গ্রামাঞ্চলে খিচুড়ি এখনো ‘কম দামি’ পদ। অতিথি আপ্যায়নে ভুলেও এই পদ ভাবা যায় না। বাড়িতে যেদিন কিছুই থাকে না, সেদিন খিচুড়ির কথা মনে পড়ে। তারপরও কম সমাদরে বেড়ে ওঠা এই খাবার কিন্তু কখনো বাঙালির হেঁশেল থেকে হারিয়ে যায়নি। শত শত বছর ধরে সে টিকে আছে নিজের মতো করে। আর বৃষ্টির দিনে খিচুড়ি হবে, এটা তো বাঙালিমাত্রেরই জানা। সামর্থ্যমতো কেউ রাঁধবেন মুগ আর কালিজিরা চালের ভুনা খিচুড়ি, কেউ সেদ্ধ চালে কয়েক রকম ডাল দিয়ে ঝরঝরে খিচুড়ি। আর চাল-ডালের সঙ্গে একটু আনাজপাতি আর এক হাঁড়ি পানি দিয়ে অপেক্ষাকৃত অসচ্ছল পরিবারে রান্না হবে বিশেষ এক খিচুড়ি—ল্যাটকা। অঞ্চলভেদে এই ল্যাটকাই কোথাও ঢিলা খিচুড়ি, ল্যাটা বা গলা খিচুড়ি হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। একে তো খিচুড়ি, তার ওপর আবার ঢ্যালঢেলে। এ রকম খাবার কি শহুরে বাবুদের মন জোগাতে পারবে! আলবত পারবে। সত্যি বলতে, পারছেও। টানা বৃষ্টিতে অন্ধকার হয়ে আসা দিনগুলোয় গ্রামে যে পাতলা খিচুড়ি তৈরি হতো, সেটাই এখন শহুরে নাগরিকদের শখের খাবার। এসি রেস্তোরাঁয় সিরামিকের প্লেটে অথবা পারিবারিক বিশেষ পার্টিতে পাতলা সেই খিচুড়ি নিজের স্থান পোক্ত করতে শুরু করেছে।

খিচুড়ি কি বাঙালির নিজস্ব খাবার

এই প্রশ্নের সঠিক উত্তর একবাক্যে দেওয়া দুষ্কর। কিছুটা ইতিহাস ঘাঁটা যাক। ১৬৭০ সালের ৩০ ডিসেম্বর প্রথমবার এর স্বাদ আস্বাদন করেছিলেন মোগল সম্রাট জাহাঙ্গীর। ভারতের খমভট থেকে আহমেদাবাদ যাওয়ার পথে কোসালা নামক এক গ্রামে লটবহর নিয়ে থেমেছিলেন সম্রাট। সেখানে নতুন ধরনের একটা খাবার খেয়েছিলেন জাহাঙ্গীর, স্থানীয় ভাষায় যাকে বলে ‘বাজরা খিচড়ি’। ‘গুজরাটিদের কেউ কেউ এটাকে লাদরা বলেও ডাকে, লিখেছিলেন সম্রাট। এভাবেই বাদশাহ জাহাঙ্গীরের হেঁশেলে প্রবেশ করে বিশেষ সেই খিচুড়ি। তবে এরও বহু আগে থেকেই মোগল রন্ধনশালায় খিচুড়ি রান্না হয়েছে, জাহাঙ্গীর হয়তো চেখে দেখেননি। আইন-ই-আকবরির প্রথম খণ্ডেই বাদশাহি হেঁশেল অধ্যায়ে অল্প যে কয়েকটি খাবারের নাম উল্লেখ আছে, তার মধ্যে ৩ নম্বরে চোখে পড়বে খিচুড়ি।

বাদশা জাহাঙ্গির ও যুবরাজ খুররমকে খাবার পরিবেশন করছেন নুরজাহান.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়ায় গুলিতে ৩ পুলিশ নিহত

যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যে গুলিতে অন্তত তিনজন পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও দুজন পুলিশ সদস্য।

অঙ্গরাজ্যটির পুলিশ কমিশনার ক্রিস্টোফার প্যারিস বুধবার সংবাদমাধ্যমকে হতাহতের এ তথ্য জানান।

ক্রিস্টোফার প্যারিসের বরাতে বিবিসি জানিয়েছে, স্থানীয় সময় বুধবার দুপুরের এ ঘটনায় সন্দেহভাজন বন্দুকধারীও পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন। আহত দুই পুলিশ সদস্যের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

পেনসিলভানিয়ার গভর্নর জশ শাপিরো ফিলাডেলফিয়া থেকে প্রায় ১৮৫ কিলোমিটার বা প্রায় ১১৫ মাইল পশ্চিমে নর্থ কোডোরাস টাউনশিপে ঘটনাস্থলে গেছেন।

কে বা কারা এ গুলিবর্ষণের পেছনে জড়িত, সে সম্পর্কে প্রাথমিকভাবে পুলিশ কোনো তথ্য দেয়নি।

অ্যাটর্নি জেনারেল পামেলা বন্ডি পুলিশের বিরুদ্ধে সহিংসতাকে ‘আমাদের সমাজের জন্য একটি অভিশাপ’ বলে অভিহিত করেছেন।

পামেলা বন্ডি আরও বলেন, স্থানীয় কর্মকর্তাদের সহায়তার জন্য ফেডারেল এজেন্টরা ঘটনাস্থলে গিয়েছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