২০২৪ সালের অন্যতম আলোচিত প্রেমের গল্প লিখছেন আর্জেন্টিনার তারকা ফুটবলার মাউরো ইকার্দি এবং অভিনেত্রী মারিয়া ইউজেনিয়া ‘লা চায়না’ সুয়ারেজ।  গত ৯ জানুয়ারি, বৃহস্পতিবার, ইনস্টাগ্রামে একটি পোস্টের মাধ্যমে তাদের সম্পর্কের কথা প্রকাশ্যে আনেন তারা। এরপর থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাদের ভালোবাসার প্রকাশ যেন থামছেই না।

সম্প্রতি সুয়ারেজ এবং ইকার্দির কিছু অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি ও ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। একটি ছবিতে দেখা যায়, অভিনেত্রী ফুটবলারের কোলে বসে আছেন। অপরদিকে, একটি ছোট ভিডিওতে দেখা যায়, তারা একসঙ্গে একটি সোফায় শুয়ে আছেন এবং চায়না ইকার্দির চুলে হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন। এই পোস্টগুলো মুহূর্তেই তাদের ভক্ত-অনুরাগীদের মধ্যে আলোড়ন তোলে।

ইকার্দির ইনস্টাগ্রাম পোস্টে নানা ধরণের মন্তব্য করেছেন তার ১৩.

৬ মিলিয়ন ফলোয়ার। কেউ বলেছেন, ‘আমি খুব দৃঢ় ভালোবাসা দেখতে পাচ্ছি, শিক্ষক’। কেউবা লিখেছেন, ‘তুর্কি ভক্তদের মন্তব্যের থেকে পিছিয়ে পড়ছি আমরা’। আবার কেউ সমালোচনা করে লিখেছেন, ‘সবকিছুই খুব ভান মনে হচ্ছে’।

চায়না সুয়ারেজ তার তার ইনস্টাগ্রামে ইকার্দির পোস্টটি শেয়ার করে হার্ট ইমোজি যোগ করেন, যা তাদের ভালোবাসার গভীরতা প্রকাশ পেয়েছে। এই রোমান্সের খবর ভক্তদের পাশাপাশি আর্জেন্টাইন তারকা এবং সেলিব্রিটিদের মধ্যেও সাড়া ফেলেছে। গ্রাসিয়েলা আলফানো মন্তব্যের ঘরে একাধিক হার্ট ইমোজি যোগ করে তাদের সমর্থন জানিয়েছেন। অন্যদিকে, মারিয়া ইউজেনিয়া রিতো মজা করে বলেছেন, ‘ভালোবাসাই সবকিছু... ভাবুন তো, তাদের সন্তানদের কেমন হবে!’

ইকার্দি এবং চায়না সুয়ারেজের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক শুরু থেকেই গণমাধ্যম ও ভক্তদের কৌতূহলের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। বিশেষত, ওয়ান্ডা নারার সঙ্গে ইকার্দির বিচ্ছেদ এবং চায়নার সঙ্গে নতুন সম্পর্কে জড়ানোর পর থেকেই বিষয়টি নিয়ে নানা আলোচনা চলছে। 

সম্প্রতি একটি গুজব ছড়ায় যে চায়না সুয়ারেজ এবং মাউরো ইকার্দি সন্তানের প্রত্যাশা করছেন। আর্জেন্টাইন সাংবাদিক ইয়ানিনা লাতোরে দাবি করেন, চায়নার প্রসূতি বিশেষজ্ঞ নাকি বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে চায়না সুয়ারেজ নিজেই সোশ্যাল মিডিয়ায় এই গুজব খণ্ডন করেন। তিনি স্পষ্টভাবে বলেন, ‘আমি গর্ভবতী নই।’। এ বিষয়ে তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, যারা এসব ভুয়া খবর ছড়াচ্ছে, তাদের উদ্দেশ্য নিয়ে তিনি ক্ষুব্ধ।

