দীর্ঘ আট মাস বন্ধ থাকার পর দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে কাঁচা মরিচ আমদানি হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে ভারত থেকে দুটি ট্রাকে করে ১০ টনের বেশি কাঁচা মরিচ বাংলাদেশের হিলি স্থলবন্দরে প্রবেশ করে।

হিলি স্থলবন্দর পরিচালনাকারী পানামা পোর্ট লিংক লিমিটেড সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বিকেলে বগুড়ার এন পি ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড নামের একটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ৩ টন ৫০০ কেজি ও হিলি স্থলবন্দরের মেসার্স সততা বাণিজ্যালয় নামের একটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ৬ টন ৭২০ কেজি কাঁচা মরিচ আমদানি করে।

হিলি স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, সর্বশেষ গত বছরের ১৪ নভেম্বর হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে ৩টি ট্রাকে ৩১ টন ৮৩ কেজি কাঁচা মরিচ আমদানি হয়েছিল। এরপর ৭ মাস ২৬ দিন ভারত থেকে কাঁচা মরিচ আমদানি বন্ধ ছিল।

চলতি বছরের এপ্রিল থেকে মে মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত বিরামপুর ও আশপাশের উপজেলার খুচরা বাজারে কাঁচা মরিচ মানভেদে ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছিল। তবে মে মাসের শেষে দাবদাহের কারণে জমিতে থাকা কাঁচা মরিচ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে উৎপাদনও কমে যায়। ফলে সে সময় থেকে বিরামপুর ও হিলি বাজারে কাঁচা মরিচ খুচরা বাজারে মানভেদে ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছিল। তবে গতকাল সকালে বিরামপুরের খুচরা বাজারে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ ১৪০ থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি হয়।

বিরামপুর পৌর শহরের নতুনবাজার এলাকায় সবজির পাইকারি বাজারের কাঁচা মরিচের ব্যবসায়ী মানিক হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, গত মাসে খরার কারণে কাঁচা মরিচের উৎপাদন ব্যাহত হয়। এতে বাজারে সরবরাহ কমে গেছে, দামও বাড়তি। তিন দিন আগেও পাইকারিতে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ ১০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। গতকাল সকালে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ (বিজলী প্লাস) ১৩০ টাকা পাইকারি দরে বিক্রি করেছি। ভারত থেকে কাঁচা মরিচের আমদানি বাড়লে বাজারে দামও কমবে।

হিলি স্থলবন্দরের উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ কেন্দ্রের উপসহকারী সঙ্গনিরোধ কর্মকর্তা ইউসুফ আলী প্রথম আলোকে বলেন, হিলি স্থলবন্দর দিয়ে কাঁচা মরিচ আমদানির জন্য কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে এ পর্যন্ত তিনটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান আড়াই হাজার টন কাঁচা মরিচ আমদানির অনুমতি (আইপি) পেয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গতক ল

এছাড়াও পড়ুন:

