুষ হয়ে থাকেন, অমানুষ না হন, তাহলে আপনি কোনও মানুষকে হত্যা করার প্রতিবাদ না করে থাকতে পারতেন না। আপনার রাজনৈতিক পরিচয় কিংবা মতাদর্শ যাই হোক!’
শেষে ফারিয়া লিখেছেন, ‘এই পোস্টের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের পলিটিক্স নিয়ে পোস্ট দেওয়া বন্ধ করলাম! কারণ, ফাইনালি আমি বুঝে গেছি, জাতি হিসাবে আমরা অত্যন্ত বেহায়া এবং নির্লজ্জ। আমরা কক্ষণও ভাল হবো না। যত আন্দোলন হোক, সরকার পরিবর্তন হোক, যতই শান্তিতে নোবেল পাওয়া মানুষ আসুক, আমাদের কেউ দুর্নীতি এবং চুরি করা থেকে আটকাতে পারবে না! শিশু, কিশোর, বৃদ্ধ যেই ক্ষমতা পাবে সেই তার অসৎ ব্যবহার করবে। আমি আর আমার নিজ দেশের কাছে আর কোন এক্সপেকটেশন রাখি না! পরিশেষে বলতে চাই, সত্যি সত্যি ডলার পেলে আসলে ভালই লাগতো! শ্রীলঙ্কা যাওয়ার আগে ২৫৩০০ টাকা দিয়ে ২০০ ডলার পাসপোর্টে এন্ডোর্স করতে খুবই কষ্ট হয়েছে!’
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: শবনম ফ র য়
এছাড়াও পড়ুন:
হাতকড়াসহ নৌকা থেকে হাওরে ঝাঁপ দিয়ে আওয়ামী লীগ নেতার পলায়ন
হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলায় হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার এক আওয়ামী লীগ নেতা হাতকড়াসহ নৌকা থেকে হাওরের পানিতে ঝাঁপ দিয়ে পালিয়েছেন। আজ সোমবার বেলা ৩টায় উপজেলার বাগহাতা হাওরে এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পালিয়ে যাওয়া আবদুল মজিদ বানিয়াচং উপজেলার কাগাপাশা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি। তিনি উপজেলার বাগাহাতা গ্রামের বাসিন্দা।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, বানিয়াচংয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় গত বছরের ৫ আগস্ট গুলিতে প্রাণ হারান ৯ জন। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলার একজন আসামি আবদুল মজিদ। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ প্রত্যন্ত ভাটি এলাকা কাগাপাশা ইউনিয়নের বাগাহাতা গ্রাম থেকে আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল মজিদকে গ্রেপ্তার করে। আজ সোমবার দুপুরে পুলিশ তাঁকে হাতকড়া পরিয়ে একটি নৌকায় করে বানিয়াচং থানার উদ্দেশে রওনা হয়। তাঁদের নৌকা উপজেলার বাগাহাতা হাওরে দিয়ে আসার সময় আবদুল মজিদের স্বজন ও অনুসারীরা বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন। এর মধ্যে হাতকড়াসহ নৌকা থেকে হাওরের পানিতে লাফ দিয়ে পালিয়ে যান আবদুল মজিদ। পরে খবর পেয়ে বানিয়াচং থেকে পুলিশের অতিরিক্ত সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযান চালালেও তাঁর কোনো সন্ধান পাননি।
হবিগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বানিয়াচং সার্কেল) প্রবাস কুমার সিংহ প্রথম আলোকে বলেন, আবদুল মজিদ উপজেলার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় ৯ হত্যাকাণ্ডের মামলার একজন আসামি। তাঁকে গ্রেপ্তারের পর থানায় নিয়ে আসার সময় তাঁর কিছু আত্মীয়স্বজন প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেন। এ সময় তিনি কৌশলে নৌকা থেকে লাফ দিয়ে পালিয়ে যান। তাঁকে ধরতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একাধিক দল কাজ করছে।