অন্যদিকে, মাউরো ইকার্দির বিরুদ্ধে মামলা নিয়ে আর্জেন্টিনার আদালতে ওয়ান্ডা নারা ভার্চুয়াল সাক্ষ্য দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, ইকার্দি তাকে এবং তার সন্তানদের নিয়মিত হুমকি দিতেন। ওয়ান্ডা বলেন, ‘আমি পাঁচ সন্তানের মা। তাদের মধ্যে তিনজন কিশোর এবং তারা এসব হুমকির সাক্ষী। মাউরো আমাদের ব্যক্তিগত মুহূর্তের ছবি এবং ভিডিও তার বন্ধুদের দেখাতো, যা আমাকে সবসময় বিব্রত করেছে।’  

তিনি আরও বলেন, ‘এই ১২ বছরে, প্রেম ও বিবাহের সময়কালে, মাউরো বিভিন্ন সময় আমাদের অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি ও ভিডিও ধারণ করেছে এবং সেগুলো অনেকের সঙ্গে শেয়ার করেছে। শুধু আমার সঙ্গে নয়, সে এমনকি অন্যদের সঙ্গেও এসব করতো।’

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আর জ ন ট ন আর জ ন ট

এছাড়াও পড়ুন:

স্তম্ভিত হারমানপ্রীত, আবেগ-রোমাঞ্চ-গর্ব-ভালোবাসায় মিলেমিশে একাকার

২০০৫ ও ২০১৭, ভারতের নারী ক্রিকেট দল ওয়ানডে বিশ্বকাপের খুব কাছে গিয়েও শিরোপা জিততে পারেননি। হারমানপ্রীত কৌররা লম্বা সেই অপেক্ষা দূর করলেন দুই হাজার পঁচিশে।

মুম্বাইয়ের নাভিতে প্রায় ষাট হাজার দর্শকের সামনে উচিুঁয়ে ধরলেন ওয়ানডে বিশ্বকাপের শিরোপা। ২০১৭ সালের ফাইনালেও খেলেছিলেন হারমানপ্রীত। রানার্সআপ হয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয় তাকে। এবার আর ভুল করলেন না। অধিনায়ক হয়ে জিতলেন শিরোপা। গড়লেন ইতিহাস। যে ইতিহাস কখনো মুছবে না। কখনো জং ধরবে না।

ঝলমলে হাসিতে হারমানপ্রীত ট্রফি হাতে নিয়ে প্রেস কনফারেন্স রুমে প্রবেশ করেন। এবার তার আবেগের ধরণ ছিল ভিন্ন, যেন স্বপ্ন পূরণের মাখামাখি। লম্বা সংবাদ সম্মেলন জুড়ে বারবার তার কণ্ঠ ধরে আসে। আবেগ, রোমাঞ্চ, গর্ব, ভালোবাসা, শ্রদ্ধা মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়। তবে একটি শব্দের ওপর বারবার ফিরে আসছিলেন তিনি, তা হলো আত্মবিশ্বাস,
‘‘আমি কেবল আমার অনুভূতি প্রকাশ করার চেষ্টা করছি। আমি স্তম্ভিত, আমি বুঝতে পারছি না। আসলে, এতে উত্থান-পতন ছিল, কিন্তু দলের মধ্যে আত্মবিশ্বাস ছিল। আমি প্রথম দিন থেকেই এটা বলে আসছি। আমরা বাম বা ডানে তাকাচ্ছিলাম না। আমরা কেবল আমাদের মূল লক্ষ্যের দিকে তাকিয়েছিলাম।’’ - বলেছেন হারমানপ্রীত।

স্বপ্ন পূরণের রাতে হারমানপ্রীত কাছে পেয়েছিলেন সাবেক তিন ক্রিকেটার মিতালি রাজ, ঝুলন গোস্বামী এবং অঞ্জুম চোপড়াকে। প্রত‌্যেকেই স্বপ্ন দেখেছিলেন ভারতকে বিশ্বকাপ জেতানোর। তাদের অধরা সেই স্বপ্ন পূরণ করেছেন জেমিমা, দীপ্তি, শেফালি, স্মৃতিরা।

