বেরোবিতে নোটিশ ছাড়াই ভর্তি ফি দ্বিগুণ, ভোগান্তিতে শিক্ষার্থীরা
Published: 30th, June 2025 GMT
নোটিশ ছাড়াই ভর্তি ফিসহ অনন্যা ফি বাড়ানোর অভিযোগ তুলেছে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩-২০২৪ সেশনের শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (৩০ জুন) শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বরাবর এক আবেদনপত্রের মাধ্যমে ভর্তি ফিসহ অন্যন্যা ফি কমানোর দাবি জানান।
এতে শিক্ষার্থীরা বলেন,আমাদের ভর্তি ও ফর্ম ফিলাপের ফি কোনোরকম পূর্ব বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই হঠাৎ করেই বৃদ্ধি করা হয়েছে, যা আমাদের জন্য অত্যন্ত কষ্টকর ও হতাশাজনক। অধিকাংশ শিক্ষার্থী মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত পরিবার থেকে আগত হওয়ায় এই অতিরিক্ত ফি প্রদান করা আমাদের জন্য অত্যন্ত কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।
আরো পড়ুন:
যবিপ্রবিতে মলিকিউলার লাইফ সায়েন্সে উদ্ভাবন নিয়ে সম্মেলন
জুলাই আন্দোলন ও ধর্ম নিয়ে কটাক্ষ করে ক্ষমা চাইলেন খুবির ২ শিক্ষার্থী
তাদের দাবি, ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের (১৬তম ব্যাচে) ভর্তি ও ফর্ম ফিলাপের ফি কমাতে হবে; অর্থনৈতিকভাবে অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ সহায়তা ও ফি মওকুফের ব্যবস্থা নিতে হবে; প্রতিটি সেমিস্টারের ভর্তি ও ফর্ম ফিলাপের ফি প্রদানের সময় কমপক্ষে ৭-১০ দিন পূর্বেই টাকার পরিমাণসহ পরিষ্কারভাবে জানাতে হবে।
সানোয়ার হোসেন নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যে বর্ধিত ফি বাড়িয়েছে, আমি তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। কারণ এখানে আমরা সবাই মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবার থেকে আসছি। যে ফি বাড়ানো হয়েছে, এটা আমাদের পরিবারের পক্ষ থেকে বহন করা খুবই কষ্টকর। আমরা চাই এটা কমিয়ে আনা হোক।”
হিতেশ রায় নামে আরেক শিক্ষার্থী বলেন, “আমরা সবাই এ ধরনের হুট করে ভর্তি ফি বাড়ানোর বিরুদ্ধে অবস্থান করছি। একটা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে এভাবে ভর্তি ফি বাড়ানোকে আমরা কখনোই সমর্থন করি না। আমাদের দাবি পূর্বের যা ভর্তি ফি বহাল ছিল তাই চালু থাক। প্রয়োজন হলে আমরা মানববন্ধন করব।”
ঢাকা/সাজ্জাদ/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব শ বব দ য আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
যুগোপযোগী করা হচ্ছে মাধ্যমিক শিক্ষাক্রম, আগামী বছরই চালু
মাধ্যমিক স্তরের চলমান শিক্ষাক্রম আরও যুগোপযোগী করে আগামী বছর থেকে নতুনভাবে চালু করতে যাচ্ছে সরকার। নতুন এ শিক্ষাক্রমে অভিজ্ঞতালব্ধ, জ্ঞাননির্ভর ও বাস্তবসম্মত পাঠদান হবে। মাধ্যমিক স্তরের ষষ্ঠ শ্রেণিতে প্রথমে এটি চালু হবে। পরে সপ্তম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত তা পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করা হবে। তবে শিক্ষাক্রম প্রণয়নের কার্যক্রম এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। ২৫ জুন এ নিয়ে এনসিটিবিতে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক করেন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার।
এনসিটিবি সূত্র জানায়, শিক্ষাক্রম প্রণয়ন করা হবে– এটা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে কোন প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হবে বা কোন পদ্ধতি প্রবর্তন করা হবে, তা নিয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। নতুন কারিকুলাম তৈরি নিয়ে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলমান। চলতি মাসে কারিকুলাম বিষয়ে কর্মশালা হওয়ার কথা ছিল। সেটি পিছিয়ে আগামী জুলাইয়ে করা হবে বলেও জানান এনসিটিবি কর্মকর্তারা।
এনসিটিবির সচিব সাহতাব উদ্দিন সমকালকে বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শিক্ষাক্রম যাচাই-বাছাই করে নতুন শিক্ষাক্রম তৈরি করা হবে। নতুন শিক্ষাক্রমে পাঠদান শুরু হবে ২০২৬ সাল থেকেই। প্রথমে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ও পরে ক্রম অনুসারে অন্য শ্রেণিতে তা চালু করা হবে।
স্বাধীনতার পর ১৯৭৭ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত সাতবার শিক্ষাক্রম বা শিক্ষাপদ্ধতিতে পরিবর্তন এনেছে সরকার। প্রথম পাঁচবার শিক্ষাক্রমের মূল থিম ঠিক রেখে ৫ থেকে ১০ শতাংশ পরিবর্তন করা হয়েছিল। তবে ২০১২ সালের শিক্ষাক্রমে বড়সড়ো পরিবর্তন আনা হয়। সে বারের শিক্ষাক্রমটি ‘সৃজনশীল পদ্ধতি’ নামে পরিচিত। এ পদ্ধতি প্রণয়নের ৯ বছরের মাথায় ২০২১ সালে আবারও নতুন একটি শিক্ষাক্রমের রূপরেখা অনুমোদন করা হয়।
সেই রূপরেখা অনুযায়ী, ২০২৩ সালে নতুন শিক্ষাক্রম চালু করেছিল তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার। তখন বলা হয়েছিল, শিক্ষার্থীদের মুখস্থনির্ভরতা কমিয়ে অভিজ্ঞতা ও কার্যক্রমভিত্তিক শিখনে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে এ শিক্ষাক্রম। বাস্তবতার পরিপ্রেক্ষিতে হাতে-কলমে শেখানো হবে।
অভিভাবকরা সেই শিক্ষাক্রম স্বাচ্ছন্দ্যে গ্রহণ করতে পারেননি। তাদের অভিযোগ ছিল, এমন শিক্ষাক্রমের কারণে শিক্ষার্থীরা লেখাপড়া থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। শিক্ষাক্রম বাতিলে টানা আন্দোলনও হয়। গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সরকার পতন হলে একই মাসের শেষ দিকে বাতিল করা হয় সেই শিক্ষাক্রম। ফিরিয়ে আনা হয় ২০১২ সালে প্রণীত আলোচিত সৃজনশীল শিক্ষাক্রম।
এনসিটিবির সংশ্লিষ্ট একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০২৩ সালের শিক্ষাক্রম নিয়ে বিতর্ক থাকলেও কিছু বিষয় ছিল, যা ছিল সময়োপযোগী। নতুন যে শিক্ষাক্রম প্রণয়ন করা হবে, সেখানে ২০২৩ ও ২০১২ সালের শিক্ষাক্রমের অনেক বিষয় থাকবে। ২০২৭ সালে চালু হওয়া শিক্ষাক্রম কেমন হবে, তা নির্ভর করবে নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত রাজনৈতিক সরকারের প্রত্যাশার ওপর।