‘ধপ ধপ করি কাছার ভাঙি বসতবাড়ি-গাছপালা সউগ গিলি খাইল’
Published: 7th, October 2025 GMT
‘নদী ভাঙতে ভাঙতে এমন অবস্থা করছে একটু আশ্রয় নেমো তার উপায় নাই। বৃষ্টি আর ঢলে ধপ ধপ করি কাছার (নদী তীরবর্তী জমি) ভাঙি বসতবাড়ি-গাছপালা সউগ গিলি খাইল। অসহায় হয়া অন্য দেশে (ভিন্ন উপজেলায়) চলে যাচ্ছি। সেখানে পোলাপান যাইতে চায় না। ইচ্ছে করে নদীত ভাসায় দেই, দিতে পারি না। চোখের মায়া।’
কান্নাজড়িত কণ্ঠে কথাগুলো বলছিলেন কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের বানিয়াপাড়া গ্রামের মনছেনা বেগম (৩৮)। টানা ভারী বৃষ্টি ও উজানের ঢলে কুড়িগ্রামের প্রায় সব নদ-নদীর পানি বেড়ে দুধকুমার নদে ভাঙন দেখা দেয়। এতে মনছেনা বেগমের বসতভিটা নদে বিলীন হয়ে গেছে।
বিগত ১০ বছরে তিনবার নদীভাঙনে বসতবাড়িসহ জায়গাজমি হারিয়ে ভূমিহীন হয়ে পড়েন মনছেনা বেগম। ২০২২ সালের ভাঙনের পর যাত্রাপুর ইউনিয়নের বানিয়াপাড়ায় বছর চুক্তিতে জমি ইজারা নিয়ে তিনি বাড়ি করেছিলেন। গতকাল সোমবার ভাঙনে সেটিও বিলীন হয়ে যায়। বাধ্য হয়ে পাশের নাগেশ্বরী উপজেলার চর নারায়ণপুরে বাবার বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন।
যাত্রাপুর ইউনিয়নে দুধকুমার নদের তীরবর্তী চর যাত্রাপুর, বানিয়াপাড়া এলাকায় পাঁচ শতাধিক পরিবারের বসবাস। নদের পানি বেড়ে বানিয়াপাড়ায় ভাঙন দেখা দিলে গতকাল ৩০টি বসতবাড়ি বিলীন হয়ে যায়। ভাঙনের ঝুঁকিতে আছে দুই শতাধিক পরিবার।
যাত্রাপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবদুল গফুর প্রথম আলোকে বলেন, কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে তাঁর চোখের সামনে ১৭টি বাড়ি ভেঙে গেছে। কিছুই করতে পারেননি।
উজানের ঢল ও ভারী বর্ষণে দুধকুমার, ধরলা ও তিস্তা নদীতে পানি বেড়ে ভাঙন দেখা দিয়েছে। রাজারহাট উপজেলার নাজিমখান ইউনিয়নের হাঁসার পাড় এলাকায় তিস্তা নদীতে ভাঙন দেখা দিয়েছে। কয়েক বছর আগে সেখানে জিও ব্যাগ ফেলেছিল পাউবো। উজানের স্রোতে সেই ব্যাগ কিছু ভেসে গেছে, কিছু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে এলাকার কয়েক শ পরিবার ভাঙনের ঝুঁকিতে আছে। ধরলা নদীর ভাঙনে উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের দুই শতাধিক পরিবার ভাঙনের ঝুঁকিতে আছে।
পাউবোর কুড়িগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী মো.
