‘তাহির জামান ছিলেন সাহস, স্বপ্ন ও পরিবর্তনের প্রতীক’
Published: 22nd, July 2025 GMT
জুলাই অভ্যুত্থানে নিহত সাংবাদিক তাহের জামান প্রিয় হত্যার দ্রুত বিচার দাবি করেছেন বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষ। আজ মঙ্গলবার দুপুরে তাঁর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে রংপুর পাবলিক লাইব্রেরি হলরুমে দোয়া ও স্মরণসভায় এ দাবি করা হয়। স্মরণসভাটির আয়োজন করে ‘প্রিয় মঞ্চ’।
গত বছরের ১৯ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকায় গুলিতে নিহত হন তাহের জামান। তিনি ফটোসাংবাদিক ছিলেন।
বক্তারা বলেন, তাহেরের মৃত্যুর ঘটনায় গত ২১ আগস্ট নিউমার্কেট থানায় হত্যা মামলা করা হয়। এতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনসহ ৪০ জনকে আসামি করা হয়েছে। কিন্তু মামলাটি ধীরগতিতে চলছে। তাহির জামানসহ জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সব হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচার দাবি করেন তাঁরা।
বক্তারা আরও বলেন, এই স্মরণ অনুষ্ঠান শুধু তাহিরকে নিয়ে নয়, এটি একটি অবদমিত প্রজন্মের স্মরণ ও প্রতিরোধের বার্তা। তাহির জামান ছিলেন সাহস, স্বপ্ন ও পরিবর্তনের প্রতীক।
স্মরণসভার শুরুতে মাইলস্টোন কলেজে নিহত ব্যক্তিদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দুই মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এরপর আলোচনা ও স্মৃতিচারণা করেন সাংস্কৃতিক সংগঠক ইমতিয়াজ আহমেদ, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের রংপুর জেলার আহ্বায়ক চিনু কবির, গণসংহতি আন্দোলন রংপুর জেলার আহ্বায়ক তৌহিদুর রহমান, সাংস্কৃতিক কর্মী ও সংগঠক জিয়েনা ফেরদৌস, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সংগঠক শাহারিয়ার সোহাগ, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আহ্বায়ক ও সাবেক সমন্বয়ক রীনা মুর্মু, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রংপুর মহানগরের সাবেক মুখপাত্র নাহিদ হাসান খন্দকার প্রমুখ।
স্মরণসভায় সভাপতিত্ব করেন প্রিয় মঞ্চের সংগঠক ওয়াসিফা জাফর। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন মোতাওয়াক্কীল বিল্লাহ শাহ ও শাহারিয়া সিদ্দিকী।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন
চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।
লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।
চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।
লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।
প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।
লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’
তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?