ওয়াশিংটন হাত গুটিয়ে নিলে ইউক্রেনের অস্তিত্ব থাকবে না: পুতিন
Published: 29th, January 2025 GMT
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, পশ্চিমা পৃষ্ঠপোষকরা হাত গুটিয়ে নিলে ইউক্রেনের অস্তিত্ব থাকবে না। মঙ্গলবার রুশ সাংবাদিক পাভেল জারুবিনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ মন্তব্য করেন তিনি।
সাক্ষাৎকারে পুতিন বলেন, 'ওয়াশিংটন যদি কিয়েভকে অর্থ ও অস্ত্র সহায়তা প্রদান বন্ধ করে, সেক্ষেত্রে দুই মাসের মধ্যেই ইউক্রেনে যুদ্ধ শেষ হয়ে যাবে। পশ্চিমাদের অর্থ ও গোলাবারুদ ফুরিয়ে গেলে তারা এক মাসও টিকতে পারবে না।'
'আমি মনে করি, সবকিছু শেষ হতে পারে আগামী দেড় থেকে দু’মাসের মধ্যেই। এদিক থেকে বিবেচনা করলে, সত্যিকার অর্থে এ মুহূর্তে ইউক্রেনের কোনো সার্বভৌমত্ব নেই।'
'আরেকটি কথা আমি বলব— কিয়েভের পশ্চিমা পৃষ্ঠপোষকরা যদি সত্যিই শান্তি চায়, তাহলে এখনই আদর্শ সময়। আমরা ইতোমধ্যে এ ইস্যুতে আমাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছি।'
২০১৫ সালে সাক্ষরিত মিনস্ক চুক্তির শর্ত লঙ্ঘণ, ক্রিমিয়াকে রুশ ভূখণ্ড হিসেবে স্বীকৃতি না দেওয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে রুশ বাহিনী, যা এখনও চলছে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এ অভিযানের নির্দেশ দিয়েছিলেন।
প্রায় তিন বছরের যুদ্ধে দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, ঝাপোরিজ্জিয়া এবং খেরসন— এই চার প্রদেশের দখল করেছে রাশিয়া। মস্কোর প্রস্তাব— কিয়েভ যদি ক্রিমিয়াসহ এই চার প্রদেশকে রুশ ভূখণ্ড হিসেবে স্বীকৃতি দেয়, তাহলে ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হবে। অন্যদিকে কিয়েভের বক্তব্য, রাশিয়া যদি অধিকৃত অঞ্চলগুলো থেকে সেনা প্রত্যাহার করে নেয়, শুধু তাহলেই শান্তি সংলাপে বসবে ইউক্রেন।
দুই পক্ষের অনড় অবস্থান এবং সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নেতৃত্বাধীন প্রশাসন ইউক্রেনকে ধারাবাহিকভাবে অর্থ ও সামরিক সহায়তা প্রদান করে যাওয়ায় এ যুদ্ধ থামানোর যাবতীয় প্রক্রিয়া কার্যত থেমে আছে।
তবে গত ২০ জানুয়ারি শপথ গ্রহণের পর বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অর্থ সহায়তা প্রদান স্থগিত রাখা সংক্রান্ত একটি বিলে স্বাক্ষর করেছেন। এর ফলে আগামী অন্তত ৯০ দিন বিশ্বের সব দেশে স্থগিত থাকবে মার্কিন সহায়তা।
ট্রাম্প অবশ্য নির্বাচনের আগে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে ইউক্রেনে যুদ্ধ থামানোর ব্যাপারটিকে তিনি অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে দেখেন এবং তার লক্ষ্য ক্ষমতা গ্রহণের পর যত দ্রুত সম্ভব এ যুদ্ধ থামানো।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
অফিসে আপনি কি ১১ ঘণ্টার বেশি কাজ করেন
প্ল্যান ওয়ান জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণা নিয়ে চলছে আলোচনা। সেখানে দুই হাজার ফুলটাইম কর্মজীবীর ওপর একটা জরিপ পরিচালনা করা হয়। পেশাগত কাজ বা চাপের সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্যের সম্পর্ক নিয়ে পরিচালিত গবেষণাটি থেকে পাওয়া গেছে চমকপ্রদ তথ্য।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, যাঁরা কর্মক্ষেত্রে ১১ ঘণ্টা বা তার বেশি কাজ করেন, তাঁদের খাদ্যাভ্যাস তুলনামূলকভাবে অস্বাস্থ্যকর, তাঁরা অন্যদের তুলনায় মানসিক চাপে ভোগেন বেশি। ঠিকমতো পানি খাওয়ার প্রবণতা কম। পরিবার, প্রকৃতি ও পোষা প্রাণীর সঙ্গে সময় কাটানোর প্রবণতাও কম। কম ঘুমান। আর যেকোনো মানসিক আঘাত থেকে সেরে ওঠার পর্যাপ্ত সময় বা সুযোগ পান না। এই মানুষেরাই বেশি হতাশায় ভোগেন।
শুধু তা-ই নয়, দ্রুত বুড়িয়ে যাওয়া এবং হৃদ্রোগ ও স্ট্রোকের মতো কার্ডিওভাস্কুলার রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বেশি। যাঁরা ১১ ঘণ্টা বা তার বেশি সময় অফিস করেন, তাঁদের মধ্যে কর্মক্ষেত্রে অসুস্থ হয়ে যাওয়ার সংখ্যাও অনেক।
আরও পড়ুন২৫ বছর ধরে অফিসে যাননি তিনি১৩ মার্চ ২০২৫যদি ১১ ঘণ্টা কর্মক্ষেত্রে থাকতেই হয়, তাহলে যেসব বিষয় খেয়াল রাখবেনরাতে ৮ ঘণ্টা ঘুমাতেই হবে। তাতে শরীর ও মস্তিষ্ক দিনের শারীরিক ও মানসিক পরিশ্রমের ধকল কাটিয়ে ওঠার সুযোগ পাবে।
কাজের ফাঁকে ফাঁকে বিরতি নিন। সবুজের দিকে তাকান। ডেস্কে গাছ রাখতে পারেন। উঠে একটু হাঁটুন। ব্যায়াম করুন। সহকর্মীর সঙ্গে চা খেতে খেতে গল্প করুন। গবেষণা জানাচ্ছে, ছোট ছোট বিরতি কাজে মনোযোগ পুনঃস্থাপন করতে সাহায্য করে এবং কাজের গুণমান বাড়ায়।
দুপুরে খাওয়ার পর একটা ন্যাপ নিতে পারেন।
২ লিটারের একটা বোতলে পানি রাখবেন। প্রতিদিন ১ বোতল পানি অবশ্যই শেষ করবেন। তা ছাড়া পানি, শরবত, জুস, ডাবের পানি, তরমুজ, শসা, আনারস ইত্যাদি খাবেন। হাইড্রেটেড থাকলে এনার্জি ধরে রেখে কাজ করা সহজ হয়।
প্রক্রিয়াজাত খাবার, কার্বোনেটেড ড্রিংক, চিনিযুক্ত খাবার বাদ দিন। এসব কেবল আপনার ক্লান্তি বাড়াবে।
আর সম্ভব হলে কর্মক্ষেত্রে কথা বলে আপনার কর্মঘণ্টা ৮ ঘণ্টায় নিয়ে আসতে পারলে তো কথাই নেই।
সূত্র: এনবিসি নিউজ
আরও পড়ুনঅফিসের বাড়তি কাজকে যেভাবে ‘না’ বলবেন১৩ মার্চ ২০২৫