ইরানে ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদে ঢাকায় বিক্ষোভ মিছিল-সমাবেশ
Published: 20th, June 2025 GMT
ইরানে ইসরায়েলি হামলাসহ অব্যাহত গণহত্যার প্রতিবাদে রাজধানী ঢাকায় প্রতিবাদী সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে। প্রতিবাদী কর্মসূচিতে বলা হয়, আন্তর্জাতিক নিয়মকানুন-বিধিবিধান লঙ্ঘন করে ইরানে হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। অবৈধ রাষ্ট্র ইসরায়েল বিশ্বের শান্তিকামী মানুষের জন্য হুমকি। এ অবস্থায় মুসলিমবিশ্বকে ঐক্যবদ্ধভাবে ইরানের পাশে দাঁড়াতে হবে।
আজ শুক্রবার পবিত্র জুমার নামাজ শেষে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে প্রথমে প্রতিবাদী সমাবেশ হয়। পরে বিক্ষোভ মিছিল করা হয়। প্রতিবাদী কর্মসূচির আয়োজক ছিল খেলাফত মজলিসের ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ শাখা। এ ছাড়া কয়েকটি সংগঠন কর্মসূচিতে অংশ নেয়। সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিলে ‘আমার ভাই মরল কেন, জাতিসংঘ জবাব চাই’, ‘দুনিয়ার মুসলিম, এক হও লড়াই করো’ প্রভৃতি স্লোগান দেওয়া হয়।
সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন খেলাফত মজলিসের মহাসচিব আহমদ আবদুল কাদের। তিনি বলেন, যুগ যুগ ধরে অব্যাহতভাবে ফিলিস্তিনে গণহত্যা চালিয়ে ইসরায়েল সব ধরনের সভ্যতা ও মানবাধিকারের সীমা অতিক্রম করেছে। এক সপ্তাহ ধরে ইরানে হামলা চালিয়ে ইসরায়েল দেশটির অবকাঠামো ধ্বংসসহ অর্ধসহস্রাধিক মানুষের প্রাণহানি ঘটিয়েছে। ইরানের পাশে দাঁড়াতে ইসলামি সহযোগিতা সংস্থাকে (ওআইসি) অবিলম্বে জরুরি অধিবেশন আহ্বান করতে হবে। আরববিশ্বকে ঐক্যবদ্ধভাবে ইরানের পাশে দাঁড়াতে হবে।
ইরানে ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদে খেলাফত মজলিস ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আয়োজনে বিক্ষোভ মিছিল। ঢাকা, ২০ জুন.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইসর য় ল
এছাড়াও পড়ুন:
সুদানে ‘গণহত্যা’ হয়েছে
সুদানের এল-ফাশের শহর ও এর আশপাশের বিভিন্ন স্থানে গণহত্যা চলছে। কৃত্রিম ভূ–উপগ্রহের ছবি বিশ্লেষণ করে ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা এমন দাবি করেছেন। জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সেখানকার পরিস্থিতিকে ‘ভয়াবহ’ বলে উল্লেখ করেছেন।
২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে সুদানের সেনাবাহিনীর সঙ্গে দেশটির আধা সামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সসের (আরএসএফ) লড়াই চলছে। গত রোববার তারা এল-ফাশের দখল করে। এর মাধ্যমে প্রায় দেড় বছরের দীর্ঘ অবরোধের পর পশ্চিম দারফুর অঞ্চলে সেনাবাহিনীর সর্বশেষ শক্ত ঘাঁটিটিও ছিনিয়ে নেয় তারা।
শহরটি পতনের পর থেকে সেখানে বিচারবহির্ভূত হত্যা, যৌন সহিংসতা, ত্রাণকর্মীদের ওপর হামলা, লুটপাট এবং অপহরণের খবর পাওয়া যাচ্ছে। সেখানকার যোগাযোগব্যবস্থা প্রায় সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন।
এল-ফাশের থেকে পালিয়ে পার্শ্ববর্তী তাওইলা শহরে জীবিত বেঁচে ফেরা কয়েকজন ব্যক্তির সঙ্গে এএফপির সাংবাদিক কথা বলেছেন। সেখানে গণহত্যা হয়েছে জানিয়ে তাঁরা বলেন, শহরটিতে মা-বাবার সামনেই শিশুদের গুলি করা হয়েছে। প্রাণ বাঁচাতে পালানোর সময় সাধারণ মানুষকে মারধর করে তাঁদের মূল্যবান সামগ্রী লুট করা হয়েছে।
পাঁচ সন্তানের মা হায়াত শহর থেকে পালিয়ে আসা ব্যক্তিদের একজন। তিনি বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে থাকা তরুণদের আসার পথেই আধা সামরিক বাহিনী থামিয়ে দেয়। আমরা জানি না, তাদের কী হয়েছে।’
ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের হিউম্যানিটারিয়ান রিসার্চ ল্যাব বলেছে, গত শুক্রবার পাওয়া কৃত্রিম উপগ্রহের ছবিতে ‘বড় ধরনের কোনো জমায়েত চোখে পড়েনি।’ এ কারণে মনে করা হচ্ছে, সেখানকার জনগণের বড় একটি অংশ হয় ‘মারা গেছে, বন্দী হয়েছে কিংবা লুকিয়ে আছে।’ সেখানে গণহত্যা অব্যাহত থাকার বিভিন্ন ইঙ্গিত স্পষ্টভাবে দেখা গেছে।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, আল-ফাশের থেকে এখন পর্যন্ত ৬৫ হাজারের বেশি মানুষ পালিয়েছে। এখনো কয়েক হাজার মানুষ শহরটিতে আটকা পড়েছে। আরএসএফের সর্বশেষ হামলার আগে সেখানে প্রায় আড়াই লাখ মানুষ বসবাস করত।
শনিবার বাহরাইনে এক সম্মেলনে জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়োহান ভাডেফুল বলেন, সুদান একটি ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে। সেখানে বিশ্বের সবচেয়ে বড় মানবিক সংকট দেখা দিয়েছে। আরএসএফ নাগরিকদের সুরক্ষার অঙ্গীকার করেছিল। কিন্তু তাদের এই কর্মকাণ্ডের জন্য জবাবদিহির মুখোমুখি হতে হবে।