শিক্ষক নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ তিন প্রার্থীর
Published: 18th, September 2025 GMT
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের নিয়োগের পরীক্ষায় অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ তুলেছেন পরীক্ষা দেওয়া তিন প্রার্থী। তাঁরা এ নিয়োগ পরীক্ষা বাতিল করে পরীক্ষার বোর্ড সদস্যদের প্রত্যাহারের দাবি করেছেন।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকসু ভবনের তৃতীয় তলায় সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়। অভিযোগ করা এই তিন প্রার্থী হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আশরাফুল নেছা, মহিমা আকতার এবং ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো.
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করে মো. আকিব বলেন, ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের শিক্ষক নিয়োগের লিখিত পরীক্ষায় আবেদন করেছিলেন ৪৩ জন। তবে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন ২৯ জন। এর মধ্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন ১৩ জন। তবে তাঁদের কাউকে পাস করানো হয়নি। নিয়োগ বোর্ডের সদস্যদের স্বজনপ্রীতির কারণে উদ্দেশ্যমূলকভাবে এমনটি করা হয়েছে বলে তাঁরা মনে করেন।
সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়, নিয়োগ বোর্ডে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের কোনো শিক্ষককে রাখা হয়নি। বরং অন্য বিভাগ ও অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষককে নিয়োগ পরীক্ষায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া লিখিত পরীক্ষার পরে পরীক্ষকদের খাতা পর্যবেক্ষণের সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। এতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আসা শিক্ষক তাঁর পছন্দের প্রার্থীর খাতা ঘুরে দেখেন এবং প্রশ্ন বুঝিয়ে দেন। সিসিটিভি ফুটেজ যাচাই করলে বিষয়টি প্রমাণ করা সম্ভব।
সংবাদ সম্মেলনে প্রার্থীরা বলেন, ‘লিখিত পরীক্ষার প্রশ্নপত্র তৈরি ও খাতা মূল্যায়ন করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই শিক্ষক। ফলে তাঁর নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাই উত্তীর্ণ হয়েছেন, আর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বাদ দেওয়া হয়েছে। এ নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ প্রহসনমূলক। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে এর ন্যায়বিচার ও যথাযথ সুরাহা চাই।’
আরও পড়ুনচট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগে দলীয়করণ হচ্ছে, অভিযোগ বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের২৫ জুলাই ২০২৫এর আগে গত ১৯ এপ্রিল ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগে শিক্ষক নিয়োগে দুই পদের বিপরীতে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিল কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগের আইন অনুযায়ী এ ধরনের বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার আগে বিভাগের পরিকল্পনা কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়। তবে এ বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার ক্ষেত্রে পরিকল্পনা কমিটির অনুমোদন নেওয়া হয়নি। এমনকি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার বোর্ডেও বিভাগের কোনো শিক্ষক রাখা হয়নি। এসব বিতর্কের মধ্যে দিয়েই গত মঙ্গলবার এ নিয়োগের পরীক্ষা হয়েছে।
তিন প্রার্থীর অভিযোগের বিষয়ে জানতে চেয়ে নিয়োগ বোর্ডের সদস্য ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক মুহাম্মদ মমতাজ উদ্দিন কাদেরীর মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির কোনো বিষয় আমার চোখে পড়েনি। এ অভিযোগগুলো কতটা বাস্তব, তা জানা নেই। যাঁরা আজ সংবাদ সম্মেলন করেছেন, তাঁরা হয়তো লিখিত পরীক্ষায় বাদ পড়েছেন। নিয়োগ পরীক্ষায় কোনো শিক্ষকের স্বজনপ্রীতি দেখানোর সুযোগ নেই। আমরা স্বচ্ছতার সঙ্গে নিয়োগ দেওয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।’
আরও পড়ুননিয়োগপ্রার্থীর প্রোফাইল লাল করার স্ক্রিনশট ফেসবুকে দিলেন সহ-উপাচার্য১৬ আগস্ট ২০২৫উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ল খ ত পর ক ষ স বজনপ র ত পর ক ষ য় গ পর ক ষ পর ক ষ র
এছাড়াও পড়ুন:
দুই মাস ফ্রিজে রাখার পর মামুনের মাথায় খুলি পুনঃস্থাপন
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থী মামুন মিয়ার মাথায় খুলি প্রায় দুই মাস ফ্রিজে সংরক্ষণ করার পর সফলভাবে পুনঃস্থাপন করা হয়েছে।
শনিবার (১ নভেম্বর) চট্টগ্রাম পার্কভিউ হাসপাতালে অপারেশনের মাধ্যমে খুলি পুনঃস্থাপন করেন চিকিৎসকরা।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, মামুন মিয়ার মাথায় সফলভাবে অপারেশন করা হয়েছে। তিনি এখন সুস্থ আছেন।
গত ৩০ আগস্ট চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে মাথায় আঘাত পেয়ে গুরুতর আহত হয়েছিলেন মামুন মিয়া।
চট্টগ্রাম নগরীর পাঁচলাইশের পার্কভিউ হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. এ টি এম রেজাউল করিম জানিয়েছেন, চবিতে সংঘর্ষের দিন গুরুতর আহত অবস্থায় মামুন মিয়াকে পার্কভিউ হাসপাতালে আনা হয়েছিল। সেই থেকে তিনি এখানে চিকিৎসাধীন আছেন। অপারেশনের সময় তার মাখার খুলি খুলে ফ্রিজে সংরক্ষণ করা হয়েছিল। দীর্ঘ প্রায় দুই মাস পর সফল অপারেশনের মাধ্যমে শনিবার মামুনের মাথার খুলি প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। বর্তমানে তিনি সুস্থ আছেন।
গত ৩০ আগস্ট তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে চবি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষ হয়। এতে মামুনসহ চবির অন্তত ৫০০ শিক্ষার্থী আহত হন। মাথায় মারাত্মক আঘাতের কারণে মামুনের মাথার খুলি খুলে রেখে দেওয়া হয়েছিল।
ঢাকা/রেজাউল/রফিক