নোভার্টিসের ওষুধ উৎপাদন শুরু করল নেভিয়ান
Published: 19th, October 2025 GMT
সিংহভাগ শেয়ার হাতবদলের পর নোভার্টিস (বাংলাদেশ) লিমিটেড পরিবর্তিত নাম ‘নেভিয়ান লাইফসাইন্স’ নামে যাত্রা শুরু করেছে। চুক্তির আওতায় বাংলাদেশে নোভার্টিসের বিশ্বখ্যাত ব্র্যান্ডগুলোর উৎপাদন ও বাজারজাতকরণ অব্যাহত রাখবে নেভিয়ান।
ইতিমধ্যে নোভার্টিস ব্র্যান্ডের ওষুধ নেভিয়ানের কারখানায় উৎপাদন শুরু হয়েছে। এ উপলক্ষে সম্প্রতি ঢাকার একটি হোটেলে নেভিয়ান উৎপাদিত নোভার্টিসের প্রথম ব্র্যান্ড ‘গ্যালভস মেট’–এর মোড়ক উন্মোচন করা হয়। নেভিয়ান লাইফসাইন্সের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে তুরস্কের বাণিজ্যিক কাউন্সিলর বিলাল বেলইউর্ট, ঢাকায় নিযুক্ত ব্রাজিল দূতাবাসের ডেপুটি হেড অব মিশন লিওনার্দো ডি অলিভেরা জানুজি, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো.
লাইসেন্সিং চুক্তির আওতায় নোভার্টিসের উৎপাদন ও মান নিয়ন্ত্রণপদ্ধতি হুবহু অনুসরণ করতে হবে নেভিয়ানকে। একই উপাদানে একই প্রক্রিয়ায় একই দক্ষ জনবল দিয়ে একই ম্যানুফ্যাকচারিং প্ল্যান্টে উৎপাদন হবে বিধায় নোভার্টিসের ওষুধের গুণগত মানের কোনো রকম পরিবর্তন হবে না বলে নিশ্চিত করেন নেভিয়ানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুসাওয়াত শামস জাহেদী।
নেভিয়ানের অন্যতম উদ্যোক্তা পরিচালক ও রেডিয়েন্ট ফার্মার চেয়ারম্যান নাসের শাহরিয়ার জাহেদী বলেন, ‘উদ্ভাবনী ওষুধ ও চিকিৎসাব্যবস্থার আধুনিকায়নে নোভার্টিসের শিকড় ২৫০ বছরের অধিক সময়জুড়ে বিশ্বব্যাপী বিস্তৃত হয়েছে। বিগত ৫০ বছরে বাংলাদেশের রোগী ও চিকিৎসকদের কাছেও নোভার্টিসের ওষুধগুলো হয়ে উঠেছে আস্থার আরেক নাম। বাংলাদেশে নোভার্টিস তার শেয়ার বিক্রির সিদ্ধান্ত নিলে আস্থার সেই জায়গায় শূন্যতা পূরণ করতেই নেভিয়ানের এই যাত্রা।’
বিসিআইসির চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান বলেন, নেভিয়ানের ব্যানারে নোভার্টিসের ওষুধ উৎপাদন শুধু একটি ব্যবসায়িক মাইলফলক নয়, বরং এটি বাংলাদেশে ওষুধশিল্পের আত্মনির্ভরতার পথে একটি শক্তিশালী অগ্রযাত্রা।
প্রসঙ্গত, ১৯৭৩ সালে বিসিআইসির সঙ্গে যৌথ উদ্যোগ হিসেবে যাত্রা শুরু করে সিবা গেইগি বাংলাদেশ। এটি ১৯৯৬ সালে বিশ্বব্যাপী স্যান্ডোজ নামের আরেক সুইজারল্যান্ডভিত্তিক ফার্মা কোম্পানির সঙ্গে একীভূত হয়ে নোভার্টিস (বাংলাদেশ) লিমিটেড নামে আত্মপ্রকাশ করে। প্রতিষ্ঠানটির মূল শেয়ারহোল্ডার নোভার্টিস এজি বাংলাদেশে তার শেয়ার বিক্রির সিদ্ধান্ত নিলে তা অধিগ্রহণে এগিয়ে আসে দেশের আরেক শীর্ষস্থানীয় ওষুধ প্রস্তুতকারক রেডিয়েন্ট। সিংহভাগ মালিকানার পরিবর্তন হলেও কোম্পানিটিতে বিসিআইসির শেয়ারহোল্ডিং অপরিবর্তিতই থাকছে। এ ছাড়া কোম্পানিটির নাম বদল হলেও আন্ডারলাইসেন্সি হিসেবে বাংলাদেশে নোভার্টিসের সব ওষুধের উৎপাদন নেভিয়ানে অব্যাহত থাকবে। পাশাপাশি নোভার্টিসের নতুন আবিষ্কৃত ওষুধগুলোর আমদানিকারক হিসেবেও বাংলাদেশে কাজ করবে নেভিয়ান।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব স আইস র রহম ন ব যবস উৎপ দ
এছাড়াও পড়ুন:
খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নেওয়ার তারিখ আরও পেছাচ্ছে
