আলোচিত বিএনপি নেতা লিয়াকত আলী বহিষ্কার
Published: 20th, January 2025 GMT
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর্ উপজেলার মরিচা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক সদস্য ও ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক লিয়াকত আলীকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। রবিবার (১৯ জানুয়ারি) রাতে দৌলতপুর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক রেজা আহমেদ বাচ্চু মোল্লা ও সদস্য সচিব শহীদ সরকার মঙ্গল তাকে মরিচা ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়কের পদ থেকে বহিষ্কার করেন।
সোমবার (২০ জানুয়ারি) দুপুরে দৌলতপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক দপ্তর সম্পাদক ও উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শের আলী সবুজ বহিষ্কারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
দৌলতপুর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক রেজা আহমেদ বাচ্চু মোল্লা ও সদস্য সচিব শহীদ সরকার মঙ্গলের বরাত দিয়ে জানানো হয়েছে, বিএনপির দৌলতপুর উপজেলা শাখার সিদ্ধান্ত মোতাবেক সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে লিয়াকত আলীকে বহিষ্কার করা হলো।
আরো পড়ুন:
আ.
যতটা ভাবছেন, সামনের নির্বাচন এত সহজ নয়: তারেক রহমান
দৌলতপুর উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব শহীদ সরকার মঙ্গল বলেন, অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
লিয়াকত আলীর বাড়ি থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা ও ইয়াবাসহ তার ছেলে ও স্ত্রীকে আটকের বিষয়ে রবিবার (১৯ জানুয়ারি) জানতে চাইলে শহীদ সরকার জানান, ঘটনার সত্যতা পেলে লিয়াকত আলীকে বহিষ্কার করা হবে।
দৌলতপুরে বিএনপি নেতা লিয়াকত আলীর পিস্তল লেনদেনের ১ মিনিট ৫২ সেকেন্ডের ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। রবিবার রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ে। এ নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, লিয়াকত আলী টেবিলের নিচ থেকে একটা পিস্তল টেবিলের উপরে রাখেন। তার পাশের চেয়ারে বসা এক যুবক সেই পিস্তলটি হাতে নেন এবং বিভিন্ন কায়দায় চেক করছেন। এ সময় তাদের সামনে আরও দুইজন ব্যক্তি বসে ছিলেন। লিয়াকত আলী নিজ অফিসকক্ষে বসে অস্ত্র ও মাদক ব্যবসা করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। নিজ অফিস কক্ষে বসে অস্ত্র বিক্রি করছিলেন বলে ধারণা করছেন স্থানীয়রা। তার বিরুদ্ধে মাদক ও অস্ত্রসহ ৭-৮টি মামলা রয়েছে।
রবিবার ভোরে মরিচা ইউনিয়নের বৈরাগীরচর গ্রামের লিয়াকত আলীর বাড়িতে যৌথবাহিনী অভিযান চালিয়ে ১৯ লাখ ৬৭ হাজার নগদ টাকা এবং ১ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করে। এ সময় লিয়াকত আলীর স্ত্রী কাজল রেখা (৪৬) ও ছেলে আবরাহাম লিংকন (২৪) কে আটক করা হয়।
এ ঘটনায় দৌলতপুর থানায় মামলা হয়েছে জানিয়ে দৌলতপুর থানার ওসি নাজমুল হুদা বলেন, আসামিদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
ঢাকা/কাঞ্চন/বকুল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ ব এনপ র সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার
অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় ওই চারজনের কারণ দর্শানো নোটিশের জবাবের শুনানি শেষে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বহিষ্কৃত সদস্যরা হলেন আইনজীবী আবদুর রাজ্জাক, সৈয়দ কবির হোসেন, রফিকুল ইসলাম রফিক ও তরফদার আবদুল মুকিত। তাঁদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত আদালতের সব কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।
এ সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম এ গফুর বলেন, ‘অভিযোগ প্রমাণিত হওয়াতে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কেউ সমিতির নিয়মনীতির ঊর্ধ্বে নন। বৃহস্পতিবার ওই চার সদস্যকে বহিষ্কারের বিষয়টি নোটিশ দিয়ে জানানো হবে।’
সমিতি সূত্রে জানা গেছে, যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য সৈয়দ কবির হোসেনের (জনি) কাছে ৩৫ লাখ টাকায় শহরের বারান্দীপাড়া কদমতলা এলাকায় জমি বিক্রি করেন ইমরান হাসান। জমি রেজিস্ট্রির আগে সব টাকা পরিশোধের কথা থাকলেও সৈয়দ কবির হোসেন ১০ লাখ টাকা দিয়েছিলেন। বাকি ২৫ লাখ টাকা না দিয়ে টালবাহানা করতে থাকেন। পরে তিনি আরও ১৭ লাখ টাকা দেন। বাকি ৮ লাখ টাকা চাইলে হুমকি দিতে থাকেন কবির হোসেন। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে ইমরান হাসান আইনজীবী সমিতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।
সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর শুনানি শেষে কবির হোসেনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কবির হোসেনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।
এ বিষয়ে আইনজীবী কবির হোসেন বলেন, ‘বহিষ্কারের বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে যে বিষয়ে আমাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে, সেই বিষয়ে অভিযুক্ত আমি নই। তারপরও আইনজীবী সমিতি আমার অভিভাবক; তারা যে ব্যবস্থা নিয়েছে, তার বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।’
অন্যদিকে অভয়নগরের নওয়াপাড়ার জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশন পাওনা টাকা আদায়ে আবদুর রাজ্জাককে মামলার আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছিল। ২০১৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত আবদুর রাজ্জাক আটটি চেকের মামলা পরিচালনা করেন। এসব মামলার রায় ও আপিল বাদীর অনুকূলে যাওয়ার পর আটটি চেকের ৪১ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে নেন আবদুর রাজ্জাক। এ টাকা জয়েন্ট ট্রেডিং কর্তৃপক্ষকে না দিয়ে তিনি ঘোরাতে থাকেন। চলতি বছরের ৪ জুন তিনি ১৫ লাখ টাকার একটি চেক দেন। চেকটি ব্যাংকে জমা দিলে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় নগদায়ন করা যায়নি। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল ওহাব গত ২৮ জুলাই আবদুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে যশোর আইনজীবী সমিতি বরাবর অভিযোগ করেন।
এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আবদুর রাজ্জাককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় যশোর আইনজীবী সমিতি। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় আবদুর রাজ্জাককে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এ ছাড়া রফিকুল ইসলাম রফিক তাঁর সহকর্মীর সঙ্গে অসদাচরণ ও মামলা করতে টাকা ও কাগজপত্র নিয়ে মামলা না করায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। আইনজীবী তরফদার আবদুল মুকিতের বিরুদ্ধেও নানা ধরনের অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে তাঁকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।