Samakal:
2025-09-18@04:52:07 GMT

মুলতানে হারের মুখে পাকিস্তান

Published: 26th, January 2025 GMT

মুলতানে হারের মুখে পাকিস্তান

প্রথম দিন সকালে ৩৮ রানে ৭ উইকেট হারানো উইন্ডিজ কি এমন কিছু ভেবেছিল? হয়তো সে সুখানুভূতির কারণেই গতকাল শেষবেলায় সৌদ শাকিলের ক্যাচ ফেলার পরও কোনো আক্ষেপ ছিল না ক্যারিবিয়ান কিপার টেভিন ইমলাখের।

এ নিয়ে পাকিস্তানের দ্বিতীয় ইনিংসে তিনটি ক্যাচ ফেলছে তারা। এর পরও হাসিমুখেই মাঠ ছেড়েছে ক্যারিবীয়রা। কারণ ৩৫ বছর পর জয়ের সুবাস পাচ্ছে তারা! ২৫৪ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে দ্বিতীয় দিন শেষে ৪ উইকেটে ৭৬ রান করেছে পাকিস্তান।

১৯৯০ সালের পর পাকিস্তানের মাটিতে প্রথম জয় থেকে আর ৬ উইকেট দূরে রয়েছে ক্যারিবীয়রা। পাকিস্তানের প্রয়োজন আরও ১৭৮ রান। প্রায় বধ্যভূমিতে পরিণত হওয়া মুলতানের স্পিন উইকেটে যা অসম্ভবই মনে হচ্ছে। পাকিস্তানের মাটিতে এখন পর্যন্ত মাত্র ৪টি টেস্ট জিতেছে উইন্ডিজ। যার সর্বশেষটি এসেছিল ১৯৯০ সালে ডেসমন্স হেইন্সের নেতৃত্বে।

ওই দলে ছিলেন গর্ডন গ্রিনিজ, ম্যালকম মার্শাল, কার্টলি অ্যামব্রোস, কোর্টনি ওয়ালশের মতো কিংবদন্তিরা। সোনালি সময়ের সেই উইন্ডিজ তো এখন আর নেই। কুড়ি ওভারের ফরম্যাটে তারা দাপট দেখালেও টেস্টে ক্যারিবীয়রা এখন একেবারেই ব্যাকবেঞ্চার্স। সেই ধারভারহীন উইন্ডিজই ৩৫ বছর অধরা জয়ের স্বাদ পেতে যাচ্ছে।

লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে প্রথম তিন ওভারের মধ্যেই দুই ওপেনারকে হারিয়ে চাপে পড়ে যায় পাকিস্তান। নিজের প্রথম বলেই অধিনায়ক শান মাসুদকে এলবিডব্লিউও করে দেন অফস্পিনার কেভিন সিনক্লেয়ার। পরের ওভারে বাঁহাতি স্পিনার গুদাকেশ মোতিকে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে এলবির ফাঁদে পড়েন অপর ওপেনার মোহাম্মদ হুরাইরা। পরের ওভারে কামরান গুলামের উইকেটও পেতে পারতেন মোতি। কিন্তু গালিতে জাস্টিন গ্রিভস ক্যাচ মিস করেন। ১৩ রানের সময় বাবর আজমের ফিরতি ক্যাচও নিতে পারেননি মোতি।

জীবন পেয়ে দুই ব্যাটারই প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু কামরান এগিয়ে এসে মারতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দিলে ভাঙে ৪৩ রানের জুটি। এর পর শর্ট লেগে ক্যাচ দেন বাবর।

পাকিস্তানিরা স্পিন খেলতে ব্যর্থ হলেও উইন্ডিজ কিন্তু দ্বিতীয় ইনিংসে ভালো ব্যাট করেছে। অধিনায়ক ক্রেইগ ব্রাথওয়েটের নেতৃত্বে ওয়ানডে স্টাইলে শুরু করে তারা। এতে কাজও হয়। ব্রাথওয়েটের হাফ সেঞ্চুরিতে ১ উইকেটে ৯২ রান তুলে নিয়েছিল তারা। এর পর অবশ্য ছোটখাটো একটা ধস নামে। সপ্তম উইকেটে ইমলাখ ও সিনক্লেয়ার ৫১ রানের জুটি গড়ে আবার রুখে দাঁড়ান। এর পর মোতি, ওয়ারিকানরা দলের রান আড়াইশর কাছাকাছি নিয়ে যান। 

সংক্ষিপ্ত স্কোর: উইন্ডিজ: ১৬৩ ও ২৪৪ (ব্রাথওয়েট ৫২, ইমলাখ ৩৫, জঙ্গু ৩০; সাজিদ ৪/৭৬, নুমান ৪/৮০)

