ভোলার চরফ্যাসনে নুসরাত জাহান হাফসা (২৩) নামে এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। রোববার রাতে চরফ্যাসন পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ড থেকে তাঁর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। স্বামীর সঙ্গে অভিমান করে তিনি গলায় ফাঁস নিয়েছেন বলে জানা গেছে। এ সময় বিছানায় ঘুমন্ত অবস্থায় ছিল হাফসার তিন বছর বয়সী ছেলে তৌসিফ।

জানা গেছে, চার বছর আগে তাঁর বিয়ে হয় টেইলার্স ব্যবসায়ী ছালাউদ্দিনের ছেলে নজরুল ইসলাম মামুনের সঙ্গে। নজরুল পূবালী ব্যাংকের জুনিয়র অফিসার হিসেবে ঢাকায় কর্মরত। 

স্বজনের বরাতে পুলিশ জানায়, রোববার রাতে মোবাইল ফোনে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে পারিবারিক বিষয় নিয়ে তর্কাতর্কি হয়। পরে হাফসা ছেলেকে নিয়ে শয়নকক্ষের দরজা বন্ধ করে দেন। শ্বশুর ছালাউদ্দিন বাজার থেকে বাড়ি ফেরে পুত্রবধূকে ডাকাডাকি করেন। সাড়াশব্দ না পেয়ে প্রতিবেশীদের সহায়তায় শয়নকক্ষের দরজা ভেঙে দেখেন ফ্যানের সঙ্গে ঝুলছেন হাফসা।

ছালাউদ্দিন বলেন, কী কারণে তাঁর পুত্রবধূ এমন করেছেন বুঝতে পারছেন না। তবে স্ত্রীর সঙ্গে ফোনে তর্কাতর্কির তথ্য অস্বীকার করেন তাঁর স্বামী নজরুল ইসলাম মামুন। তিনি দাবি করেন, স্ত্রীর সঙ্গে তাঁর কোনো বিরোধ ছিল না। ঢাকায় কর্মস্থলে থাকায় প্রায় রাতেই স্ত্রীর সঙ্গে ফোনে কথা হতো। রোববার রাতেও কথা হয়। কিন্তু কোনো তর্কাতর্কি হয়নি। ‘কী কারণে হাসফা আমার শিশুপুত্রকে এতিম করে গলায় ফাঁস নিল, সেটা আমার জানা নাই।’ হতাশার সুরে বলেন নজরুল। 

চরফ্যাসন থানার ওসি মিজানুর রহমান হাওলাদার জানান, সংবাদ পেয়ে স্বামীর বাড়ির শয়নকক্ষ থেকে হাফসার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরিবারের অভিযোগ না থাকায় দাফনের জন্য লাশ বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। 

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

জব্দ করা জাটকা এতিমখানায় বিতরণ, সেই মাছ লুট করলেন আড়তদারেরা

চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় জব্দ করা ৭০ কেজি জাটকা দুটি মাদ্রাসা ও এতিমখানায় বিতরণ করা হয়েছিল। তবে সেই মাছ লুট করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে কয়েকজন আড়তদারের বিরুদ্ধে। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় উপজেলার আমিরাবাদ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

উপজেলা মৎস্য কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল বিকেলে মৎস্য কার্যালয়ের উদ্যোগে পরিচালিত জাটকা রক্ষার অভিযানে আমিরাবাদ ও দশানী বাজার থেকে ৭০ কেজি জাটকা জব্দ করা হয়। অভিযান পরিচালনা করেন মৎস্য কর্মকর্তা বিজয় কুমার দাস। পরে আমিরাবাদ এলাকায় জব্দ করা জাটকা উপজেলার হাজীপুর ও ফরাজীকান্দি মাদ্রাসা ও এতিমখানার শিক্ষক ও ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। স্থানীয় কিছু দুস্থ মানুষকেও কিছু জাটকা দেওয়া হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওই জাটকা নিয়ে ওই দুই মাদ্রাসার শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কমিটির লোকজন সন্ধ্যায় আমিরাবাদের বেড়িবাঁধ এলাকায় পৌঁছান। তখন আমিরাবাদ বাজারের মাছের আড়তদার আবুল প্রধান, আরিফ গাজী, সেরু প্রধানিয়া, দেলু বেপারীসহ আরও কয়েকজন তাঁদের পথরোধ করেন এবং জাটকাগুলো লুট করে নিয়ে যান।

হাজীপুর মাদ্রাসার ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম ও ফরাজীকান্দি মাদ্রাসার শিক্ষক মো. আল আমিন অভিযোগ করেন, মাছের ওই আড়তদারেরা তাঁদের নানাভাবে ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে তাঁদের কাছ থেকে জাটকা লুট করে নিয়ে যান। বাধা দিয়েও কাজ হয়নি। বিষয়টি মৎস্য কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) জানিয়েছেন।

এ অভিযোগের বিষয়ে আবুল প্রধান, আরিফ গাজী ও সেরু প্রধানিয়ার মুঠোফোন নম্বরে যোগাযোগ করা হলে সংযোগ বন্ধ পাওয়া যায়। তবে দেলু ব্যাপারী মুঠোফোনে বলেন, জাটকা লুট করা তাঁদের উচিত হয়নি। ওই জাটকা আজ (বৃহস্পতিবার) তাঁরা ফেরত দেবেন। এটি তাঁদের বড় ভুল হয়েছে।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিজয় কুমার দাস বলেন, বিষয়টি জানার পর ঘটনাস্থলে গিয়েছেন। জাটকা উদ্ধারে ব্যবস্থাপনা নেওয়া হচ্ছে।

ইউএনও মাহমুদা কুলসুম মনি বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর জাটকা উদ্ধারে তিনি থানার ওসি ও মৎস্য কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন। বিষয়টির তদন্ত চলছে। এ ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এতিমদের জাটকা লুট হওয়ার বিষয়টি খুব দুঃখজনক।

সম্পর্কিত নিবন্ধ