মায়ের সামনে বৈদ্যুতিক খুঁটির সঙ্গে বেঁধে ছেলেকে নির্যাতন
Published: 25th, January 2025 GMT
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে বৈদ্যুতিক খুঁটির সঙ্গে বেঁধে ইমরান হোসেন (২১) নামের এক যুবককে তার মায়ের সামনেই নির্যাতন করা হয়েছে। উপজেলার কনকাপৈত ইউনিয়নের দৌলতপুর গ্রামে শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে প্রায় রাত ৯টা পর্যন্ত এই নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহত অবস্থায় ওই যুবক বর্তমানে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
এদিকে নির্যাতনের একটি সিসিটিভি ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনায় জড়িতদের আটক করতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে। তবে শনিবার রাত ১১টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পুলিশ জড়িত কাউকে আটক করতে পারেনি।
শনিবার বিকেলে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন নির্যাতিত ইমরানের মা। এতে ১৩ জনের নাম উল্লেখ এবং চার থেকে পাঁচজনকে অজ্ঞাত হিসেবে আসামি করা হয়েছে। থানায় দায়ের করা অভিযোগের প্রধান আসামি শহিদুর রেজা ওরফে রতন মিয়াজীও একই এলাকার বাসিন্দা। নির্যাতনের শিকার ইমরান দৌলতপুর গ্রামের মো.
ইমরানের মা আফরোজা বেগমের দাবি, শহিদুর রেজা রতন মিয়াজী চিহ্নিত সন্ত্রাসী। তার নানা কাজের বিরুদ্ধে প্রায় সময় প্রতিবাদ করতেন ইমরান। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে হুমকি দিয়ে আসছিল শহিদুর রেজা রতনের লোকজন। তার ছেলেকে যারা বৈদ্যুতিক খুঁটির সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করেছে তারা সবাই স্থানীয় সন্ত্রাসী। তাদের অন্যায়-অত্যাচারের বিরুদ্ধে কথা বলায় ক্ষিপ্ত হয়ে তার ছেলেকে এভাবে নির্যাতন করা হয়েছে।’ নির্যাতনের ঘটনাটি স্থানীয় একটি মসজিদের সিসি ক্যামেরায় কিছুটা ধরা পড়েছে। শনিবার সকাল থেকে কয়েকটি সিসিটিভি ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ইমরানের মা আফরোজা বলেন, ‘শুক্রবার সন্ধ্যার পর তারাশাইল বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে আমার ছেলেকে একা পেয়ে সন্ত্রাসীরা অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে মারধর শুরু করে। আমার ছেলের চিৎকার শুনে আমি এগিয়ে গেলে তারা আমাকেও অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ফেলে। এ সময়ে তারা মসজিদের সামনের একটি বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে আমার সামনেই প্রায় তিন ঘণ্টা ইমরানের ওপর নির্মম নির্যাতন করে। এরপর মৃত ভেবে আমার ছেলেকে ফেলে রেখে যায়। তারা আমার ছেলের সঙ্গে থাকা টাকাও নিয়ে গেছে। আমি ওই সন্ত্রাসীদের বিচার চাই।’
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, ঘটনাটি অনেকে দেখলেও কেউ সহায়তায় এগিয়ে আসেনি। পরে ইমরানের মাসহ অন্য আত্মীয়স্বজনরা ইমরানকে উদ্ধার করে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে কুমিল্লা মেডিকেল হাসপাতালে পাঠানো হয়।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক জাবেদ হোসেন বলেন, ‘শুক্রবার রাত প্রায় ১২টা ২০ মিনিটে গুরুতর অবস্থায় ইমরান হোসেনকে হাসপাতালে আনা হয়। তার পুরো শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে আমরা তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছি।’
এদিকে শনিবার সকাল থেকে ইমরানকে নির্যাতনের ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে। এরপর থেকে নির্যাতনে জড়িত ব্যক্তিরা এলাকা থেকে পালিয়ে গেছেন। প্রধান অভিযুক্ত শহিদুর রেজার মুঠোফোন সংযোগ বন্ধ পাওয়া গেছে। কয়েকবার চেষ্টা করেও তাঁর সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
শনিবার রাতে চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ হিলাল উদ্দিন আহমেদ সমকালকে বলেন, ‘ইমরান হোসেন নামের ওই যুবককে নির্যাতনের একটি ভিডিও চিত্র আমাদের নজরে এসেছে। বাড়ি ফেরার পথে ইমরানকে জিম্মি করে বৈদ্যুতিক খুঁটির সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করা হয়। এ ঘটনায় শহিদুর রেজা রতন মিয়াজীকে প্রধান আসামি করে ১৩ জনের নাম উল্লেখসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে লিখিতি অভিযোগ করেছেন নির্যাতনের শিকার ওই ছেলের মা। রাতেই অভিযোগটি এফআইআর করা হচ্ছে। অভিযুক্তদের আটক করতে পুলিশ অভিযান শুরু করেছে।’
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ম রধর ইমর ন র ম র স মন অবস থ
এছাড়াও পড়ুন:
তিন সাংবাদিকের চাকুরিচ্যুতির ঘটনায় ডিআরইউ’র উদ্বেগ
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সদস্য সাংবাদিক রফিকুল বাসার, মুহাম্মদ ফজলে রাব্বি ও মিজানুর রহমানসহ কয়েকজন সংবাদকর্মীর চাকরিচ্যুতির ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছে ডিআরইউ।
বুধবার (৩০ এপ্রিল) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির কার্যনির্বাহী কমিটির পক্ষে সভাপতি আবু সালেহ আকন ও সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল সংবাদকর্মীদের চাকুরিচ্যুতির ঘটনায় এ উদ্বেগ জানান।
উল্লেখ্য, চ্যানেল আই’র সাংবাদিক রফিকুল বাসার, এটিএন বাংলার মুহাম্মদ ফজলে রাব্বি ও দীপ্ত টিভির সাংবাদিক মিজানুর রহমানকে মঙ্গলবার কোনো রকম পূর্ব নোটিশ ছাড়াই চাকরিচ্যুত করে কর্তৃপক্ষ।
ডিআরইউ নেতৃবৃন্দ তিন সাংবাদিককে চাকরিচ্যুতির কারণ ব্যাখ্যা করার দাবি জানিয়েছেন।
এএএম//