ছাতক উপজেলায় হাওরে বোরো ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ চলছে ধীরগতিতে। ফসল রক্ষা বাঁধ প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি (পিআইসি) এসব বাঁধের কাজে যথাযথ গতি দিচ্ছে না বলে অভিযোগ কৃষকের।
স্থানীয় বোরো চাষিরা বলছেন, প্রকল্পগুলোর কোথাও ২০ ভাগ, আবার কোথাও মাত্র ২৫ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। তবে পিআইসির দাবি, পুরো উপজেলায় শনিবার পর্যন্ত কাজ সম্পন্ন হয়েছে ৩০ থেকে ৩৫ ভাগ।
কমিটির দায়িত্বশীলরা বলছেন, কিছু কিছু এলাকায় মাটি সংগ্রহ করতে গিয়ে চরম ভোগান্তির মুখে পড়তে হচ্ছে পিআইসিকে।
এসব প্রকল্পের অধীনে চলমান কয়েকটি 
কাজই কেবল দৃশ্যমান। এর বাইরে অধিকাংশ বাঁধের কাজের গতি একেবারেই কম বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। হাওর অঞ্চলের কৃষকদের দাবি, দ্রুত সময়ের মধ্যে টেকসই বাঁধ নির্মাণকাজ সম্পন্ন করা হোক।
সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী নভেম্বরের মধ্যে প্রকল্প নির্ধারণ ও পিআইসি গঠনের কাজ শেষ করার কথা থাকলেও নানা জটিলতায় এ অঞ্চলে কমিটি গঠনে বিলম্ব হয়। বাঁধের কাজের জন্য এলাকার স্থানীয় কৃষক ও সুবিধাভোগীদের নিয়ে পিআইসি গঠন করার কথা থাকলেও এবার অধিকাংশ পিআইসি গঠন করা হয়েছে রাজনৈতিক বিবেচনায়– এমনটাই জানিয়েছেন স্থানীয় অনেক কৃষক। 
জাউয়াবাজার ইউনিয়নের দক্ষিণ বড়কাপন এলাকার বাসিন্দা পিআইসির প্রকল্পের সভাপতি এলাক উদ্দিন জানান, কমিটি গঠন শেষে কার্যাদেশ পাওয়ার পর হাওরে বাঁধের কাজ দ্রুতগতিতেই চলছে। মাটি ভরাটের কাজ প্রায় ৪০ ভাগ শেষ। এরপর মাটি স্তূপ ও ড্রেসিংয়ের কাজ শুরু হবে।
ছাতক উপজেলা ছাড়াও দোয়ারাবাজার, শান্তিগঞ্জ ও সুনামগঞ্জ সদর পর্যন্ত বোরো ফসল রক্ষায় ডেকার হাওরের বাঁধটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এটি ক্লোজার হিসেবে পরিচিত। এর মুখ দিয়ে বন্যার পানি ঢুকতে পারলে সব ফসল পানিতে তলিয়ে যায়। কমিটির সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন, নির্ধারিত সময়ের আগেই কাজ শেষ করতে পারবেন।
একই ইউনিয়নের দেবেরগাঁও এলাকার বাসিন্দা পিআইসি সভাপতি মমশ্বর আলী ফোরকান জানান, কুড়িবিলের ক্লোজারটির কাজ দ্রুতগতিতেই চলছে। স্থানীয় পাউবো কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে নিয়মিত প্রকল্পের কাজ তদারকি করা হচ্ছে। তাদের দাবি, নির্ধারিত সময়ে প্রকল্পের কাজ শেষ করা হবে।
দক্ষিণ বড়কাপন এলাকার বাসিন্দা পিআইসি সভাপতি তাজউদ্দিন জানান, প্রকল্পের মাটি অনেক দূর থেকে সংগ্রহ করতে গিয়ে ভরাটের কাজে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে। এখানে বাঘারাই মেইন রাস্তার পাশে একটি কবরস্থান থাকায় বাঁধ নির্মাণকাজে কিছু সমস্যা তৈরি হয়েছে। মাটি ভরাট শেষ হলে বাকি কাজও দ্রুত সময়ের মধ্যে শেষ হবে। 
উপজেলার ২৮টি পিআইসির মধ্যে নোয়ারাই ইউনিয়নের অতিগুরুত্বপূর্ণ নাইন্দার হাওরের বোরো ফসল রক্ষায় মাছুখাল ক্লোজারটির কাজ এখন পর্যন্ত শুরু করা যায়নি। মূলত এখানে খালের মুখ দিয়ে পানিপ্রবাহ বেশি থাকায় কাজ শুরু করা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
ডেকার হাওরের একাধিক কৃষক বাঁধের কাজের বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, অনেক বাঁধের কাজ হচ্ছে নিম্নমানের। এসব কাজে নিয়মিত তদারকিও করা হচ্ছে না। তাদের অভিযোগ পুরোনো বাঁধে কোনোমতে মাটি দিয়ে তড়িঘড়ি কাজ শেষ করার পাঁয়তারা চলছে। বাঁধের কাজ ভালো না হলে পানিতে কৃষকের কষ্টের বোরো ফসল তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। 
উপজেলা হাওর বাঁচাও আন্দোলন কমিটির সাধারণ সম্পাদক শাহ্‌ মো.

