মুরাদনগরে দুই সন্তানসহ নারীকে হত্যা: ৮ আসামির তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর
Published: 9th, July 2025 GMT
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার কড়ইবাড়ী গ্রামে দুই সন্তানসহ নারীকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় হওয়া মামলায় আট আসামির তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
আজ বুধবার দুপুর ১২টার দিকে শুনানি শেষে কুমিল্লার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ১১ নম্বর আমলি আদালতের বিচারক মমিনুল হক তাঁদের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। কুমিল্লার আদালত পুলিশের পরিদর্শক সাদেকুর রহমান প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এর আগে তিন খুনের মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া আট আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গত সোমবার দুপুরে আদালতে সাত দিন করে রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। বুধবার রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য করা হয়। আজ শুনানির সময় সব আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন‘মূল হোতা’ গ্রেপ্তার না হওয়ায় চারদিক থেকে ‘খুনের হুমকি পাচ্ছে’ পরিবার০৭ জুলাই ২০২৫আদালত পুলিশের পরিদর্শক সাদেকুর রহমান বলেন, মামলাটি বর্তমানে তদন্ত করছে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। আট আসামির সাত দিন করে রিমান্ড আবেদন করা হলেও আদালত শুনানি শেষে প্রত্যেকের তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। আসামিদের কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পরে আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কারাগার থেকে হেফাজতে নেবেন।
আট আসামির মধ্যে ঘটনার ‘অন্যতম পরিকল্পনাকারী’ হিসেবে অভিযুক্ত মামলার ৩ নম্বর আসামি ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য বাচ্চু মিয়া রয়েছেন। বাচ্চু মিয়া ছাড়া অন্য সাতজন হলেন কড়ইবাড়ী গ্রামের বাসিন্দা মামলার ৫ নম্বর আসামি রবিউল আওয়াল, বাচ্চু মিয়ার ছেলে সন্দেহভাজন আসামি আতিকুর রহমান, রবিউল আওয়ালের ছেলে মো.
গত বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার কড়ইবাড়ী গ্রামে ‘মব’ সৃষ্টি করে মা, মেয়ে, ছেলেসহ একই পরিবারের তিনজনকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করা হয়। নিহত তিনজন হলেন কড়ইবাড়ী গ্রামের খলিলুর রহমানের স্ত্রী রোকসানা বেগম ওরফে রুবি (৫৩), তাঁর ছেলে রাসেল মিয়া (৩৫) ও মেয়ে তাসপিয়া আক্তার ওরফে জোনাকি (২৯)। এ ছাড়া গুরুতর আহত হয়েছেন রোকসানার আরেক মেয়ে রুমা আক্তার (২৭)। বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে তিনি চিকিৎসাধীন।
হত্যার ঘটনায় শুক্রবার রাতে ৩৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ২০ থেকে ২৫ জনকে আসামি করে থানায় মামলা করেন রোকসানা বেগমের বড় মেয়ে রিক্তা আক্তার। মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে স্থানীয় আকুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শিমুল বিল্লাহকে। মামলা হওয়ার পর সেনাবাহিনী, র্যাব ও পুলিশের সদস্যরা হত্যার ঘটনায় ওই আটজনকে গ্রেপ্তার করেন।
এদিকে তিন খুনের ঘটনায় নতুন করে কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেননি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। প্রধান আসামি চেয়ারম্যান শিমুল বিল্লাহ পলাতক। সোমবার রাতে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখায় (ডিবি) মামলাটি হস্তান্তর করা হয়।
মামলাটির নতুন তদন্ত কর্মকর্তা জেলা ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) নয়ন কুমার চক্রবর্তী আজ দুপুরে প্রথম আলোকে বলেন, প্রধান আসামিসহ মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারে আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে। আজ আট আসামির তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর হয়েছে, তাঁদের দু-তিন দিনের মধ্যে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নেওয়া হবে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র ত ন দ ন কর তদন ত কর র ঘটন য় র রহম ন কড়ইব ড় র আস ম ন আস ম সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
মুরাদনগরে নারীর ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার মূলহোতা শাহ পরান পাঁচদিনের রিমান্ডে
মুরাদনগরে এক নারীর ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার মূলহোতা শাহ পরানের পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। বুধবার কুমিল্লার ১১ নম্বর আমলী আদালতের বিচারক মমিনুল হক এ আদেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের পরিদর্শক মো. সাদেকুর রহমান।
২৬ জুন রাতে ওই নারী ধর্ষণের শিকার হন। পরে শাহ পরানসহ অন্যরা ওই নারী ও ধর্ষণে অভিযুক্ত ফজর আলীকে মারধর করে তার ভিডিও ভাইরাল করে দেন। ঘটনার দুই দিন পর ২৮ জুন ওই নারীর দায়ের করা পর্নোগ্রাফি আইনের মামলায় ৩ জুলাই গ্রেপ্তার হন শাহ পরান।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করলে আদালত তার পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এর আগে ২৮ জুন র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার এ মামলার ৪ জনের ৩ দিনের রিমান্ড শেষে মঙ্গলবার কারাগারে পাঠানো হয়। তারা হলেন, একই এলাকার রমজান, মোহাম্মদ আলী সুমন, মো. আরিফ ও মো. অনিক। এছাড়া ধর্ষণের অভিযোগে ওই নারীর দায়ের করা মামলার একমাত্র আসামি আহত ফজর আলী গ্রেপ্তার হয়ে পুলিশের পাহারায় কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মুরাদনগর থানার এসআই রুহুল আমিন জানান, শাহ পরান ওই নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার ফজর আলীর ছোট ভাই। তারই পরিকল্পনায় ওই নারী ও ফজর আলীকে নির্যাতনের ভিডিও ধারণ ও ভাইরাল করা হয়। তার ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হলে বিচারক পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। এর আগে ৪ জনকে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে ভিডিও ভাইরালকাণ্ডে যাদের নাম পাওয়া গেছে তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।