মেরামতের দুই মাসেই ফের বেহাল মানিকপুর সড়ক
Published: 4th, August 2025 GMT
মুন্সীগঞ্জের মানিকপুর থেকে কাটাখালি সড়কে ফের অস্থায়ী সংস্কার কাজ হাতে নিয়েছে পৌরসভা। প্রথমবার ৩৪ লাখ ৭৫ হাজার টাকা ব্যয়ে সংস্কার করা হলেও দুই মাস পরই সড়কটির বেহাল দশার কারণে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এবার সড়কটি সংস্কারে ২০ লাখ টাকার টেন্ডার নিয়ে কাজ করছে পৌর প্রশাসন।
দুইবার সড়ক মেরামত করার বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে স্থানীয়দের মধ্যে। তারা বলছেন, ঠিকভাবে কাজ না করা এবং নিম্নমানের কাঁচামাল ব্যবহার করার কারণে সংস্কারের দুই মাসের মাথায় সড়কটি অবস্থা খুবই খারাপ হয়ে যায়। ফলে জনগণের ভোগান্তি যেমন বেড়েছে, তেমনি অপচয় হচ্ছে সরকারি অর্থ।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের অক্টোবরে পৌরসভার ই-টেন্ডার প্রক্রিয়ায় ‘মেসার্স মাজেদ ট্রেডার্স’ নামে একটি প্রতিষ্ঠানকে সড়কটি সংস্কারে তিন মাস মেয়াদে কাজ দেওয়া হয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী, মানিকপুর দশতলা ভবনের সামনের অংশ থেকে সুপার মার্কেট, অঙ্কুরিত যুদ্ধ ১৯৭১ ভাস্কর্য, পুরাতন বাসস্ট্যান্ড, রেড ক্রিসেন্ট ভবন, জেলা পরিষদ, থানা সড়ক হয়ে পতাকা একাত্তর ভাস্কর্য পর্যন্ত সড়কে খোয়া ফেলে গর্ত ভরাট এবং পিচ ঢালাই করার কথা ছিল। সংস্কার কাজ শেষ হয় চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে। দুই মাস না যেতেই সড়কটির আগের অবস্থায় ফিরে এসেছে।
আরো পড়ুন:
নেত্রকোণা-শিধলী সড়ক যেন মরণ ফাঁদ
সিলেটের ৩ জেলায় বাস চলাচল বন্ধ
এলাকাবাসীর অভিযোগ, প্রকৃতপক্ষে সড়কের অনেক জায়গায় কাজ হয়নি। যতটুকু হয়েছে তা নিম্নমানের কাঁচামাল ব্যবহার করে। যে ইট ব্যবহার করা হয়েছে, এগুলা মানুষের পায়ের আঘাতেই মাটিতে গুঁড়িয়ে যায়। যে কারণে জনগণের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমানে সড়কটি বিভিন্ন স্থান গর্তে ভরে গেছে।
মেসার্স মাজেদ ট্রেডার্সের প্রতিষ্ঠাতা মাজেদুল ইসলাম বলেন, “টেন্ডারে উল্লেখিত স্থানেগুলোর কাজ করেছি ভালোভাবে। তার বাইরে নিজ থেকে অন্যান্য জায়গায় কিছু কাজ করেছি। আমরা টেন্ডার অনুযায়ী কাজ করে পৌরসভার প্রকৌশলী বিভাগকে বুঝিয়ে দিয়ে বিল নিয়েছি। কাজ যদি ঠিক মতো না হতো, তাহলে কাজের বিল দিত না পৌরসভা।”
মুন্সীগঞ্জ পৌর প্রশাসক মৌসুমী মাহবুব বলেন, “বর্তমানে ২০ লাখ টাকার নতুন টেন্ডারে কাজ চলছে। স্থায়ী সমাধানের জন্য বড় একটি প্রকল্প লঞ্চঘাট থেকে সুপারমার্কেট ও মানিকপুর থেকে সুপারমার্কেট পর্যন্ত জমা দেওয়া হয়েছে, যা শিগগিরি অনুমোদন পাবে বলে আশা করছি।”
তিনি আরো বলেন, “হাসপাতাল থেকে সুপারমার্কেট পর্যন্ত একটি পুরনো তিতাস গ্যাসের লাইন আছে, যেটি লিকেজ থাকায় রাস্তার স্থায়ী সংস্কার সম্ভব হয়নি। বিষয়টি তিতাসকে জানানো হয়েছিল। তারা ইতোমধ্যে টেন্ডার সম্পন্ন করেছে। কিছু দিনের মধ্যেই গ্যাস লাইন অপসারণ শুরু হবে। এরপরই টেকসই সংস্কার কাজ শুরু করা সম্ভব হবে।”
ঢাকা/রতন/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সড়ক পর বহন ক জ কর প রসভ
এছাড়াও পড়ুন:
বিএনপি ক্ষমতার একচ্ছত্র দখলদারি বহাল রাখতে চায়: ডাকসু
সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে স্বচ্ছ ও দলীয় প্রভাবমুক্ত নিরপেক্ষ নিয়োগের সংস্কার প্রস্তাবের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে বিএনপি ক্ষমতার একচ্ছত্র দখলদারি বহাল রাখতে চায় বলে দাবি করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু)।
রবিবার (২ নভেম্বর) ডাকসুর ভিপি মো. আবু সাদিক, জিএস এসএম ফরহাদ ও এজিএস মুহা: মহিউদ্দিন খান স্বাক্ষরিত ‘রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কাৃরের বিরোধিতা এবং ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রকাঠামো অক্ষুণ্ন রাখার অপচেষ্টার বিরুদ্ধে ডাকসুর প্রতিবাদ' শীর্ষক এক প্রতিবাদলিপিতে এ কথা বলা হয়েছে।
