বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে অনশনে তিতুমীরের শিক্ষার্থীরা, রাস্তা অবরোধ
Published: 30th, January 2025 GMT
রাজধানীর সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে দীর্ঘদিনের আন্দোলনের অংশ হিসেবে নতুন কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষার্থীরা। ২০ ঘণ্টা ধরে অনশন করছেন তারা। একই দাবিতে শিক্ষার্থীরা তিতুমীর কলেজের প্রধান ফটকের সামনে ও মহাখালীর আমতলী মোড়ে রাস্তা অবরোধ করেছেন।
তিতুমীরের ৫ শিক্ষার্থী বুধবার (২৯জানুয়ারি) বিকেল ৫টায় অনশন শুরু করেন। ‘তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবিতে আমরণ অনশন’ লেখা ব্যানার টাঙিয়ে কলেজের মূল ফটকের সামনে অনশনে বসেন তারা। তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরসহ সাতটি দাবি তাদের।
অনশনরত গণিত বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আমিনুল ইসলাম বলেছেন, “বুধবার বিকেল থেকে আমরা অনশন করছি। কিন্তু, এখনো আমাদের সাথে সরকারের কোনো প্রতিনিধি যোগাযোগ করেননি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাব। অনশনের চেয়ে বড় কোনো কর্মসূচি হতে পারে না।”
আরেক শিক্ষার্থী বলেন, “রাষ্ট্রপক্ষের দ্বিচারিতাকে আমরা ধিক্কার জানাই। সাত কলেজসহ কোনো প্রকার কাঠামোতে আমরা যাব না। আমাদের দাবি— স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়।”
অনশনরত শিক্ষার্থীদের সাত দাবির মধ্যে আছে—রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিয়ে তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রকাশ, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গঠন করে ২০২৪-২০২৫ সেশনে ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা, শতভাগ শিক্ষার্থীর আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত না হলে আবাসিক খরচ বহন করা, ২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকেই আইন ও সাংবাদিকতা বিভাগ খোলা, একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য যোগ্যতাসম্পন্ন পিএইচডি ডিগ্রিধারী শিক্ষক নিয়োগ, শিক্ষার মান বাড়াতে আসন সংখ্যা সীমিত করা এবং আন্তর্জাতিক মানের গবেষণাগার নির্মাণে জমি ও আর্থিক বরাদ্দ নিশ্চিত করা।
অনশনে থাকা অন্য শিক্ষার্থীরা হলেন—তিতুমীর কলেজের গণিত বিভাগের এফ রায়হান, বেল্লাল হাসান, রাশেদুল ইসলাম রাশেদ ও রানা আহমেদ।
তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরে গত সোমবার মধ্যরাতে সরকারকে ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়েছিলেন শিক্ষার্থীরা। তা না হলে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে মহাখালীতে সড়ক ও রেলপথ অবরোধের ঘোষণা দিয়েছিলেন তারা।
তবে, বুধবার বিকালে অনশনরত শিক্ষার্থীরা জানিয়েছিলেন যে, তারা অবরোধ কর্মসূচি থেকে সরে এসেছেন।
তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে এর আগে নানা কর্মসূচি পালনের পর গত ৭ জানুয়ারি কলেজের প্রধান ফটকে ‘তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয়’ লেখা ব্যানার টাঙিয়ে দেন আন্দোলনকারীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে গত ১৮ নভেম্বর মহাখালীর আমতলী, কাঁচাবাজার ও রেলক্রসিংয়ে শত শত শিক্ষার্থী জড়ো হয়ে অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন। পরদিন ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে ‘ক্লোজডাউন তিতুমীর' কর্মসূচি দেন শিক্ষার্থীরা।
এরপর ৩ ডিসেম্বর তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
ঢাকা/উম্মে হাফছা/হাসান/রফিক
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ত ত ম র কল জ কল জ র অবর ধ
এছাড়াও পড়ুন:
বিদেশিদের বন্দর দেওয়ার সিদ্ধান্ত পাল্টাতে হবে
নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালসহ চট্টগ্রাম বন্দরের স্থাপনা দেশি বা বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে ইজারা দেওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে গণ–অনশন কর্মসূচি পালন করছে শ্রমিক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ)। আজ শনিবার সকাল ৯টা থেকে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব চত্বরে শুরু হওয়া অনশন চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।
সকালে শতাধিক শ্রমিক প্রেসক্লাব চত্বরে জড়ো হন। একে একে বক্তব্য দেন শ্রমিক সংগঠনের বিভিন্ন নেতা-কর্মী। তাঁরা দাবি করেন, দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর হিসেবে চট্টগ্রাম বন্দর নিজস্ব সক্ষমতায় সফলভাবে পরিচালিত হচ্ছে। এখানে বিদেশি অপারেটরের প্রয়োজন নেই।
স্কপের যুগ্ম সমন্বয়ক রিজওয়ানুর রহমান খান বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর নিজস্ব ব্যবস্থাপনাতেই ভালোভাবে চলছে। বছরে আড়াই হাজার কোটি টাকার বেশি মুনাফা করে এই প্রতিষ্ঠান। এমন একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার কোনো যুক্তি নেই। ফলে সরকারকে এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে হবে।
কর্মসূচিতে বক্তারা অভিযোগ করেন, লাভজনক প্রতিষ্ঠান হয়েও নিউমুরিং টার্মিনাল ও লালদিয়া চর বিদেশি কোম্পানির হাতে তুলে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। তাঁরা বলেন, চট্টগ্রামের মানুষ কোনোভাবেই এটি সফল হতে দেবে না। বন্দর বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়া মানে দেশের সার্বভৌমত্ব নিয়ে খেলা।
অনশন কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া বাম গণতান্ত্রিক জোট চট্টগ্রাম জেলা পরিচালনা পরিষদের সমন্বয়ক শফি উদ্দিন কবির বলেন, ‘বিগত ফ্যাসিবাদী সরকার কাউকে না জানিয়ে বিদেশিদের হাতে বন্দর তুলে দেওয়ার চুক্তি করেছিল। বর্তমান সরকারও সেটি পর্যালোচনা না করে বাস্তবায়ন করছে। এটি দেশের মানুষের কাছে কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।’
চট্টগ্রাম বন্দরের চারটি কনটেইনার টার্মিনালে বিনিয়োগ ও পরিচালনার জন্য বিদেশি অপারেটর নিয়োগ নিয়ে দেশে দীর্ঘদিন ধরেই বিতর্ক চলছে। আওয়ামী লীগ সরকারের তৃতীয় মেয়াদে শুরু হওয়া সেই প্রক্রিয়া বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারও এগিয়ে নিচ্ছে।
এর আগে গত ২২ অক্টোবর ইজারা বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে স্কপ। সমাবেশ শেষে বন্দর এলাকার দিকে মিছিল নিয়ে যেতে চাইলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। ওই কর্মসূচি থেকেই আজকের গণ–অনশনের ঘোষণা দেওয়া হয়। ২৭ অক্টোবর ঢাকায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে বাম গণতান্ত্রিক জোট ও ফ্যাসিবাদবিরোধী বাম মোর্চা।