ঝালকাঠির রাজপুর উপজেলার প্রধান ডাকঘরের ভবনটি ১৯৯০ সালে নির্মিত হলেও এরপর আর কোনো সংস্কার হয়নি। ভবনের ছাদের অবস্থা এতটাই খারপা যে, প্লাস্টার খসে পড়ছে এবং বৃষ্টির পানি ভেতরে ঢুকছে। ছাদের বিমের রডও বেরিয়ে এসেছে। এই পরিস্থিতিতে ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন কাজ করতে হচ্ছে ডাকঘরটির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। 

ডাকঘরের পোস্টমাস্টার গোলাম মোস্তফা বলেন, “ছাদের প্লাস্টার খসে পড়ছে, ছাদ থেকে পানি পড়ছে, দ্বিতীয় তলার অবস্থা আরো ভয়াবহ। ভবনটিকে গণপূর্ত বিভাগ ‘ব্যবহারের অনুপোযোগী’ ঘোষণা করলেও এখনও ঝুঁকি নিয়েই কার্যক্রম চালাতে হচ্ছে।” 

পোস্ট অফিস সূত্র জানায়, ভবনটির চারপাশে কোনো প্রাচীর না থাকায় এটি এখন মাদকসেবীদের আড্ডাস্থলে পরিণত হয়েছে। ভবনের ভেতরে ও বাইরে শেওলা পড়েছে। পুরো ভবনটি বর্ষাকালে ভুতুড়ে পরিবেশ ধারণ করে। কম্পিউটার, স্ক্যানার, ফ্র্যাঙ্কিং মেশিনসহ প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি পানিতে নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা নিয়ে কাজ করছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। পোস্ট অফিসটিতে বর্তমানে মাত্র চারজন কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন। এর মধ্যে একজন পোস্টম্যান প্রেষণে অন্যত্র কর্মরত থাকায় কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। পর্যাপ্ত আসবাবপত্র না থাকায় এবং জনবল সংকটের কারণে সেবার মানে অবনতি ঘটেছে।

আরো পড়ুন:

চট্টগ্রামে টানা বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা, পাহাড় ধসের শঙ্কা

বিপৎসীমার ওপরে পটুয়াখালীর নদ-নদীর পানি, ৬ গ্রাম প্লাবিত

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ডাকঘরের এমন জরাজীর্ণ অবস্থা দেখে তারা অনেকেই ভেতরে প্রবেশ করতে ভয় পান। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় এটি ধ্বংসপ্রায় ভবনে পরিণত হয়েছে। ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে পোস্ট বক্সটিও। রাজাপুরের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ উপজেলায় প্রধান ডাকঘরটির এমন অবস্থা মেনে নিতে পারছেন না তারা। জরুরি ভিত্তিতে ভবনটির সংস্কার ও জনবল নিয়োগের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

এ বিষয়ে ঝালকাঠির পোস্ট অফিস পরিদর্শক আবুল ফয়েজ বলেন, “উপজেলার প্রধান ডাকঘরের দুরবস্থার বিষয়টি আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। জনবল সংকট ও অবকাঠামোগত সমস্যার দ্রুত সমাধানের জন্য আমরা আবেদন করেছি।” 

বরিশাল অঞ্চলের ডেপুটি পোস্টমাস্টার জেনারেল (ডিপিএমজি) মন্জুরুল আলম বলেন, “শূন্যপদে নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে এবং নিয়োগ প্রক্রিয়া এ বছরের মধ্যেই সম্পন্ন হবে। ভবনের উন্নয়ন প্রসঙ্গে শিগগিরি পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঢাকা/অলোক/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ড কঘর র অবস থ

এছাড়াও পড়ুন:

ডেমরায় ৬ তলা ভবন হেলে পড়েছে ৭ তলা ভবনে : আতঙ্ক 

রাজধানীর ডেমরার মধ্য হাজীনগর এলাকায়  একটি ৬ তলা ভবন হেলে পড়েছে পাশের ৭ তলা ভবনে। রোববার বিকালে ম্যানশন ভবন নামের ঝুঁকিপূর্ন ওই ৬ তলা থেকে সকল ভাড়াটিয়া ও মালিককে নিরাপদে বের করে আনা হয়েছে।

এদিন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) অঞ্চল-৮ আঞ্চলিক কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো.খলিরুর রহমান, ডেমরা থানা পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও রাজউকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ভবনটি পরিদর্শন করেন। 