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ নেওয়ার তারিখ আবারও পেছানো হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে তাঁকে বিদেশ নেওয়ার বিষয়ে গতকাল শুক্রবার সকালে নতুন তারিখ বলা হয়েছিল ৭ ডিসেম্বর। পরে রাতে জানা গেছে, সে তারিখ পিছিয়ে সম্ভাব্য যাত্রার তারিখ ঠিক করা হয়েছে ৯ ডিসেম্বর। এই তারিখও পেছাতে পারে।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসা ও বিদেশ পাঠানোর বিষয়ে অবগত একটি সূত্র জানায়, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে তাঁকে বিদেশ পাঠানোর পরিকল্পনা আরও দুদিন পিছিয়ে ৯ ডিসেম্বর করা হয়েছে। তবে তাঁর যাত্রার বিষয়টি নির্ভর করছে তাঁর শারীরিক অবস্থা ও চিকিৎসকদের সিদ্ধান্তের ওপর। তবে গতকাল সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্যে তাঁর শারীরিক অবস্থার উন্নতির বিষয়ে কিছু জানা যায়নি। পরিস্থিতি অনেকটা অপরিবর্তিত রয়েছে।
এদিকে কাতারের ব্যবস্থাপনায় নতুন করে যে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করা হয়েছে, সেটা ৬ ডিসেম্বর ঢাকায় অবতরণের কথা থাকলেও পরে সময়সূচিও পুনর্নির্ধারণ করে ১০ ডিসেম্বর করা হয়েছে।
আরেকটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্স আসছেএদিকে খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নিতে কাতারের আমিরের পক্ষ থেকে একটি বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্স পাঠানোর কথা ছিল ঢাকায়। কারিগরি ত্রুটির কারণে সেটি পাঠানোর ক্ষেত্রে জটিলতা তৈরি হওয়ায় বিকল্প হিসেবে দ্রুত একটি ভাড়া করা এয়ার অ্যাম্বুলেন্স পাঠানোর ব্যবস্থা করছে কাতার সরকার।
গতকাল সন্ধ্যায় ঢাকায় কাতার দূতাবাস এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দুজন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
এ বিষয়ে ঢাকায় কাতার দূতাবাসের জনসংযোগ কর্মকর্তা আসাদুর রহমান আসাদ প্রথম আলোকে বলেন, কাতার সরকার জার্মানির একটি প্রতিষ্ঠানের এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে ঢাকায় পাঠাচ্ছে। চিকিৎসক এবং বিএনপি নেতাদের সঙ্গে সময় সমন্বয় করে ওই এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ঢাকায় পৌঁছাবে।
সংশ্লিষ্ট অপর একটি সূত্র জানায়, জার্মানির এফএআই রেন্ট-এ-জেট নামক একটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এই এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি ভাড়া করা হচ্ছে। এটি আসবে জর্জিয়ার রাজধানী তিবিলিসি থেকে। গতকাল বিকেলে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, এই এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি ৬ ডিসেম্বর বিকেলে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ ও পরদিন ৭ ডিসেম্বর ঢাকা থেকে যাত্রার কথা ছিল। পরে রাতে জানা যায়, এই সময়সূচি পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে। নতুন সূচি অনুযায়ী, এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় আসার কথা রয়েছে।
তবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানান, কাতারের আমিরের নির্দেশে খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নিতে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি পাঠানো হচ্ছে। সেটি কবে ঢাকা থেকে লন্ডনের উদ্দেশে যাত্রা করবে, সেটি চিকিৎসক এবং বিএনপি নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে চূড়ান্ত করা হবে।
কূটনৈতিক একাধিক সূত্র জানিয়েছে, ঢাকা থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে খালেদা জিয়ার সঙ্গে লন্ডনে যাওয়া লোকজনের কলেবর ছোট হবে। প্রাথমিকভাবে বিএনপি ১৮ জনের যে তালিকা করেছে, সেটা থেকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে খালেদা জিয়ার সঙ্গে লন্ডনে যাবেন। তালিকায় থাকা বাকি ব্যক্তিরা বাণিজ্যিক ফ্লাইটে যেতে পারেন।
চিকিৎসকেরা প্রাণপণ চেষ্টা করছেনগুরুতর অসুস্থ বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার বিষয়ে কয়েক দিন ধরেই আলোচনা চলছিল। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে বিএনপি নেতা ও চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ হোসেন জানান, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুসারে তাঁকে লন্ডনে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। শুক্রবার ভোরে কাতারের আমিরের দেওয়া এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে তাঁকে লন্ডন নেওয়া হবে।
এর এক ঘণ্টা পর আরেক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই তথ্য দেন। পরে রাতে জানা যায়, কাতারের আমিরের এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে ‘কারিগরি সমস্যা’ দেখা দেওয়ায় যাত্রা বিলম্বিত হতে পারে।
গতকাল সকাল ১০টার দিকে বিএনপির মিডিয়া সেল তাদের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে বিএনপির মহাসচিবকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা যদি যাত্রার জন্য উপযুক্ত থাকে এবং মেডিকেল বোর্ড সিদ্ধান্ত দিলে তাহলে তিনি ৭ ডিসেম্বর লন্ডনের উদ্দেশে রওনা দেবেন।
এরপর গতকাল জুমার নামাজের পর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় সংলগ্ন মসজিদে দোয়া মাহফিলের পর মির্জা ফখরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, খালেদা জিয়াকে সুস্থ করে তুলতে চিকিৎসকেরা প্রাণপণ চেষ্টা করছেন। শনিবার এয়ার অ্যাম্বুলেন্স এসে পৌঁছালে রোববার (৭ ডিসেম্বর) তাঁকে লন্ডনে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে বলে চিকিৎসকেরা আশা করছেন।
অবশ্য গতকাল রাতে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র থেকে জানা গেছে, যাত্রার সম্ভাব্য নতুন তারিখ ঠিক করা হয়েছে ৯ ডিসেম্বর।
আরও পড়ুনখালেদা জিয়ার জন্য জার্মানির প্রতিষ্ঠান থেকে ভাড়া করে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স পাঠাচ্ছে কাতার৬ ঘণ্টা আগেশাশুড়ির পাশে জুবাইদা রহমানলন্ডন থেকে ঢাকায় পৌঁছানোর পর শাশুড়ি খালেদা জিয়াকে দেখতে বিমানবন্দর থেকে সরাসরি রাজধানীর বসুন্ধরায় এভারকেয়ার হাসপাতালে যান জুবাইদা রহমান। এ সময় সঙ্গে ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান (ডানে)। গতকাল সকালে