বুড়িমারী স্থলবন্দরে পাথর আমদানি বন্ধ
Published: 2nd, February 2025 GMT
লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে বোল্ডার (পাথর) আমদানি সাময়িক বন্ধ করেছে বুড়িমারী স্থলবন্দরের আমদানিকারকেরা। শনিবার পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী ভারত ও ভুটান থেকে পাথর আমদানি সাময়িক বন্ধ রাখেন ব্যবসায়ীরা। তবে অন্যান্য পণ্য আমদানি ও সকল কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে। বোল্ডারের আমদানি মূল্য কমানোর দাবিতে বন্দরের ব্যবসায়ীরা বোল্ডার (পাথর) আমদানি সাময়িক বন্ধ করেন।
এ বিষয়ে বুড়িমারী স্থলবন্দরের সিএন্ড এফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এ এস এম নিয়াজ নাহিদ বলেন, আমরা মূলত কাস্টমস ক্লিয়ারিং করি। আমদানিকারকেরা সাধারণত পাথর আমদানি করে। আমদানিকারকের যৌক্তিক দাবিগুলো সহযোগিতা করা প্রযোজন। আজকে থেকে পাথর আমদানি সাময়িক বন্ধ করা রয়েছে। আমদানিকারক ও রপ্তানিকারকের মধ্যে যতক্ষণ না সঠিক সমাধান হবে ততক্ষণ পর্যন্ত পাথর আমদানি সাময়িক বন্ধ থাকবে।
বুড়িমারী স্থলবন্দরের সিএন্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ফারুক হোসেন বলেন, পাথরের রেট কমালে আমরা নেব। যতদিন ওরা আমাদের রেট মানবে না ততদিন পর্যন্ত সাময়িক পাথর আমদানি বন্ধ থাকবে। অন্যান্য আইটেম চালু আছে। ওরা অযথা ট্রাক ভাড়া বেশি ধরে আমাদের কাছ ৩ থেকে ৪ ডলার নেয়।
এ বিষয়ে বুড়িমারী স্থলবন্দরে আমদানিকারক ও রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি সভাপতি আবু রাইয়ান আশয়ারী রছি জানান, কিছুদিন ধরে আমরা ভুটান থেকে স্টোন
বোল্ডার তোর্শা প্রতি মেট্রিকটন ১৬ ডলারে আমদানি করে আসছি এবং ভারত থেকে ১০ ডলারে আমদানি করছি। দেখা যাচ্ছে সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে যে বিক্রয় মূল্য দাঁড়ায় তা আমাদের জন্য ব্যবসা পরিচালনা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্তমানে আমদানি মূল্য প্রতি মেট্রিক টন ভুটান থেকে স্টোন বোল্ডার তোর্শা ১৫ ডলার এবং সামসি ১৪ ডলারে ও ভারত থেকে স্টোন বোল্ডার তোর্শা ১০ ডলারের বেশি হলে বুড়িমারী স্থলবন্দরের আমদানিকারকরা ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়বে। প্রতিযোগিতামূলক বাজারে টিকতে পাথরের আমদানি মূল্য কমানোর দাবিতে ১ ফেব্রুয়ারি থেকে সকল প্রকার পাথর আমদানি সাময়িক বন্ধ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে বুড়িমারী স্থল শুল্ক স্টেশনের সহকারী কমিশনার (এসি) রাহাত হোসেন বলেন, আমাদের কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে। পাথর আমদানি বন্ধের বিষয়ে আমদানিকারকরা বলতে পারবেন। এই বিষয়ে আমাদের কোননো মন্তব্য নেই। যদি ইমপোর্ট করে তখন আমরা জানতে পারবো। বোল্ডার আমদানি বন্ধ সেটা ইমপোর্ট এক্সপোর্টারের বিষয়।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র র আমদ ন
এছাড়াও পড়ুন:
প্রথম চালানে ৩৭ হাজার ৪৬০ কেজি ইলিশ গেল ভারতে
দুর্গাপূজা উপলক্ষে যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে প্রথম চালানে ৩৭ হাজার ৪৬০ কেজি ইলিশ মাছ ভারতে রপ্তানি হয়েছে। আজ বুধবার দেশের ছয়টি প্রতিষ্ঠান ১২ দশমিক ৫০ ডলার কেজিতে এই ইলিশ রপ্তানি করা হয়েছে, যা বাংলাদেশি টাকায় ১ হাজার ৫২৫ টাকা।
অথচ এদিন যশোর শহরের মাছের আড়তে ৫০০ থেকে ৬০০ গ্রাম আকারের প্রতি কেজি ইলিশ মাছ ১ হাজার ৪৫০ থেকে ১ হাজার ৫৫০ টাকায় পাইকারি বেচা–কেনা হয়েছে। খুচরা বাজারে সেই ইলিশ কেজিতে ৫০ থেকে ১০০ টাকা বেশি দরে ভোক্তাকে কিনতে হচ্ছে; অর্থাৎ দেশের খুচরা বাজারের দামের চেয়ে কম দামে ইলিশ ভারতে রপ্তানি হচ্ছে।
