প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস মালয়েশিয়ার প্রতি বাংলাদেশি শ্রমিকদের জন্য মাল্টিপল-এন্ট্রি ভিসা দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন, যাতে তারা প্রয়োজন অনুযায়ী সহজে দেশে ফিরতে পারেন। একইসঙ্গে গেল মে মাসে নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে কাজে যোগ দিতে না পারা ১৮ হাজার বাংলাদেশি শ্রমিকের প্রবেশের সুযোগ নিশ্চিত করারও আহ্বান জানান মুহাম্মদ ইউনূস।

সোমবার (১৩ জানুয়ারি) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অধ্যাপক ইউনুসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যান মালয়েশিয়ার হাইকমিশনার মোহাম্মদ শুহাদা ওথমান। তার সঙ্গে আলাপকালে প্রধান উপদেষ্টা এ আহ্বান জানান।

হাইকমিশনার জানান, মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠিত একটি যৌথ কারিগরি কমিটি গত ৩১ ডিসেম্বর এ বিষয়ে কুয়ালালামপুরে বৈঠক করেছে এবং মঙ্গলবার একই বিষয়ে আরেকটি বৈঠকের পরিকল্পনা রয়েছে।

গত অক্টোবর মাসে ঢাকায় মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকের কথা স্মরণ করে প্রধান উপদেষ্টা আশা প্রকাশ করেন, মালয়েশিয়া এ প্রক্রিয়াটি দ্রুত এগিয়ে নেবে, যাতে বাংলাদেশি শ্রমিকদের পরবর্তী দলটি কাজের উদ্দেশ্যে মালয়েশিয়ায় যাওয়ার পরিকল্পনা করতে পারে।

প্রধান উপদেষ্টা ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি থেকে আসিয়ান চেয়ারম্যানের দায়িত্ব গ্রহণের জন্য মালয়েশিয়াকে অভিনন্দন জানান এবং বাংলাদেশকে আসিয়ানের সেক্টোরাল ডায়ালগ পার্টনার ও পরবর্তীতে পূর্ণ সদস্য হওয়ার জন্য সমর্থন দেওয়ার আহ্বান জানান।

তিনি জানান, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৯/১৮২ রেজুল্যুশনের ভিত্তিতে ২০২৫ সালে রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে জাতিসংঘের উদ্যোগে অনুষ্ঠেয় আসন্ন আন্তর্জাতিক সম্মেলনে আসিয়ানের সমর্থন প্রয়োজন হবে। ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসে নিযুক্ত নতুন মালয়েশিয়ার হাইকমিশনারকে বাংলাদেশে আরো বেশি মালয়েশীয় বিনিয়োগ ও কারখানা স্থানান্তরের ওপর কাজ করার আহ্বান জানান, যাতে বাংলাদেশের যুবশক্তিকে কাজে লাগানো যায়।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘‘আমি আশা করি, আপনার বাংলাদেশে অবস্থানকালে অর্থনীতি এবং ব্যবসার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার সম্পর্ক আরো ঘনিষ্ঠ হবে।’’ 

প্রধান উপদেষ্টা জানান, বাংলাদেশ কুয়ালালামপুরে চতুর্থ দ্বিপক্ষীয় পরামর্শ প্রক্রিয়া (বিসিএম) অনুষ্ঠানে মালয়েশিয়ার পক্ষ থেকে একটি সুবিধাজনক তারিখের অপেক্ষায় রয়েছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ২০২৫ সালের মাঝামাঝি সময়ে ঢাকায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের পঞ্চম যৌথ কমিশন বৈঠক আয়োজনের জন্য প্রস্তুত রয়েছে। অনুষ্ঠানে এসডিজি বিষয়ক সিনিয়র সচিব লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন। বাসস

ঢাকা/এনএইচ

.

উৎস: Risingbd

এছাড়াও পড়ুন:

কথিত সংস্কার কাদের জন্য, কিসের জন্য: মাহমুদুর রহমান মান্না

‘এরা সংস্কারের কথা বলে, কিন্তু বাজেটে তার প্রতিফলন নেই। অর্থনীতিতে নেই, পুলিশের কোনো সংস্কার হচ্ছে না, শিক্ষায় নেই, কোথাও নেই। তাহলে এই সংস্কারটা কী?’ এ প্রশ্ন তুলেছেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না।

অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার প্রচেষ্টা নিয়ে আরও প্রশ্ন তুলে মান্না বলেছেন, ‘টাস্কফোর্স আছে, কিন্তু তার কোনো মূল্য নেই। পুলিশ বা প্রশাসনে কী সংস্কার হচ্ছে, সেটাও জানানো হচ্ছে না। কোনো কমিটি পর্যন্ত নেই। তাই প্রশ্ন জাগে, এই কথিত সংস্কার কাদের জন্য, কিসের জন্য?’

