ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভসহ বিভিন্ন শহরে নতুন একটি আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। আইনটি ইউক্রেনের দুর্নীতিবিরোধী সংস্থাগুলোর স্বাধীনতাকে হুমকির মুখে ফেলেছে। ২২ জুলাই ইউক্রেনের পার্লামেন্টে তড়িঘড়ি আইনটি পাস করা হয়। প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি সেদিনই আইনটিতে স্বাক্ষর করেন।

এই আইনে ইউক্রেনের জাতীয় দুর্নীতিবিরোধী ব্যুরো এবং বিশেষ দুর্নীতিবিরোধী প্রসিকিউটরের কার্যালয় দেশটির প্রসিকিউটর জেনারেল বা প্রধান আইন কর্মকর্তার অধীনে চলে গেছে। রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা জেলেনস্কির নিয়োগ করা ব্যক্তি। জেলেনস্কির দাবি, দুর্নীতিবিরোধী সংস্থায় রুশ অনুপ্রবেশ ঠেকানোর জন্যই এ পদক্ষেপ জরুরি ছিল।

সমালোচকেরা মনে করেন, এই আইনের আসল উদ্দেশ্য হলো প্রেসিডেন্টকে এমন ক্ষমতা দেওয়া, যাতে তিনি নিজের ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের বিরুদ্ধে চলা দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত বন্ধ করে দিতে পারেন। অভিযুক্ত ব্যক্তিদের তালিকায় রয়েছেন জেলেনস্কির ঘনিষ্ঠ মিত্র ও সাবেক উপপ্রধানমন্ত্রী ওলেক্সি চেরনিশভ।

বিরোধী রাজনীতিবিদেরা ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা আইনটিকে এমন একটি দৃষ্টান্ত বলে বিবেচনা করছেন, যেখানে প্রেসিডেন্ট যুদ্ধকালীন পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে সমালোচকদের কণ্ঠরোধ ও নিজের ক্ষমতা সংহত করার চেষ্টা করছেন।

বিক্ষোভগুলোয় হাজার হাজার সাধারণ মানুষ অংশ নিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা সাবেক সেনাসদস্যরাও আছেন। যুদ্ধের ক্ষত তাঁদের শরীরে দৃশ্যমান, অনেকেই অঙ্গ হারিয়েছেন। দুর্নীতিবিরোধী সংস্থাগুলোর স্বাধীনতা খর্ব করার এই প্রচেষ্টায় জনগণের ক্ষোভ এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে, যুদ্ধ চলাকালে বিশ্বের সামনে ইউক্রেনীয় সরকার ও দেশটির জনগণের ঐক্য দেখানোর অনানুষ্ঠানিক চুক্তিটি ভেঙে গেছে।

এ আন্দোলনে সম্ভবত ২০১৯ সালে প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতায় আসার পর জেলেনস্কিকে সবচেয়ে বড় অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হচ্ছে।
আনুষ্ঠানিকভাবে জেলেনস্কির রাজনৈতিক অবস্থান এখনো নিরাপদ। তাঁর দল ‘সার্ভেন্ট অব দ্য পিপল’ পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন ধরে রেখেছে ও জোটসঙ্গীদের বাধা ছাড়াই সরকার পরিচালনা করছে। শিগগিরই জেলেনস্কি ও তাঁর দলকে ভোটারদের মুখোমুখি হতে হচ্ছে না। সামরিক আইন চালু থাকায় দেশে নির্বাচনের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি আছে। যত দিন যুদ্ধ চলবে, তত দিন এই নিষেধাজ্ঞা চলবে।

যাহোক, জেলেনস্কির আত্মতুষ্টির কোনো পথ নেই। দেশের ভেতরে ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সমর্থন ধরে রাখতে হলে তাঁকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। ইউক্রেন যে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে অঙ্গীকারবদ্ধ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ন্যাটোর মতো পশ্চিমা জোটে যোগদানের উপযুক্ত—এই বার্তা তুলে ধরতে অনেক প্রচেষ্টা চালানো হয়েছে।

