বান্দরবানের থানচি উপজেলার বলিপাড়া জোন (৩৮ বিজিবি) দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় বিজিবি ও সেনাবাহিনীর যৌথ অভিযানে অস্ত্রসহ ওয়েবার ত্রিপুরা (৩৩) এবং তার সহযোগী রুইহং ম্রোকে (৬০) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

আজ রবিবার (১৯ অক্টোবর) সন্ধ্যার দিকে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

আরো পড়ুন:

কুড়িগ্রামের চরাঞ্চল থেকে বিপুল পরিমাণ ভারতীয় জিরা ও মদ জব্দ

ভারতে কুপিয়ে ও তীর মেরে ৩ বাংলাদেশিকে হত্যা

বিজিবির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে গত শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) শীর্ষ অস্ত্র চোরাচালানি ওয়েবার ত্রিপুরাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বলিপাড়া জোনের উপ-অধিনায়কের নেতৃত্বে যৌথ বাহিনী বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তার সহযোগী রুইহং ম্রোকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় তাদের কাছে থাকা একটি দেশীয় পিস্তল, দুটি গাদা বন্দুক, একটি গ্রেনেড, একটি ম্যাগাজিন, ৩০ রাউন্ড গুলি, একটি মর্টারের গোলার বক্স, দুটি মোবাইল ফোন ও একটি কৃষি ব্যাংকের চেকবই উদ্ধার করা হয়।

গ্রেপ্তার দুই জনকে পরবর্তীতে থানচি থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

থানচি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাছির উদ্দিন মজুমদার জানান, দুইজনকে থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে। মামলার কার্যক্রম শেষে তাদের আদালতে পাঠানো হবে। 
 

ঢাকা/চাইমং/বকুল 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

রাজনীতি, অর্থনীতি ও প্রতিরক্ষায় সম্পর্ক জোরদার করতে রাজি বাংলাদেশ-কুয়েত

বাংলাদেশ ও কুয়েত রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, প্রতিরক্ষা, শ্রম, উন্নয়ন ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে সহযোগিতা গভীর করতে সম্মত হয়েছে। দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আরও জোরদার ও বহুমাত্রিক সহযোগিতায় রূপ দিতে দুই দেশের প্রথম রাজনৈতিক পরামর্শক সভায় গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুগুলোতে ঐকমত্য হয়েছে।

রোববার বাংলাদেশ ও কুয়েতের পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের রাজনৈতিক পরামর্শ সভা শেষে সন্ধ্যায় প্রচারিত এক যৌথ বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় সকালে অনুষ্ঠিত ওই সভায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (দ্বিপক্ষীয়) নজরুল ইসলাম বাংলাদেশের এবং কুয়েতের এশীয়–বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী রাষ্ট্রদূত সামিহ ইসা জোহর হায়াত তাঁর দেশের প্রতিনিধিত্ব করেন।

এদিকে ওই বৈঠকের পর পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে তাঁর দপ্তরে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন সামিহ ইসা জোহর হায়াত। সৌজন্য সাক্ষাতের পর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সামিহ ইসা বলেন, বাংলাদেশ ও কুয়েত শ্রম সহযোগিতাসহ সম্পর্ক জোরদারে শিগগিরই একাধিক খাতে নতুন চুক্তি করবে।

দুই দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মধ্যে আনুষ্ঠানিক রাজনৈতিক পরামর্শ সভার উল্লেখ করে সামিহ ইসা বলেন, বৈঠকে খাদ্যনিরাপত্তা, সাইবার নিরাপত্তা, শিক্ষা ও উচ্চশিক্ষা, শিক্ষক-শিক্ষার্থী বিনিময় কর্মসূচি, সামরিক সহযোগিতা এবং বাংলাদেশি শ্রমিকদের কর্মসংস্থান—এসব খাতকে অগ্রাধিকার দিয়ে আলোচনা হয়েছে। এসব ক্ষেত্রে সহযোগিতা আরও সম্প্রসারণে ঐকমত্য হয়েছে। শিগগিরই একাধিক নতুন চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে।

সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী সামিহ ইসা জোহর হায়াত বলেন, সকালে বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর প্রধানসহ বেশ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। এরপর দুই দেশের প্রতিনিধিরা দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে অংশ নেন। পরে পররাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে কুয়েতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল্লাহ আলীর একটি চিঠি হস্তান্তর করেছেন। চিঠিতে দুই দেশের সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করার গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে।

সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী সামিহ ইসা আরও বলেন, ‘আমরা আবারও ১৯৯০ সালে কুয়েতে দখলদারত্বের সময় বাংলাদেশের অকুণ্ঠ সমর্থনের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জানাই। তখন থেকে পাঁচ হাজারের বেশি বাংলাদেশি সেনা আমাদের পাশে থেকে মাইন অপসারণ ও মানবিক সহায়তা দিয়ে আসছেন।’

বৈঠকে বেসামরিক বিমান চলাচল ও ফ্লাইট বৃদ্ধি নিয়েও আলোচনা হয় বলে জানান কুয়েতের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, বর্তমানে কুয়েত এয়ারওয়েজ সপ্তাহে ৭টি, আল–জাজিরা এয়ারওয়েজ ১৪টি ও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস ৩টি ফ্লাইট পরিচালনা করছে। বাংলাদেশে আরও নতুন রুট ও ফ্লাইটের সংখ্যা বাড়ানোর ব্যাপারে মতৈক্য হয়েছে, যা খুব শিগগির বাস্তবায়িত হবে।

সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী সামিহ ইসা বলেন, শ্রম সহযোগিতা নবায়নের বিষয়ে নতুন চুক্তি স্বাক্ষরের প্রস্তুতি চলছে, যা ভবিষ্যতে উচ্চপর্যায়ের সফরের সময় সম্পন্ন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

যৌথ বিবৃতি

বাংলাদেশ ও কুয়েত প্রথম রাজনৈতিক পরামর্শ সভায় প্রতি দুই বছর পরপর পর্যায়ক্রমে এ বৈঠক ঢাকা ও কুয়েত সিটিতে আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া দুই দেশের কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী সম্প্রদায় ও সাংস্কৃতিক প্রতিনিধিদের মধ্যে উচ্চ পর্যায়ের সফর ও বিনিময় বাড়ানোর বিষয়েও সম্মতি হয়।

বৈঠকে দুই পক্ষ প্রতিরক্ষা সহযোগিতা পর্যালোচনা করে। ‘অপারেশন কুয়েত পুনর্গঠনের’ অধীন বাংলাদেশের অবদানের কথা উল্লেখ এবং প্রশিক্ষণ, দুর্যোগ মোকাবিলা ও অনলাইন নিরাপত্তায় সহযোগিতা বাড়াতে সম্মত হয়। দুই পক্ষই ‘কুয়েত ভিশন ২০৩৫’–এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে জনশক্তি সহযোগিতা সম্প্রসারণ এবং আলোচনায় থাকা সমঝোতা স্মারকগুলো চূড়ান্ত করার বিষয়ে পর্যালোচনা করে।

জ্বালানি, অবকাঠামো, তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি এবং হালাল খাদ্য খাতে উভয় পক্ষ বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়ানোর ওপর জোর দেয়। দুই দেশ যৌথ বাণিজ্য কমিটি পুনরায় সক্রিয় করার পাশাপাশি ২০২৬ সালে বাংলাদেশ-কুয়েত ব্যবসায়ী ফোরাম আয়োজনে রাজি হয়েছে। বৈঠকে কুয়েত ফান্ড (কেএফএইডি) সহায়তার ওপর সন্তোষ প্রকাশ করা হয় এবং নবায়নযোগ্য শক্তি, জলবায়ু-সহনশীল অবকাঠামো ও বিমান যোগাযোগে নতুন সহযোগিতা বাড়ানোর সুযোগ খুঁজতে সম্মত হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