যশোর-খুলনা মহাসড়ক যেন চাষের জমি

দেখলে মনে হবে চাষ দেওয়া কোনো জমি। এবড়োখেবড়ো কাদামাটির স্তূপ, তাতে বড় বড় গাড়ির চাকার দাগ। কোথাও গভীর গর্ত হয়ে জমে আছে পানি। যশোরের অভয়নগরে যশোর-খুলনা মহাসড়কের চিত্র এখন এমনই। এতে নওয়াপাড়া নদীবন্দরের কার্যক্রমেও বিরূপ প্রভাব পড়ছে। 
বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ার পর অভয়নগরের প্রেমবাগ থেকে চেঙ্গুটিয়া পর্যন্ত যশোর-খুলনা মহাসড়ক চলাচলের একেবারেই অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, গত কয়েক দিনের অতিবৃষ্টিতে সড়কটির প্রায় এক কিলোমিটার অংশ মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। গর্তে জমা পানি, কাদামাটির কারণে রাস্তাটি চেনার উপায় নেই। এর মধ্য দিয়েই ঝুঁকি নিয়ে থেমে থেমে চলছে যাত্রীবাহী বাস, পণ্যবাহী বড় বড় ট্রাক। খানাখন্দে চাকা পড়ে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। গত মঙ্গলবার পণ্যবোঝাই একটি ট্রাক উল্টে পাশের খাদে পড়ে যায়।
নওয়াপাড়া নদীবন্দর ও বেনাপোল স্থলবন্দরের বিভিন্ন পণ্য এ সড়ক দিয়ে ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য জেলায় পাঠানো হয়। দেশের চাহিদার ৬০ ভাগ আমদানীকৃত সার মোংলা থেকে নদীপথে নওয়াপাড়া নদীবন্দরে এনে খালাস করা হয়। সেই সার ট্রাকের মাধ্যমে উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হয়। বেহাল সড়কের কারণে নদীবন্দরে যেতে অনীহা দেখাচ্ছেন ট্রাকচালকরা। ফলে আমনের ভরা মৌসুমে সঠিক সময়ে সার কৃষকের কাছে পৌঁছানো নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। 
নওয়াপাড়া সার সিমেন্ট খাদ্যশস্য ব্যবসায়ী সমিতির নেতা নুরে আলম পাটোয়ারী বলেন, সড়কটির কারণে নওয়াপাড়া মোকাম থেকে সারসহ পণ্য পরিবহনে চালকরা আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। এতে বন্দরের বার্জ কার্গো থেকে সারসহ বিভিন্ন পণ্য সঠিক সময়ে খালাস করা যাচ্ছে না। এতে অতিরিক্ত সময় লাগায় ব্যবসায়ীদের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে। ভুক্তভোগী উজ্জ্বল কুমার কুণ্ডু বলেন, বৃষ্টি হলেই সড়কটি কাদামাটিতে একাকার হয়ে যায়। সড়কের গর্তে পানি জমে। আর বৃষ্টি না হলে গাড়ির চাকার সঙ্গে ওড়ে ধুলা। মোটরসাইকেলচালকরা বেশি দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন। 
যশোরের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী শাহজাদা ফিরোজ মোবাইল ফোনে জানান, ঠিকাদারদের ডাকা হয়েছিল, তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব আমরা এই সমস্যার সমাধান করব। ভারী বর্ষণের কারণে কাজে বিলম্ব হচ্ছে। আশা করছি, দ্রুতই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। আপাতত ইট ফেলে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছি।
মোংলা সমুদ্রবন্দরের সঙ্গে বেনাপোল স্থলবন্দর এবং নওয়াপাড়া নদীবন্দরের সঙ্গে দেশের বিভিন্ন জেলার যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম এই মহাসড়ক। খুলনা থেকে ঢাকাগামী বিভিন্ন পরিবহনের বাসও অভয়নগর হয়ে যাতায়াত করে। খুলনা থেকে চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়ায় যাতায়াতের এটিই প্রধান সড়ক। এখন বাসগুলোকে মনিরামপুর, সাতক্ষীরা ঘুরে যেতে হয়। 
বর্তমানে সড়ক ও জনপথ বিভাগের তত্ত্বাবধানে সড়কটির বিভিন্ন অংশে আরসিসি ঢালাইয়ের কাজ চলছে। ২ হাজার ৩৫২ মিটার কাজের মধ্যে ৭০২ মিটার পড়েছে যশোর মুরলী মোড়ে। বাকিটা নওয়াপাড়া থেকে প্রেমবাগ গেট পর্যন্ত বিভিন্ন অংশে। কাজটি বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩১ কোটি ৬৮ লাখ ৪৮ হাজার টাকা। কাজটি শুরু হয়েছে গত ২৩ মার্চ। 
এর আগে ২০১৮ সালে দু’জন ঠিকাদার ৩২১ কোটি টাকা ব্যয়ে সড়কের অভয়নগরের রাজঘাট থেকে যশোরের পালবাড়ি মোড় পর্যন্ত ৩৮ কিলোমিটার নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন করে। কাজটি ২০২২ সালের জুনে শেষ হয়। ওই সময় কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। তিন বছরের মধ্যেই সড়কটির বিভিন্ন অংশ বেহাল হয়ে পড়ায় আবার সংস্কারকাজ করতে হচ্ছে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • টানা বৃষ্টিতে লাফিয়ে বাড়ছে কাঁচামরিচের দাম
  • তিন মাস বন্ধ আমদানি-রপ্তানি
  • যশোর-খুলনা মহাসড়ক যেন চাষের জমি
  • যানজটে দিনভর নাকাল মানুষ
  • হিলি বন্দর দিয়ে ভারত থেকে কাঁচা মরিচ আমদানি শুরু
  • ভারত থেকে এলো ১০ টন কাঁচা মরিচ
  • ভারতের ত্রিপুরায় হাঁড়িভাঙ্গা আম উপহার পাঠালেন প্রধান উপদেষ্টা
  • ত্রিপুরা রাজ্য সরকারকে আম উপহার পাঠালেন প্রধান উপদেষ্টা