পুলিশ পরিচয়ে পাবনা থেকে তুলে এনে ফতুল্লায় আটকে রেখে নির্যাতন
Published: 28th, July 2025 GMT
পুলিশ পরিচয়ে পাবনা জেলার সিরাজগঞ্জ থেকে আলমগীর হোসেন সালমান নামে এক যুবককে ধরে এনে ফতুল্লায় একটি বাড়িতে ৩দিন আটক রেখে বর্বর নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে।
খবর পেয়ে সোমবার বিকেলে ফতুল্লার কুতুবআইল এলাকায় হাজি আলাউদ্দিনের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে আটক যুবককে উদ্ধার করেছে পুলিশ। তবে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ওই বাড়ি থেকে দুস্কৃতিকারীরা পালিয়ে যাওয়ায় কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
উদ্ধার হওয়া আলমগীর হোসেন সালমানের বড় বোন নুরুন্নাহার বেগম জানান, ফতুল্লার কুতুবআইল এলাকায় হাজি আলাউদ্দিনের বাড়িতে বাসা বাড়ির কাজ করত। ১৫/২০দিন আগে কাজ ছেড়ে গ্রামের বাড়ি পাবনা জেলার সিরাজগঞ্জে চলে যায়।
২৬ জুলাই সকালে ৮/১০ জন লোক পুলিশ পরিচয় দিয়ে সালমানকে মাইক্রোতে উঠিয়ে নিয়ে যায়। তারপর দিন একটি মোবাইল নাম্বার দিয়ে আমাকে সালমানের মুক্তিপন হিসেবে ৪ লাখ টাকা দাবী করেন এবং সালমানকে মারধরের চিৎকার শুনায়। তখন ফতুল্লায় এসে থানায়সহ বিভিন্ন স্থানে লিখিত অভিযোগ করি।
আলমগীর হোসেন সালমান বলেন, হাজি আলাউদ্দিনের ছেলে সুমন আমাকে টাকা উঠানোর জন্য ইসলামী ব্যাংকে পাঠায়। সেখান থেকে ৬ লাখ টাকা উঠিয়ে গ্রামের বাড়ি চলে যাই। এরপর ২৬ জুলাই পুলিশ পরিচয়ে ৮-১০ জন লোক আমাদের গ্রামের বাড়ি পাঠায় সুমন। তারা সেখান থেকে ধরে এনে হাত পা বেধে ৩দিন যাবত বেধড়ক মারধর করছে।
এবিষয়ে ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শরিফুল ইসলাম জানান, আলমগীর হোসেন সালমানকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। সুমনের পক্ষ থেকে সালমানের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করা হয়েছে।
কিন্তু সুমন পুলিশের সহযোগীতা না নিয়ে সালমানকে ধরে এনে বাসায় আটক রেখে টাকা আদায়ের জন্য বর্বর নির্যাতন করতে পারেনা। এবিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: য বক ন র য়ণগঞ জ
এছাড়াও পড়ুন:
রাউজানে যুবদল কর্মীকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় তাঁর সহযোগী গ্রেপ্তার
চট্টগ্রামের রাউজানে মোটরসাইকেলে বাড়ি ফেরার পথে যুবদল কর্মী আলমগীর আলমকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় এক যুবককে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তার যুবক আলমগীর আলমের সহযোগী ছিলেন। গতকাল শনিবার রাতে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার যুবকের নাম মুহাম্মদ রাজু (২৮)। তিনি পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের রহমতপাড়ার মৃত নুর নবীর ছেলে। পুলিশ জানিয়েছে, আলমগীর আলমকে গুলি করার সময় তাঁর পেছনে একটি মোটরসাইকেলে ছিলেন মুহাম্মদ রাজু।
গত ২৫ অক্টোবর বিকেলে রাউজান পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের চারাবটতল বাজারসংলগ্ন কায়কোবাদ জামে মসজিদের সামনে গুলি করে হত্যা করা হয় আলমকে। এ সময় তাঁর স্ত্রী ও সন্তান পেছনে একটি অটোরিকশায় ছিলেন। পাশের গ্রামের এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে দাওয়াত খেয়ে বাড়িতে ফিরছিলেন তাঁরা। আলমের বাড়ি পার্শ্ববর্তী ঢালারমুখ এলাকায়।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কবরস্থানে লুকিয়ে থাকা আটজন অস্ত্রধারী আলমকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন। এ সময় মোটরসাইকেলে থাকা আলম ঘটনাস্থলেই নিহত হন। অস্ত্রধারীরা তাঁকে হত্যার পর রাঙামাটি সড়ক দিয়ে অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলে পালিয়ে গেছেন। নিহত আলমের শরীরে পাঁচটি গুলির চিহ্ন পাওয়া যায়।
রাউজান থানা-পুলিশ জানায়, আলম নিহত হওয়ার দুই দিন পর তাঁর বাবা আবদুস সাত্তার বাদী হয়ে ২১ জনের নামোল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৬ থেকে ৭ জনকে আসামি করে রাউজান থানায় মামলা করেন। মামলার এজাহারে রাজুর নাম নেই। তবে ঘটনার তদন্তে হত্যাকাণ্ডে তাঁর সম্পৃক্ততার তথ্য পাওয়া গেছে।
এর আগে এ মামলায় এজাহারভুক্ত দুই আসামি গ্রেপ্তার হয়েছেন। তাঁরা হলেন রাউজান কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মুহাম্মদ রাসেল খান (৩২) ও পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের রহমতপাড়ার বাসিন্দা ও যুবদল কর্মী মুহাম্মদ হৃদয় (৩০)।
রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, যখন অস্ত্রধারীরা আলমগীর আলমকে গুলি করার জন্য কবরস্থানে লুকিয়ে ছিলেন, তখন আলমগীর আলমের পেছনে একটি মোটরসাইকেলে ছিলেন রাজু। তিনি আলমগীরের সহযোগী হিসেবে পরিচিত। তবে হত্যাকাণ্ডে তাঁর সম্পৃক্ততার তথ্য পাওয়া গেছে। রোববার তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে অস্ত্র-মাদকসহ বিভিন্ন মামলায় ১২ বছর কারাগারে ছিলেন আলম। তিনি গত বছরের ৫ আগস্টের পর জামিনে মুক্তি পান। চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি গোলাম আকবর খন্দকারের অনুসারী হিসেবে পরিচিত তিনি।