ইমাম মুহাম্মদ ইবনে ইদ্রিস আল-শাফেয়ি। কুরাইশ বংশের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র তিনি। তাঁর বংশধারা মহানবী মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রপিতামহ আবদে মানাফের সঙ্গে মিলিত হয়েছে। আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের চার মহান ইমামের মধ্যে তিনি তৃতীয়। তাঁর আগে রয়েছেন ইমাম আবু হানিফা এবং ইমাম মালিক (রহ.)।

তিনি এক অসামান্য প্রতিভার অধিকারী, যিনি ফিকহ তথা ইসলামের আইনশাস্ত্রকে সুশৃঙ্খল রূপ দিয়েছিলেন। দ্বিতীয় হিজরি শতকের ‘মুজাদ্দিদ’ বা সংস্কারক হিসেবেও তাঁর খ্যাতি রয়েছে। তিনিই প্রথম ব্যক্তি, যিনি ‘আর-রিসালা’ গ্রন্থ লিখে ‘উসুলে ফিকহ’ বা ইসলামি আইনশাস্ত্রের মূলনীতিগুলো লিপিবদ্ধ করেন।

তিনি ছিলেন ফিকহ, হাদিস ও তাফসির শাস্ত্রের ইমাম। সেই সঙ্গে তিনি ছিলেন একজন উঁচু দরের সাহিত্যিক ও কবি। যুগে যুগে মুসলিম উম্মাহর মাঝে তাঁর জ্ঞান ও প্রভাব আজও অম্লান।

জন্ম ও শৈশব

১৫০ হিজরি সনের রজব মাসে (৭৬৭ খ্রিষ্টাব্দ) ফিলিস্তিনের গাজা অঞ্চলে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। শৈশবেই তাঁর বাবা ইন্তেকাল করেন। বাবার চেহারাটুকুও তাঁর স্মৃতিতে ছিল না।

তাঁর মা ফাতিমা বিনতে আব্দুল্লাহ ছিলেন একজন মহীয়সী নারী। ছেলের বংশপরিচয় যেন হারিয়ে না যায়, সেই আশঙ্কায় তিনি দুই বছরের শিশু মুহাম্মদকে নিয়ে মক্কায় ফিরে আসেন। যেখান থেকে ইসলামের আলো চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছিল, মক্কার সেই পবিত্র ভূমিতেই তিনি বেড়ে ওঠেন।

জ্ঞানার্জন ও নিজেকে গড়ে তোলা

কিশোর বয়সেই তাঁর জ্ঞানতৃষ্ণা প্রকাশ পায়। প্রচণ্ড দারিদ্র্য সত্ত্বেও তাঁর মা তাঁকে শিক্ষকের কাছে পাঠান। মাত্র সাত বছর বয়সেই তিনি সম্পূর্ণ কোরআন মুখস্থ করে ফেলেন।

সেই দিনগুলোর কথা স্মরণ করে তিনি বলতেন, ‘আমি এতিম ছিলাম, আমার মায়ের কোনো অর্থকড়ি ছিল না। শিক্ষক যখন কোথাও যেতেন, আমি তাঁর স্থানে অন্যদের পড়াতাম, আর তাতেই তিনি সন্তুষ্ট থাকতেন।’

অসাধারণ মেধা আর তীক্ষ্ণ বুদ্ধির ছটা তাঁর মধ্যে ছোটবেলা থেকেই দেখা যায়। তাঁর মা তাঁকে পবিত্র কাবার শাইখদের কাছে কোরআনের তাফসির শিখতে পাঠান। এরপর তিনি হাদিস শিক্ষার দিকে ঝুঁকে পড়েন। তাঁর স্মরণশক্তি ছিল প্রবাদতুল্য।

ভাষার প্রতি তাঁর অনুরাগ ছিল প্রবল। তিনি আরবের বেদুইনদের কাছ থেকে বিশুদ্ধ আরবি ভাষা ও প্রাচীন কবিতা শিখতে আগ্রহী হন। কারণ, কোরআনের প্রকৃত অর্থ ও মর্ম বুঝতে হলে ভাষার অলংকার ও কাব্যশাস্ত্র জানা প্রয়োজন। তৎকালীন মিসরের ইমাম লাইস ইবনে সা’দ তাঁকে এই পরামর্শ দেন।

আরও পড়ুনইমাম তাবারি: জ্ঞানী, দুঃসাহসী, মর্মান্তিক জীবন০২ নভেম্বর ২০২৫ইসলামি ক্যালিগ্রাফিতে লেখা ইমাম শাফেয়ির নাম.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

