ফতুল্লায় ধলেশ্বরী ও বুড়িগঙ্গা নদীর মাটি অবৈধভাবে কেটে নিচ্ছে সন্ত্রাসীরা
Published: 2nd, September 2025 GMT
ফতুল্লায় ধলেশ্বরী ও বুড়িগঙ্গা নদীতে গ্রাফের মাধ্যমে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করছে স্থানীয় সন্ত্রাসীরা। তারা বিআইডব্লিউটিএ ও নৌ-পুলিশকে ম্যানেজ করে দলীয় ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে নদী থেকে মাটি উত্তোলন করে ইট ভাটায় বিক্রি করছে।
১২/১৫ টি গ্রাফের মাধ্যমে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকার মাটি বিক্রি করছে। তবে নদী থেকে মাটি উত্তোলনের ফলে নদীর তীর বিলিন হয়ে গেলেও সন্ত্রাসীদের ভয়ে প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছে না এলাকাবাসী।
এদিকে অভিযোগ রয়েছে ধলেশ্বরী ও বুড়িগঙ্গা নদীতে আনন্দ বাজার এলাকার মতিন হাজী ও মাহাম্মদ মেম্বার নিজেদের বিএনপির নেতার পরিচয় দিয়ে বিশাল একটা সিন্ডিকেট তৈরি নদী থেকে গ্রাফ দিয়ে অবৈধ ভাবে মাটি উত্তোলন করে অন্যত্র বিক্রি করছে।
তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গেলে হয়রানির শিকার হতে হয়। যার কারনে ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করছে না। এতে করে মাটি সন্ত্রাসীরা বীরদর্পে অবৈধ ভাবে নদী থেকে মাটি উত্তোলন করে নিয়ে যাচ্ছে।
সরেজমিনে গিয়ে এবং এলাকাবাসীর সাথে আলোচনা করে জানা যায়, ফতুল্লায় অবস্থিত বুড়িগঙ্গা ও ধলেশ্বরীর মোহনায় মতিন হাজী ও মাহাম্মদ মেম্বারের নেতৃত্বে খইল্লারচর এলাকার সেলিম, শাহ জালাল, আফসার, আনন্দ বাজার এলাকার রতন, জাজিরার এসি আলী, আতাবর, ইমরান, নুর মোহাম্মদ, মাসুম, রানা সহ আরো কয়েকজন মিলে গ্রাফের মাধ্যমে নদী থেকে মাটি উত্তোলন করছে।
যেভাবে নদী থেকে মাটি উত্তোলন করছে দৃশ্য দেখলে চাঁদপুরের মোহনার বালু মহলকেও হার মানায়। দিনেদুপুরে প্রকাশ্যে ভোর সকাল হতে রাত্র পর্যন্ত অবৈধ ভাবে মাটি কেটে নিলেও নৌ-পুলিশ ও বিআইডব্লিউটিএ রসহ্যজনক কারণে নিরব ভূমিকা পালন করছে। নদীর মাটি কাটার ফলে নদীর তীরে অবস্থিত বক্তাবলী ও কোন্ডা এলাকার জমি বিলিন হয়ে যাচ্ছে। এসব এলাকার মানুষের বুক ফাটা কান্না কেউ দেখছে না।
মাটি উত্তোলনকারী সিন্ডিকেটের সদস্য সেলিমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমরা সবাইকে ম্যানেজ করেই মাটি কাটছি। সবাইকে দিয়েই টাকা কামাচ্ছি। এটা তো কোন দোষের কিছু নাই। গ্রাফ দিয়ে মাটি উত্তোলন করে বাল্কহেডে মাটি বিক্রি করছি।
নদীর কোন সমস্যা হচ্ছে না। বিআইডব্লিউটিএ থেকে কাগজ করছি। একপর্যায়ে সেলিম এ প্রতিবেদককে ম্যানেজ করার প্রস্তাব দিয়ে বলেন, সবাইকে তো দেই আপনিও আসেন ভাই। তার পরও নিউজ কইরেন না। আর ৪/৫ হাজার টাকা করে মাটি বিক্রি করে সবাইকে দিয়ে কত টাকাই থাকে ভাই।
ফতুল্লার পাগলা নৌ পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ ইন্সপেক্টর জানান, ঘটনাস্থল আমাদের এরিয়ায় না এটা অন্য এরিয়ায় পড়েছে খবর নেন। তবে ঘটনাস্থল বক্তাবলী নৌ-পুলিশ ফাড়ি এলাকায়।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: সন ত র স ন র য়ণগঞ জ অব ধ ভ ব সন ত র স এল ক র
এছাড়াও পড়ুন:
দৌলতদিয়ায় ফেরির ধাক্কায় ভেঙে গেছে পন্টুনের কবজা, যানবাহন পারাপার ব্যাহত
