জুলাই বিপ্লবের পরে চাঁদাবাজি, রাহাজানি বেড়ে গেছে : ইঞ্জি. মানোয়ার হোসাইন
Published: 24th, January 2025 GMT
জামায়াতে ইসলামী নারায়ণগঞ্জ মহানগরী সেক্রেটারি ইঞ্জিনিয়ার মানোয়ার হোসাইন বলেছেন, বৈষম্যহীন রাষ্ট্র গঠন করতে ন্যায় ও ইনসাফপূর্ণ সমাজ প্রতিষ্ঠার বিকল্প নেই। স্বাধীনতার ৫৩ বছর পেরিয়েও এদেশের মানুষ তাদের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছে।
এদেশে ৬ দফা হয়েছে, ১৮ দফা হয়েছে, কিন্তু কোনো অধিকার বাস্তবায়ন হয়নি। জুলাই বিপ্লবের পরে মানুষ মনে করছিলো একটা ভালো কিছু হবে। কিন্তু এর বিপরীতে উল্টো চাঁদাবাজি, রাহাজানি বেড়ে গেছে।
জামায়াতে ইসলামী নারায়ণগঞ্জ মহানগরী উত্তর থানা আয়োজিত কর্মী সমাবেশ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) সকালে ফতুল্লা কায়েমপুর এলাকায় এ কর্মী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় ইঞ্জিনিয়ার মানোয়ার হোসাইন আরও বলেন, মুক্তির একমাত্র পথ আল্লাহর আইন। রসূল সমাজ পরিবর্তন করেছিলেন আল্লাহর কোরআনের আইন পরিচালনা করেছিলেন। তিনি কোরআনের আইন দিয়ে শান্তি এনেছিলেন। কোরআনের আলোকে এসে, কোরআনের সংস্পর্শে এসে আবু বকর ওসমান, আলী উজ্জ্বল হয়েছেন। ইসলামের সঠিক দাওয়াত না বুঝার কারনে আমরা দূরে সরে আছি।
তিনি বলেন, আমাদের সংগঠনকে মজবুত করার জন্য আল্লাহর দ্বীনকে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে মানুষের কাছে সঠিক দাওয়াত পৌঁছাতে হবে। নারায়ণগঞ্জের জমিনে দ্বীনের দাওয়াতের জন্য আগামী ৭ ফেব্রুয়ারী আমীরে জামায়াত আসবে। ময়দানে তৎপর থেকে আমরা কাজ করে যাবো। ঐদিন আমরা আমাদের আত্মীয় স্বজন, পরিজন সকলকে নিয়ে ওসমানী স্টেডিয়ামে যাবো, ইনশাআল্লাহ।
কর্মী সমাবেশ বিশেষ অতিথি নারায়ণগঞ্জ মহানগরী সহকারী সেক্রেটারি এইচ এম নাসির উদ্দিন বলেন, আমরা কোনো মানব রচিত আইন চাই না।আল্লাহর জমিনে আল্লাহর দেওয়া বিধান অনুযায়ী চলবো। আল্লাহ বলছে, তোমরা আল্লাহকে ভয় করো, আরেক আয়াতে বলা হয়েছে তোমরা আল্লাহর পথে যুদ্ধ করো, মাল এবং জান দিয়ে দ্বীন কায়েমের লক্ষ্যে জিহাদ ফিসাবিলিল্লাহ'র কাজে এগিয়ে যাও। আমরা চাই আল্লাহর জমিনে ইসলাম কায়েম হবে, ইনশাআল্লাহ।
বিশেষ অতিথি হাফেজ মাওলানা সাইফুদ্দীন মনির বলেন, আল্লাহর জমিনে আল্লাহর দ্বীন কায়েমের জন্য আল্লাহর আইন কায়েম করতে হবে। আজ আমাদের প্রস্তুত হতে হবে, আগামী ৭ ফেব্রুয়ারী নারায়ণগঞ্জে আমীরে জামায়াত বিজয়ের বেশে আসবে, ইনশাআল্লাহ। আমাদের একটাই স্বপ্ন হবে, আমরা মরলে হবো শহীদ, বাচলে হবো গাজী। জান এবং মাল দিয়ে যে ব্যক্তি জিহাদ করে না তারা ঈমানদার নয়।
কর্মী সমাবেশ অনুষ্ঠানে নারায়ণগঞ্জ উত্তর থানা আমীর মুহাঃ আবুল কালাম আজাদ’র সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন সূরা এবং কর্ম পরিষদ সদস্য ফরিদ উদ্দিন ফরিদ। মোস্তফা মনোয়ার তারেক। সাংগঠনিক উত্তর থানা সেক্রেটারি আব্দুর রহিমের সঞ্চালনায় থানা ও ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ব ল দ শ জ ম য ত ইসল ম ন র য়ণগঞ জ ন র য়ণগঞ জ ক রআন র আল ল হ র আইন ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
