ইসলামী বক্তা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যু স্বাভাবিক ছিল নাকি মেডিকেল কিলিং তা জানাসোর দাবি জানিয়ে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন মুফাসসিরে কোরআন ড. মিজানুর রহমান আজহারী বলেছেন, ‌‘আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী শিরক-বিদআতের আস্তানা তছনছ করে দিয়েছিলেন। আজীবন ইসলামকে বিজয়ী হিসেবে দেখতে চেয়েছেন। অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন। তার মৃত্যুতে গোটা বিশ্ব কেঁদেছে। তার মৃত্যু স্বাভাবিক ছিল নাকি মেডিক্যাল কিলিং ছিল, তা আমরা এখনও জানি না। এখন বিষয়টি তদন্ত করে জাতির সামনে প্রতিবেদন প্রকাশ করতে হবে।’

শুক্রবার রাতে চট্টগ্রামের  ঐতিহাসিক প্যারেড ময়দানে ইসলামী সমাজ কল্যাণ পরিষদ চট্টগ্রামের উদ্যোগে আয়োজিত পাঁচদিন ব্যাপী ঐতিহাসিক তাফসিরুল কোরআন মাহফিলের পঞ্চম দিনে প্রধান মুফাসসিরের আলোচনায় তিনি এই কথা বলেন।

দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে স্মরণ করে মিজানুর রহমান আজহারী বলেন, ‘আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে বিনা অপরাধে জেলে বন্দি রেখে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। আল্লাহ উনাকে জান্নাতবাসী করুক।’

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড.

আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, ‘চট্টগ্রাম প্যারেড ময়দান বিশ্ব নন্দিত মুফাসসিরে কোরআন আল্লামা সাঈদী বিজড়িত ময়দান। আমরা কোরআনের ছায়াতলে এক ও অভিন্ন। যেকোনো ভাবে আমাদের এই ঐক্যকে ধরে রাখতে হবে। মতবিরোধ নিয়েই আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকব। সব ধরনের ইসলামী দলগুলোর মধ্যে যদি আমরা ঐক্য ধরে রাখতে পারি তাহলে দেশ থেকে দুর্নীতি, লুটপাট ও চাঁদাবাজি, গুম, খুন দূর করতে পারব। ১৬ বছরের জঞ্জাল ৬ মাসে দূর করা সম্ভব না, কিন্তু আমরা চেষ্টা করছি সংস্কারের মাধ্যমে একটি সুন্দর বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার জন্য।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মাওলানা শামীম সাঈদী বলেন, ‘আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে ১৩ বছর জেলে জালেম শাসকেরা শান্তিতে থাকতে দেয়নি। তারা পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করেছে। আমরা সেই হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি করছি।’

ইসলামী সমাজ কল্যাণ পরিষদ চট্টগ্রামের সভাপতি অধ্যক্ষ মুহাম্মদ তাহেরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন, বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন মাওলানা শামীম সাঈদী, বক্তব্য রাখেন মাওলানা বিএম মফিজুর রহমান, মাওলানা মুনিরুল ইসলাম, চট্টগ্রাম কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মুজাহিদুল ইসলাম, বিআইএ জামে মসজিদের খতিব সাফওয়ান বিন হারুন আজহারী, অলি খাঁ মসজিদের খতিব মাওলানা মাহমুদুল হাসান, ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় অর্থ সম্পাদক তাওহীদুল হক মিজবাহ।

মাহফিলে আখেরী মুনাজাত পরিচালনা করেন মাওলানা সাইয়্যেদ আনোয়ার হোসেন তাহের জাবিরী আল মাদানী।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ম জ ন র রহম ন আজহ র র রহম ন ন আজহ র আল ল ম ক রআন ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

ইসরায়েলে ইরানের নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, ইরান থেকে নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু হয়েছে। একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত করেছে ইসরায়েল। বর্তমানে হামলা প্রতিহত করার কাজ চলছে বলে জানিয়েছে আইডিএফ।

আজ সোমবার সিএনএনের এক খবরে বলা হয়েছে, তেল আবিব ও জেরুজালেমসহ ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে জরুরি সতর্ক সংকেত (সাইরেন) বাজতে শুরু করেছে। আইডিএফ সতর্ক করে বলেছে, তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পুরোপুরি অভেদ্য নয়।

সিএনএনের একজন প্রযোজক জেরুজালেমে সাইরেন এবং একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন। তার তোলা ভিডিওতে আকাশে বহু ক্ষেপণাস্ত্র ছুটে যেতে দেখা গেছে।

ইসরায়েলের জরুরি পরিষেবা সংস্থা ম্যাগেন ডেভিড আদোম জানিয়েছে, তাদের দলগুলো আক্রান্ত এলাকার দিকে রওনা দিয়েছে।

সারা দেশের নাগরিকদের আশ্রয়কেন্দ্রে ঢুকতে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সেখানে থাকার আহ্বান জানিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এক্সে দেওয়া এক পোস্টে বলেছে, বর্তমানে বিমানবাহিনী হামলা প্রতিহত করার পাশাপাশি পাল্টা হামলা চালানোর কাজ করছে।

ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ওয়াইনেট নিউজ জানিয়েছে, মধ্য ইসরায়েলের পেতাহ টিকভা শহরের একটি ভবনে একটি ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আঘাত হেনেছে। হামলার ফলে ওই স্থানে আগুন ধরে যায়। তবে এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

এদিকে মধ্য ইরানে একাধিক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির সেনাবাহিনী এ তথ্য জানিয়েছে। আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেনাবাহিনীর দাবি, বিভিন্ন ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপনা লক্ষ্য করে এসব হামলা চালানো হয়েছে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ইসরায়েলি বিমানবাহিনী সফলভাবে মধ্য ইরানে অবস্থিত একাধিক স্থাপনায় আঘাত হেনেছে। আমাদের গোয়েন্দা তথ্য বলছে, এসব স্থাপনা থেকে ইসরায়েলের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হচ্ছিল।’

তবে ইসরায়েলের এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরান এখনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি।

এদিকে ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় রোববার পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২২৪ জনে পৌঁছেছে।

বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে ৯০ শতাংশেরও বেশি বেসামরিক নাগরিক। হামলায় ১ হাজার ২৭০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।

এপির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত ১৩ জুন ইরানে বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ওই হামলায় ইরানের নাতাঞ্জ ও ইসফাহান অঞ্চলের পারমাণবিক স্থাপনা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা ও পারমাণবিক বিজ্ঞানী নিহত হন। ইরানে বর্তমানে মসজিদ ও মেট্রো স্টেশনগুলোকে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

অন্যদিকে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলের তিন শিশুসহ অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন। রোববার ইসরায়েল সরকারের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএন।

ইসরায়েল কর্তৃপক্ষ বলেছে, এছাড়া ইরানের হামলায় কমপক্ষে ৩৮৫ জন আহত হয়েছেন, যার মধ্যে সাত জনের অবস্থা গুরুতর।

এদিকে, ইসরায়েলি পুলিশের বরাতে আল জাজিরা জানিয়েছে, তেল আবিবের দক্ষিণে অবস্থিত বাত ইয়াম শহরে ৬ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে দুই শিশু রয়েছে। এছাড়া সাতজন এখনও নিখোঁজ। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছেন জরুরি সেবাদানকারীরা।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