দেশের চেয়ে কম দামে ইলিশ মাছ রপ্তানি কীভাবে সম্ভব হচ্ছে, এমন প্রশ্নের জবাবে রপ্তানিকারকদের ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং (সিএন্ডএফ) এজেন্ট জুয়েল এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘রপ্তানিকারকেরা ইলিশের জাহাজ থেকে সরাসরি মাছ কেনেন। ছোট–বড় মিলিয়ে যখন কেনেন, তখন একটু কম দামে তাঁরা কিনতে পারেন। এ কারণে তাঁদের পুষিয়ে যায়। এর চেয়ে বেশি কিছু আমার জানা নেই।’
যশোর শহরের বড় বাজারের মাছ বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ইলিশ মাছের সরবরাহ কম। যে কারণে ৫০০ থেকে ৬০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ মাছ ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা কেজি দরে বেচাকেনা হচ্ছে। খুচরা ইলিশ বিক্রেতা লিয়াকত আলী বলেন, ‘গত বছরের তুলনায় এ বছর ইলিশ মাছের দাম বাড়তি। বাজারে সরবরাহ কম। যে কারণে এ বছর ইলিশ মাছের দাম কমার সম্ভাবনা আর দেখছি না।’
যশোর বড় বাজার মৎস্যজীবী আড়তদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক শেখ পিয়ার মোহাম্মদ জানান, আজ যশোরের বাজারে ৫০০ থেকে ৬০০ গ্রাম আকারের ইলিশ মাছ ১ হাজার ৪৫০ থেকে ১ হাজার ৫৫০ টাকা কেজি দরে পাইকারি কেনাবেচা হয়েছে। আর কেজি আকারের ইলিশ প্রতি কেজি ৩ হাজার টাকার ওপরে বেচাকেনা হয়েছে। ভারতের রপ্তানির কারণে স্থানীয় বাজারে এখন ইলিশ মাছ সরবরাহে ঘাটতি রয়েছে, যে কারণে দাম বেশি। অথচ গত বছর এই সময়ে কেজি আকারের ইলিশ মাছের দাম ছিল সর্বোচ্চ ১ হাজার ৬০০ টাকা কেজি। এবার প্রায় দ্বিগুণ দামে সেই ইলিশ কেনাবেচা হচ্ছে।
বেনাপোল স্থলবন্দরের মৎস্য পরিদর্শন ও মাননিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, এ বছর সরকার ৩৭টি প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে ১ হাজার ২০০ টন ইলিশ ভারতে রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে। আজ থেকে ইলিশ মাছ রপ্তানি শুরু হলো। গত বছর ইলিশ রপ্তানির অনুমতি ছিল ২ হাজার ৪২০ টন। বেনাপোল বন্দর দিয়ে রপ্তানি হয়েছিল মাত্র ৫৩২ টন। এবারও অনুমোদনকৃত ইলিশ রপ্তানির কোটা পূরণ হবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। ৫ অক্টোবরের মধ্যে ইলিশ রপ্তানি শেষ করতে নির্দেশ দিয়েছে মৎস্য অধিদপ্তর।
জানতে চাইলে বেনাপোল স্থলবন্দরের মৎস্য পরিদর্শন ও মাননিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রের ফিশারিজ কোয়ারেন্টিন সজীব সাহা বলেন, দুর্গাপূজা উপলক্ষে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় অনুমোদিত ইলিশ রপ্তানির প্রথম চালানে বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ১২ দশমিক ৫০ ডলার মূল্যে ৩৭ দশমিক ৪৬০ টন ইলিশ রপ্তানি হয়েছে। ছয়টি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এই ইলিশ ভারতে পাঠানো হয়েছে। রপ্তানি করা ইলিশের একটি বাক্স খুলে দেখা গেছে, ৩৮টি ইলিশ মাছের ওজন ২১ কেজি; অর্থাৎ প্রতিটি ইলিশের ওজন ছিল ৫৫০ গ্রাম। এ ছাড়া ৭০০ থেকে ৮৫০ গ্রাম ওজনের ইলিশ মাছও রপ্তানি হয়েছে। ৫৫০ গ্রাম থেকে ৮৫০ গ্রাম আকারের মধ্যে ইলিশ মাছ রপ্তানি হচ্ছে।
পদ্মার রুপালি ইলিশ স্বাদ আর গন্ধে অতুলনীয় হওয়ায় দুই বাংলায় এ মাছ বেশ জনপ্রিয়। বিশেষ করে দুর্গাপূজায় অতিথি আপ্যায়নে খাবারের প্রধান তালিকায় ইলিশ রাখেন কলকাতার বাঙালিরা। আগে ইলিশ সাধারণ রপ্তানি পণ্যের তালিকায় উন্মুক্ত থাকলেও উৎপাদন সংকট দেখিয়ে ২০১২ সালে দেশের বাইরে ইলিশ রপ্তানি বন্ধ করে দেয় তৎকালীন সরকার। তবে ২০১৯ সাল থেকে বিশেষ বিবেচনায় কেবল দুর্গাপূজা উপলক্ষে আবারও ইলিশ রপ্তানির সুযোগ দেয় সরকার।
আরও পড়ুনদুর্গাপূজা উপলক্ষে ভারতের ‘বিশেষ অনুরোধে’ ইলিশ রপ্তানির অনুমতি: মৎস্য উপদেষ্টা২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