পাকিস্তান: ১৫৪ ও ৭৬/৪ (বাবর ৩১, কামরান ১৯, শাকিল ১৩*; সিনক্লেয়ার ২/৪১)

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প ক স ত ন ক র ক ট দল উইন ড জ উইক ট প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

এআই দিয়ে শাড়ি পরা ছবি এখন ভাইরাল, সবাই চলে যাচ্ছেন ১৯৯০ দশকে

পুরোনো দিনের অনেক স্টাইল বারবার ফিরে আসে। কয়েক দিন ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শাড়ি পরা অনেক নারীর দারুণ সব ছবি ভাইরাল হতে দেখা যাচ্ছে। বাস্তবে কেউ শাড়ি না পরেই এআই টুল ব্যবহার করে ১৯৯০ দশকের নারীদের মতো শাড়ি পরার ছবি প্রকাশ করছেন। রেট্রো লুকের এই ছবির জাদু দেখাচ্ছে গুগলের জেমিনি এআই টুল। জেমিনির ন্যানো বানানা টুলের মাধ্যমে ভিনটেজ শাড়ি এআই ট্রেন্ড এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সয়লাব। ভিনটেজ শাড়ি এআই প্রম্পট ব্যবহার করে বিভিন্ন ছবি তৈরি করছেন ব্যবহারকারীরা। ফেসবুক আর ইনস্টাগ্রামে ভিনটেজ শাড়ি এআই ট্রেন্ড এখন খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

যেভাবে তৈরি হচ্ছে শাড়ি পরা এআই ছবি

ন্যানো বানানা হলো গুগলের জেমিনি এআইয়ের একটি সৃজনশীল টুল। এই টুল ব্যবহারকারীরা সাধারণ ছবিকে নিজের মতো করে রূপান্তরিত করতে পারছেন। একটি ছবি প্রকাল করে বিস্তারিত প্রম্পট দিয়ে ব্যবহারকারীরা এআইকে বাস্তবসম্মত ছবি তৈরি করতে কমান্ড দিচ্ছেন। ন্যানো বানানার মাধ্যমে তৈরি ছবি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও এক্সের মতো প্ল্যাটফর্মে। ছবি তৈরির জন্য প্রথমে জেমিনির ওয়েবসাইটে (https://gemini.google.com) ছবি আপলোড করতে হবে। তারপর ইংরেজিতে প্রম্পট লিখে দিতে হবে। বিভিন্ন ব্যবহারকারীর সঙ্গে আলাপে জানা গেছে, আপাতত ইংরেজি কমান্ডে বেশ ভালো ছবি তৈরি করতে পারছে জেমিনির ব্যানানা টুল।

হঠাৎ ভাইরাল হলো কেন

২-৩ দিন ধরে ভারতীয় উপমহাদেশের বিভিন্ন দেশের ফেসবুক ব্যবহারকারীরা ১৯৯০ দশকের মতো করে শাড়ি পরার ছবি প্রকাশ করছেন। ফেসবুকে নিজের দারুণ সব ছবি প্রকাশ করছেন এনজিও কর্মী সুমাইয়া সুমি। তিনি জানান, ‘আমি এআই টুল দিয়ে শাড়ি পরা ছবি তৈরি করেছি। গুগলের জেমিনি টুল, ওপেনএআইয়ের চ্যাটজিপিটি দিয়েই ছবি তৈরি করেছি। আমার ফেসবুকে মনিটাইজেশন চালু আছে। যে কারণে ট্রেন্ডিং কোনো বিষয়ে ছবি তুললে ভালো রিচ মানে ছবি অনেকের কাছে পৌঁছে যায়। শাড়ি পরা ছবিসহ স্কাই জাম্পিংয়ের ছবি, আগের সময়কার নারীদের মতো ছবি তুলেছি। আমাকে কেমন দেখাবে, তা পরীক্ষার জন্য বিভিন্ন ধরনের প্রম্পট ব্যবহার করে ছবি তৈরি করেছি। বেশ ভালোই লাগছে নিজেকে অন্যভাবে দেখতে। সময়ের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিতে এবং নতুন কিছু করা আমার একটি পছন্দের কাজ।’

আরেক ফেসবুক ব্যবহারকারী ফাহিমা আহমেদ জানান, ‘ফেসবুকে মাঝেমধ্যেই দারুণ কিছু ট্রেন্ড দেখি। এবার জেমিনির ব্যানানা এআই টুল দিয়ে ছবি তৈরি করেছি। আমাদের কল্পনায় আমরা কেমন, তা এআই দিয়ে তৈরি করার চেষ্টার সুযোগ মিলছে। এআই আমাদের প্রম্পট অনুযায়ী আমি কীভাবে নিজেকে দেখতে চাই, তার একটা ছবি তৈরি করে দিচ্ছে। আমি যেমনটা নিজেকে কল্পনায় দেখছি, তা–ই এআই তৈরি করে দিচ্ছে। জেমিনি আপাতত ‘লিমিটেড’ সুযোগ দিচ্ছে এমনভাবে ছবি তৈরির জন্য।’

