জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের পরিবারকে এককালীন সহায়তা এবং আহতদের চিকিৎসা অনুদান-সংক্রান্ত অর্থ বরাদ্দ চূড়ান্ত করা হয়েছে। প্রত্যেক শহীদের পরিবারকে এককালীন ৩০ লাখ টাকা এবং চিকিৎসা অনুদান বাবদ আহতদের চার ক্যাটেগরিতে দুই লাখ টাকা থেকে ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হবে। যারা গুরুতর আহত তাদের বিদেশে চিকিৎসার জন্যও অর্থ বরাদ্দ করা হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্প্রতি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। 

জানা গেছে, এ বিষয়ে শিগগিরই অর্থ বরাদ্দের প্রস্তুতি সম্পন্ন হবে। দুই-এক কার্যদিবসের মধ্যে এ-সংক্রান্ত অফিস আদেশ জারি হওয়ার কথা। বাজেট প্রস্তাবনায় মোট বরাদ্দ ধরা হয়েছে ৩৯৭ কোটি ৮০ লাখ টাকা। চলতি অর্থবছরে এ খাতে ২৩৪ কোটি ৬০ লাখ টাকা বরাদ্দের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। চলতি মাসেই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে অর্থ সহায়তা প্রদান কার্যক্রম উদ্বোধন হতে পারে। 

জানতে চাইলে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ইশরাত চৌধুরী সমকালকে বলেন, অনুদান হস্তান্তর অনুষ্ঠানের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে সারসংক্ষেপ পাঠানো হয়েছে। চলতি মাসেই অনুদান হস্তান্তরের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। 

মন্ত্রণালয়ের বাজেট শাখার পৃথক মঞ্জুরিপত্র পর্যালোচনায় দেখা গেছে, শহীদদের পরিবারের সদস্যদের চলতি অর্থবছরে ১০ লাখ টাকা করে সোনালী ব্যাংকের সঞ্চয়পত্র দেওয়া হবে। অবশিষ্ট ২০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র আগামী অর্থবছরে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এক্ষেত্রে ৮২৬ শহীদ পরিবারকে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। অর্থ বিভাগের বাজেটের অধীন ‘অপ্রত্যাশিত ব্যয় ব্যবস্থাপনা খাত’ থেকে চলতি অর্থবছরে শহীদ পরিবারের সদস্যদের সহায়তায় মোট বরাদ্দ ধরা হয়েছে ৮২ কোটি ৬০ লাখ টাকা। 

এদিকে অভ্যুত্থানে আহতদের চিকিৎসা অনুদান হিসেবে বাজেটে ১২৫ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব চূড়ান্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে ‘এ’ ক্যাটেগরিতে অন্তর্ভুক্তদের ‘আজীবন সাহায্যের আওতায়’ আনা হবে। এতে উভয় হাত/পাবিহীন, দৃষ্টিহীন, সম্পূর্ণভাবে মানসিক বিকারগ্রস্ত এবং কাজ করতে অক্ষম বা অনুরূপ আহত ব্যক্তিরা অন্তর্ভুক্ত হবেন। বাজেট প্রস্তাবনা অনুযায়ী, এ ক্যাটেগরির এক হাজারজনকে দুই লাখ টাকা করে দেওয়া হবে। ‘বি’ ক্যাটেগরিতে তিন হাজার আহতকে অনুদান দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে এক হাত/পাবিহীন, আংশিক দৃষ্টিহীন, মস্তিষ্কে গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত বা অনুরূপ আহত ব্যক্তিরা প্রত্যেকে এক লাখ টাকা করে সহায়তা পাবেন।

‘সি’ ক্যাটেগরিতে শ্রবণ/দৃষ্টিশক্তি ক্ষতিগ্রস্ত, গুলিতে আহত ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে যারা এখনও চিকিৎসাধীন, আরও চিকিৎসার প্রয়োজন এবং স্বাভাবিক কাজকর্ম করতে সক্ষম হবেন এমন চার হাজার আহতকে এক লাখ টাকা করে অনুদান দেওয়া হবে। ‘ডি’ ক্যাটেগরিতে সাধারণ আহতদের স্থান দেওয়া হয়েছে। এর আওতায় ৭ হাজার আহত ব্যক্তিকে ৫০ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়া হবে। গুরুতর আহতদের জন্য বাজেটে ২৫ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: জ ল ই গণহত য আহতদ র পর ব র র আহত

এছাড়াও পড়ুন:

৯ মাসে ৪,৬০০ কোটি টাকার ব্যবসা ওয়ালটনের

চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই-মার্চ) ৪ হাজার ৫৯৮ কোটি টাকার ব্যবসা করেছে ইলেকট্রনিক খাতের দেশীয় জায়ান্ট কোম্পানি ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজ। আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ওয়ালটনের ব্যবসা বেড়েছে ৩১২ কোটি টাকা বা সোয়া ৭ শতাংশের বেশি। গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে কোম্পানিটি ৪ হাজার ২৮৬ কোটি টাকার ব্যবসা করেছিল।