আখতারুজ্জামান জানান, প্রতিবছরই সরকারদলীয় সমর্থক ও পছন্দের কৃষকরা এসব প্রকল্পের কাজ করে থাকেন। তবে এবার প্রকল্পের কাজে রাজনৈতিক বিবেচনা ছাড়াও অনেক কৃষক যুক্ত হয়েছেন। পিআইসিগুলোর হিসাব অনুযায়ী গড়ে ৩০-৩৫ শতাংশ কাজ হয়েছে। হাওরের ফসল রক্ষায় পিআইসি আন্তরিকতার সঙ্গে টেকসই কাজ করলেই যথাসময়ে নিশ্চিন্তেই ফসল ঘরে তোলা সম্ভব।
উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের আঞ্চলিক কার্যালয়ে কর্মকর্তা ও কাবিখা কমিটির সদস্য সচিব মাসুম চৌধুরী জানান, হিসাব অনুযায়ী সবক’টি প্রকল্পে গড়ে ২৫ থেকে ৩০ ভাগ মাটির কাজ শেষ হয়েছে। এখন পর্যায়ক্রমে ফিনিশিং, ডাম্পিং ও ড্রেসিংয়ের কাজ শুরু হবে। 
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও কাবিখা কমিটির সভাপতি তরিকুল ইসলাম জানান, পিআইসিগুলোর প্রকল্পের কাজ চলছে দ্রুতগতিতেই। উপজেলা কাবিটা স্কিম প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন মনিটরিং কমিটির পক্ষ থেকে নিয়মিতই কাজ দেখভাল করা হচ্ছে। সরকার নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই সবক’টি বাঁধের কাজ শেষ করা সম্ভব হবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রমতে, কাবিটা নীতিমালা অনুযায়ী চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে  বিভিন্ন হাওর রক্ষা বাঁধের কাজ ১৫ ডিসেম্বর শুরু করে ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে শেষ করার কথা। পাউবো কর্তৃপক্ষ বলছে, চলতি বছরে ১৩টি ইউনিয়নের মধ্যে মোট ২৮টি প্রকল্পের অধীনে বোরো ফসল রক্ষার জন্য নোয়ারাই, জাউয়াবাজার, চরমহল্লা, দক্ষিণ খুরমা ও সিংচাপইড় ইউনিয়নে ৩ কোটি ২৯ লাখ ৭৮ হাজার টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প রকল প র ক জ ক জ শ ষ কর র ত সময় র কম ট র স এল ক র উপজ ল প আইস

এছাড়াও পড়ুন:

খেলাপি ঋণে বাংলাদেশ এশিয়ায় কেন শীর্ষে

বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে মন্দ বা খেলাপি ঋণ অনেক দিনের বিরাট সমস্যা। শুরুতে শুধু রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোয় এ ব্যাধি বিদ্যমান হলেও পরবর্তী সময়ে বৃহৎ ব্যক্তিমালিকানাধীন ব্যাংকেও ছড়িয়ে পড়ে। এটি, তথা ঋণখেলাপির সংস্কৃতি ধীরে ধীরে এক মহিরুহ আকার ধারণ করেছে।

