টয়লেটের কমোডে মুঠোফোন পড়ে গিয়েছিল। কমোড সরিয়ে সেপটিক ট্যাংকে নেমে সেই মুঠোফোন তুলতে গিয়েছিলেন রানা পট্টনায়ক। চিৎকার শুনে তাঁকে উদ্ধার করতে যান ভাই শ্রাবণ পট্টনায়ক। তাঁরা দুজনই সেখানে অচেতন হয়ে পড়েন। পরে তাঁদের উদ্ধার করতে সেপটিক ট্যাংকে নামেন আরও তিনজন। তাঁদের মধ্যে দুই সহোদরসহ চারজনের মৃত্যু হয়েছে।

এ ঘটনা মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার রাজঘাট ইউনিয়নের হরিণছড়া চা–বাগানের উত্তরলাইন এলাকার।

নিহত ব্যক্তিরা হলেন দুই ভাই রানা পট্টনায়ক (১৯) ও শ্রাবণ পট্টনায়ক (২৫); কৃষ্ণা রবিদাশ (২০) এবং নিপেন ফুলমারী (৩০)। অসুস্থ রবি বুনার্জী হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে বাড়িতে ফিরেছেন। তাঁরা সবাই চা–বাগানের শ্রমিকের সন্তান। শ্রাবণ পট্টনায়কের স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা। নিপেন ফুলমারীর স্ত্রী ও দুই মেয়ে রয়েছে।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় বাসিন্দা সঞ্জয় বলেন, ‘গতকাল বুধবার রাত ১১টার দিকে হঠাৎ চা–বাগানে চিৎকার শুনে আমি বের হই। গিয়ে দেখি সেখানে একটি কাঁচা পায়খানার গর্তে কয়েকজন পড়ে আছেন। পরে আমিসহ সবাই মিলে পাঁচজনকে গর্ত থেকে টেনে বের করি। প্রচণ্ড গন্ধ ও গ্যাস ছিল সেই গর্তে, আমি নিজেও সেখান থেকে বের হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ি।’

আরও পড়ুনশ্রীমঙ্গলে চা–বাগানে সেপটিক ট্যাংকে নেমে চার শ্রমিকের মৃত্যু৬ ঘণ্টা আগে

রাজঘাট চা–বাগানের প্যানেল চেয়ারম্যান সেলিম আহমেদ প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে বলেন, রানা পট্টনায়ক গতকাল রাতে তাঁর বাড়িসংলগ্ন কাঁচা টয়লেটে যান। সেখানে কমোডের নিচে মাটির গর্তের সেপটিক ট্যাংক। রানার মুঠোফোন কমোড দিয়ে সেপটিক ট্যাংকে পড়ে যায়। তিনি কমোডটি সরিয়ে ওই গর্তে নামেন। চিৎকার শুনে তাঁর ভাই শ্রাবণ পট্টনায়েক ছুটে আসেন। তাঁকে উদ্ধার করতে গেলে শ্রাবণও সেখানে আটকে পড়েন। লোকজনের চিৎকার শুনে নিপেন ফুলমারী, কৃষ্ণা রবিদাশ ও রবি বুনার্জীও গর্তে নামেন। পরে স্থানীয় লোকজন তাঁদের উদ্ধার করে প্রথমে শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখান থেকে তাঁদের মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। এ সময় চারজনকে মৃত্যু ঘোষণা করা হয়। আর অসুস্থ রবি বুনার্জীকে এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

হরিণছড়া চা–বাগানের ব্যবস্থাপক বিকাশ সিংহা বলেন, ‘এটি দুঃখজনক ঘটনা। গতকাল রাতে ঘটনাটি শোনার সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করি। একজনকে সিলেটে পাঠিয়েছিলাম, তিনি সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফিরে এসেছেন। ফিনলে পরিবারের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পাশে থাকব।’

সহকারী পুলিশ সুপার (শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ সার্কেল) আনিসুর রহমান বলেন, ‘আমাদের কাছে মনে হয়েছে এগুলো দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যু। নিহত ব্যক্তির পরিবার থেকে ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ গ্রহণ করার জন্য আবেদন করা হয়েছে। তাঁদের কোনো অভিযোগ নেই। মৃতদেহগুলো পরিবারের কাছে হস্তান্তর করার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পর ব র

এছাড়াও পড়ুন:

সংগীতশিল্পী দীপ মারা গেছেন

র‍াস্টফ ব্যান্ডের ভোকাল আহরার মাসুদ মারা গেছেন। সেমাবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। ভক্তদের কাছে দীপ নামে পরিচিত ছিলেন আহরার মাসুদ। 

মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টায় ব্যান্ডের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে এ তথ্য জানানো হয়। তবে এ শিল্পীর মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি। 

আরো পড়ুন:

৫০ শয্যার থানচি হাসপাতাল চলছে একজন চিকিৎসকে

সিজেএফবি পারফরম্যান্স অ্যাওয়ার্ড ঘোষণা

রাস্টফ ব্যান্ডের ফেসবুক পেজে দীপের মৃত্যুর খবর জানিয়ে লেখা হয়, “এমন এক বেদনাদায়ক মুহূর্তে সঠিক শব্দ খুঁজে পাওয়া বা কোনো শব্দ খুঁজে পাওয়া—প্রায় অসম্ভব। প্রিয় ভোকালিস্ট, বন্ধু ও সহযাত্রী আহারার ‘দীপ’ মাসুদের মৃত্যুসংবাদ আমাদের স্তম্ভিত করেছে। আমরা শোকে ভেঙে পড়েছি, এখনো অবিশ্বাসের ভেতর ডুবে আছি। গত রাতেই তিনি আমাদের ছেড়ে চিরবিদায় নিয়েছেন।” 

দীপের শূন্যতা ব্যাখ্যা করে লেখা হয়, “তার পরিবার, বন্ধু ও প্রিয়জনদের প্রতি আমাদের অন্তরের সমবেদনা ও প্রার্থনা। আপনাদের মতো আমরাও এই অপূরণীয় ক্ষতি বোঝার চেষ্টা করছি, চেষ্টা করছি দীপের অসাধারণ প্রতিভাকে সম্মান জানাতে এবং তার চেয়েও বড় কথা—মানুষ হিসেবে তিনি আমাদের কাছে যে অমূল্য ছিলেন, তাকে স্মরণ করতে। এই কঠিন সময়ে সবার কাছে অনুরোধ, দয়া করে পরিবার ও কাছের মানুষদের ব্যক্তিগত পরিসরকে সম্মান করুন এবং তার আত্মার শান্তির জন্য প্রার্থনা করুন। শান্তিতে ঘুমাও, দীপ। তোমার শূন্যতা চিরকাল বেদনাময় হয়ে থাকবে।” 

তরুণদের কাছে জনপ্রিয় আরেকটি ব্যান্ড পাওয়ারসার্চও দীপের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে। ব্যান্ডের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে লেখা হয়েছে, “স্মরণ করছি আহরার মাসুদ দীপকে। কিছুক্ষণ আগে আমরা হারিয়েছি আমাদের প্রিয় ভাই, ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং এক সত্যিকারের শিল্পীকে। এক্লিপস, কার্ল, ক্যালিপসো ও সবশেষ রাস্টফ ব্যান্ডের অবিস্মরণীয় কণ্ঠ আহরার মাসুদ দীপ আমাদের মাঝে আর নেই। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।” 

পাওয়ারসার্চ আরো লেখেন, “আহরার মাসুদ দীপ শুধু একজন ভোকালিস্টই ছিলেন না, তিনি ছিলেন শক্তি, সৃজনশীলতা আর আবেগের প্রতীক, যিনি তার চারপাশের সবাইকে অনুপ্রাণিত করেছেন; একই সাথে তার অত্যন্ত নমনীয় ব্যবহার, যা সবাইকে তাঁর শুভাকাঙ্ক্ষীই করে ফেলত! শান্তিতে থাকো ভাই, তুমি সব সময় আমাদের গল্পের অংশ হয়ে থাকবে।”

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভোররাতে রণক্ষেত্র: নরসিংদীতে নিহত ১, গুলিবিদ্ধ ৫
  • গাজায় ২৬ হাজার শিশু তীব্র অপুষ্টির শিকার: জাতিসংঘ
  • গ্রাহকের কাছে পেয়ারা খেতে চায় জনতা ব্যাংকের কর্মকর্তা
  • গল্পটা এই ক্লাসরুম থেকেই শুরু: ইরফান সাজ্জাদ
  • রাশিয়ায় এক বাঙালি বিপ্লবীর খোঁজে
  • আপনার এত সাহস হয় কী করে, সাংবাদিককে নায়িকা
  • দুবাইয়ে বিকৃত যৌন ব্যবসা চক্রের প্রধানকে চিহ্নিত করল বিবিসির এক অনুসন্ধান
  • মহানবী (সা.)–এর ইন্তেকালের পরে শাসন নিয়ে যা ঘটেছে
  • কুবিতে নতুন ১৮ বিভাগ ও ৪ ইনস্টিটিউট চালুর সুপারিশ
  • সংগীতশিল্পী দীপ মারা গেছেন