নারী নির্যাতন প্রতিরোধে কাজ করবে ‘কুইক রেসপন্স টিম’: শারমীন এস মুরশিদ
Published: 3rd, July 2025 GMT
মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বলেছেন, নারী নির্যাতনের প্রতিকার ও প্রতিরোধে কাজ করবে ‘কুইক রেসপন্স টিম’। কুমিল্লা জেলার মুরাদনগরে সম্প্রতি নারীর ওপর যে বর্বর নির্যাতন ঘটে গেল, এ সহিংসতা প্রতিরোধে মুরাদনগর থেকে এর যাত্রা শুরু হলো আজ (বুধবার)। এই উদ্যোগ সারা দেশে অব্যাহত থাকবে।
বুধবার মুরাদনগর উপজেলা কার্যালয় অডিটোরিয়ামে উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত মতবিনিময় সভায় উপদেষ্টা এসব কথা বলেন। সম্প্রতি মুরাদনগরে নারীর প্রতি সংঘটিত ঘটনাবলি নিয়ে মুরাদনগর উপজেলার কর্মকর্তা ও সুধীজনদের সঙ্গে এ মতবিনিময় হয়। মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা জানায়।
নারী ও শিশুর প্রতি নির্যাতন মানবাধিকারের লঙ্ঘন উল্লেখ করে শারমীন এস মুরশিদ বলেন, ‘ধর্মীয় মূল্যবোধ আমাদের মধ্যে না থাকায় ছেলেদের দ্বারা মেয়েরা নির্যাতনের শিকার হচ্ছে বেশি। এই নির্যাতনের মাত্রা ভয়ংকর। আমাদের শিশুরা নিষ্ঠুরভাবে নির্যাতিত হচ্ছে এবং আশ্রয়হীন ও নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়েছে।’
মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বলেন, দেশে নারী ও শিশুর নির্যাতনের বিরুদ্ধে কঠোর আইন থাকলেও এ ধরনের অপরাধ প্রত্যাশিত মাত্রায় কমছে না। নারী ও শিশুর প্রতি পরিবারে, কর্মক্ষেত্রে, জনসমাগম স্থলে, অনলাইনসহ নানাভাবে বিভিন্ন ধরনের সহিংসতা ও অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে। তিনি বলেন, নারীর প্রতি সহিংসতা ও অপরাধ নিরসন সরকারের একার পক্ষে সম্ভব নয়। সরকারের পাশাপাশি তরুণ প্রজন্মসহ সমাজের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
এ সময় সাংবাদিকদের উদ্দেশে শারমীন এস মুরশিদ বলেন, নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ আইনের ১৪ ধারা এবং হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ভুক্তভোগীকে খারাপভাবে চিত্রিত করে প্রচার করা আইনবিরোধী কাজ। এদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে। যে অপরাধী, তার ছবি প্রকাশ করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন তিনি।
এর আগে মুরাদনগর উপজেলা প্রশাসনের কার্যালয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিকার ও প্রতিরোধে কুইক রেসপন্স টিম গঠন করেন উপদেষ্টা। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম র দনগর উপদ ষ ট উপজ ল অপর ধ
এছাড়াও পড়ুন:
মুরাদনগরে নারীকে ধর্ষণের নিন্দা ও বিচারের দাবি জানিয়ে ৩৮ নাগরিকের বিবৃতি
কুমিল্লার মুরাদনগরে নারীকে ধর্ষণ ও নির্যাতনের নিন্দার পাশাপাশি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবি জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন ৩৮ বিশিষ্ট নাগরিক। আজ সোমবার তাঁরা গণমাধ্যমে এই বিবৃতি পাঠান।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের বরাত দিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, গত বৃহস্পতিবার রাতে কুমিল্লার মুরাদনগরের একটি গ্রামে ঘরে ঢুকে এক নারীকে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। এ সময় শব্দ শুনে লোকজন এসে তাঁকে উদ্ধার করেন। কিন্তু ওই নারীকে বিবস্ত্র অবস্থায় দেখে কয়েকজন তাঁকে মারধর করেন এবং মারধরের ভিডিও ধারণ করেন। এই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। পরদিন শুক্রবার ওই নারী মুরাদনগর থানায় মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ মূল অভিযুক্ত ফজর আলী ও নির্যাতনের ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে মো. সুমন, রমজান আলী, মো. আরিফ ও মো. অনিক নামের চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
বিবৃতিতে ওই নারীকে ধর্ষণ ও এরপর নির্যাতন করে সেই ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় নিন্দা, প্রতিবাদ ও ধিক্কার জানানো হয়। পাশাপাশি ভুক্তভোগী নারীর নিরাপত্তাবিধানসহ তাঁর পরিবারের সদস্যদের মনোসামাজিক সহযোগিতা ও পূর্ণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সরকার, প্রশাসন ও কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানায়। একই সঙ্গে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত, অভিযুক্ত ব্যক্তিসহ নির্যাতনকারী ও ভিডিও ধারণ ও তা প্রচারে সহায়তাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয় বিবৃতিতে।
যেসব গণমাধ্যম নির্যাতিত নারীর ছবি প্রকাশ করেছে, তারা শুধু সংশ্লিষ্ট আইন ভঙ্গ করেনি, ভুক্তভোগীর নিরাপত্তা ও সামাজিক মর্যাদাকেও ক্ষুণ্ন করেছে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়। গণমাধ্যমগুলোকে এ ধরনের সংবাদ প্রচারে আরও দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান জানান এই বিশিষ্ট ব্যক্তিরা।
বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে রয়েছেন সুলতানা কামাল, খুশী কবির, ড. ইফতেখারুজ্জামান, সারা হোসেন, রাশেদা কে চৌধূরী, শিরীন পারভীন হক, শাহীন আনাম, সুমাইয়া খায়ের, জেড আই খান পান্না, শহিদুল আলম, গীতি আরা নাসরিন, শামসুল হুদা, সুব্রত চৌধুরী, শাহনাজ হুদা, রোবায়েত ফেরদৌস, নুর খান, মনীন্দ্র কুমার নাথ, ফস্টিনা পেরেইরা, রেহনুমা আহমেদ, ফারজানা ওয়াহিদ সায়ান, রেজাউর রহমান লেলিন প্রমুখ।