তীব্র স্রোতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেরির ধাক্কায় ভেঙে গেছে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া ফেরিঘাটের ৩ নম্বর পন্টুনের কবজা। ফলে বন্ধ হয়ে গেছে ঘাটটি। গতকাল সোমবার দিবাগত রাত পৌনে ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
বর্তমানে দৌলতদিয়ায় শুধু ৪ নম্বর ঘাট চালু আছে। এতে যানবাহন পারাপারে মারাত্মক বিঘ্ন ঘটছে এবং সৃষ্টি হয়েছে দীর্ঘ যানজটের।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা কার্যালয় ও ঘাট-সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গতকাল বিকেল থেকে দৌলতদিয়া প্রান্তে পদ্মায় তীব্র স্রোত দেখা দেয়। সন্ধ্যার পর এর তীব্রতা আরও বাড়ে। রাত ১১টার দিকে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া থেকে ছেড়ে আসা রো রো ফেরি শাহ পরান দৌলতদিয়ায় পৌঁছে নিয়ন্ত্রণে রাখতে না পারায় ফেরিটি প্রচণ্ড বেগে ৩ নম্বর ঘাটের পন্টুনে ধাক্কা দিলে কবজা ভেঙে যায়। এর পর থেকে ঘাটটি বন্ধ করে দেওয়া হয়।
এর আগে ২৩ আগস্ট থেকে তীব্র স্রোতের কারণে দৌলতদিয়ার ৭ নম্বর ঘাটও বন্ধ রয়েছে। বর্তমানে চারটি ঘাটের মধ্যে কেবল ৪ নম্বর ঘাট সচল রয়েছে। সেখানে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে যাত্রীবাহী পরিবহন এবং জরুরি কিছু পণ্যবাহী গাড়ি পার করা হচ্ছে। তবে সাধারণ পণ্যবাহী গাড়ি পারাপার বন্ধ রাখা হয়েছে।
দৌলতদিয়া জিরো পয়েন্টে (৩ নম্বর ঘাট) দায়িত্বরত বিআইডব্লিউটিসির নিরাপত্তা পরিদর্শক ইদ্রিস আলী ভূঁইয়া বলেন, গতকাল রাতে ফেরি শাহ পরান ঘাটে ভেড়ার সময় প্রচণ্ড ধাক্কায় পন্টুনের কবজা ভেঙে যায়। তখন থেকে ঘাটটি বন্ধ রাখা হয়।
এদিকে সংসদীয় আসন পুনর্বিন্যাসের প্রতিবাদে ফরিদপুরের ভাঙ্গায় কয়েক দিন ধরে সড়ক অবরোধ করা হচ্ছে। এতে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলা থেকে অনেক গাড়ি দৌলতদিয়া ঘাট দিয়ে পারাপার হচ্ছে। এ কারণেও দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় গাড়ির চাপ পড়ছে। আজ মঙ্গলবার সকালে দৌলতদিয়া প্রান্তে প্রায় দুই কিলোমিটার লম্বা গাড়ির লাইন তৈরি হয়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গাড়ির লাইন আরও লম্বা হচ্ছে। দীর্ঘ সময় আটকে থাকায় চালকসহ যাত্রীদের বাড়তি ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।
সৌহার্দ্য পরিবহনের ঘাট তত্ত্বাবধায়ক মনির হোসেন বলেন, ‘শুধু একটি ঘাট চালু থাকায় যানবাহন স্বাভাবিকভাবে পার হতে পারছে না। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল থেকে আসা ঢাকামুখী গাড়ি আটকে দীর্ঘ লাইন তৈরি হয়েছে। আমাদের চারটি যাত্রীবাহী বাস চার ঘণ্টার বেশি সময় ধরে আটকে আছে। বাসগুলো ফেরিতে উঠতে চার থেকে পাঁচ ঘণ্টার মতো সময় লাগছে।’
বিআইডব্লিউটিসির দৌলতদিয়া কার্যালয়ের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বলেন, তীব্র স্রোতের কারণে ফেরি পারাপারে অনেক বেশি সময় লাগছে। গতকাল রাত পৌনে ১২টার দিকে ৩ নম্বর ঘাটের পন্টুন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এখন শুধু ৪ নম্বর ঘাট চালু রয়েছে। যাত্রীবাহী বাস ও কিছু জরুরি গাড়ি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পার করা হচ্ছে। সাধারণ পণ্যবাহী গাড়ি আপাতত পার করা যাচ্ছে না।