শুধু লিটন দাসই নন, চ্যাম্পিয়নস ট্রফির বাংলাদেশ দল থেকে বাদ পড়েছেন শরীফুল ইসলাম।

চ্যাম্পিয়নস ট্রফির দলে লিটন দাসের না থাকা অবশ্যই বড় খবর। যে কারণে এই উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যানকে নিয়ে একাধিক প্রশ্নের জবাব দিতে হয়েছে প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেনকে।

প্রধান নির্বাচককে কথা বলতে হয়েছে বাঁহাতি পেসার শরীফুল ইসলামের বাদ পড়া নিয়েও। একইভাবে আলোচনায় এসেছে খুব একটা ছন্দে না থাকার পরও পারভেজ হোসেনের ওপর আস্থা রাখার কারণও।

২৩ বছর বয়সী শরীফুল বেশ কিছুদিন ধরে ছন্দে নেই। বাঁহাতি এই পেসার গত তিন মাসে বাংলাদেশের হয়ে তিন সংস্করণেই খেলেছেন। কিন্তু সর্বশেষ ৬ ম্যাচে নিতে পেরেছেন মাত্র ৩ উইকেট।

গত বছর জুলাইয়ে কানাডায় গ্লোবাল টি-টোয়েন্টি লিগে খেলার সময় থেকে চোট বয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছেন শরীফুল। কুঁচকির চোটের কারণে আগস্টে পাকিস্তানের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টে খেলতে পারেননি। ডিসেম্বরে এনসিএল টি-টোয়েন্টিতেও খেলেননি। বিপিএল দিয়ে মাঠে ফিরলেও ভালো করতে পারছেন না শরীফুল। চিটাগং কিংসের হয়ে এখন পর্যন্ত ৩ ম্যাচে নিয়েছেন ২ উইকেট; বল হাতে বেশ খরুচেও ছিলেন।    

সব মিলিয়ে প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফের মনে হয়েছে শরীফুল এ মুহূর্তে ছন্দে নেই, ‘তিনি (শরীফুল) কানাডা থেকে একটা চোট নিয়ে এসেছেন। বিভিন্ন প্রোগ্রামের পর আবার দলে এসেছেন। তবে আমাদের মনে হয়েছে সেরা অবস্থায় নেই। তাই তাঁকে পেতে আরেকটু সময় অপেক্ষা করতে হবে।’

শরীফুল না থাকলেও চ্যাম্পিয়নস ট্রফির দলে জায়গা করে নিয়েছেন চিটাগং কিংসে খেলা পারভেজ। ২২ বছর বয়সী এই ওপেনার বাংলাদেশের হয়ে ৭টি টি-টোয়েন্টি খেললেও এখনো ওয়ানডে অভিষেক হয়নি।

গত ডিসেম্বরে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের ওয়ানডে দলে প্রথমবারের মতো ডাক পান পারভেজ। কিন্তু কোনো ম্যাচেই তাঁকে একাদশে রাখা হয়নি। বিপিএলেও এখন পর্যন্ত তাঁর ব্যাট হাসেনি। চিটাগং কিংসের হয়ে প্রথম ৩ ম্যাচে তাঁর অবদান ১৩, ০ ও ১৭।

ছন্দে না থাকার পরও অনভিষিক্ত একজন চ্যাম্পিয়নস ট্রফির দলে জায়গা পেয়েছেন, সেটি গাজী আশরাফও মানছেন। তবে আক্রমণাত্মক ব্যাটিং-সামর্থ্যের কারণেই পারভেজকে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির দলে রাখা হয়েছে বলে জানান প্রধান নির্বাচক, ‘তাঁর (পারভেজের) হয়তো বড় ধরনের কোনো অবদান নেই। তবে আমাদের যেটা মনে হয়েছে, আমরা যেটা খুঁজছি, তা হলো পাওয়ার প্লেতে আক্রমণাত্মক ব্যাটিং।’

পারভেজকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে কেন খেলানো হয়নি—এর ব্যাখ্যায় গাজী আশরাফ বলেছেন, ‘নির্বাচক কমিটি সাধারণত এসবে (কাকে খেলাবে) হস্তক্ষেপ করে না। কোচ ও অধিনায়ক মূলত সিদ্ধান্ত নেন। কখনো কখনো আমরা আলোচনায় নির্দিষ্ট কোনো খেলোয়াড়কে নিয়ে আলোচনা করি। তানজিদের যে অ্যাপ্রোচ, সেটার সঙ্গে মিল রেখে একজনকে খুঁজেছি। তাই আমরা নতুন একজনকে (পারভেজকে) সুযোগ দিয়েছি।’

