জবিতে উদীচীর কক্ষে গাঁজা সেবন, নিষেধ করায় সাংবাদিকদের হুমকি
Published: 15th, November 2025 GMT
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শাখা উদীচীর কক্ষে গাঁজা সেবন করতে নিষেধ করায় এক সাংবাদিকদের হুমকি দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। সেখানে নিয়মিত গাঁজা সেবন করা হয় বলেও অভিযোগ রয়েছে।
শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) রাতে অবকাশ ভবনের চতুর্থ তলায় গাঁজা সেবনের প্রতিবাদ করায় এ হুমকির ঘটনা ঘটে।
আরো পড়ুন:
গাঁজা সেবনের অভিযোগে রাবির ৬ শিক্ষার্থী আটক
নড়াইলে হেরোইন ও ইয়াবাসহ নারী গ্রেপ্তার
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অবকাশ ভবনের চতুর্থ তলায় প্রেসক্লাবের সদস্যদের প্রশিক্ষণ কর্মসূচি চলছিল। এ সময় উদীচীর কক্ষ থেকে তীব্র গাঁজার গন্ধ পাওয়া গেলে কয়েকজন সাংবাদিক এর উৎস জানতে সেখানে যান। তারা সেখানে উদীচীর কোনো দায়িত্বশীল ব্যক্তি উপস্থিত আছেন কি না জিজ্ঞেস করে তার সঙ্গে কথা বলতে চান।
নাট্যকলা বিভাগের ১৬ ব্যাচের শোভন নামে এক শিক্ষার্থী নিজেকে দায়িত্বশীল হিসেবে পরিচয় দিলে সাংবাদিকরা তাকে জানান, এখান থেকে তীব্র গাঁজার গন্ধ আসছে। কাউকে তিনি গাঁজা সেবন করতে দেখেছেন কিনা জানাতে চান।
জবাবে শোভন নামের ওই শিক্ষার্থী জানান, অনেকেই সেখানে যাওয়া আসা করছে। কে গাঁজা সেবন করেছে তাকে তারা দেখেননি।
পরে সাংবাদিকরা উদিচির জানালার পাশে সেবন করা গাঁজার ছাই দেখতে পান। সেখান থেকে তীব্র গন্ধও ভেসে আসছে জানিয়ে সাংবাদিকরা বলেন, “এখান থেকেই গাঁজার গন্ধ আসছিল, এখনো আছে। আপনাদের মধ্যে হয়তো কেউ হতে পারে। এগুলো এখানে করা ঠিক না। গাঁজার গন্ধে পাশের রুমগুলোতেও থাকা যায় না।”
এই কথা বলে সাংবাদিকরা সেখান থেকে চলে আসতে চাইলে গাঁজা সেবনের অভিযোগ অস্বীকার করে উদীচীর কক্ষে উপস্থিত শিক্ষার্থীরা বলেন, “এখানে অনেকেই আসে, তাদের মধ্যে কেউ হতে পারে। আমরা কিছু জানি না।”
তবে সাংবাদিকরা জানান, ঘটনার সময় বাইরে কেউ প্রবেশ বা বের হননি। গন্ধের কারণে পাশের কক্ষে থাকা অসুবিধা হচ্ছে, এ কথা জানিয়ে তারা বের হয়ে আসার চেষ্টা করলে উদীচীর কক্ষের ভিতর থেকে নাট্যকলা বিভাগের ১৬ ব্যাচের মনন মোস্তাকিন নামের এক শিক্ষার্থী তেড়ে বেরিয়ে এসে সাংবাদিকের ওপর চড়াও হয়। তখন পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা আরো জানান, এ সময় উদীচীর কক্ষ থেকে নাট্যকলা বিভাগের ১৬ ব্যাচের শিক্ষার্থী মোস্তাকিন এসে সাংবাদিকদের ওপর ক্ষুব্ধ হন। সাংবাদিকরা তাকে উদীচীর দায়িত্বশীল কিনা জানতে চাইলে তিনি উল্টো চিৎকার করে বলেন, “আমিই উদীচীর দায়িত্বশীল। কি করার আছে কর।”
তখন সাংবাদিকরা তাকে বলেন, এখান থেকে গাঁজার গন্ধ আসছিল, আশেপাশে থাকা যাচ্ছে না গন্ধে। আপনাদের প্রেসিডেন্ট-সেক্রেটারির সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলব।
তখন মোস্তাকিন সবার উপস্থিতিতে সাংবাদিকদের দিকে তেড়ে এসে চিৎকার করে বলেন, “আমি গাঁজা খাই। ভিসি ভবনের সামনে চল, মাইকিং করে সবাইকে বলবো আমি গাঁজা খাই।” এরপর তিনি উপস্থিত সাংবাদিকদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন।
পরে ঘটনাস্থলে উপস্থিত কয়েকজন সিনিয়র সাংবাদিক এগিয়ে এসে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করলে তাদের সঙ্গেও দুর্ব্যবহার করা হয়। ওই সময় কক্ষে উপস্থিত দুই নারী শিক্ষার্থীও সাংবাদিকদের উদ্দেশে অশোভন অঙ্গভঙ্গি করেন। নিজেদের উদীচীর সদস্য পরিচয় দিয়ে নাট্যকলা ১৫ ব্যাচের শিক্ষার্থী সৌমিক বোসসহ উপস্থিত রুদ্র, মোস্তাকিনসহ আরো কয়েকজন উপস্থিত সাংবাদিকদের হুমকি প্রদান করেন।