ফতুল্লায় নির্মাণাধীন ফ্লাইওভারের নিচে অবৈধ পাকিংয়ে তীব্র যানজট, জনদুর্ভোগ চরমে
বর্তমানে নারায়ণগঞ্জের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো যানজট। এ যানজটের কারণে মাত্র ৫ মিনিটের রাস্তা পেরুতে সময় লেগে যায় ঘন্টার পর ঘন্টা। ফলে প্রতিনিয়ত চরম বিপাকে পড়তে হচ্ছে নারায়ণগঞ্জবাসীকে।
নারায়ণগঞ্জ ট্রাফিক বিভাগ কিংবা সিটি কর্পোরেশন এ যানজট থেকে জেলাবাসীকে পরিত্রাণ দিতে ব্যর্থ হচ্ছে। ফলে দিন যতই বড়ছে ততই বাড়ছে নারায়ণগঞ্জবাসীর দুর্ভোগ।
নারায়ণগঞ্জে এমন কোন সড়ক নাই সেই সড়কে যানজট নাই। মূল সড়ক থেকে শুরু করে অলি-গলি সব জায়গায়ই যানজট আর যানজট। তবে এ যানজটের পেছনে মূল সড়কের যানজটকেই দায়ি করছেন অনেকে।
তারা বলছেন, মূল সড়ক যদি যানজট মুক্ত থাকতো তাহলে এর আশেপাশের সড়কগুলো যানজটের সুষ্টি হতো না। মূল সড়কে তীব্র যানজটের কারণেই এর প্রভাব পড়ছে অন্য সড়কগুলোতেও।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বর্তমানে শহরের চাইতে চাষাঢ়া-পঞ্চবটি সড়কে যানজট ভয়াবহ আকার ধারণে করেছে। এ সড়ক দিয়ে চলাচলের কথা শুনলেই মানুষ আতকে উঠে। কারণ, যানজটের মাত্র পনেরো মিনিটের রাস্তা পাড় হতে সময় লাগে ঘন্টার পর ঘন্টা।
এ রাস্তায় এ্যাম্বুলেন্স ও ফায়ার সার্ভিসের গাড়ীকেও যানজটে আটতে থাকতে দেখা যায় ঘন্টার পর ঘন্টা। একবার যানজটে আটকা পড়লেই দিন শেষ। কখন বাড়ী কিংবা অফিসে যাবেন তার কোন ঠিক নেই।
অনুসন্ধানে জানাগেছে, এ যানজটের প্রধান কারণ হচ্ছে পঞ্চবটি-মুক্তারপুর ফ্লাইওভারের নির্মাণ কাজ। ফ্লাইওভারের কর্মযজ্ঞের ফলে যানবাহনগুলোকে একটু ধীর গতিতে যেতে হয়। ফলে যানজটের সৃষ্টি হয়।
তবে এ যানজটের আরও একটি বড় কারণ চোঁখে পড়ে, আর তা হলো পঞ্চবটি এলাকায় ফ্লাইওভারের নিচে এবং চাষাঢ়া-পঞ্চবটি সড়কের দু’পাশে ট্রাক ও কভার্ডভ্যানগুলো অবৈধভাবে পাকিং করে রাখা।
এসব যানবাহনগুলো সড়কের দু’পাশে পার্কিং করে রাখার কারণে মূল সড়ক অনেকটাই সরো হয়ে যায়। ফলে এ সড়ক দিয়ে অন্যসব যানবাহনগুলো ঠিকমত চলাচল করতে পারে না। ফলে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।
অথচ, পঞ্চবটির খুব কাছেই রয়েছে ট্রাক ও কভার্ডভ্যান স্ট্যান্ড। যানবাহনের চালকরা ওই স্ট্যান্ডে গাড়ী না রেখে সড়কের পাশে অবৈধভাবে বাঁকাত্যাঁড়া গাড়ীগুলো রাখছেন। এর ফলে যে, ওই সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে এবং যানজটের কবলে পড়ে মানুষের ভোগান্তি হচ্ছে, এ বিষয়ে যেন তাদের কোন মাথা ব্যথা নেই।
তাদের ভাব-নমুনা দেখা মনে হয় যে, তারাই যেন এ সড়কটির মূল মালিক। না পুলিশে তাদের কিছু বলে, না তারা জনগণের কোন কথা শোনে। তারা তাদের ইচ্ছেমত গাড়ীগুলো রেখে যানজটের সৃষ্টি করছেন।