লিটন বাদ পড়ায় পারভেজকে যে আসলে বিকল্প ওপেনার হিসেবে নেওয়া হয়েছে, সেই ইঙ্গিতও দিয়ে রেখেছেন বাংলাদেশের অভিষেক ওয়ানডের অধিনায়ক গাজী আশরাফ, ‘বিকল্প কাউকে লাগলে তিনি তানজিদ-সৌম্যর মতো একই গতিতে খেলতে পারবেন। দলকে জেতাতে মূল লক্ষ্য ঠিক রাখতে তিনি সব সময় আক্রমণাত্মক থাকেন। এটা একটা বড় বিবেচনার বিষয়। সামনে হয়তো তিনি অবদান রাখতে পারবেন। তাই বড় টুর্নামেন্টে তাঁকে নেওয়া হয়েছে।’

বাংলাদেশ দলের চ্যাম্পিয়নস ট্রফি অভিযান শুরু হবে ২০ ফেব্রুয়ারি দুবাইয়ে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ফেসবুকে বিদ্বেষপূর্ণ মন্তব্য না করার নির্দেশনা সিলেট জেলা বিএনপির

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দায়িত্বহীন, অশালীন বা বিদ্বেষপূর্ণ পোস্ট, মন্তব্য কিংবা তথ্য শেয়ার থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে সিলেট জেলা বিএনপি। দলের কেউ এ নির্দেশনা লঙ্ঘন করলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানানো হয়েছে।

গতকাল রোববার রাতে জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিবৃতিটি গণমাধ্যমে পাঠিয়েছেন জেলা বিএনপির সহদপ্তর সম্পাদক মাহবুব আলম।
এদিকে দলের একজন জ্যেষ্ঠ নেতার বিরুদ্ধে ফেসবুকে কুরুচিপূর্ণ ও শিষ্টাচার–বহিভূর্ত মন্তব্য করায় গতকাল রাতে বিশ্বনাথ উপজেলার লামাকাজী ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আবেদুর রহমানকে (আছকির) সাময়িক বহিষ্কারের পাশাপাশি সাত দিনের মধ্যে কারণ দর্শাতে বলেছে জেলা বিএনপি। এ ছাড়া অনলাইন গণমাধ্যমে দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী বক্তব্য দেওয়ার জন্য জেলা বিএনপির সহসভাপতি ফখরুল ইসলামকে (ফারুক) সতর্কীকরণ নোটিশ দেওয়া হয়েছে।

জেলা বিএনপির বিবৃতিতে বলা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে সিলেট জেলা বিএনপির আওতাধীন কিছু ইউনিটের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম কার্যক্রমে অনভিপ্রেত ও পরস্পরবিরোধী বক্তব্য পরিলক্ষিত হয়েছে। বিশেষ করে বিশ্বনাথ উপজেলা, বিশ্বনাথ পৌরসভা ও ওসমানীনগর উপজেলা বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কিছু নেতা-কর্মীর মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিদ্বেষমূলক মন্তব্য, কটূক্তি ও বিভাজন সৃষ্টিকারী পোস্ট প্রচারিত হয়েছে। যা দলীয় শৃঙ্খলা ও ঐক্যের পরিপন্থী।

বিএনপি সব সময় সংগঠনের ঐক্য, শালীনতা ও পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধের রাজনীতি বিশ্বাস করে উল্লেখ করে বিবৃতিতে আরও বলা হয়, দলের কোনো পর্যায়ের নেতা বা কর্মীর কাছ থেকে বিভেদমূলক আচরণ, বিদ্বেষ ছড়ানো বা প্রকাশ্যে অপপ্রচার কখনোই কাম্য নয়। অতএব জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট সব ইউনিটের নেতা-কর্মীদের কঠোরভাবে সতর্ক করা হচ্ছে, যেন ভবিষ্যতে তাঁরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দায়িত্বহীন, অশালীন বা বিদ্বেষপূর্ণ পোস্ট, মন্তব্য বা শেয়ার থেকে সম্পূর্ণ বিরত থাকেন।

যোগাযোগ করলে জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, সম্প্রতি ফেসবুকে কিছু নেতা-কর্মীকে একে অন্যের বিরুদ্ধে বিষোদ্‌গার করতে দেখা গেছে। এ অবস্থায় জেলা বিএনপি একটি নির্দেশনা দিয়েছে। তা অমান্যকারী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