শিশুপুত্রকে ঘুমে রেখে গলায় ফাঁস নিলেন গৃহবধূ
Published: 14th, January 2025 GMT
ভোলার চরফ্যাসনে নুসরাত জাহান হাফসা (২৩) নামে এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। রোববার রাতে চরফ্যাসন পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ড থেকে তাঁর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। স্বামীর সঙ্গে অভিমান করে তিনি গলায় ফাঁস নিয়েছেন বলে জানা গেছে। এ সময় বিছানায় ঘুমন্ত অবস্থায় ছিল হাফসার তিন বছর বয়সী ছেলে তৌসিফ।
জানা গেছে, চার বছর আগে তাঁর বিয়ে হয় টেইলার্স ব্যবসায়ী ছালাউদ্দিনের ছেলে নজরুল ইসলাম মামুনের সঙ্গে। নজরুল পূবালী ব্যাংকের জুনিয়র অফিসার হিসেবে ঢাকায় কর্মরত।
স্বজনের বরাতে পুলিশ জানায়, রোববার রাতে মোবাইল ফোনে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে পারিবারিক বিষয় নিয়ে তর্কাতর্কি হয়। পরে হাফসা ছেলেকে নিয়ে শয়নকক্ষের দরজা বন্ধ করে দেন। শ্বশুর ছালাউদ্দিন বাজার থেকে বাড়ি ফেরে পুত্রবধূকে ডাকাডাকি করেন। সাড়াশব্দ না পেয়ে প্রতিবেশীদের সহায়তায় শয়নকক্ষের দরজা ভেঙে দেখেন ফ্যানের সঙ্গে ঝুলছেন হাফসা।
ছালাউদ্দিন বলেন, কী কারণে তাঁর পুত্রবধূ এমন করেছেন বুঝতে পারছেন না। তবে স্ত্রীর সঙ্গে ফোনে তর্কাতর্কির তথ্য অস্বীকার করেন তাঁর স্বামী নজরুল ইসলাম মামুন। তিনি দাবি করেন, স্ত্রীর সঙ্গে তাঁর কোনো বিরোধ ছিল না। ঢাকায় কর্মস্থলে থাকায় প্রায় রাতেই স্ত্রীর সঙ্গে ফোনে কথা হতো। রোববার রাতেও কথা হয়। কিন্তু কোনো তর্কাতর্কি হয়নি। ‘কী কারণে হাসফা আমার শিশুপুত্রকে এতিম করে গলায় ফাঁস নিল, সেটা আমার জানা নাই।’ হতাশার সুরে বলেন নজরুল।
চরফ্যাসন থানার ওসি মিজানুর রহমান হাওলাদার জানান, সংবাদ পেয়ে স্বামীর বাড়ির শয়নকক্ষ থেকে হাফসার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরিবারের অভিযোগ না থাকায় দাফনের জন্য লাশ বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন
টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।
এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।
গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।
প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।