জেলেনস্কি ইউক্রেনে অজনপ্রিয় কেউ নন। কিয়েভ ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব সোশিওলজি কর্তৃক ২০২৫ সালের জুনে পরিচালিত এক জরিপ অনুযায়ী, তাঁর ব্যক্তিগত জনপ্রিয়তা ছিল ৬৫ শতাংশ। যদিও ২০২২ সালে রাশিয়ার আগ্রাসনের প্রথম কয়েক মাসে তাঁর জনপ্রিয়তা বেড়ে ৯০ শতাংশের কাছাকাছি পৌঁছেছিল। যদিও ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে তাঁর জনপ্রিয়তা ৫২ শতাংশে নেমে এসেছিল।

যাহোক, রাস্তায় বিক্ষোভ শুরু হতেই জেলেনস্কি প্রতিশ্রুতি দেন, নতুন আইনটি তিনি বাতিল করবেন এবং দুর্নীতি দমন সংস্থাগুলোর স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিতে পার্লামেন্টে একটি নতুন বিল উত্থাপন করবেন।

ইউক্রেনীয় সমাজে দুর্নীতি গভীরভাবে নাড়া দেওয়া একটি বিষয়। ভিক্তর ইয়ানুকোভিচের আমলে যে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছিল, তাঁর প্রতি জনগণের ক্ষোভ থেকেই ২০১৩ ও ২০১৪ সালে ময়দান আন্দোলন উসকে দিয়েছিল। আন্দোলনটি শুরু হয়েছিল, যখন ইয়ানুকোভিচ ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে আলোচনা থেকে সরে এসে রাশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলার পথে অগ্রসর হন।

এরপর ইউক্রেনে যে ‘মর্যাদার বিপ্লব’ সংঘটিত হয়, সেখানে দৃঢ়ভাবে ইয়ানুকোভিচের নেতৃত্ব ও নীতিকে প্রত্যাখ্যান করা হয়। শেষ পর্যন্ত তাঁর ক্ষমতায় থেকে যাওয়ার পথ তৈরি করে দেয়। এই বিপ্লব ইউক্রেনের নাগরিক সমাজ যে কতটা শক্তিশালী, তারই বহিঃপ্রকাশ। একই সঙ্গে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের জবাবদিহির আওতায় আনার দৃঢ় সংকল্পের একটি অনন্য প্রকাশ ছিল।

ইউক্রেন দুর্নীতি দমন করতে ব্যর্থ হচ্ছে, এমন কোনো ইঙ্গিত দেশটির আন্তর্জাতিক মিত্রদের জন্য গভীর উদ্বেগের কারণ। বিশেষত, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের মতো বড় ঋণদাতারা এটি নিয়ে খুব সতর্ক। ইউক্রেনের অর্থনীতি সচল রাখতে যে বড় অঙ্কের ঋণসহায়তা প্রয়োজন, তা পেতে হলে কিয়েভকে আইএমএফ–নির্ধারিত সুশাসনের মানদণ্ড পূরণ করতেই হবে।

ইউরোপীয় নেতারা নতুন আইনের ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাঁদের আশঙ্কা, দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ক্ষেত্রে জেলেনস্কি এক ধাপ পিছিয়ে যেতে পারেন।

ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেন জেলেনস্কিকে ফোন করে দুর্নীতি দমন সংস্থাগুলোর স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন করার বিষয়ে তীব্র উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং এর ব্যাখ্যা চেয়েছেন। ফ্রান্স ও জার্মানির নেতারাও জানিয়েছেন, তাঁরা এ বিষয়ে জেলেনস্কির সঙ্গে আলোচনা করবেন।