আরো পড়ুন:
ঢাবি শিক্ষার্থীদের মানবিক মূল্যবোধে উদ্বুদ্ধ করতে ২ কমিটি
ঢাবিতে সপ্তাহব্যাপী শিল্পকর্ম প্রদর্শনী শুরু
প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়েছে, জুলাই বিপ্লব ছিল বৈষম্য, অবিচার ও ফ্যাসিবাদী শাসনকাঠামোর বিরুদ্ধে এ দেশের সর্বস্তরের ছাত্র-জনতার এক সম্মিলিত বিপ্লব। কেবল সরকার পরিবর্তন নয় বরং রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কার, ক্ষমতার অপব্যবহার রোধ, স্বাধীন ও শক্তিশালী সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান গঠন, প্রশাসনিক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা এবং একটি বৈষম্যহীন-ন্যায়ভিত্তিক নতুন বাংলাদেশ গড়ার আকাঙ্ক্ষা ছিল এই বিপ্লবের মূল ভিত্তি। নতুন প্রজন্ম চেয়েছিল এমন একটি বাংলাদেশ, যেখানে কোন প্রকার বৈষম্য ও রাজনৈতিক একচেটিয়া কর্তৃত্বের জায়গা থাকবে না।
কিন্তু দুঃখজনকভাবে জুলাই সনদে স্বাক্ষর করলেও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ধারাবাহিকভাবে সংস্কার কার্যকর করার বিরোধিতা করে তরুণ প্রজন্মের আকাঙ্ক্ষাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছে। বিশেষত বিএনপি এমন সব মৌলিক সংস্কারের বিরোধিতা করেছে যা সরাসরি ছাত্র–জনতার স্বপ্নের সঙ্গে জড়িত। পিএসসি, দুদক, ন্যায়পাল ও মহা-হিসাব নিরীক্ষকের মতো সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে স্বচ্ছ ও দলীয় প্রভাবমুক্ত নিরপেক্ষ নিয়োগ নিশ্চিত করার সংস্কার প্রস্তাবের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে তারা ক্ষমতার একচ্ছত্র দখলদারি বহাল রাখতে চায়।
যে বৈষম্যমূলক চাকরি ব্যবস্থাকে কেন্দ্র করেই জুলাই বিপ্লবের সূচনা হয়েছিল সেই কাঠামো পরিবর্তনের বিরুদ্ধাচরণ করে বিএনপি নতুন প্রজন্মের ন্যায্য দাবি অস্বীকার করছে। পাশাপাশি জুডিশিয়াল অ্যাপয়েন্টমেন্ট কমিশনের বিরোধিতা, অনুচ্ছেদ–৭০ সংস্কারে আপত্তি, প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় প্রধান আলাদা দুজন ব্যক্তির মতো আধুনিক গণতান্ত্রিক প্রস্তাবে বিরোধিতা, আইন পেশায় রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত নির্বাচনের প্রতিবন্ধকতা, স্বতন্ত্র ফৌজদারি তদন্ত সার্ভিস গঠনে তাদের আপত্তি রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কার এবং তরুণ প্রজন্মের ভবিষ্যৎ নির্মাণের পথে বড় বাঁধার সৃষ্টি করছে। এভাবে বিএনপি মূলত জুলাই বিপ্লবের চেতনাকে অস্বীকার করে নতুন বাংলাদেশ নির্মাণের অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করছে।
প্রতিবাদলিপিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, এই সংস্কারগুলো ব্যক্তি বা দলীয় স্বার্থ নয় বরং রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কার এবং আধুনিক, গণতান্ত্রিক ও শক্তিশালী রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান তৈরির লক্ষ্যেই প্রস্তাবিত হয়েছে। জুলাই বিপ্লব পরবর্তী নতুন বাংলাদেশ গঠনের নৈতিক দায়িত্ব ছাত্র ও সর্বস্তরের জনগণের। তাই সংস্কারের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জনগণ থেকে নিতে হবে। আর গণভোটই জনগণের ম্যান্ডেট নিশ্চিতের উপযুক্ত মাধ্যম। গণভোটের মাধ্যমেই জনগণ ঠিক করবে দেশের স্বার্থে কোন কোন সংস্কার প্রস্তাবনাগুলোকে তারা সমর্থন দিবে।
কোনো রাজনৈতিক দলের বিরোধিতা বা প্রাতিষ্ঠানিক প্রভাব যদি রাষ্ট্রগঠনমূলক সংস্কারের পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে তবে ছাত্র-জনতা সেই বাধা অতিক্রমে দৃঢ়ভাবে অবস্থান নেবে জানিয়ে প্রতিবাদলিপিতে আরো বলা হয়, জুলাই বিপ্লব শুধু শাসক বা সরকার পরিবর্তনের আন্দোলন নয় বরং জুলাই বিপ্লব হলো ফ্যাসিবাদী কাঠামো বিলোপ করে ন্যায্যতা ও স্বচ্ছতার ভিত্তিতে নতুন রাষ্ট্র বিনির্মাণ।
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী