দুবাই কনস্যুলেটে মতবিনিময় সভায় বিমান ভাড়া নিয়ে প্রবাসীদের ক্ষোভ
Published: 4th, February 2025 GMT
সংযুক্ত আরব আমিরাতের শারজাহ প্রদেশের সাধারণ প্রবাসীদের সঙ্গে বাংলাদেশ কনসুলেট দুবাইয়ের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ সভায় মাত্রাতিরিক্ত বিমান ভাড়ার কারণে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাধারণ প্রবাসীরা৷
এছাড়া কনস্যুলেটের সেবা সহজিকরণ, মিশনের মাধ্যমেই জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট ও জন্ম নিবন্ধন সংশোধনের সুযোগ চেয়েছেন আমিরাত প্রবাসীরা। কনস্যুলেট কর্মকর্তাদের কাছ থেকে সেবাগ্রহীতারা সম্মানপূর্বক আচরণ প্রত্যাশাও করেন।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের বাংলাদেশ সমিতি শারজার হলরুমে সাধারণ প্রবাসীদের সঙ্গে দুবাইর বাংলাদেশ কনস্যুলেটের এই মতবিনিময় অনুষ্ঠিত হয় । সভায় প্রবাসীদের কাছে থেকে বিভিন্ন অভিযোগ ও পরামর্শ নেন কনস্যুলেটের কনসাল জেনারেল মোহাম্মদ রাশেদুজ্জামান।
বিভিন্ন দাবি ও অভিযোগের প্রেক্ষিতে কনসাল জেনারেল রাশেদুজ্জামান প্রবাসীদের সমস্যার সমাধান ও কনস্যুলার সেবাসমূহ আরো সহজিকরণ করার উদ্যোগ গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন। কনস্যুলেটে সেবা নিতে গিয়ে প্রবাসীরা অসদাচরণের শিকার হওয়ার এমন সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও আশ্বস্ত করেন তিনি। প্রবাসীদের বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠানোর অনুরোধ জানান। পাশাপাশি প্রতিযোগিতামূলক শ্রম বাজারে টিকে থাকতে নিজেদের দক্ষতা প্রমাণ করার জন্য সংকল্পবদ্ধ হওয়ার আহ্বান করেন৷ সাধারণ প্রবাসীদের ব্যক্তিগত সঞ্চয়ের ব্যাপারে আগ্রহী হওয়ারও পরামর্শ দেন তিনি।
সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ সমিতি শারজার সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার করিমুল হক।
লেবার কাউন্সেলর আব্দুস সালামের সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন প্রথম সচিব শাহনাজ পারভীন, প্রেস উইং আরিফুর রহমান, জনতা ব্যাংকের ম্যানেজার মুহাম্মদ আরিফ, কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব মোস্তাফা মাহমুদ, এনাম চৌধুরী, বাংলাদেশ প্রেসক্লাব ইউএইর সভাপতি মামুনুর রশীদ, সহ-সভাপতি এস এম মোদাসসের শাহ, সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল মান্নান, অর্থ সম্পাদক আবুল কালাম প্রমুখ।
মতবিনিময় সভায় অংশ নেন শারজাহতে বিভিন্ন কোম্পানিতে কর্মরত ২ শতাধিক প্রবাসী বাংলাদেশি।
এদিকে মতবিনিময় সভার আয়োজন করে প্রবাসীদের সুখ-দুঃখ শোনার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রবাসী কর্মীরা।
ঢাকা/টিপু
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর কনস য ল ট
এছাড়াও পড়ুন:
স্তম্ভিত হারমানপ্রীত, আবেগ-রোমাঞ্চ-গর্ব-ভালোবাসায় মিলেমিশে একাকার
২০০৫ ও ২০১৭, ভারতের নারী ক্রিকেট দল ওয়ানডে বিশ্বকাপের খুব কাছে গিয়েও শিরোপা জিততে পারেননি। হারমানপ্রীত কৌররা লম্বা সেই অপেক্ষা দূর করলেন দুই হাজার পঁচিশে।
মুম্বাইয়ের নাভিতে প্রায় ষাট হাজার দর্শকের সামনে উচিুঁয়ে ধরলেন ওয়ানডে বিশ্বকাপের শিরোপা। ২০১৭ সালের ফাইনালেও খেলেছিলেন হারমানপ্রীত। রানার্সআপ হয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয় তাকে। এবার আর ভুল করলেন না। অধিনায়ক হয়ে জিতলেন শিরোপা। গড়লেন ইতিহাস। যে ইতিহাস কখনো মুছবে না। কখনো জং ধরবে না।
