দীর্ঘ এক যুগ পর ফতুল্লা থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের অন্তর্গত পাঁচটি ইউনিয়নে নতুন কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এতে নেতাকর্মীদের মধ্যে বইছে উৎসবের আমেজ। বিশেষ করে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে আসীন হতে অনেকে ইতিমধ্যেই লবিং-তদবির শুরু করেছেন।

জানা গেছে, ইউনিয়ন কমিটি গঠনের প্রক্রিয়াকে সামনে রেখে নড়েচড়ে বসেছেন ফতুল্লা থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক জাকির হোসেন রবিন ও সদস্য সচিব রাসেল মাহাম্মুদ।

তারা যোগ্য ও ত্যাগী নেতাদের দিয়েই নতুন নেতৃত্ব গড়ে তোলার লক্ষ্যে বিভিন্ন ইউনিয়নের সক্রিয় নেতাদের সম্পর্কে খোঁজখবর নিচ্ছেন। আগ্রহী নেতাকর্মীরাও তাদের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যোগাযোগ করছেন। 

আরও জানাগেছে, আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই ফতুল্লা, এনায়েতনগর, বক্তাবলী, কুতুবপুর ও কাশিপুর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের মতবিনিময় সভার মাধ্যমে নতুন কমিটি ঘোষণা করা হবে।

আর সেই নতুন কমিটিতে বিগত ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনা আমলে রাজপথের ত্যাগী ও নির্যাতিত এবং পরিক্ষীত নেতাকর্মীদেরকে মূল্যায়ন করা হবে। আর সেই কমিটিতে ফ্যাসিবাদের দোসর ও সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ এবং মাদক ব্যবসায়ীদের স্থান হবে না। 

এ প্রসঙ্গে আহ্বায়ক জাকির হোসেন রবিন ও সদস্য সচিব রাসেল মাহাম্মুদ বলেন, “গত ১২ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জ জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের উদ্যোগে তৃণমূল নেতাকর্মীদের নিয়ে কর্মীসভা অনুষ্ঠিত হয়।

ওই সভায় কেন্দ্রীয় সভাপতি এস এম জিলানী ভাই আমাদের আগামী ১০দিনের মধ্যে ইউনিয়ন কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন। সে নির্দেশনা অনুযায়ী পাঁচ ইউনিয়নে কমিটি গঠন করা হবে।”

তারা আরও বলেন,“স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার আমলে গত ১৬ বছরে যারা আমাদের সাথে রাজপথে আন্দোলন-সংগ্রামে হামলা, মামলা, জেল-নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, সেসব ত্যাগী নেতাকর্মীদের দিয়েই নতুন কমিটি গঠন করা হবে।

আমাদের লক্ষ্য ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়ন করা। আওয়ামী লীগের দোসর, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ ও মাদক ব্যবসায়ীদের এই কমিটিতে কোনো স্থান দেওয়া হবে না।”
 

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ ন ত কর ম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

স্তম্ভিত হারমানপ্রীত, আবেগ-রোমাঞ্চ-গর্ব-ভালোবাসায় মিলেমিশে একাকার

২০০৫ ও ২০১৭, ভারতের নারী ক্রিকেট দল ওয়ানডে বিশ্বকাপের খুব কাছে গিয়েও শিরোপা জিততে পারেননি। হারমানপ্রীত কৌররা লম্বা সেই অপেক্ষা দূর করলেন দুই হাজার পঁচিশে।

মুম্বাইয়ের নাভিতে প্রায় ষাট হাজার দর্শকের সামনে উচিুঁয়ে ধরলেন ওয়ানডে বিশ্বকাপের শিরোপা। ২০১৭ সালের ফাইনালেও খেলেছিলেন হারমানপ্রীত। রানার্সআপ হয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয় তাকে। এবার আর ভুল করলেন না। অধিনায়ক হয়ে জিতলেন শিরোপা। গড়লেন ইতিহাস। যে ইতিহাস কখনো মুছবে না। কখনো জং ধরবে না।

ঝলমলে হাসিতে হারমানপ্রীত ট্রফি হাতে নিয়ে প্রেস কনফারেন্স রুমে প্রবেশ করেন। এবার তার আবেগের ধরণ ছিল ভিন্ন, যেন স্বপ্ন পূরণের মাখামাখি। লম্বা সংবাদ সম্মেলন জুড়ে বারবার তার কণ্ঠ ধরে আসে। আবেগ, রোমাঞ্চ, গর্ব, ভালোবাসা, শ্রদ্ধা মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়। তবে একটি শব্দের ওপর বারবার ফিরে আসছিলেন তিনি, তা হলো আত্মবিশ্বাস,
‘‘আমি কেবল আমার অনুভূতি প্রকাশ করার চেষ্টা করছি। আমি স্তম্ভিত, আমি বুঝতে পারছি না। আসলে, এতে উত্থান-পতন ছিল, কিন্তু দলের মধ্যে আত্মবিশ্বাস ছিল। আমি প্রথম দিন থেকেই এটা বলে আসছি। আমরা বাম বা ডানে তাকাচ্ছিলাম না। আমরা কেবল আমাদের মূল লক্ষ্যের দিকে তাকিয়েছিলাম।’’ - বলেছেন হারমানপ্রীত।

