রামপুরায় ছাদে ছাত্রকে গুলি করা সেই পুলিশ কর্মকর্তা গ্রেপ্তার
Published: 26th, January 2025 GMT
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে রাজধানীর রামপুরায় একটি ভবনের ছাদের কার্নিসে ঝুলে থাকা শিক্ষার্থীকে গুলি করার ঘটনায় আলোচিত পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) চঞ্চল সরকারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
রবিবার (২৬ জানুয়ারি) রাত ১০ টার দিকে খাগড়াছড়ি জেলার দীঘিনালা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা থেকে আসা পুলিশের একটি বিশেষ ইউনিট। গ্রেপ্তারের ১৫ মিনিটের মাথায় ঢাকার উদ্দেশে রওনা করে তারা।
গ্রেপ্তারের বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন দীঘিনালা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.
তিনি বলেন, রবিবার রাতে এসআই চঞ্চল চন্দ্র সরকারকে খাগড়াছড়ির দীঘিনালা থানা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্র্যইবুনাল। এসময় তাদের সঙ্গে ছিল ঢাকা থেকে আসা পুলিশের একটি বিশেষ ইউনিট।
তিনি আরো জানান, গত নভেম্বর মাসে খাগড়াছড়ির দীঘিনালা থানায় যোগদান করেছেন এএসআই চঞ্চল চন্দ্র সরকার।
জানা গেছে, কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে সামাজিকমাধ্যমে একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। দূর থেকে ধারণ করা ওই ভিডিওতে দেখা যায়, নির্মাণাধীন ভবনের রড ধরে ঝুলে আছেন এক তরুণ। ওই অবস্থায় তাকে পরপর অন্তত ছয় রাউন্ড গুলি করে পুলিশ। এরপর পুলিশ চলে গেলেও সেই তরুণ সেখানেই ঝুলে ছিলেন।
ঘটনাটি ঘটে গত ১৯ জুলাই। ঢাকার রামপুরার মেরাদিয়া এলাকার নির্মাণাধীন একটি ভবনে। ভুক্তভোগী তরুণের নাম আমির হোসেন (১৮)। তার গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। ঢাকায় ফুফুর বাসায় থাকতেন এবং কাজ করতেন রামপুরার একটি রেস্তোরাঁয়। সেদিন ঘটনায় অবশ্য তিনি বেঁচে গিয়েছিলেন।
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
১৪ বছর আগের ঘটনায় ওসি-এসআইয়ের বিরুদ্ধে মামলা, জুডিশিয়াল তদন্তের নির্দেশ
ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ও বর্তমান এএসপি মো. মিজানুর রহমান এবং একই থানার সাবেক এসআই মাজহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে ১৪ বছর আগের একটি ঘটনায় করা মামলা জুডিশিয়াল (বিচার বিভাগীয়) তদন্তের আদেশ দিয়েছেন আদালত। রোববার বিকেলে চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৪ নম্বর আমলি আদালতের বিচারক এ.কে.এম ছিফাতুল্লাহ্ এ আদেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেন সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. আজহারুল ইসলাম। মামলার তদন্ত করবেন ৭ নম্বর আমলি আদালতের বিচারক মো. ইকবাল হোসাইন।
আদালত সূত্র জানায়, ১৭ এপ্রিল ঈশ্বরগঞ্জ থানার সাবেক ওসি মো. মিজানুর রহমান ও একই থানার সাবেক এসআই মো. মাজহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে আদালতে মামলার আবেদন করেন গিয়াস উদ্দিন নামের এক ব্যক্তি। তিনি ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার মরিচারচর গ্রামের মৃত শাহেদ আলীর ছেলে। পরে বিচারকের নির্দেশে আবেদনটি আমলে নিয়ে মামলাটি নথিভুক্ত করা হয়।
জানা যায়, মো. মিজানুর রহমান পদোন্নতি পেয়ে সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) হয়েছেন। তিনি বর্তমানে সিআইডির প্রধান কার্যালয়ে কর্মরত। আর মো. মাজহারুল ইসলাম পদোন্নতি পেয়ে পুলিশ পরিদর্শক হয়েছেন।
নিহত শফিকুল ইসলামের ছেলে সুমন বলেন, আমার বাবাকে কয়েকজন মিলে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে। এর মধ্যে এক নম্বর আসামি ছিলেন নজরুল ইসলাম। তার নাম কেটে দিয়ে অন্যজনের নাম লেখা হয়। এরই মধ্যে চার্জশিট হয়ে গেছে। অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তারা মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে নজরুল ইসলামের নাম সরিয়ে দিয়েছেন।
মামলার আইনজীবী শাহজাহান কবির সাজু সমকালকে বলেন, গিয়াস উদ্দিন যে মামলাটি করেছেন, তাতে এক নম্বর আসামির নাম কেটে দেন সাবেক ওসি ও এসআই। তারা আদালতের নির্দেশ অমান্য করেছেন।
মামলা ও বাদী সূত্রে জানা যায়, গিয়াস উদ্দিনের পরিবারের সঙ্গে প্রতিবেশী নজরুল ইসলামের পরিবারের বিরোধ ছিল। ২০১০ সালের ২৭ নভেম্বর দুই পক্ষের কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে মারামারির ঘটনা ঘটে। এ সময় প্রতিপক্ষের লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে শফিকুল ইসলামের মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। দীর্ঘদিন ঢাকা ও ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেন তিনি। পরে ২০১৫ সালের ২ জানুয়ারি মারা যান শফিকুল। এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই গিয়াস উদ্দিন থানায় মামলা করতে গেলে ওসি মো. মিজানুর রহমান মামলা নেননি।
অপরদিকে ২০১০ সালের ৭ ডিসেম্বর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অভিযোগ করলে থানায় এজাহার হিসেবে নথিবদ্ধ করতে পুলিশকে নির্দেশ দেন বিচারক।
বাদীর পরিবারের অভিযোগ, ওসি মো. মিজানুর রহমান এজাহার হিসেবে নথিবদ্ধ না করে এসআই মো. মাজরুল ইসলামের মাধ্যমে বাদী গিয়াস উদ্দিনকে বলেন, মামলাটি থানায় এসেছে, বাদীর টিপসই লাগবে। পরে ভুল বুঝিয়ে তার টিপসই নেওয়া হয়। পরে আদালত থেকে বাদী মামলার কপি তুলে দেখেন, নালিশি মামলার ১ নম্বর আসামি নজরুল ইসলামের নাম বাদ দিয়ে বাদীর ভাতিজা আবদুর রশিদের নাম লিখে আদালতে পাঠানো হয়েছে।