গত বছরের আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ব্যাংক খাতের লুকানো খেলাপি ঋণ বের হয়ে আসছে। আবার অনেক আওয়ামী লীগ নেতা ও তাঁদের ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীদের ঋণও খেলাপি হয়ে যাচ্ছে। তাতে বাংলাদেশের ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণ এক বছরের ব্যবধানে মোট ঋণের ১২ শতাংশ থেকে বেড়ে ২৮ শতাংশ ছাড়িয়েছে। অর্থাৎ ব্যাংক খাতের বিতরণ করা ঋণের এক-চতুর্থাংশের বেশি এখন খেলাপি।

 সম্প্রতি প্রকাশিত এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) এক প্রতিবেদনে খেলাপি ঋণের দিক থেকে এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের শীর্ষে উঠে আসার বিষয়টি সামনে এসেছে। এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর আর্থিক বিভিন্ন সূচকের অবস্থা নিয়ে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। অবশ্য খেলাপি ঋণের ক্ষেত্রে বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে ২০২৩ সালের তথ্য। তাতেই বাংলাদেশ শীর্ষে। এটি যে ২০২৫ সালে অনেক গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে, তা আমরা জানি।

আগে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কায়দায় বাংলাদেশে খেলাপি ঋণ কম দেখানো হতো। অন্যদিকে সহজে ঋণ পুনঃ তফসিল ও পুনর্গঠন করার কারণেও খেলাপি ঋণ কম ছিল। এখন ঋণমানে আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুসরণ করা শুরু হয়েছে। আবার ব্যবসা-বাণিজ্যে মন্দা ও আওয়ামী রাজনীতি–সমর্থিত ব্যক্তিদের ব্যবসা খারাপ হয়ে পড়ায় খেলাপি ঋণ বাড়ছে।

খেলাপি ঋণ এভাবে বাড়তে থাকলে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হবে, সন্দেহ নেই। ব্যবসা-বাণিজ্যও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাই ব্যবসা-বাণিজ্য সহজ করতে উদ্যোগ নিতে হবে। যাঁরা ভালো ব্যবসায়ী, তাঁরা যেন আবার ব্যবসা শুরু করতে পারেন, সে ব্যবস্থা করতে হবে। সেটি নিয়ে সরকার কাজও করছে।

 এডিবির প্রতিবেদন অনুযায়ী, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে খেলাপি ঋণের হার সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশে। ২০২৩ সাল শেষে এই হার ছিল ৯ দশমিক ৬ শতাংশ। প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সাল থেকে প্রতিবছরই বাংলাদেশের খেলাপি ঋণের হার বেড়েছে। ২০২১ সালে এই হার ছিল ৮ শতাংশ, ২০২২ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৮ দশমিক ৭ শতাংশে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের মতো ২০২১ সাল থেকে খেলাপি ঋণ বেড়েছে নেপাল ও শ্রীলঙ্কার।

দক্ষিণ এশিয়ার বাকি দেশগুলোর খেলাপি ঋণ কমেছে। যেমন ভুটানের খেলাপি ঋণের হার ২০২০ সালে ছিল ১১ দশমিক ৭ শতাংশ, যা ২০২২ সালে কমে হয়েছে ৩ শতাংশ। ভারতের খেলাপি ঋণের হার ২০২০ সালে ছিল ৭ দশমিক ৯ শতাংশ, যা ২০২৩ সালে কমে হয়েছে ১ দশমিক ৭ শতাংশ। মালদ্বীপের খেলাপি ঋণ এই সময়ে ১৮ দশমিক ৮ শতাংশ থেকে কমে হয়েছে ৮ দশমিক ৩ শতাংশ। একই প্রতিবেদন অনুযায়ী, এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কম খেলাপি ঋণ তাইওয়ান ও কোরিয়ার। দেশ দুটির খেলাপি ঋণের হার যথাক্রমে শূন্য দশমিক ১ ও শূন্য দশমিক ২ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, ২০২৪ সাল শেষে বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের হার ছিল ২০ দশমিক ২০ শতাংশ। ২০২৫ সালের জুন শেষে এটি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৩০ হাজার ৪২৮ কোটি টাকায়, যা বিতরণ করা মোট ঋণের ২৭ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ। অর্থাৎ ব্যাংক খাতের বিতরণ করা মোট ঋণের চার ভাগের এক ভাগের বেশি খেলাপি হয়ে গেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের বলতে শুনেছি, গত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ব্যাংক থেকে নামে-বেনামে যে অর্থ বের করে নেওয়া হয়েছে, তা এখন খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত হতে শুরু করেছে। আগেই বলেছি, ঋণখেলাপি হওয়ার নিয়ম আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার কারণেও দেশে খেলাপি ঋণ বাড়ছে। যেসব ঋণ নবায়ন করা হয়, তার অনেকগুলো আদায় হচ্ছে না। অনিয়মের কারণে অনেক ঋণকে খেলাপি হিসেবে তালিকাভুক্ত করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিদর্শন বিভাগ। এতে খেলাপি ঋণ বাড়ছে, যা সামনে আরও বাড়তে পারে।