স্বপ্ন পূরণের রাতে হারমানপ্রীত কাছে পেয়েছিলেন সাবেক তিন ক্রিকেটার মিতালি রাজ, ঝুলন গোস্বামী এবং অঞ্জুম চোপড়াকে। প্রত‌্যেকেই স্বপ্ন দেখেছিলেন ভারতকে বিশ্বকাপ জেতানোর। তাদের অধরা সেই স্বপ্ন পূরণ করেছেন জেমিমা, দীপ্তি, শেফালি, স্মৃতিরা।

শিরোপা উৎসবে যোগ দেন মিতালি, ঝুলন, আঞ্জুমরা। তাদের হাতেও ট্রফি তুলে দেওয়া হয়। প্রাক্তন খেলোয়াড়দের সাথে সেই মুহূর্তটি ভাগ করে নেওয়ার অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে হারমানপ্রীত বলেন, ‘‘ঝুলন দি আমার সবচেয়ে বড় আইডল ছিলেন। যখন আমি দলে যোগ দিই, তখন তিনি নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। আমি যখন খুব কাঁচা ছিলাম এবং ক্রিকেট সম্পর্কে তেমন কিছু জানতাম না, তখনও তিনি সবসময় আমাকে সমর্থন করতেন। অঞ্জুম দি-ও তাই। এই দুজন আমার জন্য দারুণ সমর্থন ছিলেন। আমি কৃতজ্ঞ যে আমি তাদের সাথে এই বিশেষ মুহূর্তটি ভাগ করে নিতে পেরেছি। এটি খুব আবেগপূর্ণ মুহূর্ত ছিল। আমার মনে হয় আমরা সবাই এটার জন্য অপেক্ষা করছিলাম। অবশেষে, আমরা এই ট্রফি স্পর্শ করতে পেরেছি।’’

তার জন‌্য বিশ্বকাপের পুরো অভিযানটিই ছিল গভীরভাবে আবেগপূর্ণ। রাউন্ড রবিন লিগে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ম‌্যাচ হার। চোট, অফ ফর্ম, জড়তা। সব সামলে সেরা হয়েছেন। তাইতো নিজেদের নিয়ে গর্বটাও বেশি হারমানপ্রীতদের, ‘‘আমরা প্রথম বল থেকেই অনুভব করেছিলাম যে আমরা জিততে পারি, কারণ শেষ তিন ম্যাচে আমাদের দল যেভাবে খেলছিল, তাতে আমাদের জন্য অনেক কিছুর পরিবর্তন এসেছিল, বিশেষ করে আমাদের আত্মবিশ্বাস। আমরা অনেকদিন ধরেই ভালো ক্রিকেট খেলছি। আমরা জানতাম দল হিসেবে আমরা কী করতে পারি।”

"গত এক মাস খুব আকর্ষণীয় ছিল। সেই দিনটির (ইংল্যান্ডের কাছে হারের) পর আমাদের মধ্যে অনেক পরিবর্তন আসে। সেই রাত আমাদের জন্য অনেক কিছু বদলে দিয়েছিল। এটি প্রত্যেকের উপর প্রভাব ফেলেছিল। আমরা বিশ্বকাপের জন্য আরও প্রস্তুত হলাম। আমরা ভিজ্যুয়ালাইজেশন এবং মেডিটেশন শুরু করেছিলাম। আমরা বারবার বলছিলাম, যে জন‌্য আমরা এখানে এসেছি এবং এবার আমাদের এটা করতেই হবে।" - যোগ করেন হারমানপ্রীত।

প্রথম যে কোনো কিছুই আনন্দের। রোমাঞ্চের। এই অভিজ্ঞতা শব্দে বয়ান করা যায় না। বয়ান করা সম্ভব হয় না। হারমানপ্রীতও পারেন না নিজের সবটা উজার করে বলতে। তবে এই শিরোপায় তাদের নাম লিখা হবে সেই আত্মবিশ্বাস তারও ছিল, ‘‘আমরা বহু বছর ধরে এটি নিয়ে কথা বলছি—আমরা ভালো ক্রিকেট খেলছি, কিন্তু আমাদের একটি বড় শিরোপা জিততেই হতো।"

ঢাকা/ইয়াসিন

সম্পর্কিত নিবন্ধ