ব্যবসা বাড়লেও ওয়ালটনের মুনাফা কমে গেছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে ওয়ালটনের মুনাফা কমে দাঁড়িয়েছে ৬৯৬ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ৭৬২ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে ওয়ালটনের মুনাফা কমেছে ৬৬ কোটি টাকা বা সাড়ে ৮ শতাংশের বেশি।

গত রোববার ওয়ালটনের পরিচালনা পর্ষদের সভায় চলতি অর্থবছরের তৃতীয় প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদন করা হয়। আর্থিক প্রতিবেদনের ভিত্তিতে কোম্পানিটির মুনাফার তথ্য গতকাল সোমবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের জানিয়েছে কোম্পানিটি।

আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, আগের বছরের চেয়ে ব্যবসা বা আয় বৃদ্ধির পরও কোম্পানিটির মুনাফা কমেছে মূলত দুই কারণে। প্রথমত, কোম্পানিটির উৎপাদিত পণ্য বিক্রি ও সরবরাহ বাবদ খরচ আগের বছরের চেয়ে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়েছে। দ্বিতীয়ত, ব্যাংকঋণের সুদ ও বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময়মূল্যের কারণে আর্থিক খরচও উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়েছে।

আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে কোম্পানিটির পণ্য বিক্রি ও সরবরাহ বাবদ খরচ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫২৪ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ৪১০ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে এ খাতে কোম্পানিটির খরচ বেড়েছে ১১৪ কোটি টাকা বা ২৮ শতাংশ। এ ছাড়া গত অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে ওয়ালটনের ব্যাংক সুদ ও বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময়জনিত আর্থিক খরচের পরিমাণ ছিল ২৬৩ কোটি টাকা, যা চলতি অর্থবছরের একই সময়ে বেড়ে দাঁড়ায় ৩০৮ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক বছরে এই খাতে খরচ বেড়েছে ৫৮ কোটি টাকা বা ২৩ শতাংশের বেশি।

আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় আরও দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে কোম্পানিটির ব্যবসা বা আয় ৩১২ কোটি টাকা বাড়লেও তার বিপরীতে উৎপাদন খরচও বেড়েছে। একই সময়ের ব্যবধানে এই খরচ বেড়েছে ২১৮ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে ৪ হাজার ২৮৬ কোটি টাকার আয়ের বিপরীতে ওয়ালটনের উৎপাদন খরচ ছিল ২ হাজার ৭১৮ কোটি টাকা। সেখানে চলতি বছর ৪ হাজার ৫৯৮ কোটি টাকা আয়ের বিপরীতে উৎপাদন খরচ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৯৩৬ কোটি টাকা।

এদিকে ৯ মাসের সমন্বিত আয়-ব্যয়ের হিসাবের পাশাপাশি সর্বশেষ তৃতীয় প্রান্তিকের (জানুয়ারি-মার্চ) আর্থিক প্রতিবেদনও আলাদাভাবে প্রকাশ করেছে ওয়ালটন। তাতে দেখা যাচ্ছে, চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে কোম্পানিটি ২ হাজার ৫১ কোটি টাকার ব্যবসা করেছে। তার বিপরীতে মুনাফা করেছে ৩৯২ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ে কোম্পানিটি ১ হাজার ৯১৮ কোটি টাকার ব্যবসা করেছিল। তার বিপরীতে মুনাফা করেছিল ৪২২ কোটি টাকা। সেই হিসাবে তিন মাসে কোম্পানিটির মুনাফা কমেছে ৩০ কোটি টাকা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • না’গঞ্জে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে হতাহতদের আড়াই কোটি টাকার অনুদান ও সঞ্চয়পত্র প্রদান 
  • ভারতে মন্দিরের দেয়াল চাপা পড়ে ৮ জনের মৃত্যু
  • জাতীয় পরিচয়পত্র অনুবিভাগের সাবেক ডিজির এনআইডি ব্লক
  • সিদ্ধিরগঞ্জে জমি দখলকে কেন্দ্র করে হামলা, আহত ৪ 
  • কোমল পানীয় কেনা নিয়ে দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষ-বাড়িতে আগুন, নিহত ১
  • কোমল পানীয় কেনাকে কেন্দ্র করে বাড়িতে আগুন, মিটিং করে দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষে নিহত ১
  • রাস্তায় ইটভাটার মাটিতে নিয়ন্ত্রণ হারাল বাস, আহত ৬
  • ৯ মাসে ৪,৬০০ কোটি টাকার ব্যবসা ওয়ালটনের
  • ঈশ্বরদীতে জমি নিয়ে বিরোধে সংঘর্ষ, ১০ জন হাসপাতালে
  • নড়াইলে মোটরসাইকেলে বাসের ধাক্কা, শিশু নিহত