পরে উদীচীর সাধারণ সম্পাদক আমরিন জাহান অপি এসে বলেন, “এমন ঘটনা আগেও অনেক ঘটেছে। অনেককেই আমিও সামনের জায়গাটায় গাঁজা সেবনসহ অনৈতিক কাজ করতে দেখেছি। আমি নিষেধও করেছি। উদীচীর আগের কমিটির অনেকে অফিসে বসেই এসব করতেন। আমরা দায়িত্ব নেওয়ার পর উদীচীর সদস্যদেরও বারবার এসব বিষয়ে নিষেধ করা হয়েছে। যারা দোষী তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসন ব্যবস্থা নিবে। আমরাও এ বিষয়ে অভিযোগ দেব। এর আগেও আমরা প্রক্টর অফিসে অভিযোগ দিয়েছিলাম।”
এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড.
ঢাকা/লিমন/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উদ চ র ক ন ট যকল উপস থ ত ব দ কর
এছাড়াও পড়ুন:
বিচারকের ছেলে হত্যা: লিমন ৫ দিনের রিমান্ডে
রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ মোহাম্মদ আব্দুর রহমানের বাসায় প্রবেশ করে তার ছেলেকে হত্যা এবং স্ত্রীকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে দায়ের করা মামলার একমাত্র আসামি লিমন মিয়ার (৩৪) পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
শনিবার (১৫ নভেম্বর) দুপুরে রাজশাহী মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-২ এর বিচারক মো. মামুনুর রশিদ এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
আরো পড়ুন:
আশরাফুলের সঙ্গে পরিকল্পিতভাবে প্রেমের সম্পর্ক গড়েন কোহিনূর: র্যাব
রাঙ্গুনিয়ায় শ্রমিক দল নেতাকে গুলি করে হত্যা
রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) মুখপাত্র গাজিউর রহমান এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি জানান, তদন্ত কর্মকর্তা রাজপাড়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আসাদুল ইসলাম জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে আসামির সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত তার পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
তিনি আরো জানান, শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চিকিৎসাধীন লিমন মিয়াকে হাসপাতাল ত্যাগের অনুমতি দেয়। এরপর তাকে আদালতে হাজির করা হয়। বেলা ১১টার পর থেকে তাকে আদালতের হাজতে রাখা হয়। দুপুর ২টার দিকে তাকে আদালতে তোলা হয়। পরে আদালত থেকে তাকে রাজপাড়া থানায় নেওয়া হয়েছে। সেখানে চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ড এবং হত্যাচেষ্টার ঘটনার ব্যাপারে লিমন মিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলেও জানান তিনি।
গত বৃহস্পতিবার শহরের তেরখাদিয়া ডাবতলা এলাকায় বিচারক মোহাম্মদ আব্দুর রহমানের বাসায় আকস্মিক প্রবেশ করেন গাইবান্ধার ফুলছড়ির বাসিন্দা লিমন মিয়া। এরপর তিনি বিচারকের ছেলে তাওসিফ রহমানকে (১৫) ছুরিকাঘাতে ও শ্বাসরোধে খুন করেন। লিমন মিয়ার ছুরিকাঘাতে বিচারকের স্ত্রী তাসমিন নাহার লুসি (৪৪) আহত হন। এ সময় ধ্বস্তাধ্বস্তিতে হামলাকারী লিমন মিয়াও আহত হন। পরে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) নিজে বাদী হয়ে লিমন মিয়াকে একমাত্র আসামি করে রাজপাড়া থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন বিচারক মোহাম্মদ আব্দুর রহমান। আসামি এ হত্যাকাণ্ড পূর্বপরিকল্পিতভাবে ঘটিয়েছেন বলে এজাহারে দাবি করা হয়েছে।
ঢাকা/কেয়া/বকুল