খাগড়াছড়ি শহরের বর্জ্য বাঙ্গাল কাটি ছড়া দিয়ে ভেসে আসার কারণে গ্রামের বাসিন্দারা নানা দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে। এভাবে বছরের পর বছর চললেও প্রতিকার মেলেনি। 

খাগড়াছড়ি পৌর শহরের বর্জ্য খাগড়াছড়ি-চট্টগ্রাম-ঢাকা সড়কের আলুটিলা থেকে নামার পথে মহালছড়া এলাকায় ফেলা হয়। ২০ থেকে ২২ বছর ধরে সেখানে বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। এই বর্জ্য বাঙ্গাল কাটি ছড়া দিয়ে ভেসে গিয়ে চেঙ্গী নদীতে পড়ে। বিশেষ করে বর্ষায় সময় বর্জ্য বাঙ্গাল কাটি ছড়া দিয়ে ভেসে যায়।

সেই বর্জ্য ভেসে যাওয়ার কারণে বাঙ্গাল কাটি ছড়ার দুই পাশের গ্রামের বাসিন্দারা নানা সমস্যায় পড়ছে। বর্জ্য ভেসে যাওয়ার কারণে পানি দুষিত হচ্ছে এবং পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে। দুষিত পানিতে কাপড় ধোয়া থেকে শুরু করে গোসল করতে হয় বাঙ্গাল কাটি গ্রামের শতাধিক পরিবারের সদস্যদের। পাহাড়ি এলাকা হওয়ায় পাথরের কারণে এখানে সবাই টিউওয়েল বসাতে পারে না। তাই বাধ্য হয়ে দুষিত পানিতে গৃহস্থলীর কাজে ব্যবহার করতে হয়।  

আরো পড়ুন:

চট্টগ্রামে বৃষ্টি অব্যাহত, দুর্ভোগ

মৌসুমের সর্বোচ্চ বৃষ্টি ফেনীতে, মুহুরী নদীর ৭ স্থানে বাঁধে ভাঙন

দুষিত পানি ব্যবহারের কারণে সেখানকার বাসিন্দাদের এলার্জি, কলেরা, ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন পানিবাহিত রোগে ভুগতে হচ্ছে।

বাঙ্গাল কাটি গ্রামের বাসিন্দা অনুপম ত্রিপুরা ও নয়ন ত্রিপুরা বলেন, ‘‘খাগড়াছড়ি পৌরসভার বর্জ্য বাঙ্গাল কাটি ছড়া দিয়ে ভেসে আসার কারণে তারা ছড়াতে গোসল করা, কাপড় ধোয়া যায় না। অনেককে নিরূপায় হয়ে গোসল করতে হয়। তখন শরীরে ডায়রিয়া, কলেরা ও এলার্জিসহ বিভিন্ন রোগে ভুগতে হয়। পাহাড়ি এলাকা হওয়ায় এখানে টিউবওয়েল বসানো যায় না।’’ 

সেচ্ছাসেবী সংগঠন ভলানটিয়ার ফর বাংলাদেশ খাগড়াছড়ি শাখার জনসংযোগ কর্মকর্তা জাহেদ হোসেন বলেন, ‘‘পৌরসভার বর্জ্য ছড়া দিয়ে ভেসে আসার কারণে ২০ থেকে ২২ বছর ধরে বাঙ্গাল কাটি গ্রামের লোকেরা কষ্ট পাচ্ছে। ময়লা ফেলার স্থান অন্য জায়গা সরানো উচিত, যেখানে পরিবেশ ও মানুষের ক্ষতি হবে না।’’  

খাগড়াছড়ির পৌরসভার পৌর প্রশাসক নাজমুন আরা সুলতানা বলেন, ‘‘আমরা চাচ্ছি, বর্জ্যের সুস্থ ব্যবস্থাপনা করতে কিন্তু উপযুক্ত স্থানের অভাবে বার বার ব্যর্থ হচ্ছি। কুমিল্লা টিলায় ডাম্পিং স্টেশন করা হয়েছে, সেটিও জনবহুল এলাকা হওয়ায় জনগণের বাধার কারণে সেখানেও বর্জ্য ফেলা যাচ্ছে না। তবে সুস্থ ব্যবস্থাপনা কীভাবে করা যায়, তা চেষ্টা করছি।’’  

তিনি আরো বলেন, ‘‘বাঙ্গাল কাটি গ্রামে আমি গিয়েছি। আমি দেখেছি, তাদের দুর্বিসহ জীবনযাপন। বর্জ্য ফেলার জন্য এমন জায়গা দেখছি, যেখানে পরিবেশ এবং মানুষের ক্ষতি হবে না।’’
 

ঢাকা/রূপায়ন/বকুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর বর জ য ব ঙ গ ল ক ট র বর জ য

এছাড়াও পড়ুন:

৪৪তম বিসিএসের ৪০০ রিপিট ক্যাডার বাদ দিচ্ছে সরকার, নতুন সিদ্ধান্ত আসছে

৪৪তম বিসিএসে পুনরাবৃত্তি হওয়া ৪০০ ক্যাডারকে বাদ দেওয়া হচ্ছে। তারা ৪৩তম বিসিএসে বা আগের বিসিএসে যে ক্যাডারে আছেন ৪৪তম বিসিএসেও একই ক্যাডার পেয়েছিলেন। এই ৪০০ ক্যাডারকে নিয়ে সিদ্ধান্ত দ্রুতই হবে বলে জানিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা।