এ সময় ভবনটিকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। তবে হেলে পড়া ভবনের পাশের ৭ তলা ভবনবাসীরা চরম আতঙ্কে রয়েছেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা,কারণ যে কোন সময় ভবনটি ধসে পড়ে বড় ধরনের প্রাণহানির আশংকা রয়েছে। 

সরেজমিনে দেখা গেছে, ডিএসসিসির ৬৮ নম্বর ওয়ার্ডের হাজী মোয়াজ্জেম আলী স্কুল এবং বাইতুল কাওছার জামে মসজিদ সংলগ্ন হোল্ডিং নং ১০৬-এ অবস্থিত ওই হেলে পড়া ভবন। এটি শহীদ মিয়া নামের এক প্রবাসীর মালিকানাধীন। এটি হেলে পড়েছে পার্শ্ববর্তী হোল্ডিং নং ১০৫-এ অবস্থিত হাবিবুর রহমান সোহাগের সাততলা ভবনের দিকে।

স্থানীয়রা জানান, গত কয়েক দিন ধরে ভবনটি সামান্য হেলছিল। তবে রোববার দুপুর থেকে স্পষ্টভাবে পাশের ভবনের গায়ে ঠেকে গেছে ওই ভবন। মধ্য হাজিনগরের প্রবেশ মুখে হওয়ায় শুধু ভাড়াটিয়াই নয়, সড়কে চলাচলকারী সাধারণ মানুষও এখন ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন। এদিকে ভবনটি ২০০০ সালের মাঝামাঝি সময়ে তৎকালীন সারুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের অনুমতি সাপেক্ষে নির্মাণ করা হয়। 

ভবনের মালিক মো. শহীদ মিয়া জানান, বিদেশে রক্ত পানি করা উপার্জনের টাকায় এই ম্যানশন ভবন নির্মাণ করেছি। এটাই আমার একমাত্র সম্বল। কোনো ত্রুটি ছিল না নির্মাণে। এখন ভবনটা নিয়ে কী করবো বুঝতে পারছি না। চোখের সামনে সবকিছু ভেঙে পড়ছে। 

এ বিষয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) জোন ৮ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. খলিলুর রহমান বলেন, ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ মনে হওয়ায় আমরা প্রাথমিকভাবে নোটিশ দিয়ে ভবনবাসীদের সরিয়েছি। এখন মাল সামানা সরানো হচ্ছে। আর কোনো অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটার আগেই আমরা সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিচ্ছি। 

তিনি আরও বলেন, “ভবনের মালিক যদি কোনও স্বীকৃত ইঞ্জিনিয়ারিং কনসালট্যান্টের মাধ্যমে ফিটনেস সার্টিফিকেট জমা দিতে পারেন, তখন পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তা না হলে ভবনটি ব্যবহারের অযোগ্য হিসেবেই থাকবে।

এ বিষয়ে রাজউকের অঞ্চল-৮ এর অথরাইজড অফিসার জান্নাতুল মাওয়া বলেন, ইতিমধ্যে ভবনবাসীদের নিরাপদে বের করা হয়েছে। পরবর্তীতে রাজউকের নিয়ম অনুযায়ী ঝুকিপূর্ন হিসেবে ভবন সিলগালাসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

এ বিষয়ে ডেমরা থানার ওসি মো. মাহমুদুর রহমান বলেন, নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা বজায় রাখার বিষয়ে সর্বক্ষণ ঘটনাস্থলে পুলিশ থাকবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী সকল পদক্ষেপ নেওয়া হবে। 
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চট্টগ্রামের রেলওয়ের ‘হাতির বাংলো’ নিয়ে কেন এত মাতামাতি
  • মাইলস্টোনে বিমানবাহিনীর চিকিৎসা ক্যাম্প, সেবা নিতে আসছেন অনেকে
  • ডেমরায় হেলে পড়েছে ৬ তলা ভবন
  • ডেমরায় ৬ তলা ভবন হেলে পড়েছে ৭ তলা ভবনে : আতঙ্ক 
  • রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদে চাকরির সুযোগ
  • গণযোগাযোগ অধিদপ্তরে বড় নিয়োগ, ১৭৭ পদের জন্য করুন আবেদন
  • কুবির নতুন ক্যাম্পাসের জমি ক্রয়ে দুর্নীতির অভিযোগ, তথ্য চেয়েছে দু