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ যখন সরকার গঠন করে, তখন মোট খেলাপি ঋণ ছিল মাত্র ২২ হাজার ৪৮১ কোটি টাকা। এর পর থেকে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়েই চলেছে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা অনেক দিন ধরেই অভিযোগ করছিলেন, বিগত সরকারের ঘনিষ্ঠ ও প্রভাবশালী ব্যক্তিরা নানা অনিয়মের মাধ্যমে ব্যাংক থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ বের করে নিয়ে যাচ্ছেন, যার একটা বড় অংশই বিদেশে পাচার হয়ে গেছে।

সূত্রগুলো বলছে, দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ ও বহুল সমালোচিত ব্যবসায়ী গোষ্ঠী চট্টগ্রামের এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণমুক্ত হওয়া ব্যাংকগুলোর ঋণের প্রকৃত চিত্র বের হতে শুরু করেছে। এর মধ্যে ইসলামী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ সবচেয়ে বেশি বেড়েছে। একইভাবে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক ও এক্সিম ব্যাংকের খেলাপি ঋণও বেড়েছে। এই পাঁচ ব্যাংককে একীভূত করার উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই কাজ বাস্তবায়ন করতে এরই মধ্যে প্রশাসক নিয়োগের সিদ্ধান্তও হয়ে গেছে। পাশাপাশি সরকারি খাতের জনতা ও রূপালী এবং বেসরকারি খাতের ইউসিবি, আইএফআইসি, মিউচুয়াল ট্রাস্ট, ট্রাস্ট ও এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের খেলাপি ঋণও বেড়েছে।

পত্রিকা সূত্রে জানা গেছে, খেলাপি হয়ে পড়া প্রায় ১ হাজার ২৫০ প্রতিষ্ঠান বিশেষ ব্যবস্থার অধীন ঋণ পুনর্গঠনের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে আবেদন করেছে। এর মধ্যে প্রায় ৩০০ প্রতিষ্ঠানের ঋণ নিয়মিত করার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এখন একটি বিস্তৃত নীতিমালা তৈরি করে ব্যাংকগুলোকে ঋণ পুনর্গঠনের সুযোগ দিতে চাইছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। জানা গেছে, এই নীতিমালায় নির্দিষ্ট অর্থ জমা দিয়ে ঋণ পুনর্গঠনের সুযোগ দেওয়া হবে। তবে ঋণ পরিশোধে যতটা সময় অবকাশ পাবে, ওই সময়ে সুদ পরিশোধ করতে হবে। এর ফলে খেলাপি ঋণ কমে আসবে বলে আশা করছেন অনেকে। তবে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো তাদের অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থাপনা শক্তিশালী না করলে কিংবা ব্যবসা পরিচালনায় মনোযোগী না হলে তার উল্টোটাও ঘটতে পারে। সুযোগের অসৎ ব্যবহারের উদাহরণ বাংলাদেশে অনেক।

সামগ্রিক ঋণখেলাপির সংস্কৃতি থেকে মুক্তি পেতে গেলে আমাদের দুষ্ট রাজনৈতিক সংস্কৃতি তথা স্বজনতোষী পুঁজিবাদ থেকে যেমন বেরিয়ে আসতে হবে, তেমনি ঋণ সম্প্রসারণে বাণিজ্যিক ব্যাংকের ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার সক্ষমতাও বাড়াতে হবে। কমাতে হবে পরিচালকদের অনাকাঙ্ক্ষিত হস্তক্ষেপ।

মামুন রশীদ ব্যাংকার ও অর্থনীতি বিশ্লেষক

মতামত লেখকের নিজস্ব

সম্পর্কিত নিবন্ধ