এদিকে ইউক্রেনে চলমান বিক্ষোভকে কাজে লাগাতে দেরি করেনি রাশিয়া। ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, মস্কো এরই মধ্যে বিক্ষোভকারীদের ছবি কারসাজি করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছে। সেই ছবিতে দেখা যাচ্ছে, ইউক্রেনীয়রা রাশিয়ার পক্ষে স্লোগানসমৃদ্ধ প্ল্যাকার্ড বহন করছেন। রাশিয়া মিথ্যা দাবি করেছে যে ইউক্রেনীয়রা অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধের দাবিতে রাস্তায় নেমেছেন।

এই বিক্ষোভ বিতর্কিত আইন বাতিলের দাবি থেকে সরকার পরিবর্তনের দাবিতে রূপ নিতে পারে, এমন ইঙ্গিত এখন পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে না। কয়েকজন বিক্ষোভকারী স্পষ্টভাবেই গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন যে তাঁরা সামগ্রিকভাবে জেলেনস্কির প্রতি সমর্থন জানান। কিন্তু এই নির্দিষ্ট বিষয়ে তাঁর কাছ থেকে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।

যাহোক, জেলেনস্কির আত্মতুষ্টির কোনো পথ নেই। দেশের ভেতরে ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সমর্থন ধরে রাখতে হলে তাঁকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। ইউক্রেন যে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে অঙ্গীকারবদ্ধ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ন্যাটোর মতো পশ্চিমা জোটে যোগদানের উপযুক্ত—এই বার্তা তুলে ধরতে অনেক প্রচেষ্টা চালানো হয়েছে।

দুর্নীতিবিরোধী অঙ্গীকার থেকে সামান্যতম পিছিয়ে যাওয়ার ইঙ্গিতও এই বার্তাকে দুর্বল করে দিতে পারে।

জেনিফার ম্যাথার্স ওয়েলসের অ্যাবারিস্টউইথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিভাগের জ্যোষ্ঠ প্রভাষক
এশিয়া টাইমস থেকে নেওয়া, ইংরেজি থেকে অনূদিত

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স স থ গ ল র স ব ধ নত ইউক র ন য় ইউক র ন র পদক ষ প প রক শ র জন ত ইউর প ন আইন ক ষমত

এছাড়াও পড়ুন:

জট কমাতে জাহাজ কমানোর উদ্যোগ

কনটেইনারভর্তি পণ্য নিয়ে একের পর এক জাহাজ আসছে। খালাস শেষে রপ্তানি কনটেইনার নিয়ে বন্দর ছাড়ছে এসব জাহাজ। পণ্য পরিবহনের চাপ সামাল দিতে না পারায় বন্দরে কনটেইনার জাহাজের জট বাড়ছে। এই জট কমানোর জন্য চট্টগ্রাম বন্দরের পথে চলাচলরত কনটেইনার জাহাজের সংখ্যা কমাতে চায় বন্দর কর্তৃপক্ষ।

জাহাজ যাতে কম আসে সে জন্য বন্দরের নেওয়া পদক্ষেপ হতবাক করেছে শিপিং এজেন্টদের। শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা বলছেন, দুর্যোগের সময় ছাড়া কোনো বন্দরে চলাচলরত জাহাজের সংখ্যা কমানোর জন্য পদক্ষেপ নেওয়ার নজির বিশ্বে নেই। বরং বিশ্বের নানা বন্দর বা কনটেইনার টার্মিনালগুলোতে যাতে জাহাজ ভেড়ানো হয় সে জন্য শিপিং কোম্পানিগুলোকে উৎসাহ দেওয়া হয়। এ কাজের জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষ বা টার্মিনাল পরিচালনাকারী কোম্পানিগুলোর বিপণন বা বাণিজ্য দল রয়েছে। চট্টগ্রামে হচ্ছে উল্টোটা।

