গাইবান্ধা সদর উপজেলার বোয়ালী ইউনিয়নে পারিবারিক বিরোধ নিষ্পত্তি করতে গিয়ে হামলায় আব্দুল জব্বার (৭০) নামে এক ইউপি সদস্য নিহত হয়েছেন। শুক্রবার দুপুরে উপজেলার বোয়ালী ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের জোদ্দ সরকারপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। আব্দুল জোব্বার বোয়ালী ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও নশরৎপুর গ্রামের মৃত খেজের উদ্দীনের ছেলে।

স্থানীয়রা জানান, জোদ্দ সরকারপাড়ার সানোয়ার মিয়ার প্রবাসী ছেলের স্ত্রী শ্বশুরবাড়িতে থাকতে চান না। তিনি তার বাবার বাড়িতে থাকতেন। কিছুদিন ধরে তার ছেলের স্ত্রী ঘরের আসবাবপত্র বাবার বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে আসছেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে পারিবারিক বিরোধ সৃষ্টি হয়। শুক্রবার দুপুরে জুমার নামাজের পর সালিস ডাকেন সানোয়ার মিয়া। সেই সালিসে উপস্থিত হন ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য (মেম্বার) আব্দুল জোব্বার। সালিস চলার সময় সানোয়ার মিয়ার ছেলের স্ত্রীকে আসবাবপত্র নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেন আব্দুল জোব্বার। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সানোয়ার মিয়ার মেয়ে মুক্তা রানী মেম্বারের ওপর হামলা চালায়। হামলার সময় তার দাঁড়ি, চুল টেনে ধরে টানেন এবং বুকে পিড়া (বসার বস্তু) দিয়ে আঘাত করেন মুক্তা রানী। এ সময় জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে পড়ে যান আব্দুল জব্বার। স্থানীয়রা তাকে আহত অবস্থায় গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। 

নিহতের ছোট ভাই আব্দুল মান্নান বলেন, ‘আমার বড় ভাইকে সালিসের কথা বলে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়। সানোয়ার মিয়ার বাড়ির সেই সালিসে তার মেয়ে আমার বৃদ্ধ ভাইকে আঘাত করেন। পরে হাসপাতালে তিনি মারা যান। আমরা এ ঘটনায় আইনের আশ্রয় নেব।’

বোয়ালী ই্উনিয়নের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম সাবু বলেন, ‘সানোয়ার মিয়ার ছেলের স্ত্রী শ্বশুরবাড়িতে থাকতে চান না। তাই তার ঘরের আসবাবপত্র তার বাবার বাড়িতে নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন। সালিসে মেম্বার সেসব আসবাবপত্র নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দিলে সানোয়ারের মেয়ে মুক্তা রানী মেম্বারের চুল, দাঁড়ি ধরে টানাহেঁচড়া করেন। একপর্যায়ে তার বুকে বসার পিড়া দিয়ে আঘাত করেন। পরে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে তার মৃত্যু হয়।’

গাইবান্ধা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিনুর ইসলাম তালুকদার বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

আজ মুখোমুখি শ্রীলঙ্কা-আফগানিস্তান, যে ম্যাচে ঝুলছে বাংলাদেশের ভাগ্য

এশিয়া কাপে আজকের রাত যেন এক নাটকীয় অধ্যায়। ‘বি’ গ্রুপের শেষ ম্যাচে আবুধাবির মাঠে মুখোমুখি হবে শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তান। বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৮টায় শুরু হওয়া এই লড়াই কেবল দুই দলের নয়, এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে বাংলাদেশের ভাগ্যও। কোটি টাইগার সমর্থক তাই আজ তাকিয়ে থাকবে টিভি পর্দায়। কারণ, এই ম্যাচেই নির্ধারিত হবে, বাংলাদেশ কি সুপার ফোরে উড়াল দেবে, নাকি গ্রুপ পর্বেই শেষ হবে স্বপ্নযাত্রা।

গ্রুপের সমীকরণ এখন টানটান নাটকের মতো। তিন ম্যাচে পূর্ণ ৪ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে শ্রীলঙ্কা। সমান ৪ পয়েন্ট থাকলেও রান রেটে পিছিয়ে দ্বিতীয় স্থানে বাংলাদেশ। আফগানিস্তানের ঝুলিতে আছে ২ পয়েন্ট; এক জয় ও এক হারের ফল। হংকং অবশ্য তিন ম্যাচেই হেরে অনেক আগেই বিদায় নিয়েছে।

আরো পড়ুন:

আমিরাতকে হারিয়ে সুপার ফোরে পাকিস্তান

আরব আমিরাতকে ১৪৭ রানের টার্গেট দিল পাকিস্তান

এখন হিসাবটা এমন—
আফগানিস্তান হেরে গেলে বাংলাদেশ নিশ্চিতভাবেই সুপার ফোরে।
আফগানিস্তান জিতলে সমীকরণ জটিল হবে। তখন শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশের পয়েন্ট সমান ৪ হলেও নেট রান রেটে স্পষ্ট এগিয়ে থাকবে আফগানরা (২.১৫০)। শ্রীলঙ্কার রান রেট ১.৫৪৬, আর বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে -০.২৭০-তে।

অর্থাৎ আফগানিস্তান যদি জেতে, তবে বাংলাদেশকে তাকিয়ে থাকতে হবে এক অসম্ভব সমীকরণের দিকে। সেটা হলো- লঙ্কানদের অন্তত ৭০ রানের ব্যবধানে হারতে হবে এবং তা করতে হবে ৫০ বল হাতে রেখে। অন্যথায় রান রেটের খেলায় পিছিয়েই থাকতে হবে টাইগারদের। তবে বৃষ্টি যদি হানা দেয় কিংবা ম্যাচ কোনো কারণে পরিত্যক্ত হয়, তাহলে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা দু’দলই নিশ্চিতভাবেই চলে যাবে সুপার ফোরে।

ম্যাচকে ঘিরে দুই শিবিরেই চাপ-উত্তেজনার আবহ। আফগানিস্তানের অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার গুলবাদিন নাইব মনে করেন, চাপটা আসলে শ্রীলঙ্কার ওপরই বেশি, “আমরা এসব টুর্নামেন্ট খেলতে অভ্যস্ত, আমাদের কোনো চাপ নেই। শ্রীলঙ্কা ভালো দল ঠিকই, তবে তারাও চাপে থাকবে। আমার মনে হয় দারুণ একটা ম্যাচ হবে।”

অন্যদিকে শ্রীলঙ্কার অলরাউন্ডার দাসুন শানাকা বাংলাদেশ প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “প্রতিটি ম্যাচই আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। হ্যাঁ, বাংলাদেশের সমর্থকরা আমাদের জয়ের জন্য অপেক্ষা করছে। আমরাও জয়ের লক্ষ্যেই মাঠে নামব।”

হংকংয়ের বিপক্ষে জিতলেও শ্রীলঙ্কাকে ঘাম ঝরাতে হয়েছিল। সেই অভিজ্ঞতা বলছে, আফগানিস্তানের বিপক্ষে জয়টা সহজ হবে না তাদের জন্যও। শেষ পর্যন্ত কারা হাসবে জয়ের হাসিতে, আর কোন সমীকরণে দাঁড়াবে বাংলাদেশের ভাগ্য; এই প্রশ্নের উত্তরই দেবে আজকের আবুধাবির রাত।

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