আজ সোমবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে আয়োজিত এক সেমিনারে এসব কথা বলেন মান্না। ‘বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং কল্যাণ রাষ্ট্রের ভাবনায় বাজেট ২০২৫-২৬’ শীর্ষক এ সেমিনারের আয়োজন করে নাগরিক ঐক্য।

আলোচনায় বাজেট নিয়ে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে বৈষম্য নিরসনের কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেই। বাজেট না হয়ে এটা রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রতিফলন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকে এমন কোনো কথা হয়েছে কি না, যেটা বাইরে বলা যাবে না, সেই প্রশ্ন করেছেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি। এরপরও নির্বাচনের তারিখের বিষয়ে দুই পক্ষ সম্মত হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন মান্না।

নির্বাচন ছাড়া যাওয়ার কোনো পথ নেই উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, আন্তর্জাতিক বা ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি যদি হঠাৎ কিছু ঘটিয়ে দেয়, সেটা বলা যায় না। কিন্তু আমরা তো জানি, সেই ঘটনা ঘটলেও নির্বাচন ছাড়া কোনো পথ নাই। সেই অর্থে মাইনাস নির্বাচন-এমন ধারণার কোনো ভিত্তি নেই। নির্বাচন ইস্যুতে বরফ জমে ছিল, এখন সেটি গলতে শুরু করেছে।

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মান্না বলেন, ‘বিএনপি বলেছিল ওই তারিখে নির্বাচন হতে পারবে না। সরকার বলেছিল একমাত্র ওই দল বিরোধিতা করছে। এখন যেভাবে কথা হচ্ছে, মনে হচ্ছে বরফ গলছে। আমি এটা ইতিবাচক মনে করি। আমি গণতন্ত্র চাই, সেই জন্যই নির্বাচনের ওপর এত জোর দিচ্ছি।’

পাচার করা অর্থ ফেরত আনার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ঘাটতি দেখছেন মাহমুদুর রহমান মান্না। তিনি বলেন, ‘আমরা পৃথিবীর যেখানেই যাই কেউ তো আমাদের ফেরত দিচ্ছে না। সবাই আমাদের ডাকছে আসো, তোমাদের কী লাগে সংস্কারের জন্য, কী করতে হবে, দেশটা বদলাবার জন্য কী করতে হবে, একদম সর্বোচ্চ জায়গা থেকে বলা হয়েছে। অথচ দেখলেন এই পাচার করা অর্থ ফিরিয়ে আনবার জন্য ইংল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী (যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার) কী আচরণ করলেন। উনি ঠিক করেছেন নাকি আমরা কোনো কথাবার্তা না বলে গেছি?’

সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। সেখানে লিখিত বক্তব্য দেন নাগরিক ঐক্যের সাংগঠনিক সম্পাদক সাকিব আনোয়ার। সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার, গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান, বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ, এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু, বাংলাদেশ শিক্ষক ইউনিয়নের সভাপতি আবুল বাসার হাওলাদার প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কথিত সংস্কার কাদের জন্য, কিসের জন্য: মাহমুদুর রহমান মান্না
  • লন্ডন বৈঠক পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে বৃটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে: মঈন খান
  • বাস-ট্রাক সংঘর্ষে ইবির শিক্ষার্থী নিহত
  • শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানকে হাজির হতে ২ পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ 
  • স্থায়ী গুমবিষয়ক কমিশন গঠন করা হবে: আইন উপদেষ্টা
  • পুঁজিবাজার অংশীজনদের সঙ্গে বিএসইসির ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়
  • ঈদ পরবর্তী শুভেচ্ছা বিনিময়ে বিনিয়োগকারীদের আমন্ত্রণ বিএসইসির
  • মধ্যপ্রাচ্যকে ‘অতল গহ্বরে’ পতিত হওয়া রোধে ট্রাম্পের পরবর্তী
  • বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ, ২৯০০ পদের আবেদন পাঠাতে হবে ডাকযোগে
  • কী হতে পারে ইরানে ইসরায়েলি হামলার পরিণাম