প্রথম আলোকে ওই কর্মকর্তা আজ বৃহস্পতিবার বলেন, ৪০০ ক্যাডারকে নিয়ে পিএসসির কিছু সুপারিশ আমরা পেয়েছি। এগুলো বাদ দিতে সরকার কাজ করছে। বাদ দিলে কি করা হবে তা নিয়েও কাজ করছে সরকার। এখন পিএসসিকে এ বিষয় নিয়ে একটি মতামত দিতে বলা হয়েছে। পেলেই তা পর্যালোচনা করে এ বিষয়ে প্রজ্জাপন দেওয়া হবে। এটি যাতে স্থায়ীভাবে বন্ধ হয় সেজন্য আমরা কাজ করছি।

আরও পড়ুন৪৯তম বিসিএস: অনলাইন আবেদন ও ফি জমাদানে পিএসসির নতুন নির্দেশনা৩০ জুলাই ২০২৫

৪৪তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল ৩০ জুন প্রকাশিত হয়। এতে বিভিন্ন ক্যাডারে ১ হাজার ৬৯০ জনকে নিয়োগের জন্য সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) সাময়িকভাবে মনোনীত করেছে।

প্রকাশিত ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ১ হাজার ৬৯০ জনের মধ্যে প্রায় ৪০০ জন প্রার্থী একাধিকবার বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিয়ে একই ক্যাডারে পুনরায় সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন (রিপিট ক্যাডার)। এই ৪০০ জনের তালিকা পেয়েছে পিএসসি। এই রিপিট ক্যাডার বন্ধে বিধি সংশোধন করা হচ্ছে। এ–সংক্রান্ত চিঠি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠায় পিএসসি।

পিএসসি জনপ্রশাসনের চিঠিতে বলছে, এই রিপিট ক্যাডারের ফলে নতুন ও অপেক্ষমাণ মেধাবীরা সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এটি প্রশাসনিক কাঠামো ও জনসম্পদের সদ্ব্যবহারে বাধা সৃষ্টি করছে। এখন এটি অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে।

একাধিকবার বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিয়ে একই ক্যাডারে পুনরায় সুপারিশপ্রাপ্ত হওয়া বন্ধ করার জন্য বিদ্যমান বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বয়স, যোগ্যতা ও সরাসরি নিয়োগের জন্য পরীক্ষা) বিধিমালা ২০১৪–এর বিধি-১৭ এর শেষে নিম্নোক্ত শর্ত যুক্ত করার প্রস্তাব করেছে পিএসসি।

আরও পড়ুনসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের ৩৪০০০ শূন্য পদ পূরণে উদ্যোগ২৯ জুলাই ২০২৫শর্তে কী আছে—

পিএসসির চিঠিতে শর্ত হিসেবে বলা আছে, ‘তবে শর্ত থাকে যে এই বিধির আওতাধীন সরকারের নিকট সুপারিশ প্রেরণ করিবার প্রাক্কালে, কিংবা কোনো বিসিএস পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফল প্রস্তুতকালে, সংশ্লিষ্ট প্রার্থী কর্তৃক প্রদত্ত লিখিত তথ্যের ভিত্তিতে কিংবা কমিশন কর্তৃক নির্ধারিত কোনো পদ্ধতির মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে যদি কমিশনের নিকট প্রতীয়মান হয় যে এই বিধির আওতাধীন মনোনয়নযোগ্য কিংবা মনোনীত কোনো প্রার্থী একই ক্যাডার পদ, সমপদ কিংবা প্রার্থীর আগ্রহ নেই এমন কোনো সার্ভিস বা ক্যাডার পদে পুনরায় মনোনীত হইবার কারণে মনোনীত সার্ভিসে বা ক্যাডার পদে যোগদান করিতে অনিচ্ছুক, এইরূপ ক্ষেত্রে কমিশন অনাগ্রহ প্রকাশকারী প্রার্থীকে এই বিধির আওতাধীন সরকারের নিকট সুপারিশ করা হইতে বিরত থাকিতে পারিবে; আরও শর্ত থাকে যে প্রথম শর্তাংশে বর্ণিত বিধান অনুযায়ী কোনো প্রার্থীকে সুপারিশ করা হইতে বিরত থাকিবার কারণে উদ্ধৃত শূন্য পদে নিয়োগের লক্ষ্যে সুপারিশ প্রেরণ করিবার জন্য উত্তীর্ণ প্রার্থিগণের মধ্য হইতে মেধাক্রম অনুযায়ী প্রার্থী নির্বাচনপূর্বক কমিশন সম্পূরক ফলাফল প্রকাশ এবং সার্ভিসে বা ক্যাডার পদে নিয়োগের জন্য সরকারের নিকট সুপারিশ প্রেরণ করিতে পারিবে;আরও অধিকতর শর্ত থাকে যে দ্বিতীয় শর্তাংশে উল্লিখিত সম্পূরক ফলাফল দ্বারা বা উহার পরিণতিতে প্রথম ঘোষিত ফলাফলে সার্ভিস বা ক্যাডার পদের জন্য মনোনীত কোনো প্রার্থীর প্রতিকূলে কোনো পরিবর্তন ঘটানো কিংবা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যাইবে না।’

আরও পড়ুনবস্ত্র অধিদপ্তরে বড় নিয়োগ, চাকরির সুযোগ ১৯০ জনের২৯ জুলাই ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