জেলা প্রশাসক সিফাত মেহনাজ প্রথম আলোকে বলেন, উজানের ঢলে হঠাৎ নদ-নদীর পানি বেড়ে ভাঙন দেখা দিয়েছে। পাউবোকে ভাঙন মোকাবিলায় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: উপজ ল র বসতব ড় পর ব র
এছাড়াও পড়ুন:
‘ধপ ধপ করি কাছার ভাঙি বসতবাড়ি-গাছপালা সউগ গিলি খাইল’
‘নদী ভাঙতে ভাঙতে এমন অবস্থা করছে একটু আশ্রয় নেমো তার উপায় নাই। বৃষ্টি আর ঢলে ধপ ধপ করি কাছার (নদী তীরবর্তী জমি) ভাঙি বসতবাড়ি-গাছপালা সউগ গিলি খাইল। অসহায় হয়া অন্য দেশে (ভিন্ন উপজেলায়) চলে যাচ্ছি। সেখানে পোলাপান যাইতে চায় না। ইচ্ছে করে নদীত ভাসায় দেই, দিতে পারি না। চোখের মায়া।’
কান্নাজড়িত কণ্ঠে কথাগুলো বলছিলেন কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের বানিয়াপাড়া গ্রামের মনছেনা বেগম (৩৮)। টানা ভারী বৃষ্টি ও উজানের ঢলে কুড়িগ্রামের প্রায় সব নদ-নদীর পানি বেড়ে দুধকুমার নদে ভাঙন দেখা দেয়। এতে মনছেনা বেগমের বসতভিটা নদে বিলীন হয়ে গেছে।
বিগত ১০ বছরে তিনবার নদীভাঙনে বসতবাড়িসহ জায়গাজমি হারিয়ে ভূমিহীন হয়ে পড়েন মনছেনা বেগম। ২০২২ সালের ভাঙনের পর যাত্রাপুর ইউনিয়নের বানিয়াপাড়ায় বছর চুক্তিতে জমি ইজারা নিয়ে তিনি বাড়ি করেছিলেন। গতকাল সোমবার ভাঙনে সেটিও বিলীন হয়ে যায়। বাধ্য হয়ে পাশের নাগেশ্বরী উপজেলার চর নারায়ণপুরে বাবার বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন।
যাত্রাপুর ইউনিয়নে দুধকুমার নদের তীরবর্তী চর যাত্রাপুর, বানিয়াপাড়া এলাকায় পাঁচ শতাধিক পরিবারের বসবাস। নদের পানি বেড়ে বানিয়াপাড়ায় ভাঙন দেখা দিলে গতকাল ৩০টি বসতবাড়ি বিলীন হয়ে যায়। ভাঙনের ঝুঁকিতে আছে দুই শতাধিক পরিবার।
যাত্রাপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবদুল গফুর প্রথম আলোকে বলেন, কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে তাঁর চোখের সামনে ১৭টি বাড়ি ভেঙে গেছে। কিছুই করতে পারেননি।
উজানের ঢল ও ভারী বর্ষণে দুধকুমার, ধরলা ও তিস্তা নদীতে পানি বেড়ে ভাঙন দেখা দিয়েছে। রাজারহাট উপজেলার নাজিমখান ইউনিয়নের হাঁসার পাড় এলাকায় তিস্তা নদীতে ভাঙন দেখা দিয়েছে। কয়েক বছর আগে সেখানে জিও ব্যাগ ফেলেছিল পাউবো। উজানের স্রোতে সেই ব্যাগ কিছু ভেসে গেছে, কিছু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে এলাকার কয়েক শ পরিবার ভাঙনের ঝুঁকিতে আছে। ধরলা নদীর ভাঙনে উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের দুই শতাধিক পরিবার ভাঙনের ঝুঁকিতে আছে।
পাউবোর কুড়িগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিবুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, উজানের ঢলে ধরলা, তিস্তা, দুধকুমারসহ কয়েকটি নদীতে ভাঙন দেখা দিয়েছে। তাঁরা জরুরি ভিত্তিতে সেসব এলাকার জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন মোকাবিলার চেষ্টা করছেন। যাত্রাপুর ইউনিয়নের বানিয়াপাড়ার ভাঙন মোকাবিলার জন্য ঠিকাদারকে বলা হয়েছে। কিন্তু ঠিকাদারের কর্মী সংকট থাকায় গতকাল কাজ শুরু করতে পারেননি।
জেলা প্রশাসক সিফাত মেহনাজ প্রথম আলোকে বলেন, উজানের ঢলে হঠাৎ নদ-নদীর পানি বেড়ে ভাঙন দেখা দিয়েছে। পাউবোকে ভাঙন মোকাবিলায় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।