চাষাঢ়া-পঞ্চবটি সড়কে চলাচল করা ভুক্তভোগী পথচারিরা বলছেন, এ সড়ক দিয়ে যাতায়াত করাটা বর্তমানে দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। এত ভয়াবহ যানজট আমরা কখনোই চোঁখে দেখিনি। পঞ্চবটি ফ্লাইওভারের নিচে যেভাবে ট্রাক-কভার্ডভ্যানগুলো রাখা হয় পুরো সড়কটা তারা কিনে নিয়েছে। পুলিশও কিছু বলে না।
এছাড়া চাষাঢ়া থকে পঞ্চবটি পর্যন্ত পুরো সড়কে দু’পাশেই তারা গাড়ীগুলো রাখছেন। রাস্তাটি পাশে এমনিতেই জায়গা কম, আবার যদি তারা এভাবে গাড়ী রাখেন তাহলে যানজটের সৃষ্টিতো হবেই। এ বিষয়ে পুলিশ প্রশাসনকে কঠোর হতে হবে।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জের সচেতন মহল বলেন, আসলে নিতাইগঞ্জ এলাকা থেকে ট্রাক স্ট্যান্ডটি সরিয়ে নেয়ার জন্য সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র আইভী একটি উদ্যোগ গ্রহণ করে। তিনি শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে পঞ্চবটি এলাকাতে সিটি কর্পোরেশনের নিজস্ব অর্থায়নে একটি ট্রাক স্ট্যান্ড গড়ে তোলেন এবং সেখানে এ স্ট্যান্ডকে স্থানান্তর করেন। কিন্তু কোন লাভ হয়নি।
এখন তারা কিছু গাড়ী ওই স্ট্যান্ডে রাখে বাকি গাড়ীগুলো সড়ক দখল করে এলোপাথারিভাবে রাখে। এতে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হলেও যেন কারো কোন কিছু বলার নেই। কারণ, এ সমস্যা নিয়ে বহুবার ডিসি-এসপির সাথে বসা হয়েছে, আলোচনা হয়েছে কিন্তু সুরাহা হয় নাই।
তবে, ৫ আগস্টে দেশে একটি বড় পরিবর্তনের পর আশা করছিলাম এবার হয়তো এর একটা সুরাহা হবে। কিন্তু না। সড়ক দখল করে রাখা ট্রাক-কভার্ডভ্যানগুলো বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত তেমন কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। ফলে মানুষকে বাধ্য হয়েই যানজটের মত দুর্ভোগ দুর্দশাময় পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে পথ চলতে হচ্ছে।
তারা বলেন, আসলে দেশে শান্তি শৃঙ্খলা ফেরানোর জন্য সেদিন ছাত্র-জনতা বুকের তাজা রক্ত দিয়ে এতবড় একটা পরিবর্তন নিয়ে এসেছিলো। কিন্তু দেশের মানুষ যদি সেই শান্তি শৃঙ্খলা ভোগই করতে না পারে, তাহলে এত প্রাণ দিয়ে কি লাভ হলো?
আমরা জানিন না, প্রশাসন আসলে কাদেরকে খুশি করাতে চাচ্ছেন? মুষ্টিম কিছু চালকদের জন্য হাজার হাজার মানুষের এ কষ্ট কোন ভাবেই মেনে নেয়া যায় না। আমরা প্রশাসনের কাছে দাবি করবো, তারা যেন খুব শীঘ্রই এ সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নেয়। নারায়ণগঞ্জবাসীকে যেন কিছুটা স্বস্তি দেয়।
এ বিষয়ে টিআই করিম বলেন, ৫ আগস্টের পর নারায়ণগঞ্জে যানজটের যে ভয়াবহতা সৃষ্টি হয়েছিলো বর্তমানে তা কমে আসছে। আশাকরছি, আগামীতে পরিস্থিতি আরও ভালো হবে। পঞ্চবটি সড়কে ফ্লাইওভারের নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। এজন্য এ রুটে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।
এমতাবস্তায় যদি কোন চালক রাস্তা দখল করে অবৈধভাবে গাড়ী পার্কিং করে তাহলে তার বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেবো।