তিন জেলায় বিএনপির প্রার্থী পরিবর্তন চেয়ে বিক্ষোভ, সড়ক অবরোধে মানুষের দুর্ভোগ
Published: 15th, November 2025 GMT
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য বিএনপির মনোনীত প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে আজ শনিবার জামালপুর, টাঙ্গাইল ও সাতক্ষীরা জেলায় বিক্ষোভ, সড়ক অবরোধ ও মানববন্ধন হয়েছে। ফলে তিনটি জেলাতেই কর্মসূচি স্থানের আশপাশে যানজট তৈরি হয়েছে, ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে যানবাহনের যাত্রী ও চালকদের।
৩ নভেম্বর রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ২৩৭ আসনে বিএনপির প্রাথমিক প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এর পর থেকে দেশের বিভিন্ন আসনে বিএনপির মনোনয়ন চেয়ে আসা নেতাদের সমর্থকেরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। প্রায় প্রতিদিনই বিভিন্ন জেলায় নানা কর্মসূচি পালন করছেন মনোনয়নবঞ্চিতরা।
জামালপুর-২ (ইসলামপুর)আজ বেলা ১১টার দিকে জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলা শহরের বটতলা এলাকায় প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে আগুন জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ, মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেন স্থানীয় বিএনপির একটি পক্ষের কর্মী-সমর্থকেরা।
এই আসনে বিএনপির প্রার্থী উপজেলা বিএনপির সভাপতি এ ই সুলতান মাহমুদ। তবে একটি অংশ বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব এ এস এম আবদুল হালিমের মনোনয়নের দাবিতে আজকের কর্মসূচি পালন করেন।
জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার বটতলা এলাকায় বিএনপির একটি অংশের বিক্ষোভ। আজ শনিবার দুপুরে.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
নওগাঁ-৪ আসনে বিএনপির মনোনয়ন পুনর্বিবেচনার দাবিতে সড়ক অবরোধ, মানববন্ধন
নওগাঁ-৪ (মান্দা) আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী পুনর্বিবেচনার দাবিতে সড়ক অবরোধ, মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হয়েছে। আজ বুধবার বিকেলে উপজেলার নওগাঁ-রাজশাহী মহাসড়কের ফেরিঘাট এলাকায় এ কর্মসূচি আয়োজন করেন স্থানীয় বিএনপির একটি পক্ষের কর্মী-সমর্থকেরা।
নওগাঁ-৪ আসনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে উপজেলা বিএনপির সদস্য ইকরামুল বারীর (টিপু) নাম ঘোষণা করা হয়েছে। এ আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য এম এ মতিন। তিনি ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক আহ্বায়ক ছিলেন।
এম এ মতিনকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়ার দাবিতে তাঁর সমর্থকেরা আজ বিকেল চারটার দিকে উপজেলার ফেরিঘাট এলাকায় নওগাঁ-রাজশাহী ফেরিঘাট সেতু থেকে টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে মানববন্ধন করেন। মানববন্ধন শেষে ফেরিঘাট এলাকায় সড়ক অবরোধ করা হয়। বিকেল পৌনে চারটা থেকে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন মতিনের অনুসারীরা। এতে সড়কের দুই পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। প্রায় ৪৫ মিনিট পর বিক্ষোভকারীরা সরে গেলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন উপজেলার ভালাইন ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, পরানপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি গোলাম মোস্তফা, সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম শহীদ, বিষ্ণুপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, সাধারণ সম্পাদক মামুনুর রশিদ, কসব ইউনিয়নের সভাপতি আবুল হাশেম প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, তৃণমূলের মতামত উপেক্ষা করে নওগাঁ-৪ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী হিসেবে বিতর্কিত ব্যক্তি ইকরামুল বারীর নাম ঘোষণা করা হয়েছে। বিগত দিনে তিনি আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে আঁতাত করে চলেছেন। কোনো আন্দোলন-সংগ্রামে মাঠে ছিলেন না। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের সময় হরতালসহ বিভিন্ন আন্দোলনে এম এ মতিনের নেতৃত্বে তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা মাঠে ছিলেন। বক্তারা নওগাঁ-৪ আসনে মনোনয়নের বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করে মতিনকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়ার অনুরোধ জানান।
ভালাইন ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ বলেন, এম এ মতিনকে প্রার্থী ঘোষণা না করা হলে তৃণমূল বিএনপি বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলবে। প্রয়োজনে গোটা মান্দা অচল করে দেওয়া হবে।
কর্মসূচির ব্যাপারে জানতে চাইলে মনোনয়নবঞ্চিত এম এ মতিন বলেন, ‘সব আন্দোলন–সংগ্রামে মাঠে সক্রিয় ছিলাম। দুর্দিনে তৃণমূল নেতাদের পাশে ছিলাম, আছি ও থাকব। পুনর্বিবেচনা হলে মনোনয়ন পেতে পারি। দলই সবার আগে।’
এ বিষয়ে দলীয় মনোনয়ন পাওয়া ইকরামুল বারী জানান, দলীয় সিদ্ধান্তের প্রতি তিনি শ্রদ্ধাশীল। যাঁরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন, তাঁদের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি সমাধান করা হবে।