বরগুনা জেলা জুড়ে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলছে। ডেঙ্গু পরিস্থিতি এখনো সঙ্কটজনক। এ অবস্থায় সরকারি হাসপাতালগুলোতে স্যালাইন ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় ওষুধের সঙ্কট তীব্র হচ্ছে।

জেলা সিভিল সার্জন অফিসের তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৫১ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। জেলায় মোট ভর্তি রোগীর সংখ্যা ১৪১ জন। তাদের মধ্যে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ১০৩ জন  চিকিৎসাধীন। তালতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৩ জন, পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১২ জন, বামনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৮ জন, বেতাগী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দুইজন এবং আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তিনজন চিকিৎসা নিচ্ছেন। 

চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ২৫ জুলাই পর্যন্ত বরগুনায় সরকারি হিসাবে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে ৪ হাজার ৫৬৬ জন। জেনারেল হাসপাতালে মারা গেছেন ছয়জন, বিভিন্ন হাসপাতালে মারা গেছেন ৩০ জন।

আরো পড়ুন:

যুদ্ধবিমান দুর্ঘটনা ও গণঅভ্যুত্থানে আহতদের দেখতে সিএমএইচে নৌ উপদেষ্টা

উত্তরায় বিমান বিধ্বস্ত: বার্ন ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন ৬০ জন

এই যখন ডেঙ্গুর পরিসংখ্যান, তখন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে দেখা দিয়েছে স্যালাইন সঙ্কট। 

বরগুনার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে মঙ্গলবার (২২ জুলাই) ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হন বরগুনা সদরের ধূপতি এলাকার বাসিন্দা গোসাই সনদ (৫১)। তিনি বলেন, “হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসে ভোগান্তির শিকার হচ্ছি। চিকিৎসক নরমালিন স্যালাইন দিয়েছেন প্রতিদিন দুইটা অথচ আমাকে দিচ্ছে একটা। আরেকটা কিনতে হচ্ছে বাইরে থেকে।” 

ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালের চিকিৎসা নিতে আসা লাকুরতলা এলাকার সোলাইমান, থানাপাড়া এলাকার ইউসুফ মুন্সী ও কলেজ রোড এলাকার মাসুম জানান, হাসপাতালে ভর্তি হয়েও বেশিরভাগ ওষুধ কিনতে হচ্ছে বাইরে থেকে। সারা বাংলাদেশের মধ্যে বরগুনায় ডেঙ্গু মহামারি আকার ধারণ করেছে। অথচ এই হাসপাতালে মন্ত্রণালয়ের বিশেষ কোনো নজরদারি নেই।” 

বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা.

তাজকিয়া সিদ্দিকা রাইজিংবিডিকে বলেন, “আমরা দিনরাত পরিশ্রম করছি। কোনো চিকিৎসক ছুটিও নিচ্ছেন না। জরুরি অবস্থা মোকাবিলায় আমরা তৎপর। রোগীদের সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।” 

তিনি বলেন, “অনেকে সঠিক সময়ে হাসপাতালে না এসে একদম শেষ পর্যায়ে আসছেন। তখন আমাদের কিছুই করার থাকে না। আবার অনেকে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ৩/৪ লাখ প্লাটিলেট নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে থাকছেন। ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে এখনো ওষুধ বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে ১০০ শয্যার। তাই সংকট থাকাটা বিচিত্র কিছু নয়।” 

তালতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন লালপাড়া এলাকার মোছিং সান ডিস্ক। তিনি বলেন, “প্লাটিলেট কমে ৪৬ হাজারে এসেছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরীক্ষা করানো যাচ্ছে না। স্যালাইন ও ওষুধ সবটাই কিনতে হচ্ছে বাইরের ফার্মেসি থেকে। যাদের সামর্থ্য আছে তারা কিনতে পারছেন। যারা একান্তই গরিব, তারা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। নামেই শুধুমাত্র সরকারি, এখানে কোনো সুবিধাই পাওয়া যাচ্ছে না।” 

তালতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা সুমন পোদ্দার বলেন, “ওষুধের সঙ্কট আছে। আমরা চেষ্টা করছি‌।” 

বরগুনার সিভিলি সার্জন ডা. মোহাম্মদ আবুল ফাত্তাহ বলেন, “এই জেলায় ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। কোনো ভাবেই কমছে না। ওষুধ সঙ্কট কাটাতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিতভাবে জানিয়েছি।” 

তিনি আরো বলেন, “ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আমরা জেলার প্রতিটি ওয়ার্ড, ইউনিয়ন ও উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে স্বাস্থ্য সেবা জোরদার করেছি। এখন মানুষকে সচেতন হতে হবে।” 

ঢাকা/ইমরান/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর বর শ ল স ব স থ য কমপ ল ক স স য ল ইন এল ক র বরগ ন উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

ঝিনাইদহে গাছ থেকে পড়ে শ্রমিকের মৃত্যু 

ঝিনাইদহের শৈলকূপায় গাছ থেকে পড়ে খায়রুল ইসলাম (৫৫) নামে এক কাঠ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার (৩ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে উপজেলার দুধসর গ্রামে দুর্ঘটনার শিকার হন তিনি। খায়রুল একই উপজেলার খন্দকবাড়িয়া গ্রামের মুকাদ্দেস আলীর ছেলে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, খায়রুল আজ সকালে গাছ কাটার জন্য দুধসর গ্রামের হাজরাতলায় যান। বেলা ১১টার দিকে একটি গাছের ডাল কাটার সময় পা পিছলে তিনি নিচে পড়ে যান। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানকার চিকিৎসক খায়রুলকে মৃত ঘোষণা করেন।

আরো পড়ুন:

বরিশালে অপসো ফার্মার ৫০০ শ্রমিক ছাঁটাইয়ের অভিযোগ

আশুগঞ্জ সার কারখানায় গ্যাস সংযোগের দাবিতে সমাবেশ

দুধসর গ্রামের বাসিন্দা আব্দুর রহিম জানান, হাজরাতলায় একটি রেইনট্রি গাছ কাটার সময় খায়রুল নামে এক শ্রমিক গাছ থেকে পড়ে গিয়ে গুরুত্ব আহত হন। সবাই মিলে তাকে উদ্ধার করে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। 

শৈলকূপা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাসুম খান জানান, গাছ থেকে পড়ে এক কাঠ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। পরিবারে কোনো অভিযোগ না থাকায় মরদেহ হস্তান্তর করা হবে।

ঢাকা/শাহরিয়ার/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