বন্দর সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম বন্দরের পথে এখন ১১৮টি কনটেইনার জাহাজ নিয়মিত চলাচলের অনুমোদন রয়েছে। বন্দর থেকে সিঙ্গাপুর, শ্রীলঙ্কা, মালয়েশিয়া ও চীনের বিভিন্ন বন্দরে এসব জাহাজ চলাচল করে। ২০ জুলাই বন্দরের এক সভায় বন্দরের পথে চলাচলরত ১৫টি জাহাজ কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। যে ১৫টি জাহাজ কমানো হবে তার তালিকা শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনকে নিজ উদ্যোগে বন্দরকে দেওয়ার জন্য বলা হয় ওই সভায়। যুক্তি হিসেবে বলা হয়, জাহাজজটের কারণে বহির্বিশ্বে চট্টগ্রাম বন্দরের সুনাম ক্ষুণ্ন হচ্ছে। ওই সভায় সভাপতিত্ব করেন বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামান।

এ বিষয়ে জানতে বন্দর চেয়ারম্যানের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। খুদে বার্তা পাঠালেও সাড়া দেননি।

তবে শিপিং এজেন্টরা এখন পর্যন্ত কোনো জাহাজের নাম বন্দরকে দেয়নি, যেগুলো প্রত্যাহার করা হবে। তালিকা না দেওয়ায় গত মঙ্গলবার বন্দরের উপসংরক্ষক ক্যাপ্টেন মো. জহিরুল ইসলাম ২৪ ঘণ্টার মধ্যে (বুধবারের মধ্যে) ১৫টি জাহাজের তথ্য দেওয়ার জন্য শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যানকে চিঠি দেন, যেগুলো এই পথ থেকে প্রত্যাহার করা হবে।

শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ আরিফ বলেন, বন্দরের এ উদ্যোগ মাথাব্যথার জন্য মাথা কেটে ফেলার মতো। যেসব কারণে বন্দরে জাহাজজট হয়েছে, তা শনাক্ত করে জরুরি ভিত্তিতে সমাধান করা উচিত। জাহাজের সংখ্যা কমিয়ে জট কমবে না।

স্বাভাবিক সময় বন্দরের বহির্নোঙরে পাঁচ–ছয়টি জাহাজ অপেক্ষায় থাকে। কিন্তু এখন জটের কারণে ক্রেনযুক্ত একেকটি জাহাজ জেটিতে ভেড়ানোর জন্য চার থেকে ১০ দিন পর্যন্ত সাগরে অপেক্ষা করতে হচ্ছে।

শিপিং ও বন্দর কর্মকর্তারা জানান, ঈদুল আজহার একটানা ১০ দিনের ছুটি, দুই দফায় পরিবহন ধর্মঘট, কাস্টমসের শাটডাউন কর্মসূচি ও কাস্টমসের শুল্কায়নের সফটওয়্যারের ধীরগতির কারণে বন্দরের কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে। এর জেরে কনটেইনার জাহাজের যে জট তৈরি হয়েছে, তা এখনো কমছে না। কারণ, কনটেইনারে পণ্য পরিবহন বাড়ছে।

এমন পরিস্থিতিতে বন্দরের নতুন উদ্যোগে জাহাজের সংখ্যা কমানো হলে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া ও শ্রীঙ্কার বন্দরগুলোতে বাংলাদেশমুখী কনটেইনারের জট তৈরি হবে বলে জানিয়েছেন শিপিং এজেন্টরা। একইভাবে এসব বন্দর হয়ে ইউরোপ–আমেরিকামুখী রপ্তানি পণ্যের কনটেইনারের স্তূপ বাড়তে পারে ডিপোগুলোতে।

জানতে চাইলে কনটেইনার জাহাজ পরিচালনাকারী জিবিএক্স লজিস্টিকস লিমিটেডের অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট ও হেড অব অপারেশন মুনতাসীর রুবাইয়াত প্রথম আলোকে বলেন, বন্দরের পথে জাহাজের সংখ্যা কমানো হলে আমদানি–রপ্তানি বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কারণ, চাহিদা বাড়লে কনটেইনার পরিবহনের ভাড়া বেড়ে যেতে পারে। এতে ভুক্তভোগী হতে পারেন ভোক্তারা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