সেপটিক ট্যাংকে মুঠোফোন তুলতে গিয়ে আটকে পড়েন একজন, অন্যরা যান উদ্ধার করতে
Published: 10th, July 2025 GMT
টয়লেটের কমোডে মুঠোফোন পড়ে গিয়েছিল। কমোড সরিয়ে সেপটিক ট্যাংকে নেমে সেই মুঠোফোন তুলতে গিয়েছিলেন রানা পট্টনায়ক। চিৎকার শুনে তাঁকে উদ্ধার করতে যান ভাই শ্রাবণ পট্টনায়ক। তাঁরা দুজনই সেখানে অচেতন হয়ে পড়েন। পরে তাঁদের উদ্ধার করতে সেপটিক ট্যাংকে নামেন আরও তিনজন। তাঁদের মধ্যে দুই সহোদরসহ চারজনের মৃত্যু হয়েছে।
এ ঘটনা মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার রাজঘাট ইউনিয়নের হরিণছড়া চা–বাগানের উত্তরলাইন এলাকার।
নিহত ব্যক্তিরা হলেন দুই ভাই রানা পট্টনায়ক (১৯) ও শ্রাবণ পট্টনায়ক (২৫); কৃষ্ণা রবিদাশ (২০) এবং নিপেন ফুলমারী (৩০)। অসুস্থ রবি বুনার্জী হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে বাড়িতে ফিরেছেন। তাঁরা সবাই চা–বাগানের শ্রমিকের সন্তান। শ্রাবণ পট্টনায়কের স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা। নিপেন ফুলমারীর স্ত্রী ও দুই মেয়ে রয়েছে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় বাসিন্দা সঞ্জয় বলেন, ‘গতকাল বুধবার রাত ১১টার দিকে হঠাৎ চা–বাগানে চিৎকার শুনে আমি বের হই। গিয়ে দেখি সেখানে একটি কাঁচা পায়খানার গর্তে কয়েকজন পড়ে আছেন। পরে আমিসহ সবাই মিলে পাঁচজনকে গর্ত থেকে টেনে বের করি। প্রচণ্ড গন্ধ ও গ্যাস ছিল সেই গর্তে, আমি নিজেও সেখান থেকে বের হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ি।’
আরও পড়ুনশ্রীমঙ্গলে চা–বাগানে সেপটিক ট্যাংকে নেমে চার শ্রমিকের মৃত্যু৬ ঘণ্টা আগেরাজঘাট চা–বাগানের প্যানেল চেয়ারম্যান সেলিম আহমেদ প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে বলেন, রানা পট্টনায়ক গতকাল রাতে তাঁর বাড়িসংলগ্ন কাঁচা টয়লেটে যান। সেখানে কমোডের নিচে মাটির গর্তের সেপটিক ট্যাংক। রানার মুঠোফোন কমোড দিয়ে সেপটিক ট্যাংকে পড়ে যায়। তিনি কমোডটি সরিয়ে ওই গর্তে নামেন। চিৎকার শুনে তাঁর ভাই শ্রাবণ পট্টনায়েক ছুটে আসেন। তাঁকে উদ্ধার করতে গেলে শ্রাবণও সেখানে আটকে পড়েন। লোকজনের চিৎকার শুনে নিপেন ফুলমারী, কৃষ্ণা রবিদাশ ও রবি বুনার্জীও গর্তে নামেন। পরে স্থানীয় লোকজন তাঁদের উদ্ধার করে প্রথমে শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখান থেকে তাঁদের মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। এ সময় চারজনকে মৃত্যু ঘোষণা করা হয়। আর অসুস্থ রবি বুনার্জীকে এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
হরিণছড়া চা–বাগানের ব্যবস্থাপক বিকাশ সিংহা বলেন, ‘এটি দুঃখজনক ঘটনা। গতকাল রাতে ঘটনাটি শোনার সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করি। একজনকে সিলেটে পাঠিয়েছিলাম, তিনি সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফিরে এসেছেন। ফিনলে পরিবারের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পাশে থাকব।’
সহকারী পুলিশ সুপার (শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ সার্কেল) আনিসুর রহমান বলেন, ‘আমাদের কাছে মনে হয়েছে এগুলো দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যু। নিহত ব্যক্তির পরিবার থেকে ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ গ্রহণ করার জন্য আবেদন করা হয়েছে। তাঁদের কোনো অভিযোগ নেই। মৃতদেহগুলো পরিবারের কাছে হস্তান্তর করার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পর ব র
এছাড়াও পড়ুন:
আমার স্ত্রী খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করছেন না: জেডি ভ্যান্স
মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স তাঁর স্ত্রী উষা ভ্যান্স ক্যাথলিক গির্জার মাধ্যমে প্রভাবিত হয়ে কোনো একদিন খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করবেন বলে যে মন্তব্য করেছিলেন, তা নিয়ে তুমুল আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে। নিজের এ মন্তব্যের ব্যাখ্যা দিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে বিশাল এক পোস্ট দিয়েছেন তিনি।
জেডি ভ্যান্স বলেন, তাঁর যে মন্তব্য নিয়ে কথা হচ্ছে, সেটি মূল বক্তব্য থেকে কেটে নেওয়া একটি অংশ। কোন প্রসঙ্গে তিনি ওই মন্তব্য করেছেন, সেটা দেখানো হয়নি।
গত বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের মিসিসিপি অঙ্গরাজ্যে তরুণদের সংগঠন ‘টার্নিং পয়েন্ট ইউএসএ’র একটি অনুষ্ঠানে এক তরুণীর প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে ভ্যান্স তাঁর স্ত্রী উষা একদিন খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছিলেন। ভারতীয় বংশোদ্ভূত উষা হিন্দু সংস্কৃতিতে বেড়ে উঠেছেন।
স্ত্রী একদিন খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করবেন, এমন আশাবাদ ব্যক্ত করা ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারী অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন, ভ্যান্সের এ মন্তব্য কি তাঁর স্ত্রীকে ধর্ম পরিবর্তনের জন্য চাপ দেওয়ার ইঙ্গিত।
স্ত্রী একদিন খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করবেন, এমন আশাবাদ ব্যক্ত করা ভিডিও ভাইরাল হওয়া পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারী অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন, ভ্যান্সের এ মন্তব্য কি তাঁর স্ত্রীকে ধর্ম পরিবর্তনের জন্য চাপ দেওয়ার ইঙ্গিত।জবাব দিতে এক্স পোস্টে ভ্যান্স বলেন, একটি পাবলিক ইভেন্টে তাঁকে তাঁর আন্তধর্মীয় বিয়ে নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। তিনি ওই প্রশ্ন এড়িয়ে যেত চাননি, উত্তর দিয়েছেন।
মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট লিখেছেন, ‘প্রথমেই বলি, প্রশ্নটি আসে আমার বাঁ পাশে থাকা একজনের কাছ থেকে, আমার আন্তধর্মীয় বিয়ে নিয়ে। আমি একজন পাবলিক ফিগার, লোকজন আমার ব্যাপারে জানতে আগ্রহী এবং আমি প্রশ্নটি এড়িয়ে যেতে চাচ্ছিলাম না।’
এ বছর জানুয়ারিতে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিষেক অনুষ্ঠানে জেডি ভ্যান্স ও তাঁর স্ত্রী উষা ভ্যান্স