নতুন আঙ্গিক তৈরি করছে এআই

ক্লিনিক্যাল রিসার্চার সুমাইয়া আতিনা খান জানান, ‘আমি নানা আঙ্গিকে ছবি তৈরি করেছি। ভিন্ন ধরনের লুক দিয়েছি প্রম্পটকে, আর মজার মজার সব ছবি পেয়েছি। হাতে ফুল নিয়ে, ডানে–বাঁয়ে তাকিয়ে অনেক স্টাইল করে ছবি তৈরি করেছি। টিনএজার থেকে শুরু করে মধ্যবয়সী নারীদের এমন ছবি তৈরি করতে দেখছি। এখানে একটা বিষয় হচ্ছে, আমরা যাঁরা ছবি তৈরি করছি, তাঁরা যেভাবে লিখছেন সেইভাবেই এআই ছবি তৈরি করছে। এআই আমাদের কল্পনাকে কমান্ডের মাধ্যমে অনুসরণ করছে। এআই ও মানুষের দারুণ এক সংযোগ হচ্ছে এই ভাইরাল ট্রেন্ড। অনেক ব্যবহারকারীরা এত দিন এআই টুলস ব্যবহার থেকে দূরে ছিলেন, তাঁরা এই ট্রেন্ডের জন্য কিছুটা হলেও এআই ব্যবহারের চেষ্টা করছেন।’

নিজেকে ভিন্ন আঙ্গিকে দেখার সুযোগ দিচ্ছে এআই

মাঝেমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের কনটেন্ট বা আধেয় ভাইরাল হয়। অধিকাংশ ভাইরাল ট্রেন্ড ইউরোপ বা আমেরিকাতেও বেশ আলোড়ন তৈরি করে। এবারে এআই দিয়ে শাড়ি পরা ছবির ভাইরাল ট্রেন্ড দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশেই একটু বেশি দেখা যাচ্ছে। যাঁরা শাড়ি চেনেন, সেই সব জনগোষ্ঠীর কাছে এই ট্রেন্ড দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে থাকেন চিকিৎসক রেহনুমা আবদুল্লাহ। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি যেখানে থাকি, সেখানে কর্মব্যস্ততার কারণে শাড়ি পরা হয় না। আমি দেশে থাকতে বাসাতে শাড়ি পরতাম। প্রায় দুই বছরের জন্য শাড়ি পরা হচ্ছে না। এখানে সেই সুযোগ বা সংস্কৃতি নেই। এআই আমাকে অন্যভাবে সাজার সুযোগ করে দিয়েছে। আমি বেশ কয়েকটি ছবি তুলেছি। নানা রঙের শাড়ি, নানা রঙের আলোতে। কোনোটায় খোঁপায় ফুলও আছে। এটা বেশ অবাক লাগে আমার কাছে, এআই অবিকল একজন মানুষের ছবি তৈরি করতে পারে। বিভিন্ন প্রম্পট ব্যবহার করে নিজের সুন্দর সব ছবি তৈরি করেছি। আমি শাড়ি পরতে অনেক পছন্দ করি। যেকোনো নারীকে শাড়িতে সুন্দর লাগে বলে সবাই এই ট্রেন্ডের দিকে ঝুঁকছেন। বিভিন্ন প্রম্পট ব্যবহার করে বিভিন্ন ধরনের ছবি তৈরি করছি। বেশ আশ্চর্যজনক কাজই করছে এআই!’

আরেক ফেসবুক ব্যবহারকারী ফ্যাশন ডিজাইনার নিশাত আনজুম জানান, ‘সাধারণ সময়ে আমাদের দেখতে যেমন লাগে, এআই সেই দেখার আঙ্গিকে পরিবর্তন আনছে নতুন এই ট্রেন্ডের মাধ্যমে। এখনকার জেন-জি প্রজন্ম ১৯৯০ দশকে নিজেদের রেট্রো লুকে কেমন লাগত, তা জানতে জেমিনি এআই টুলস ব্যবহার করছে। আরেকটা বিষয় হচ্ছে, সাজগোজ কিংবা স্টাইলের জন্য অনেক সময় দিতে হয়, এখন ব্যস্ত জীবনে সেই সময় বা সুযোগ অনেক কম। এই সুযোগে এআই ব্যবহার করে নিজেকে কেমন লাগবে, তা দেখার চেষ্টা করছেন বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীরা।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • এআই দিয়ে শাড়ি পরা ছবি এখন ভাইরাল, সবাই চলে যাচ্ছেন ১৯৯০ দশকে