শিরোপা উৎসবে যোগ দেন মিতালি, ঝুলন, আঞ্জুমরা। তাদের হাতেও ট্রফি তুলে দেওয়া হয়। প্রাক্তন খেলোয়াড়দের সাথে সেই মুহূর্তটি ভাগ করে নেওয়ার অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে হারমানপ্রীত বলেন, ‘‘ঝুলন দি আমার সবচেয়ে বড় আইডল ছিলেন। যখন আমি দলে যোগ দিই, তখন তিনি নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। আমি যখন খুব কাঁচা ছিলাম এবং ক্রিকেট সম্পর্কে তেমন কিছু জানতাম না, তখনও তিনি সবসময় আমাকে সমর্থন করতেন। অঞ্জুম দি-ও তাই। এই দুজন আমার জন্য দারুণ সমর্থন ছিলেন। আমি কৃতজ্ঞ যে আমি তাদের সাথে এই বিশেষ মুহূর্তটি ভাগ করে নিতে পেরেছি। এটি খুব আবেগপূর্ণ মুহূর্ত ছিল। আমার মনে হয় আমরা সবাই এটার জন্য অপেক্ষা করছিলাম। অবশেষে, আমরা এই ট্রফি স্পর্শ করতে পেরেছি।’’

তার জন‌্য বিশ্বকাপের পুরো অভিযানটিই ছিল গভীরভাবে আবেগপূর্ণ। রাউন্ড রবিন লিগে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ম‌্যাচ হার। চোট, অফ ফর্ম, জড়তা। সব সামলে সেরা হয়েছেন। তাইতো নিজেদের নিয়ে গর্বটাও বেশি হারমানপ্রীতদের, ‘‘আমরা প্রথম বল থেকেই অনুভব করেছিলাম যে আমরা জিততে পারি, কারণ শেষ তিন ম্যাচে আমাদের দল যেভাবে খেলছিল, তাতে আমাদের জন্য অনেক কিছুর পরিবর্তন এসেছিল, বিশেষ করে আমাদের আত্মবিশ্বাস। আমরা অনেকদিন ধরেই ভালো ক্রিকেট খেলছি। আমরা জানতাম দল হিসেবে আমরা কী করতে পারি।”

"গত এক মাস খুব আকর্ষণীয় ছিল। সেই দিনটির (ইংল্যান্ডের কাছে হারের) পর আমাদের মধ্যে অনেক পরিবর্তন আসে। সেই রাত আমাদের জন্য অনেক কিছু বদলে দিয়েছিল। এটি প্রত্যেকের উপর প্রভাব ফেলেছিল। আমরা বিশ্বকাপের জন্য আরও প্রস্তুত হলাম। আমরা ভিজ্যুয়ালাইজেশন এবং মেডিটেশন শুরু করেছিলাম। আমরা বারবার বলছিলাম, যে জন‌্য আমরা এখানে এসেছি এবং এবার আমাদের এটা করতেই হবে।" - যোগ করেন হারমানপ্রীত।

প্রথম যে কোনো কিছুই আনন্দের। রোমাঞ্চের। এই অভিজ্ঞতা শব্দে বয়ান করা যায় না। বয়ান করা সম্ভব হয় না। হারমানপ্রীতও পারেন না নিজের সবটা উজার করে বলতে। তবে এই শিরোপায় তাদের নাম লিখা হবে সেই আত্মবিশ্বাস তারও ছিল, ‘‘আমরা বহু বছর ধরে এটি নিয়ে কথা বলছি—আমরা ভালো ক্রিকেট খেলছি, কিন্তু আমাদের একটি বড় শিরোপা জিততেই হতো।"

ঢাকা/ইয়াসিন

সম্পর্কিত নিবন্ধ