ঝলমলে হাসিতে হারমানপ্রীত ট্রফি হাতে নিয়ে প্রেস কনফারেন্স রুমে প্রবেশ করেন। এবার তার আবেগের ধরণ ছিল ভিন্ন, যেন স্বপ্ন পূরণের মাখামাখি। লম্বা সংবাদ সম্মেলন জুড়ে বারবার তার কণ্ঠ ধরে আসে। আবেগ, রোমাঞ্চ, গর্ব, ভালোবাসা, শ্রদ্ধা মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়। তবে একটি শব্দের ওপর বারবার ফিরে আসছিলেন তিনি, তা হলো আত্মবিশ্বাস,
‘‘আমি কেবল আমার অনুভূতি প্রকাশ করার চেষ্টা করছি। আমি স্তম্ভিত, আমি বুঝতে পারছি না। আসলে, এতে উত্থান-পতন ছিল, কিন্তু দলের মধ্যে আত্মবিশ্বাস ছিল। আমি প্রথম দিন থেকেই এটা বলে আসছি। আমরা বাম বা ডানে তাকাচ্ছিলাম না। আমরা কেবল আমাদের মূল লক্ষ্যের দিকে তাকিয়েছিলাম।’’ - বলেছেন হারমানপ্রীত।
স্বপ্ন পূরণের রাতে হারমানপ্রীত কাছে পেয়েছিলেন সাবেক তিন ক্রিকেটার মিতালি রাজ, ঝুলন গোস্বামী এবং অঞ্জুম চোপড়াকে। প্রত্যেকেই স্বপ্ন দেখেছিলেন ভারতকে বিশ্বকাপ জেতানোর। তাদের অধরা সেই স্বপ্ন পূরণ করেছেন জেমিমা, দীপ্তি, শেফালি, স্মৃতিরা।
শিরোপা উৎসবে যোগ দেন মিতালি, ঝুলন, আঞ্জুমরা। তাদের হাতেও ট্রফি তুলে দেওয়া হয়। প্রাক্তন খেলোয়াড়দের সাথে সেই মুহূর্তটি ভাগ করে নেওয়ার অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে হারমানপ্রীত বলেন, ‘‘ঝুলন দি আমার সবচেয়ে বড় আইডল ছিলেন। যখন আমি দলে যোগ দিই, তখন তিনি নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। আমি যখন খুব কাঁচা ছিলাম এবং ক্রিকেট সম্পর্কে তেমন কিছু জানতাম না, তখনও তিনি সবসময় আমাকে সমর্থন করতেন। অঞ্জুম দি-ও তাই। এই দুজন আমার জন্য দারুণ সমর্থন ছিলেন। আমি কৃতজ্ঞ যে আমি তাদের সাথে এই বিশেষ মুহূর্তটি ভাগ করে নিতে পেরেছি। এটি খুব আবেগপূর্ণ মুহূর্ত ছিল। আমার মনে হয় আমরা সবাই এটার জন্য অপেক্ষা করছিলাম। অবশেষে, আমরা এই ট্রফি স্পর্শ করতে পেরেছি।’’
তার জন্য বিশ্বকাপের পুরো অভিযানটিই ছিল গভীরভাবে আবেগপূর্ণ। রাউন্ড রবিন লিগে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ হার। চোট, অফ ফর্ম, জড়তা। সব সামলে সেরা হয়েছেন। তাইতো নিজেদের নিয়ে গর্বটাও বেশি হারমানপ্রীতদের, ‘‘আমরা প্রথম বল থেকেই অনুভব করেছিলাম যে আমরা জিততে পারি, কারণ শেষ তিন ম্যাচে আমাদের দল যেভাবে খেলছিল, তাতে আমাদের জন্য অনেক কিছুর পরিবর্তন এসেছিল, বিশেষ করে আমাদের আত্মবিশ্বাস। আমরা অনেকদিন ধরেই ভালো ক্রিকেট খেলছি। আমরা জানতাম দল হিসেবে আমরা কী করতে পারি।”
"গত এক মাস খুব আকর্ষণীয় ছিল। সেই দিনটির (ইংল্যান্ডের কাছে হারের) পর আমাদের মধ্যে অনেক পরিবর্তন আসে। সেই রাত আমাদের জন্য অনেক কিছু বদলে দিয়েছিল। এটি প্রত্যেকের উপর প্রভাব ফেলেছিল। আমরা বিশ্বকাপের জন্য আরও প্রস্তুত হলাম। আমরা ভিজ্যুয়ালাইজেশন এবং মেডিটেশন শুরু করেছিলাম। আমরা বারবার বলছিলাম, যে জন্য আমরা এখানে এসেছি এবং এবার আমাদের এটা করতেই হবে।" - যোগ করেন হারমানপ্রীত।
প্রথম যে কোনো কিছুই আনন্দের। রোমাঞ্চের। এই অভিজ্ঞতা শব্দে বয়ান করা যায় না। বয়ান করা সম্ভব হয় না। হারমানপ্রীতও পারেন না নিজের সবটা উজার করে বলতে। তবে এই শিরোপায় তাদের নাম লিখা হবে সেই আত্মবিশ্বাস তারও ছিল, ‘‘আমরা বহু বছর ধরে এটি নিয়ে কথা বলছি—আমরা ভালো ক্রিকেট খেলছি, কিন্তু আমাদের একটি বড় শিরোপা জিততেই হতো।"
ঢাকা/ইয়াসিন