জ্বালাও-পোড়াওয়ের রানি পালিয়ে বিদেশে আছেন: জাহিদ হোসেন

আওয়ামী লীগ দেশে আবারও জ্বালাও–পোড়াওয়ের রাজনীতি শুরু করেছে উল্লেখ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেছেন, এরাই তো সেই আওয়ামী লীগ, যারা শেরাটন হোটেলের সামনে দোতলা বাসের মধ্যে গানপাউডার দিয়ে ১২ জন সাধারণ নাগরিককে জ্বালিয়ে দিয়েছিল। এরাই তারা। কাজেই আজকে যারা আবারও যে জ্বালাও-পোড়াও শুরু হয়েছে, সেই জ্বালাও-পোড়াওয়ের রানি পালিয়ে এখন বিদেশে আছেন।

দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট পৌর শহরের ওসমানপুর বালিকা উচ্চবিদ্যালয় মাঠে আজ শুক্রবার দুপুরে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথাগুলো বলেন। জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে বিএনপির উপজেলা ও পৌর শাখা আয়োজিত এই ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প ও বিনা মূল্যে ওষুধ বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জাহিদ হোসেন।

আওয়ামী লীগ জনগণের অধিকারে বিশ্বাস করে না মন্তব্য করে জাহিদ হোসেন বলেন, ‘(আওয়ামী লীগ) হাজার হাজার মানুষকে পাখির মতো গুলি করে মেরেছে, আমার ভাই-বোনদেরকে গুম করেছে। তারপরও এদের রক্ত পিপাসা মিটে নাই। চৌদ্দ মাস না যেতেই আবারও তারা জনগণের ওপর জ্বালাও-পোড়াও শুরু করেছে। এরা প্রতিহিংসায় বিশ্বাস করে। এরা অনুশোচনা বা আত্মসমালোচনায় বিশ্বাস করে না। কোথায় তারা জনগণের কাছে ক্ষমা চেয়ে বলবে যে, “আমাদের সুযোগ দিন, আমরা আপনাদের পাশে দাঁড়াতে চাই।” সেটি না করে বরং তাদের নেত্রী জোর গলায় বলে, “আমি কোনো অন্যায় করিনি, অন্যায় করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।” হায়রে কপাল, এই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দিল কে। কে বলল গুলি চালাও, কে হেলিকপ্টার থেকে গুলি করার অনুমোদন দিল।’

আওয়ামী লীগের ‘কুকীর্তি’ যখন একে একে বেরিয়ে আসছে, বিচারের সম্মুখীন হচ্ছে, তখন তারা বিশৃঙ্খলার পাঁয়তারা করছে বলে উল্লেখ করেন জাহিদ হোসেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের গণতন্ত্রকামী মানুষ আজ ঐক্যবদ্ধ। মানুষের ঐকের কাছে এসব ষড়যন্ত্রকারীরা হেরে যাবে। জনগণের যে গণঐক্য তৈরি হয়েছে, সে ঐক্য জয়যুক্ত হবে। আগামী জাতীয় নির্বাচন সুশৃঙ্খলভাবে হবে। কোনো ষড়যন্ত্রই এই নির্বাচনকে আটকে রাখতে পারবে না।

মেডিকেল ক্যাম্পে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির দিনাজপুর জেলা শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ঘোড়াঘাট পৌর শাখার সভাপতি আবদুস সাত্তার (মিলন), ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মুক্তার হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক আল-মামুন, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবু সাইদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মাহাফুজার রহমান, উপজেলা যুবদলের সদস্যসচিব মোফাজ্জল হোসেন ও পৌর যুবদলের সদস্যসচিব সজীব কবিরসহ বিএনপির সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতা–কর্মীরা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ১৭ নভেম্বর ঘিরে প্রস্তুত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
  • আইনশৃঙ্খলার অবনতিতে গভীর উদ্বেগ জিএম কাদেরের
  • জ্বালাও-পোড়াওয়ের রানি পালিয়ে বিদেশে আছেন: জাহিদ হোসেন
  • গোপালগঞ্জে গণপূর্ত ও গ্রামীণ ব্যাংকে পেট্রোল বোমা, পিকআপে আগুন 
  • কক্সবাজারে নিরাপত্তা জোরদার 
  • ৩২ নম্বরের পরিস্থিতি দেখুন ছবিতে
  • ঢাকায় কড়া নিরাপত্তা, চলছে তল্লাশি
  • ধানমন্ডি ৩২ থেকে ‘সন্দেহভাজন’ কিশোরকে আটক
  • স্থিতিশীলতা বিঘ্নের পরিস্থিতি যাতে সৃষ্টি না হয়